Ajker Patrika

রেমিট্যান্সে নতুন রেকর্ড, ১০ মাসে ২৫ বিলিয়ন ডলার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৩ মে ২০২৫, ০০: ০২
রেমিট্যান্সে নতুন রেকর্ড, ১০ মাসে ২৫ বিলিয়ন ডলার

দেশে রেমিট্যান্স আসায় নতুন রেকর্ড হয়েছে। সর্বশেষ ১০ মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। মূলত রেমিট্যান্স বাড়ার লক্ষ্যে হুন্ডি বন্ধ করাসহ নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়ায় রেমিট্যান্সপ্রবাহে একের পর এক রেকর্ড সৃষ্টি হচ্ছে।

চলতি অর্থবছরেই একক মাস হিসাবে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে। যার প্রভাবে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ১১ মে পর্যন্ত ২৫ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। আর গত অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ১৯ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার। সেই হিসাবে এই অর্থবছরে প্রবাসীরা সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২৭ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার। তার আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন ২১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১ দশমিক ০৩ বিলিয়ন ডলার।

থিংকট্যাংক ‘উন্নয়ন অন্বেষণের’ চেয়ারপারসন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা বেড়েছে বলেই রেমিট্যান্স বাড়ছে। মানুষ যখন সরকারের ওপর আস্থা রাখতে পারেন, তখন তাঁরা তাঁদের কষ্টার্জিত টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠিয়ে শান্তি পান। তাই সরকার স্থিতিশীল হলে রেমিট্যান্স আসা বাড়বে। আর ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্স আনতে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করায় বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসা বাড়ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে, দেশের ইতিহাসে একক মাস বিবেচনায় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল চলতি বছরের মার্চে। ওই মাসে দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল রেকর্ড ৩২৯ কোটি ৫৬ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। ঈদের পর এপ্রিলে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ২৭৫ কোটি ১৯ লাখ ৪০ হাজার ডলার; মাসের হিসাবে যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সের রেকর্ড।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে সৌদি আরব থেকে। এরপর শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় রয়েছে—সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য (ইউকে), মালয়েশিয়া, কুয়েত, ইতালি, ওমান, সিঙ্গাপুর ও কাতার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক পদক্ষেপ নেওয়ায় হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। পাশাপাশি এখন বৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে ডলারের বিনিময় হার তুলনামূলক বেশি হওয়ায় প্রবাসীরা ঝুঁকি নিয়ে অবৈধ পথে টাকা পাঠাতে আগ্রহী হচ্ছেন না। আর আগে ঘোষিত ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনা এখনো চালু। ফলে হুন্ডি ও অর্থ পাচার কমার পাশাপাশি বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়ছে। এ ছাড়া সরকারের পালাবদলে দেশ থেকে অর্থ পাচার কমেছে। আর পাচারকারীরা হুন্ডির আশ্রয় নিতেন। সে জন্য পাচার কমায় হুন্ডিও কমেছে। আর হুন্ডি কমায় রেমিট্যান্স বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য থেকে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে ছিল ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ এবং অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার।

এরপর গত নভেম্বরে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি, মার্চে ৩২৯ কোটি এবং সবশেষ এপ্রিলে ২৭৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রেমিট্যান্স বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একের পর এক পদক্ষেপ নেয়। পাশাপাশি সরকার নীতিগত সহায়তা এবং প্রবাসীদের মধ্যে ইতিবাচক প্রচারণা চালায়। গত বছর সরকার বদলে হুন্ডি কারবারিদের দৌরাত্ম্য কমায় রেমিট্যান্সপ্রবাহ বেড়েছে। এ ছাড়া প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ইতিবাচক খবর প্রবাসীদের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করেছে। এসব কারণে প্রবাসীরা বৈধ পথে রেমিট্যান্স বেড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তোরা যারা রাজাকার, সময় থাকতে বাংলা ছাড়: ফেসবুকে বাকের মজুমদার

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

যুক্তরাষ্ট্র-চীন সমঝোতায় এক দিনে ১০০ ডলার কমল সোনার দাম

যুদ্ধ বলিউডের সিনেমা নয়: ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান

কঠোর হচ্ছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতি, স্থায়ী বসবাসের আবেদনে অপেক্ষা ১০ বছর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত