Ajker Patrika

এয়ারবাসের উড়োজাহাজ কেনায় বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বিমান: বিদায়ী এমডি

আপডেট : ২৯ মে ২০২৪, ২২: ২০
এয়ারবাসের উড়োজাহাজ কেনায় বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বিমান: বিদায়ী এমডি

ফ্লাইটের বহর বাড়ানোর জন্য সুপরিসর উড়োজাহাজ কেনার ক্ষেত্রে ফরাসি কোম্পানি এয়ারবাসের প্রস্তাবকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি বোয়িংয়েরও প্রস্তাবও বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে যে কোম্পানির উড়োজাহাজ কেনা হোক না কেন, দুই প্রতিষ্ঠানের প্রতিযোগিতামূলক প্রস্তাবে ক্রেতা হিসেবে বাংলাদেশ সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। আজ বুধবার অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড ও ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরামের (এটিজেএফবি) সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন বিমানের বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও মো. শফিউল আজিম। 

শফিউল আজিম বলেন, ‘উড়োজাহাজ বিক্রির জন্য এয়ারবাস দুটি প্রস্তাব দিয়েছিল। প্রথমে দুটি কার্গো ফ্লাইট বিক্রির কথা বলা হয়েছিল। আমাদের মনে হয়েছে, আপাতত আমাদের কার্গো কেনার দরকার নাই। আমরা যাত্রীবাহী বিমানবহর বাড়ানোর ইচ্ছার কথা জানাই। তখন এয়ারবাস আমাদের চরটি যাত্রীবাহী ফ্লাইট বিক্রির দ্বিতীয় প্রস্তাব পাঠায়। এই প্রস্তাব আগের প্রস্তাবের চেয়ে ভালো ছিল। সেই প্রস্তাব ইভ্যালুয়েশন কমিটি থেকে বিমানের বোর্ডে যায়। বোর্ড এ বিষয়ে আগানোর নির্দেশনা দিয়ে নেগোসিয়েশন কমিটিতে পাঠিয়েছে।’

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এয়ারক্রাফট তৈরির প্রতিষ্ঠান এয়ারবাস থেকে যাত্রীবাহী এয়ারক্রাফট কেনার ইঙ্গিত দিয়ে বিমানের সিইও বলেন, ‘আমরা এখন এয়ারবাসের অফারগুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের বহরের সব বড় এয়ারক্রাফট বোয়িংয়ের (২১টির মধ্যে ১৬টি বোয়িং)। কিছু ডাইভার্সিটি দরকার। নতুন এয়ারক্রাফট থাকলে যাত্রীরাও পছন্দ করবে। কোনো সময় যেকোনো কোম্পানির এয়ারক্রাফট খারাপ পারফর্ম করতে পারে, তখন যেন রিস্কে না পড়ি—সে কারণে ডাইভার্সিফাইয়ের কথা ভাবছি।’ 

বোয়িংয়ের উড়োজাহাজ বিক্রির প্রস্তাব নিয়ে তিনি বলেন, ‘বোয়িংও আমাদের প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা সেটাও ইভ্যালুয়েট করব। বোয়িংয়ের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনের ভালো সম্পর্ক। শুধু প্লেন কেনাবেচা সম্পর্ক না, তাদের টেকনিক্যাল সাপোর্ট ভালো, ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি ভালো। সব মিলিয়ে আমরা একসঙ্গে ভালোভাবে কাজ করে যাচ্ছি। তবে যেই এয়ারক্রাফটই কিনি না কেন দুই প্রতিষ্ঠানের প্রতিযোগিতামূলক প্রস্তাবে ক্রেতা হিসেবে সুবিধাজনক অবস্থানে আছি। ’

বিমানের লাভ-ক্ষতির বিষয়ে জানতে চাইলে শফিউল আজিম বলেন, ‘বিমান গত ১০ বছরের ৮ বছরই লাভে ছিল। যেই দুই বছর লস হয়েছে, তার মধ্যে এক বছর করোনাভাইরাসের আধিক্য ছিল, আরেকবার আমাদের মোটা অঙ্কের পেমেন্ট পরিশোধ করতে হয়েছিল। গত বছর ডলারের সমস্যা ছিল। বিশ্বে দুটি যুদ্ধ চলমান। এর মধ্যেও আমরা লাভ করেছি।’

বিমানের লাভ নিয়ে সংশয় উড়িয়ে দিয়ে বিদায়ী এমডি বলেন, ‘বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান দিয়ে অডিট করা হয়েছে আমাদের লাভের বিষয়ে। আমরা বিমানে নিয়মিত নিয়োগ দিচ্ছি, বেতন দিচ্ছি, বোনাস দিচ্ছি, প্রোফিট বোনাস দিচ্ছি। লাভ না হলে এসব টাকা কোথা থেকে আসছে? যারা বলেন, বিমান লাভে নাই, আমি একটা কথাই বলব আল্লাহ তাঁদের হেদায়েত দান করুক।’

এমডি থাকা অবস্থায় নিজের কার্যক্রম তুলে ধরে শফিউল আজিম বলেন, ‘বিমানে চাকরি করা অবস্থায় আমি কোনো কর্মীকে মূল্যায়ন করতে কার্পণ্য করিনি, শাস্তি দিতেও কার্পণ্য নয়। আমি খুব ভাগ্যবান, বিমানবন্দরে কাজ করার সময়ে কোনো পর্যায় থেকে চাপ আসেনি। আমি আমার অথরিটি শতভাগ ব্যবহার করতে পেরেছি। চেষ্টা করলে বিমানকে পৃথিবীর বড় বড় এয়ারলাইনসের কাতারে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।’

বিমানের জন্য দীর্ঘ মেয়াদে এমডির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিমানের হিউম্যান রিসোর্স মানসম্মত, টেকনিক্যাল রিসোর্স মানসম্মত। যেকোনো প্রতিষ্ঠানে সিস্টেম ও স্ট্রাকচার দাঁড় করানো গেলে এমনিতেই কাজ হবে। আমি এসব সিস্টেম ও স্ট্রাকচার দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছি। সিস্টেম ঠিক থাকলে কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির ওপর প্রতিষ্ঠান নির্ভর করবে না।’

বিমানের অগ্রগতির স্বার্থে সুপারিশ তুলে তিনি বলেন, ‘আমার সুপারিশ থাকবে, বিভিন্ন টেকনিক্যাল বিভাগের কর্মীর ক্ষেত্রে যেন বয়স বিবেচনা না করা হয়। কারণ, টেকনিক্যাল ফিল্ডে বয়স যত বাড়ে, অভিজ্ঞতা তত বাড়ে। অভিজ্ঞদের বয়স বিবেচনা না করে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বিমানে রেখে দিতে হবে। সরকারি অফিসের মনমানসিকতা প্র‍্যাক্টিস করলে বিমান কাজ করবে না। এটা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। সবকিছু বাণিজ্যিকভাবে চিন্তা করতে হবে।’

কোনো আক্ষেপ আছে কি না জানতে শফিউল আজিম বলেন, ‘আমার দায়িত্ব পালনের সময়ের মধ্যে বিমানের বহরে যদি চারটা এয়ারক্রাফট অ্যাড হতো, তাহলে খুবই খুশি হতাম। আমি চাইতাম ৫০টা এয়ারক্রাফটের মালিক হোক বিমান।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত