Ajker Patrika

চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৭ জুন ২০২৪, ১৯: ৪৬
চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য

এখনো চড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার। চাল, ডাল, ডিম, আলু ও পেঁয়াজের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলো আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া দেশে উৎপাদিত এবং আমদানিনির্ভর সব ধরনের পণ্যের দামই বাড়তি। ফলে বাজারে গিয়ে ফর্দ মিলিয়ে সওদাপাতি কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। 

আজ শুক্রবার রাজধানীর রামপুরা, শান্তিনগর ও বাড্ডা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ৮৫ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। পণ্যটির দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে ৪ জুন থেকে দেশে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। তবে বাজারে পেঁয়াজের দাম কমার বদলে উল্টো বেড়েছে। বিভিন্ন বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৯৫-১০০ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ৮০-৮৫ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত। আর গত বছর এই সময়ে পেঁয়াজের দাম ছিল ৬০-৭৫ টাকা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২০-২৫ টাকা। 

রামপুরা বাজারের বিক্রেতা আবদুল আলীম বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম আড়ত থেকেই বেশি পড়তেছে। শুনছি গুদাম গেটেই দাম ৭০-৮০। এ বছর পেঁয়াজের দাম আর কমব না।’

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘মূলত ঈদকে সামনে রেখে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হচ্ছে। যে কারণে আমদানি করেও দামের লাগাম টানা যাচ্ছে না। তা ছাড়া যেখানে খোদ মন্ত্রী বলেন, রোজার পর থেকে বাজার স্থিতিশীল রয়েছে, কোনো পণ্যের দাম বাড়ার তথ্য তাঁদের কাছে নেই। সেখানে পণ্যের দাম কমবে কীভাবে?’ 

আজকের বাজারে প্রতি ডজন ফার্মের লাল ডিম ১৬০ টাকা, হালি ৫৫ টাকা এবং প্রতিটি ১৪-১৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। আলু বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬০-৬৫ টাকায়। নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্য দুই পণ্য চাল ও ডালেরও দামও সামান্য বেড়েছে। মোটা স্বর্ণা চাল সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২-৪ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৪-৫৮ টাকায়। আর সরু মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা কেজিতে। অন্যদিকে মসুর ডাল মানভেদে ১০৫ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। 

রাজধানীর শান্তিনগর বাজারে সাপ্তাহিক সওদাপাতি কিনতে আসা শাহনাজ আক্তার বলেন, ‘এক কেজি চাল, ডাল, আলু আর এক ডজন ডিম কিনতেই ৪০০ টাকা শেষ। এর সঙ্গে যদি পেঁয়াজ, সবজি আর অন্যান্য প্রয়োজনীয় মসলা কিনতে যাই, তাহলে হাজার টাকার নিচে পারা যাচ্ছে না।’ 

সবজির বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁপে, বেগুন ও করলার দাম সামান্য কমেছে। শুক্রবার পেঁপে ৫০-৫৫ টাকা, বেগুন ৬০-৮০ আর করলা ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ ছাড়া চিচিঙ্গা, ঝিঙে, ঢ্যাঁড়স ৫৫-৬৫ টাকা, কচুরমুখী, বরবটি ও টমেটো কেজিপ্রতি ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। 

মাংসের বাজারেও নেই কোনো সুখবর। সপ্তাহের মাঝামাঝি ব্রয়লার মুরগির সামান্য কমলেও সপ্তাহান্তে এসে তা আবার বেড়েছে। আজ প্রতি কেজি ব্রয়লার ২০০-২১০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। গরুর মাংসও ৭৫০-৮০০ টাকা কেজিতে স্থির রয়েছে। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০-১২০০ টাকা কেজিতে। 

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নাগালের মধ্যে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে মনে করেন ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘দাম একবার বেড়ে গেলে সেটা আর কমে না। এখন সরকারের উচিত সাধারণ মানুষের আয় কীভাবে বাড়ানো যায়, সেটা ভাবা। তাহলে নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নগদে ক্যাডেট কলেজের ভর্তি আবেদন ফি চার্জ ফ্রি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশের সব ক্যাডেট কলেজে ভর্তি আবেদন ফি সহজেই দেওয়া যাচ্ছে ডাক বিভাগের মোবাইল আর্থিক সেবা ‘নগদ’-এর মাধ্যমে। বরাবরের মতো এবারও এ ক্ষেত্রে কোনো বাড়তি খরচ প্রয়োজন হবে না।

বর্তমানে বাংলাদেশে ১২টি ক্যাডেট কলেজ রয়েছে, যার মধ্যে ৯টি ছেলেদের ও তিনটি মেয়েদের জন্য। ইতিমধ্যে এসব ক্যাডেট কলেজের ভর্তি আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই প্রক্রিয়া চলবে আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

সব ক্যাডেট কলেজে যেকোনো আবেদনকারী নগদের মাধ্যমে ভর্তি আবেদন ফি দিতে পারবে কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই। তা ছাড়া নগদের এই ভর্তি ফির চার্জবিহীন পেমেন্ট সুবিধার ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য ভর্তিপ্রক্রিয়া এখন আরও সহজ ও সাশ্রয়ী হয়েছে।

আবেদনকারী বা অভিভাবকেরা ক্যাডেট কলেজের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট

অথবা https://cadetcollegeadmission.army.mil.bd/ -এ গিয়ে অনলাইনে আবেদন সম্পন্ন

করে ফি পরিশোধ করতে পারবে।

‘Apply Now/Sign Up’-এ ক্লিক করে নাম, মোবাইল নম্বর, পাসওয়ার্ড, ই-মেইল অ্যাড্রেস, জন্মতারিখসহ প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে। এরপর ‘User ID’ ও ‘Password’ দিয়ে লগইন করে ‘Payment’ অপশন থেকে ‘Nagad’ নির্বাচন করে দুই হাজার টাকা আবেদন ফি তাৎক্ষণিক পরিশোধ করা যাবে। নগদ ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে এই ফি প্রদানে কোনো সার্ভিস চার্জ বা ট্রানজেকশন ফি প্রযোজ্য হবে না। পেমেন্ট সফলভাবে সম্পন্ন হলে আবেদনকারীর মোবাইলে সঙ্গে সঙ্গে একটি এসএমএস নিশ্চিতকরণ বার্তা পাঠানো হবে।

ক্যাডেট কলেজ ভর্তি ফি সম্পূর্ণ চার্জমুক্ত করার বিষয়ে নগদের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার মোহাম্মদ শাহীন সরওয়ার ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা নগদের মাধ্যমে ক্যাডেট কলেজে ভর্তি ফি প্রদান সম্পূর্ণ চার্জমুক্ত করেছি, যাতে সারা দেশের যেকোনো স্থান থেকে অভিভাবকেরা সহজে, দ্রুত ও সবচেয়ে কম খরচে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারে। শিক্ষাসংক্রান্ত যেকোনো ডিজিটাল পেমেন্ট আরও সহজ করতে নগদ বরাবরই কাজ করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত রাখবে।’

দেশের অন্যতম জনপ্রিয় মোবাইল আর্থিক সেবা নগদের মাধ্যমে বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভর্তি ও টিউশন ফি দিচ্ছে। এই সুবিধা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য দ্রুত, নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য পেমেন্ট সলিউশন হিসেবে কাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭ হাজার ১৫০ কোটি টাকার ১২ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১৯: ৪২
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস আজ ঢাকায় পরিকল্পনা কমিশনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের পঞ্চম একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন। ছবি: পিআইডি
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস আজ ঢাকায় পরিকল্পনা কমিশনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের পঞ্চম একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন। ছবি: পিআইডি

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৭ হাজার ১৫০ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর সম্পূর্ণ ব্যয় সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে সংস্থান করা হবে।

আজ সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে নতুন প্রকল্প আটটি, সংশোধিত প্রকল্প দুটি এবং ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া মেয়াদ বৃদ্ধির দুটি প্রকল্প রয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

অনুমোদিত ১২টি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প, যার মধ্যে রয়েছে ‘মানিকগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প এবং ‘সাতক্ষীরা জেলা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প—‘কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার হাওর এলাকার ক্ষুদ্র সেচ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন’ (তৃতীয় সংশোধন)। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প—‘গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ এবং ‘চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে একটি করে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন’ (দ্বিতীয় সংশোধিত)।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প—‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ’ (তৃতীয় পর্যায়) (প্রথম সংশোধিত)। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রকল্প—‘সমাপ্ত চতুর্থ সেক্টর কর্মসূচির অত্যাবশ্যকীয় পরিবার পরিকল্পনা, মা, শিশু ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার অসমাপ্ত কার্যাবলি বাস্তবায়ন’ প্রকল্প, ‘স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তর, নিপোর্ট এবং নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের কার্যক্রম ব্যবস্থাপনায় সমন্বিত উন্নয়ন’ এবং ‘পিএফডি, এইচইএফ, আইএফএম, এইচআরডি এবং এসডব্লিউপিএমএমের অত্যাবশ্যকীয় অসমাপ্ত কার্যক্রম বাস্তবায়ন’ প্রকল্প।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প—‘ঢাকা সেনানিবাসে নির্ঝর আবাসিক এলাকায় ‘বি’ টাইপ অফিসার্স বাসস্থান নির্মাণ’। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প—‘নড়াইল-কালিয়া জেলা মহাসড়কের ২১তম কিলোমিটারে কালিয়া নামের স্থানে নবগঙ্গা নদীর ওপর কালিয়া সেতু নির্মাণের (দ্বিতীয় সংশোধিত) চতুর্থবার মেয়াদ বৃদ্ধি’। শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প—‘বিসিক শিল্পপার্ক, টাঙ্গাইল’ (তৃতীয় সংশোধিত)।

সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ; অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ; আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল; স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী; শিল্প এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান; স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমসহ সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা ও কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভ্যাট রিফান্ড এখন থেকে অনলাইনে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রধান কার্যালয়, আগারগাঁও, ঢাকা। ফাইল ছবি
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রধান কার্যালয়, আগারগাঁও, ঢাকা। ফাইল ছবি

ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির পর অনলাইনে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ফেরত বা ভ্যাট রিফান্ড প্রক্রিয়া চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। গতকাল রোববার (৯ নভেম্বর) এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।

এনবিআর জানায়, করদাতারা এখন থেকে অনলাইনে ভ্যাট রিফান্ডের আবেদন দাখিল, যাচাই-বাছাই ও অনুমোদন সম্পন্ন করে সরাসরি ব্যাংক হিসাবে রিফান্ডের অর্থ পেতে পারবেন। এ জন্য অনলাইন ভ্যাট রিফান্ড মডিউল চালু করা হয়েছে।

এনবিআরের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিদ্যমান ইন্টিগ্রেটেড ভ্যাট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেমের (আইভাস) সঙ্গে অর্থ বিভাগের আইবাস প্লাস প্লাস (iBAS‍+‍+) সিস্টেমের আন্তসংযোগ স্থাপন করা হবে। এতে বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার নেটওয়ার্কের (বিইএফটিএন) মাধ্যমে রিফান্ডের অর্থ সরাসরি করদাতার নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে জমা হবে।

এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আল আমিন শেখ বলেন, অনলাইন ভ্যাট রিফান্ড মডিউলের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের লক্ষ্যে সব কার্যক্রম ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ অটোমেশনের আওতায় আনা হচ্ছে।

অনলাইন রিফান্ড প্রক্রিয়া

নতুন মডিউলের মাধ্যমে করদাতারা অনলাইনে মূসক রিটার্ন দাখিলের সময় রিফান্ডের আবেদন করতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট মূসক কমিশনারেট আবেদন যাচাই-বাছাই করে অনুমোদনের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে অর্থ স্থানান্তর করবে।

এতে রিফান্ডের আবেদন বা চেক গ্রহণের জন্য করদাতাকে আর ভ্যাট অফিসে যেতে হবে না। ফলে সময় ও ব্যয় সাশ্রয় হবে এবং প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

এরই মধ্যে অনিষ্পন্ন রিফান্ড আবেদনকারীদের নতুন মডিউলে মূসক-৯.১ ফরমের মাধ্যমে পুনরায় অনলাইনে আবেদন দাখিল করতে হবে বলে জানিয়েছে এনবিআর।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য ভ্যাট কমিশনারেট পর্যায়ে প্রশিক্ষণ আয়োজন করা হয়েছে। করদাতারা প্রয়োজনে স্থানীয় কমিশনারেটে যোগাযোগ করে অনলাইন রিফান্ড প্রক্রিয়া সম্পর্কে সহায়তা নিতে পারবেন।

গত আগস্টে এক অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, ভ্যাট রিটার্ন প্রক্রিয়া পুরোপুরি অটোমেশনে চলে যাবে। কাগজে রিটার্ন নেওয়া হবে না।

যখন কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান কাঁচামাল বা সেবা কেনে, তখন ইনপুট ভ্যাট দেয়। আবার সেই পণ্য বা সেবা বিক্রি করলে গ্রাহকের কাছ থেকে আউটপুট ভ্যাট নেয়। যদি ইনপুট ভ্যাটের পরিমাণ আউটপুট ভ্যাটের চেয়ে বেশি হয়, তখন অতিরিক্ত ভ্যাট রিফান্ড হিসেবে দাবি করতে পারে। তবে এত দিন এই ভ্যাট রিফান্ড না পাওয়ার অভিযোগ করতেন ব্যবসায়ীরা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে বিভিন্ন বৈঠকে ভ্যাট রিফান্ডের দাবিও তুলতেন তাঁরা।

ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির পর অনলাইনে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ফেরত বা ভ্যাট রিফান্ড প্রক্রিয়া চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ()। গতকাল রোববার (৯ নভেম্বর) এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এক বছরের ব্যবধানে কলমানি বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ২৭
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা

এক বছরের ব্যবধানে (অক্টোবর থেকে অক্টোবর) দেশের ব্যাংকগুলোর স্বল্পকালীন (কলমানি) ঋণ বিপুল হারে বেড়েছে। চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত কলমানি ঋণ প্রায় দ্বিগুণ বা ৬৩ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা বেড়েছে। এর মধ্যে এক দিনের জন্য ওভারনাইট ধার বেড়েছে ৪৯ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা আর আন্তব্যাংক রেপোতে ধার বেড়েছে ৫৮ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা। গতকাল রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অক্টোবর মাসে কলমানিতে এক দিন থেকে এক বছরের কম সময়ের জন্য ব্যাংকগুলো ধার করেছে ১ লাখ ৪৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা; যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৮০ হাজার ২৩ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কলমানিতে ধার বেড়েছে ৬৩ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে এক দিনের জন্য ওভারনাইটে ধার ছিল ১ লাখ ২১ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা, যা তার আগের বছরের অক্টোবরে ছিল ৭২ হাজার ৫৬ কোটি টাকা। সে হিসাবে ওভারনাইট ধার বেড়েছে ৪৯ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, পলিসি রেট (নীতি সুদহার) বাড়ার প্রভাব কলমানি মার্কেটে পড়েছে। এখন ঋণের খরচ বেড়েছে। অনেক ব্যাংক নগদ টাকার চাপ সামলাতে চড়া সুদে ঋণ করে ব্যাংকিং কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেছে। ফলে বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অক্টোবরে ২ থেকে ১৪ দিনের জন্য শর্ট নোটিশে ধারের পরিমাণ ছিল ১৯ হাজার ৪৬৩ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ১২ হাজার ৯২২ কোটি টাকা। একইভাবে ১৫ দিন থেকে এক বছরের কম সময়ের জন্য টার্ম কল ঋণ গত অক্টোবরে ছিল ১ হাজার ৮২০ কোটি টাকা, যা ২০২৪ সালের অক্টোবরে ছিল ১ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ঋণ বেড়েছে ৩৯৪ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরি বলেন, বর্তমানে ব্যাংক খাতে নগদ টাকার ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের সংকট রয়েছে। ডলারের দাম বাড়ায় ব্যাংকে তারল্যসংকট দেখা দিয়েছে। তারল্যসংকটের মোকাবিলা করতে এক ব্যাংক অন্য ব্যাংক থেকে চড়া সুদেও টাকা ধার নিচ্ছে। কারণ বাজারে খুব বেশি তারল্য নেই। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকও রেপোর নিলাম কমিয়ে দিয়েছে। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো খুব বেশি টাকা ধার করতে পারছে। সব মিলিয়ে কলমানি বাজারে চড়া সুদে যেসব ব্যাংক টাকা ধার নিয়েছে তারা ধার পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে। কিন্তু কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে কলমানিতে সুদহার বেশি হলেও নিরুপায় হয়ে কলমানিতে লেনদেন করে অস্বস্তিতে পড়েছে ব্যাংকগুলো।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত অক্টোবরে কলমানির মধ্যে ওভারনাইটের গড় সুদহার (ডব্লিইএআর) ছিল ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ, শর্ট নোটিশের গড় সুদহার ছিল ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং টার্ম কলে সুদহার ছিল ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ। আর আন্তব্যাংক রেপোতে সুদের গড় হার ছিল ৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ। আর চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অক্টোবর মাসে আন্তব্যাংক লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৭১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৩ হাজার ৩২ কোটি টাকা। সে হিসাবে আন্তব্যাংক লেনদেন বেড়েছে ৫৮ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি দুর্বল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, এখন কিছু ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে। তবে অন্য ব্যাংকগুলো দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে, তারাই ধার নিচ্ছে। এখন যেসব ব্যাংকের ধার প্রয়োজন, তাদের বেশির ভাগেরই পর্যাপ্ত জামানত নেই। তারা কলমানির ধারের টাকায় ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, ডলারের দর বেড়েছে, এতে টাকার মূল্য হ্রাস পেয়েছে। যে কারণে কিছু ব্যাংক তারল্যসংকটে পড়েছে। দুর্বল ব্যাংকগুলো তারল্যসুবিধা নিচ্ছে, স্বাভাবিক চাহিদা পূরণ করতে কলমানিতে ধার করছে। চাহিদা বাড়লে ধার বাড়ে, আবার চাহিদা কমলে ধার কমে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত