Ajker Patrika

স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করবে সরকার: প্রেস সচিব

বাসস, দোহা (কাতার)
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৬: ১০
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: পিআইডি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: পিআইডি

দেশের কারখানাগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে একটি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গতকাল বৃহস্পতিবার কাতারের দোহায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘অনেকে বলেছেন, গ্যাসের অভাবে তাঁরা কারখানা স্থাপন করতে পারছেন না। তাই আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করতে চাই, যাতে পর্যাপ্ত গ্যাস (বিদেশ থেকে) আনা যায়।’

শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দোহা সফরের সময় কাতার এনার্জির সঙ্গে একটি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। বাংলাদেশের কারখানাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে শিগগির স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করা হবে।

প্রধান উপদেষ্টার দোহা সফর সম্পর্কে শফিকুল আলম বলেন, এই সফর অত্যন্ত সফল ও ফলপ্রসূ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি বলব, এটি সবচেয়ে সফল ও অত্যন্ত আকর্ষণীয় সফরগুলোর মধ্যে একটি।’

প্রেস সচিব আশা প্রকাশ করেছেন, এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশের সুনাম বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে এবং অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য এগিয়ে আসবেন।

দেশের অর্থনীতির উত্থান-পতনের কথা তুলে ধরে শফিকুল আলম বলেন, ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সময় (জ্বালানি খাতে) ৩২০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ ছিল, কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার তা কমিয়ে ৬০ কোটি মার্কিন ডলারে নিয়ে এসেছে।

প্রেস সচিব বলেন, অবশিষ্ট ঋণ কয়েক মাসের মধ্যে পরিশোধ করা হবে। তিনি আরও বলেছেন, ‘এটি বিশ্বের বাইরে ইতিবাচক সংকেতের অনুভূতি যে আমরা ব্যবসার জন্য প্রস্তুত।’

চার দিনের সফর শেষে অধ্যাপক ইউনূস আজ শুক্রবার পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে যোগ দেওয়ার জন্য দোহা থেকে ইতালির রোমের উদ্দেশে যাত্রা করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—হুমকির ৩ দিন পরেই বাবলাকে হত্যা

২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন

সরকারি ছুটি ২৮ দিন, ১১ দিনই শুক্র-শনিবার

‘চিটাংঅর মইদ্যে সরোয়াইজ্জা মরিব’— ফোনে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের চেলা রায়হানের হুমকি

পরকীয়ার জেরে পুলিশ সদস্য হত্যা মামলায় পুলিশ দম্পতির ফাঁসি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দের লুটে ছোটরা নিঃস্ব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পাঁচ ব্যাংক একীভূত করার ঘটনায় পুঁজিবাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ সংবাদ সম্মেলন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের পদত্যাগ দাবি করেছে। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পুরোনো ভবনের সামনে। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাঁচ ব্যাংক একীভূত করার ঘটনায় পুঁজিবাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ সংবাদ সম্মেলন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের পদত্যাগ দাবি করেছে। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পুরোনো ভবনের সামনে। ছবি: আজকের পত্রিকা

লুটপাটে বিপর্যস্ত শরিয়াহভিত্তিক ৫ ব্যাংক একীভূত করে গঠিত হচ্ছে নতুন একটি ইসলামী ব্যাংক। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ব্যাংকগুলোর শেয়ারের মূল্য শূন্য ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে একেবারে শূন্য হাতে ফিরতে হবে এই পাঁচ ব্যাংকের শেয়ারের পেছনে অর্থলগ্নি করা বিনিয়োগকারীদের। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন পুজিবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তাঁরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের চোখের সামনে লুটেরা গোষ্ঠী ব্যাংক লুটপাট করেছে। এখন তাদের লুটপাটের দায় চাপানো হচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ঘাড়ে।

ব্যাংক পাঁচটির শেয়ারের মূল্য শূন্য ঘোষণার প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মতিঝিলে বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন ক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা। ব্যাংক লুটেরাদের কোন স্বার্থে গভর্নর অব্যাহতি দিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিনিয়োগকারী ও আমানতকারীরা। তাঁরা বলছেন, গভর্নরকে তার জবাব দিতে হবে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পুরোনো ভবনের সামনে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত কর্মসূচি থেকে অর্থ উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগ দাবি করেছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে খেয়ালখুশিমতো ব্যাংক একীভূতকরণ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। দাবি পূরণ না হলে আগামী মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক ঘেরাও কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

একীভূত করার লক্ষ্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী, ইউনিয়ন, এক্সিম ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বিলুপ্ত করে এরই মধ্যে সেখানে প্রশাসক বসিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ব্যাংকগুলোর পর্ষদ বিলুপ্তির ঘোষণা দেন। সেই সঙ্গে শেয়ারহোল্ডারদেরও কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি। গভর্নর বলেন, ‘পাঁচ ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের ইকুইটির মূল্য নেতিবাচক হয়েছে ৩০০-৪০০ শতাংশ। এখন তা আদায় করা উচিত। কিন্তু তা না করে শূন্যের নিচের শেয়ারগুলোর ভ্যালু জিরো হিসেবে বিবেচিত হবে। কাউকে (শেয়ারহোল্ডারদের) কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না।’

গভর্নরের এমন ঘোষণার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন একীভূত হতে যাওয়া ব্যাংকগুলোর শেয়ারহোল্ডাররা। বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজানুর রশিদ চৌধুরী বলেন, ‘মার্জারের সার্কুলার হওয়ার পরে তা প্রত্যাহারের দাবি করেছিলাম। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সেই দাবি আমলে নেননি। আজকে পাঁচটি ব্যাংকের বিনিয়োগকারীরা যে অবস্থান করছেন, তাঁরা কোথায় যাবেন? কাদের স্বার্থে আপনি (গভর্নর) কাজ করছেন তা আমাদের বোধগম্য নয়। কেন লুটেরা গোষ্ঠী জনসমক্ষে আসছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের চোখের সামনে সব লুটপাট হয়েছে, এটি সবার জানা। বাংলাদেশ ব্যাংক ও গভর্নর তার দায় এড়াতে পারেন না।’

এই বিনিয়োগকারী আরও বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের উদাহরণ বাংলাদেশে চলে না। এই ব্যাংকগুলোকে ‘ভালো’ তকমা দিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আকৃষ্ট করা হয়েছে। গত ৫ আগস্টের পরই ব্যাংকগুলোর দুর্বলতা সামনে এসেছে। তত দিনে উদ্যোক্তা-পরিচালকরা তাঁদের শেয়ার বিক্রি করে বেরিয়ে গেছেন। যাঁদের হাতে শেয়ার ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগই সাধারণ ও স্বল্প মূলধনি বিনিয়োগকারী। তাঁরা যদি তাঁদের বিনিয়োগের কোনো অংশ ফেরত না পান, তাহলে সারা জীবনের জন্য পুঁজিবাজার ত্যাগ করবে। এসবের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে পদত্যাগ করতে হবে।

বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের আরেক নেতা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের অন্ধকারে রেখে ব্যাংক মার্জার বন্ধ করা হোক। এই সরকার আসার পরে ৩০ হাজারের বেশি গার্মেন্টস কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেছে। এখন ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আগামীতে লিজিং কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাবে। এরপরে আমাদের হাউস বন্ধ হয়ে যাবে। এই সেক্টরে ৩০ লাখ বিনিয়োগকারী, হাউসের মেম্বার, মালিকসহ পরিবারের ১ কোটি সদস্য আছে, তাঁদের কী অবস্থা হবে?’

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিবৃতিতে বলা হয়, পাঁচটি ব্যাংক একীভূতকরণের ক্ষেত্রে সাধারণ বিনিয়োগকারী বা শেয়ারধারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের বিষয় বিবেচনার কোনো সুযোগ আপাতত নেই। তবে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী বা শেয়ারধারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে তাঁদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের বিষয়টি সরকার বিবেচনা করতে পারে।

পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্য বলছে, উদ্যোক্তা ও পরিচালক বাদে ওই পাঁচ ব্যাংকের অন্য শেয়ারহোল্ডারদের হাতে থাকা শেয়ারের পরিমাণের গড় ৭৬ দশমিক ০২ শতাংশ। অভিহিত মূল্যে এসব শেয়ারের বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪ হাজার ৪২৯ কোটি টাকা। পাঁচটি ব্যাংকের মধ্যে ইউনিয়ন ব্যাংকের মোট শেয়ারের সংখ্যা ১০৩ কোটি ৬২ লাখ ৮০ হাজার ৪৪৮টি, যার ৪৫ দশমিক ৫১ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে। এসব শেয়ারের অভিহিত মূল্যে তাঁদের বিনিয়োগের পরিমাণ ৪৭১ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের মোট শেয়ারের সংখ্যা ৯৮ কোটি ৭৪ লাখ ৩৯ হাজার ৬৮৮টি। যার ৮৪ দশমিক ৫৭ শতাংশই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে। অভিহিত মূল্যে এসব শেয়ারে বিনিয়োগের পরিমাণ ৮৩৫ কোটি ৭ লাখ টাকা। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের মোট শেয়ারের সংখ্যা ১১৪ কোটি ১ লাখ ৫৫ হাজার ১০০টি, যার ৮৮ দশমিক ৩৮ শতাংশই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে। অভিহিত মূল্যে এসব শেয়ারে বিনিয়োগের পরিমাণ ১ হাজার ৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এক্সিম ব্যাংকের মোট শেয়ারের সংখ্যা ১৪৪ কোটি ৭৫ লাখ ৫৭ হাজার ৩৪৪টি, যার মধ্যে ৬৭ দশমিক ৫৬ শতাংশই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে। অভিহিত মূল্যে এই বিনিয়োগের পরিমাণ ৯৭৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের মোট শেয়ারের সংখ্যা ১২০ কোটি ৮১ লাখ ৩৯ হাজার ৩৭৯টি। এসব শেয়ারের ৯৪ দশমিক ১০ শতাংশই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে, যার অভিহিত মূল্য ১ হাজার ১৩৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

এসব বিনিয়োগকারীর পক্ষে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের মুখপাত্র মো. মহসিন গতকাল কয়েকটি দাবি তুলে ধরেছেন। দাবিগুলো হলো, একীভূত হওয়া ব্যাংকে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার দিতে হবে। বেনামে থাকা সম্পত্তির মালিক বিনিয়োগকারীদের করতে হবে। এস আলমের সম্পত্তি ব্যাংকের শেয়ারের সম্পদমূল্যে (এনএভি) যোগ করতে হবে। ব্যাংক লুটে জড়িত কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেট (বিএএসএম) এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ব্যাংক একীভূত চিন্তা করে করা উচিত ছিল। শেয়ারহোল্ডারদের অবস্থা কী হবে, ডিপোজিটরদের অবস্থা কী হবে? এই যে প্রতিটা জায়গায় এখন ব্যাংকগুলোর যে শাখা আছে, এগুলো কীভাবে অ্যাকোমোডেট করবেন, এগুলো চিন্তাভাবনা না করে বলে দেওয়া হলো শেয়ারহোল্ডাররা কিছু পাবেন না। এটা হতে পারে নাকি?

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, একীভূত প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচটি ব্যাংকের সম্মিলিত মূলধন ঘাটতি ও খেলাপি ঋণের মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৬ হাজার কোটি টাকা। এসব ব্যাংক থেকে বড় বড় শিল্পগোষ্ঠী লুটপাট করেছে প্রায় ১ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা। একিউআর (অ্যাসেট কোয়ালিটি রিভিউ) প্রতিবেদন অনুযায়ী পাঁচ ব্যাংকের মোট আমানত ১ লাখ ৪৭ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা। এর বিপরীতে মোট ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৯০ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। খেলাপির পরিমাণ ১ লাখ ৪৬ হাজার ৯১৮ কোটি টাকা। গড় খেলাপি ৭৭ শতাংশ। তার মধ্যে ইউনিয়ন ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার সর্বোচ্চ, ৯৮ শতাংশ। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৯৬ শতাংশ এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৯৫ শতাংশ। অন্যদিকে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৬২ শতাংশ এবং এক্সিম ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৪৮ শতাংশ রয়েছে।

পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আন্তর্জাতিক আইন বা যেকোনো আইনে, বিনিয়োগকারী বা শেয়ারহোল্ডাররা সবার দায়দেনা শোধ করার পরে কিছু থাকলে সেটা পায়। ওইসব ব্যাংকের কোনো কোনোটার ক্ষেত্রে শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) ৪৫০ টাকা ঋণাত্মক আছে। অর্থাৎ একটা শেয়ার কেনার মানে ৪৫০ টাকা দায় দিতে হবে। যেহেতু কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগের অ্যামাউন্ট দ্বারা সীমাবদ্ধ, সেই কারণে শেয়ারহোল্ডারদের দায়টা দিতে হচ্ছে না। কিন্তু নতুন করে সে কিছু পাচ্ছে না। এটা হচ্ছে বাস্তবতা।

ওই সহযোগী অধ্যাপক আরও বলেন, বিনিয়োগকারীদের আসলে ক্ষতিটাকে মেনে নিতে হবে। আর সমাধান হিসেবে যারা টাকা পাচার করছে, তাদের রিলেটেড পার্টির সব সম্পদ জব্দ করে, যারা দেশের বাইরে চলে গেছে, তাদের টাকা যদি ফেরত আনা যায়, তাহলে হয়তো যারা আর্থিকভাবে ক্ষতি হয়েছে, তারা সান্ত্বনা পেতে পারে। কিন্তু ক্ষতিপূরণ দেওয়ার অপশন আর থাকছে না।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, লিকুইডেশনে গেলে সম্পদ বিক্রি করে দায়দেনা শোধ করার পর এবং আমানতকারীদের টাকা দেওয়ার পরে যদি কিছু থেকে থাকে, তাহলে শেয়ারহোল্ডাররা পাবে। আর যদি কিছু না থাকে, তাহলে তো শেয়ারহোল্ডার দাবি করতে পারে না। এটা হলো আইনের ভাষা।

চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ব্যক্তির ক্ষেত্রে লস হয়ে গেলে তার অন্য সম্পদ থেকে সেগুলো দাবি করতে পারবে। কিন্তু লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে শেয়ারের যে ফেস ভ্যালু, এর বাইরে কোনো কিছু মালিকদের কাছ থেকে দাবি করা যাবে না। না হলে শেয়ারহোল্ডারদের ওই লোকসানের ভাগটা নিতে হতো। বেঁচে গেছে।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, শেয়ারহোল্ডাররা যেহেতু মালিক, আর মালিকের ঘরে তো টাকা নেই, বরং ঋণাত্মক, তো এখন মালিক হয়ে টাকা পাবে কোথায়? মালিকের ঘরে যারা টাকা জমা রেখেছে, তাদের জন্য একটা প্ল্যান দেখলাম। আর শেয়ারহোল্ডারদের বিষয়টা গভর্নর মহোদয় যে কথা বলছেন, এর বাইরে তো আসলে কিছু দেখছি না। আমরা তো আইন-কানুনের বাইরে গিয়ে কিছু করতে পারব না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—হুমকির ৩ দিন পরেই বাবলাকে হত্যা

২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন

সরকারি ছুটি ২৮ দিন, ১১ দিনই শুক্র-শনিবার

‘চিটাংঅর মইদ্যে সরোয়াইজ্জা মরিব’— ফোনে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের চেলা রায়হানের হুমকি

পরকীয়ার জেরে পুলিশ সদস্য হত্যা মামলায় পুলিশ দম্পতির ফাঁসি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উৎপাদন মৌসুম শুরু: লবণচাষিরা মাঠে নেই, দাম কম

  • প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ২৩৫-২৪০ টাকা।
  • উৎপাদনে খরচ পড়েছে অন্তত ৪০০ টাকা।
মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
লবণ উৎপাদনের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন চাষিরা। কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার উত্তর ধূরুন ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
লবণ উৎপাদনের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন চাষিরা। কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার উত্তর ধূরুন ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাঠে লবণের নোনতা গন্ধ ভেসে আসে, কিন্তু চাষিদের মুখে হাসি নেই। গত বছর থেকে লবণের বাজারমূল্য স্থির না থাকার কারণে উৎপাদনে আগ্রহ কমেছে। মাঠপর্যায়ে এখনো প্রতি মণ লবণ ২৩৫-২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, অথচ উৎপাদনে খরচ পড়েছে অন্তত ৪০০ টাকা। দামের এই ফারাক চাষিদের মধ্যে হতাশার ছাপ রেখেছে। ফলে নতুন মৌসুম শুরু হলেও অধিকাংশ চাষি এখনো মাঠে নামতে সাহস পাচ্ছেন না।

দেশের একমাত্র লবণ উৎপাদনকেন্দ্র কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী সমুদ্র উপকূল। প্রতিবছর নভেম্বর থেকে মে পর্যন্ত চলে লবণ চাষের মৌসুম। এই সময়ে সাগরের লোনাপানি শুকিয়ে কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়া, চকরিয়া, ঈদগাঁও, সদর ও টেকনাফের পাশাপাশি চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও পটিয়ার উপকূলে হয় লবণ চাষ, যা থেকে দেশের সার্বিক চাহিদা পূরণ হয়।

বিসিকের আওতাধীন কক্সবাজার লবণশিল্প উন্নয়ন কার্যালয়ের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর কুতুবদিয়া উপজেলার লেমশীখালী ইউনিয়নে মৌসুমের প্রথম লবণ উৎপাদন হয়। তখন ৬ হাজার ৭৫৮ একর জমির মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ জমি উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত ছিল। প্রথম সপ্তাহে উৎপাদন হয়েছিল মাত্র ৫৫ টন। পেকুয়া, টেকনাফ ও চট্টগ্রামের বাঁশখালীর ক্ষেত্রেও চাষিরা মাঠে নেমেছিলেন, তবে মাত্র ৪০-৫০ শতাংশ জমিতে।

এ বছর আরও খারাপ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মৌসুম শুরু হলেও কুতুবদিয়া ছাড়া অন্য এলাকায় চাষিরা এখনো মাঠে নামেননি। বিসিক কক্সবাজার লবণশিল্প উন্নয়ন কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক মো. জাফর ইকবাল ভূঁইয়া জানিয়েছেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে উৎপাদনে অন্তত ২০-২২ দিনের বিলম্ব হতে পারে। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, লবণের দাম কম থাকায় চাষিদের মধ্যে হতাশা গভীর।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, গত মৌসুমে বেশির ভাগ চাষিই লবণ উৎপাদনে লোকসান দিয়েছেন এবং এ বছরও পরিস্থিতি বদলায়নি। লাভ তো দূরের কথা, মাঠে তাঁদের কষ্টার্জিত বিনিয়োগ ফিরবে কি না সেই অনিশ্চয়তায় চাষিরা রয়েছেন। কুতুবদিয়ার লেমশীখালীর চাষি আবদুল গফুর জানিয়েছেন, কানিপ্রতি জমিতে গত মৌসুমে তাঁর ৩৫ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে, যা এবারও তাঁর মাথায় ভর করছে।

পেকুয়ার বড় চাষি সিরাজুল মোস্তফা জানান, প্রতি একর জমিতে উৎপাদন খরচ আড়াই লাখ টাকার বেশি, উৎপাদন হয় ৬০০-৬৫০ মণ। বর্তমান বাজারদরে প্রতি একরে লোকসান প্রায় ১ লাখ টাকা এবং গত মৌসুমে ২৫০ একর জমিতে তাঁর ক্ষতি হয়েছে ৪০ লাখ টাকা।

এভাবে শুধু গফুর বা সিরাজুল নয়, এলাকার সংখ্যাগরিষ্ঠ চাষিই দাম না থাকার কারণে এবার মাঠে নামার আগ্রহ হারিয়েছেন। জমির মালিকেরা কানিপ্রতি ১৫-২৫ হাজার টাকা ছাড় দিলেও, তা চাষিদের মাঠে নামাতে খুব বেশি ভূমিকা রাখেনি।

বিসিকের তথ্য অনুযায়ী, গত মৌসুমে দেশে ২৬ লাখ ১০ হাজার টনের চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন হয়েছিল ২২ লাখ ৫১ হাজার ৬৫১ টন। এর আগের বছর উৎপাদন হয়েছিল ২৪ লাখ ৩৭ হাজার ৮৯০ টন। চলতি মাসের ১ নভেম্বর পর্যন্ত দেশে মজুত আছে ৪ লাখ ২০৩ টন লবণ। মাঠে লবণের গড় মূল্য ২৪০ টাকা। কক্সবাজারের সাত উপজেলায় ৫৯ হাজার ৯৯৯ একর এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও পটিয়ায় ১০ হাজার ৮৯ একর জমিতে লবণ চাষ হয়, যেখানে ৪১ হাজার ৩৫৫ জন চাষি সরাসরি জড়িত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—হুমকির ৩ দিন পরেই বাবলাকে হত্যা

২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন

সরকারি ছুটি ২৮ দিন, ১১ দিনই শুক্র-শনিবার

‘চিটাংঅর মইদ্যে সরোয়াইজ্জা মরিব’— ফোনে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের চেলা রায়হানের হুমকি

পরকীয়ার জেরে পুলিশ সদস্য হত্যা মামলায় পুলিশ দম্পতির ফাঁসি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিমা করপোরেশন আইন সংশোধনের প্রস্তাব

আইডিআরএ-এসবিসি জড়াচ্ছে স্বার্থের দ্বন্দ্বে

  • আইন সংশোধনে এসবিসির অসন্তোষ ও উদ্বেগ।
  • রাজস্ব ক্ষতি এবং সরকারি সম্পদ ঝুঁকির শঙ্কা।
  • শিথিল হচ্ছে পুনর্বিমা বাধ্যবাধকতা।
  • সরকারি সম্পদের বিমা নিয়ন্ত্রণ সীমিত হবে।
  • বেসরকারি বিমা কোম্পানির সুবিধা বাড়ছে।
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

নতুন ‘বীমা করপোরেশন আইন ২০১৯’ সংশোধন প্রস্তাবকে ঘিরে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান সাধারণ বীমা করপোরেশনের (এসবিসি) মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছেছে। খসড়া প্রস্তাবটি এসবিসির রাজস্ব ক্ষতি এবং সরকারি সম্পদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। একই সঙ্গে, বেসরকারি কোম্পানির জন্য বাড়তি সুবিধা প্রদানের ধারা নিয়েও আপত্তি উঠেছে। এতে এসবিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে উদ্বেগ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের খসড়ায় মোট ১৭টি ধারায় সংশোধনের প্রস্তাব আনা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হলো রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান সাধারণ বিমা করপোরেশনে ৫০ শতাংশ পুনর্বিমা বাধ্যতামূলক করার ধারা শিথিল করা। আগে নন-লাইফ বিমা কোম্পানিগুলোকে সরকারি সম্পদের বিমা বাধ্যতামূলকভাবে এই এসবিসিতে দিতে হতো; কিন্তু নতুন প্রস্তাবে সে বাধ্যবাধকতা আর থাকছে না। ফলে সরকারি সম্পদের নিয়ন্ত্রণ সীমিত হবে, আর বেসরকারি কোম্পানির সুযোগ বাড়বে।’

ইতিমধ্যে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. এম আসলাম আলম স্বাক্ষরিত এই খসড়ায় কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। এরপর থেকেই এ নিয়ে নানা গুঞ্জন, ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

তবে বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, ‘বীমা করপোরেশন আইন ২০২৯’ সংশোধন প্রস্তাবটি কার্যকর হলে সরকারি সম্পদের বিমা টাকা বেসরকারি কোম্পানির হাত ধরে পুনর্বিমার নামে বিদেশে পাচার হয়ে যেতে পারে। একই সঙ্গে এসবিসি অনিবার্যভাবে রাজস্ব থেকেও বঞ্চিত হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান সাধারণ বীমা করপোরেশনের (এসবিসি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগে সরকারি সম্পদ সুরক্ষার চিন্তা করে আইনটি করা হয়েছিল। এখন সরকারের নির্বাচনের আগে তড়িঘড়ি করে আইন সংশোধন করা উচিত হয়নি। তিনি আরও বলেন, দেশের বেসরকারি বিমা কোম্পানিগুলো পর্যাপ্ত নিয়ন্ত্রণে নেই। তারা অসুস্থ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত এবং বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে প্রিমিয়ামের টাকা অপচয় করছে। এ ছাড়া, আইডিআরএর নির্ধারিত সলভেন্সি মার্জিনও নেই, যা ঝুঁকি পরিমাপের ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করছে।

অন্যদিকে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) একজন সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি বলেন, খসড়া প্রস্তাবটি স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত করা উচিত। নতুবা হঠাৎ প্রস্তাব কার্যকর করা বিমা খাতের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।

বর্তমান আইন অনুযায়ী, দেশে নিবন্ধিত নন-লাইফ বিমা কোম্পানিগুলো পুনর্বিমাযোগ্য প্রিমিয়ারের ৫০ শতাংশ বাধ্যতামূলক এসবিসিতে দিতে হয়। কিন্তু নতুন খসড়ায় এ ধারা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে সরকারি সম্পদের বিমা আয়ের ভাগবণ্টনেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। বর্তমানে সরকারি সম্পত্তির বিমা থেকে আয়ের ৫০ শতাংশ সমভাবে নন-লাইফ বিমা কোম্পানির মধ্যে বণ্টিত হয়। নতুন খসড়ায় প্রস্তাব করা হয়েছে, যদি কোনো দাবি ওঠে, তা সংশ্লিষ্ট বেসরকারি কোম্পানি নিজেই মেটাবে।

সরকার ১০০ শতাংশ এসবিসির মাধ্যমে বিমা করানোর বাধ্যবাধকতাও কিছু ক্ষেত্রে শিথিল করতে পারবে। যেমন পরীক্ষামূলক বিমা পরিকল্পনা বা বিদেশি অর্থায়নসংশ্লিষ্ট প্রকল্পে আন্তর্জাতিক মানের ক্রেডিট রেটিংযুক্ত বিমাকারী নির্বাচন। খসড়ার ১৬ ধারায় স্পষ্ট করা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অর্থায়নের ক্ষেত্রে এ ধারা বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি করলে প্রকল্প বাস্তবায়নে সমস্যা হতে পারে।

প্রস্তাব প্রকাশের পর এসবিসি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিক্ষোভ ও মানবন্ধনের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, ‘বেসরকারি খাতের সুবিধা করতে বাধ্যতামূলক পুনর্বিমার ধারা বাদ দেওয়া হচ্ছে। এতে রাষ্ট্রীয় করপোরেশন দুর্বল হবে এবং রাজস্ব হারাবে।’ তারা চাচ্ছেন, ২০১৯ সালের সংশোধনী স্থগিত, নীতি-সহায়তা বৃদ্ধি ও জনবল কাঠামোর পুনর্বিন্যাস।

আইডিআরএর পরামর্শক সাইফুন্নাহার সুমি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এসবিসি একমাত্র পুনর্বিমাকারী হওয়ায় দাবি নিষ্পত্তিতে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এখনো ২০২০ সালের ফাইল নিয়ে কাজ চলছে। বাধ্যতামূলক পুনর্বিমাকে ঐচ্ছিক করলে অচলাবস্থা দূর হবে। একই সঙ্গে সরকারি সম্পত্তির সংজ্ঞা স্পষ্ট করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—হুমকির ৩ দিন পরেই বাবলাকে হত্যা

২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন

সরকারি ছুটি ২৮ দিন, ১১ দিনই শুক্র-শনিবার

‘চিটাংঅর মইদ্যে সরোয়াইজ্জা মরিব’— ফোনে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের চেলা রায়হানের হুমকি

পরকীয়ার জেরে পুলিশ সদস্য হত্যা মামলায় পুলিশ দম্পতির ফাঁসি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে পরমাণু প্রযুক্তির ব্যবহার: কৌশল ও সম্ভাবনা নিয়ে পরমাণু কমিশনে সভা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

‘দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে পরমাণু শক্তি ও প্রযুক্তির শান্তিপূর্ণ প্রয়োগ-প্রসারের গুরুত্ব, সম্ভাবনা ও কৌশল’ নির্ধারণ নিয়ে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৫ নভেম্বর) বেলা ৩টায় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে এই গুরুত্বপূর্ণ সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আনোয়ার হোসেন। সভায় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দও অংশ নেন।

দেশবরেণ্য পরমাণু বিজ্ঞানীরা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে পরমাণু শক্তি ও প্রযুক্তির শান্তিপূর্ণ প্রয়োগের সম্ভাবনা ও কৌশল নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত ব্যক্ত করেন। তাঁরা দেশের ভবিষ্যৎ পরমাণু কৌশল ও নীতিনির্ধারণে দিকনির্দেশনামূলক আলোচনা করেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান ড. মো. মজিবুর রহমান, বর্তমান সদস্য (ভৌত বিজ্ঞান) ড. দেবাশীষ পাল।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আনোয়ার হোসেন মতবিনিময় সভায় দেশে জনকল্যাণে পরমাণু প্রযুক্তির প্রসার এবং একটি টেকসই পরমাণু কৌশল ও নীতিনির্ধারণে সার্বিক সহায়তার আশ্বাস প্রদান করেন।

কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মো. মজিবুর রহমান মতবিনিময় সভায় উপস্থিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যানসহ সদস্যদের প্রাণবন্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ ও দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে পরমাণু প্রযুক্তি ব্যবহারের কৌশল নির্ধারণে দিকনির্দেশনা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—হুমকির ৩ দিন পরেই বাবলাকে হত্যা

২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন

সরকারি ছুটি ২৮ দিন, ১১ দিনই শুক্র-শনিবার

‘চিটাংঅর মইদ্যে সরোয়াইজ্জা মরিব’— ফোনে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের চেলা রায়হানের হুমকি

পরকীয়ার জেরে পুলিশ সদস্য হত্যা মামলায় পুলিশ দম্পতির ফাঁসি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত