শাহ আলম খান, ঢাকা

দেশের ভেঙে পড়া অর্থনীতি সামলাতে মাত্র কয়েক মাস সময় পেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। দু-একটি খাতে কিছুটা স্থিতিশীলতা এসেছে। গন্তব্য তাই এখনো অনেক দূর। কঠিন কাজটি করতে সামনে আছে নানা চ্যালেঞ্জ।
সেই বাস্তবতা মেনে নিয়ে আর মনে করিয়ে দিয়ে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য বাজেট দিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। গতকাল সোমবার তিনি ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন। টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেছেন, ‘বৈষম্যহীন ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ার প্রত্যয় নিয়ে আমরা এগোচ্ছি।’
এই একটি মন্তব্যেই যেন উঠে আসে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় চিত্র—কীভাবে এক গভীর সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই চলছে, আর কেন এই যাত্রাপথ এখনো দীর্ঘ।
তবে এই কঠিন বাস্তবতা মোকাবিলায় অর্থ উপদেষ্টা বাজেট যেভাবে সাজালেন, তার খুব প্রশংসা করতে পারছেন না অর্থনীতিবিদ, বিশ্লেষক এবং রাজনৈতিক দলগুলো। তারা বলছে, এই বাজেট যেন আগের সরকারেরই ধারাবাহিকতা। এতে সেই অর্থে পরিবর্তন আছে খুবই সামান্য। শুধু এই খাতে কিছু কম, ওই খাতে কিছু বেশি।
তবে বাজেট বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, সংকটের দিকগুলোতে সরকারের চোখ খোলা আছে। তিনি জানান, সরকার কাজ করছে তিনটি ‘শূন্য’ লক্ষ্য নিয়ে—শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য কার্বন। লক্ষ্য—এমন একটি সমাজ গড়া, যেখানে সবাই সুন্দর জীবন পাবে এবং বৈষম্য থেকে মুক্ত থাকবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
তবে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বাজেটের রাজস্ব পদক্ষেপকে ‘সাহসী’ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর মতে, এবার আয়কর অব্যাহতির ক্ষেত্রে যাদের সাধারণত ধরা যায় না, তাদেরও করের আওতায় আনার চেষ্টা করা হয়েছে। ভ্যাট অব্যাহতিও ব্যাপকভাবে কমানো হয়েছে। অন্যদিকে, দেশীয় শিল্পের সুরক্ষার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আমদানি প্রতিযোগিতা মোকাবিলায় যেভাবে উদ্যোক্তারা আগে শুল্ক-ভ্যাটের মাধ্যমে সুরক্ষা পেতেন, তা-ও কমানো হয়েছে। ফলে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে সরকার কিছু কঠিন কিন্তু স্পষ্ট পদক্ষেপ নিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, দেশের উদ্যোক্তারা এসব পরিবর্তনে কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখান।
সবকিছু মিলিয়ে এখনো পক্ষাঘাতগ্রস্তই বলা যায় দেশের অর্থনীতিকে। সরকারের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার জায়গা এখনো মূল্যস্ফীতি; যা কিছুটা কমলেও নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক চাপ আর বাজারভিত্তিক ডলার বিনিময় হারের প্রভাব নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন অনিশ্চয়তা।
রেমিট্যান্স ছাড়া প্রায় সব অর্থনৈতিক সূচকই দুর্বল। কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না, বিনিয়োগে নেই আস্থা। আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতিও অনুকূল নয়। সাধারণ মানুষের আয় বাড়ছে না, অথচ ব্যয় লাগামহীন। দেশের ৮০ শতাংশ সম্পদ মাত্র ১০ শতাংশ মানুষের হাতে। ফলে প্রবৃদ্ধির সুফলও পৌঁছায় না সবার কাছে। আর এখন তো সেই প্রবৃদ্ধিও নিম্নমুখী।
চলমান বাস্তবতার প্রতিফলনেই এবারের বাজেট কিছুটা ভিন্ন ধাঁচের। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রস্তাবিত বাজেট আগের বছরের তুলনায় ছোট; এবং প্রবৃদ্ধি নয়, এবার জোর দেওয়া হয়েছে মানুষের সামগ্রিক কল্যাণে। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব—জীবিকার নিরাপত্তা, শিক্ষা-স্বাস্থ্য, সুশাসন, কর্মসংস্থান ও নাগরিক সুবিধা—এই বাজেটের কেন্দ্রে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, জলবায়ু পরিবর্তন এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ-সুযোগ সামাল দেওয়ার প্রস্তুতির কথাও এসেছে বাজেটে। পাশাপাশি জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং ভেঙে পড়া নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কারকেই দেওয়া হয়েছে অগ্রাধিকার।
তাই এবারের বাজেট শুধু আয়-ব্যয়ের হিসাব নয়, বরং এটি সরকারের জন্য একধরনের কৌশলগত রূপরেখা। মূল লক্ষ্য—সংযমী ব্যয়, কাঠামোগত সংস্কার এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। সরকার চাইছে সাম্প্রতিক চাপ মোকাবিলা করে, আইএমএফের প্রতিশ্রুতি পালন করে এবং দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার চালিয়ে একটি টেকসই ও স্থিতিশীল ভবিষ্যতের ভিত্তি তৈরি করতে।
এটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম এবং দেশের ৫৫তম বাজেট। ৮৮ পৃষ্ঠার বক্তব্যে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার ব্যয় পরিকল্পনার মাধ্যমে সংকটময় অর্থনীতি থেকে উত্তরণ এবং জনজীবনে স্বস্তি ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে তিনি ব্যবসা এবং সাধারণ মানুষের ওপর বাড়তি চাপের ইঙ্গিতও দিয়েছেন। মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য থাকলেও তার বাস্তবায়ন কৌশল ছিল খুবই সাধারণ ও পুরোনো ধারার। আয় বাড়াতে গ্রামীণ কর্মসংস্থানের কথা বলা হলেও সার্বিক কর্মসংস্থান বা বিনিয়োগে গতি আনতে বড় কোনো কর্মসূচি দেওয়া হয়নি। করমুক্ত আয়সীমাও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে ভবিষ্যৎ সরকারের বিবেচনায় ছেড়ে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মাদ আবদুল মজিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিশেষ সময়ে বিশেষ সরকার বিশেষ বাজেট দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের নিজস্ব কোনো অ্যাজেন্ডা নেই। এ জন্য তারা অসুস্থ অর্থনীতিকে সুস্থ ধারায় ফেরাতে বাজেট দিয়েছে।
কালোটাকা ও অপ্রদর্শিত অর্থের বিষয়ে হঠাৎ কড়া অবস্থানের আভাস মিললেও বাজেটে আগের মতোই আবাসনসহ কয়েকটি খাতে এসব অর্থ ব্যবহারের সুযোগ বহাল রাখা হয়েছে। স্বচ্ছতা নিশ্চিতে জমি-ফ্ল্যাটের নিবন্ধন বাজারমূল্য অনুযায়ী নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয়া হলেও এতে করহার কমানোর কথা বলা হয়েছে, যা খাতটিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং কালোটাকার প্রবাহ বাড়াবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অন্যদিকে, বাজেটে ঘাটতি ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা বা জিডিপির ৩.৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে, যার বড় অংশ ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা—তোলা হবে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে। এর মধ্যে ব্যাংক খাত থেকেই নেওয়া হবে ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা। এতে বিনিয়োগ সংকোচন ও সুদহার বৃদ্ধির ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। পাশাপাশি বৈদেশিক ঋণনির্ভরতা অব্যাহত থাকায় বছরে সুদ-আসলে সরকারের ব্যয় দাঁড়াবে প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকা।
বাজেট ছোট করা হলেও সরকারের পরিচালন ব্যয় আগের তুলনায় বেড়েছে। পরিচালন ব্যয়ের ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে সামাজিক সুরক্ষা ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা, সুদ পরিশোধ খাতে ১ লাখ ২২ হাজার কোটি, ভর্তুকি ৮৯ হাজার ১৬২ কোটি, বেতন-ভাতায় ৯৭ হাজার কোটি এবং অন্যান্য খাতে ১ লাখ ৩৫ হাজার ১০৭ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা।
বাজেটে মানবসম্পদ উন্নয়ন ও তরুণ উদ্যোক্তা তৈরিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সফল যুব উদ্যোক্তাদের ঋণসীমা বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, পাশাপাশি তরুণদের জন্য প্রথমবারের মতো ১০০ কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠনের প্রস্তাব এসেছে। একই উদ্দেশ্যে ‘তারুণ্যের উৎসব’ আয়োজনে আরও ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের জন্য আত্মকর্মসংস্থান প্রকল্পসহ ৪০৫ কোটি টাকার আলাদা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিজ্ঞানভিত্তিক ও কর্মমুখী শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষায় ৩৫ হাজার ৪০৩ কোটি, মাধ্যমিক-উচ্চশিক্ষায় ৪৭ হাজার ৫৬৩ কোটি এবং কারিগরি ও মাদ্রাসাশিক্ষায় ১২ হাজার ৬৭৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে ৪১ হাজার ৯০৮ কোটি এবং কৃষি ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। দরিদ্রদের স্বাস্থ্যসেবা, টিকাদান ও সামাজিক সুরক্ষা জোরদারেও বরাদ্দ বেড়েছে।
সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় ভাতার পরিমাণ এবং উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছে। বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ বিভিন্ন ভাতা মাসিক ৫০-১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে মাথাপিছু সহায়তা বাড়ানো হয়েছে। স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডের আওতায় ৫৭ লাখ পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মেয়াদ ছয় মাসে উন্নীত করারও প্রস্তাব রয়েছে।
বিদেশি বিনিয়োগে গতি আনতে বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি থেকে প্রকৃত বিনিয়োগে রূপান্তরের জন্য একটি ট্র্যাকিং সিস্টেম চালুর কথা বলা হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) প্রকল্প বাস্তবায়নে ৫ হাজার ৪০ কোটি টাকার বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া শুল্ককাঠামোয় পরিবর্তন এনে স্থানীয় শিল্প সুরক্ষা ও আমদানিনির্ভর পণ্যের ওপর নির্ভরতা কমানোর উদ্যোগ থাকলেও এতে কিছু গোষ্ঠীর সুবিধা এবং বাজারে মূল্য অস্থিরতার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সিপিডির মতে, বাজেটটি অন্তর্বর্তী এবং সংযত ধারায় প্রণয়ন করা হলেও বাস্তবায়ন নির্ভর করবে অর্থনীতির গতি ও প্রবৃদ্ধির বাস্তবতায়।
যেসব খাতে করের চাপ বাড়ছে
কর আদায়ে চাপ বাড়ানো হয়েছে বিভিন্ন খাতে। ‘এম এস প্রোডাক্ট’ উৎপাদনে সুনির্দিষ্ট কর প্রায় ২০% বাড়ানো হয়েছে। নির্মাণসেবায় ভ্যাট ৭.৫% থেকে বাড়িয়ে ১০%, অনলাইন পণ্য বিক্রয়ের কমিশনে ভ্যাট ৫% থেকে ১৫%, কটন সুতা ও কৃত্রিম আঁশের ইয়ার্ন উৎপাদনে সুনির্দিষ্ট কর ৩ টাকা থেকে ৫ টাকা, প্লাস্টিক টেবিলওয়্যার, কিচেনওয়্যার, টয়লেট্রিজে ভ্যাট ৭.৫% থেকে ১৫%, ব্লেড উৎপাদনে ভ্যাট ৫% থেকে ৭.৫% সেলফ কপি ও ডুপ্লেক্স বোর্ডে ভ্যাট ৭.৫% থেকে ১৫% করা হয়েছে। এ ছাড়া ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ১০% সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
ভ্যাট অব্যাহতি: কিছু স্বস্তি, কিছু ধাক্কা
ভোক্তাদের স্বস্তির জন্য কিছু পণ্যে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যেমন ব্যাংকে ১ লাখ টাকার স্থলে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত স্থিতির ওপর আবগারি শুল্ক থাকবে না। এলএনজি আমদানিতে ভ্যাট অব্যাহতি, স্যানিটারি ন্যাপকিন, তরল দুধ, বলপয়েন্ট, ২২ ইঞ্চির বদলে ৩০ ইঞ্চি পর্যন্ত কম্পিউটার মনিটরের উৎপাদন ও ব্যবসা, আইসক্রিমের সম্পূরক শুল্ক ১০% থেকে কমিয়ে ৫% করা হয়েছে।

দেশের ভেঙে পড়া অর্থনীতি সামলাতে মাত্র কয়েক মাস সময় পেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। দু-একটি খাতে কিছুটা স্থিতিশীলতা এসেছে। গন্তব্য তাই এখনো অনেক দূর। কঠিন কাজটি করতে সামনে আছে নানা চ্যালেঞ্জ।
সেই বাস্তবতা মেনে নিয়ে আর মনে করিয়ে দিয়ে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য বাজেট দিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। গতকাল সোমবার তিনি ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন। টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেছেন, ‘বৈষম্যহীন ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ার প্রত্যয় নিয়ে আমরা এগোচ্ছি।’
এই একটি মন্তব্যেই যেন উঠে আসে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় চিত্র—কীভাবে এক গভীর সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই চলছে, আর কেন এই যাত্রাপথ এখনো দীর্ঘ।
তবে এই কঠিন বাস্তবতা মোকাবিলায় অর্থ উপদেষ্টা বাজেট যেভাবে সাজালেন, তার খুব প্রশংসা করতে পারছেন না অর্থনীতিবিদ, বিশ্লেষক এবং রাজনৈতিক দলগুলো। তারা বলছে, এই বাজেট যেন আগের সরকারেরই ধারাবাহিকতা। এতে সেই অর্থে পরিবর্তন আছে খুবই সামান্য। শুধু এই খাতে কিছু কম, ওই খাতে কিছু বেশি।
তবে বাজেট বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, সংকটের দিকগুলোতে সরকারের চোখ খোলা আছে। তিনি জানান, সরকার কাজ করছে তিনটি ‘শূন্য’ লক্ষ্য নিয়ে—শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য কার্বন। লক্ষ্য—এমন একটি সমাজ গড়া, যেখানে সবাই সুন্দর জীবন পাবে এবং বৈষম্য থেকে মুক্ত থাকবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
তবে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বাজেটের রাজস্ব পদক্ষেপকে ‘সাহসী’ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর মতে, এবার আয়কর অব্যাহতির ক্ষেত্রে যাদের সাধারণত ধরা যায় না, তাদেরও করের আওতায় আনার চেষ্টা করা হয়েছে। ভ্যাট অব্যাহতিও ব্যাপকভাবে কমানো হয়েছে। অন্যদিকে, দেশীয় শিল্পের সুরক্ষার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আমদানি প্রতিযোগিতা মোকাবিলায় যেভাবে উদ্যোক্তারা আগে শুল্ক-ভ্যাটের মাধ্যমে সুরক্ষা পেতেন, তা-ও কমানো হয়েছে। ফলে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে সরকার কিছু কঠিন কিন্তু স্পষ্ট পদক্ষেপ নিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, দেশের উদ্যোক্তারা এসব পরিবর্তনে কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখান।
সবকিছু মিলিয়ে এখনো পক্ষাঘাতগ্রস্তই বলা যায় দেশের অর্থনীতিকে। সরকারের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার জায়গা এখনো মূল্যস্ফীতি; যা কিছুটা কমলেও নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক চাপ আর বাজারভিত্তিক ডলার বিনিময় হারের প্রভাব নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন অনিশ্চয়তা।
রেমিট্যান্স ছাড়া প্রায় সব অর্থনৈতিক সূচকই দুর্বল। কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না, বিনিয়োগে নেই আস্থা। আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতিও অনুকূল নয়। সাধারণ মানুষের আয় বাড়ছে না, অথচ ব্যয় লাগামহীন। দেশের ৮০ শতাংশ সম্পদ মাত্র ১০ শতাংশ মানুষের হাতে। ফলে প্রবৃদ্ধির সুফলও পৌঁছায় না সবার কাছে। আর এখন তো সেই প্রবৃদ্ধিও নিম্নমুখী।
চলমান বাস্তবতার প্রতিফলনেই এবারের বাজেট কিছুটা ভিন্ন ধাঁচের। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রস্তাবিত বাজেট আগের বছরের তুলনায় ছোট; এবং প্রবৃদ্ধি নয়, এবার জোর দেওয়া হয়েছে মানুষের সামগ্রিক কল্যাণে। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব—জীবিকার নিরাপত্তা, শিক্ষা-স্বাস্থ্য, সুশাসন, কর্মসংস্থান ও নাগরিক সুবিধা—এই বাজেটের কেন্দ্রে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, জলবায়ু পরিবর্তন এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ-সুযোগ সামাল দেওয়ার প্রস্তুতির কথাও এসেছে বাজেটে। পাশাপাশি জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং ভেঙে পড়া নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কারকেই দেওয়া হয়েছে অগ্রাধিকার।
তাই এবারের বাজেট শুধু আয়-ব্যয়ের হিসাব নয়, বরং এটি সরকারের জন্য একধরনের কৌশলগত রূপরেখা। মূল লক্ষ্য—সংযমী ব্যয়, কাঠামোগত সংস্কার এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। সরকার চাইছে সাম্প্রতিক চাপ মোকাবিলা করে, আইএমএফের প্রতিশ্রুতি পালন করে এবং দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার চালিয়ে একটি টেকসই ও স্থিতিশীল ভবিষ্যতের ভিত্তি তৈরি করতে।
এটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম এবং দেশের ৫৫তম বাজেট। ৮৮ পৃষ্ঠার বক্তব্যে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার ব্যয় পরিকল্পনার মাধ্যমে সংকটময় অর্থনীতি থেকে উত্তরণ এবং জনজীবনে স্বস্তি ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে তিনি ব্যবসা এবং সাধারণ মানুষের ওপর বাড়তি চাপের ইঙ্গিতও দিয়েছেন। মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য থাকলেও তার বাস্তবায়ন কৌশল ছিল খুবই সাধারণ ও পুরোনো ধারার। আয় বাড়াতে গ্রামীণ কর্মসংস্থানের কথা বলা হলেও সার্বিক কর্মসংস্থান বা বিনিয়োগে গতি আনতে বড় কোনো কর্মসূচি দেওয়া হয়নি। করমুক্ত আয়সীমাও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে ভবিষ্যৎ সরকারের বিবেচনায় ছেড়ে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মাদ আবদুল মজিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিশেষ সময়ে বিশেষ সরকার বিশেষ বাজেট দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের নিজস্ব কোনো অ্যাজেন্ডা নেই। এ জন্য তারা অসুস্থ অর্থনীতিকে সুস্থ ধারায় ফেরাতে বাজেট দিয়েছে।
কালোটাকা ও অপ্রদর্শিত অর্থের বিষয়ে হঠাৎ কড়া অবস্থানের আভাস মিললেও বাজেটে আগের মতোই আবাসনসহ কয়েকটি খাতে এসব অর্থ ব্যবহারের সুযোগ বহাল রাখা হয়েছে। স্বচ্ছতা নিশ্চিতে জমি-ফ্ল্যাটের নিবন্ধন বাজারমূল্য অনুযায়ী নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয়া হলেও এতে করহার কমানোর কথা বলা হয়েছে, যা খাতটিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং কালোটাকার প্রবাহ বাড়াবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অন্যদিকে, বাজেটে ঘাটতি ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা বা জিডিপির ৩.৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে, যার বড় অংশ ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা—তোলা হবে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে। এর মধ্যে ব্যাংক খাত থেকেই নেওয়া হবে ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা। এতে বিনিয়োগ সংকোচন ও সুদহার বৃদ্ধির ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। পাশাপাশি বৈদেশিক ঋণনির্ভরতা অব্যাহত থাকায় বছরে সুদ-আসলে সরকারের ব্যয় দাঁড়াবে প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকা।
বাজেট ছোট করা হলেও সরকারের পরিচালন ব্যয় আগের তুলনায় বেড়েছে। পরিচালন ব্যয়ের ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে সামাজিক সুরক্ষা ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা, সুদ পরিশোধ খাতে ১ লাখ ২২ হাজার কোটি, ভর্তুকি ৮৯ হাজার ১৬২ কোটি, বেতন-ভাতায় ৯৭ হাজার কোটি এবং অন্যান্য খাতে ১ লাখ ৩৫ হাজার ১০৭ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা।
বাজেটে মানবসম্পদ উন্নয়ন ও তরুণ উদ্যোক্তা তৈরিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সফল যুব উদ্যোক্তাদের ঋণসীমা বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, পাশাপাশি তরুণদের জন্য প্রথমবারের মতো ১০০ কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠনের প্রস্তাব এসেছে। একই উদ্দেশ্যে ‘তারুণ্যের উৎসব’ আয়োজনে আরও ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের জন্য আত্মকর্মসংস্থান প্রকল্পসহ ৪০৫ কোটি টাকার আলাদা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিজ্ঞানভিত্তিক ও কর্মমুখী শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষায় ৩৫ হাজার ৪০৩ কোটি, মাধ্যমিক-উচ্চশিক্ষায় ৪৭ হাজার ৫৬৩ কোটি এবং কারিগরি ও মাদ্রাসাশিক্ষায় ১২ হাজার ৬৭৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে ৪১ হাজার ৯০৮ কোটি এবং কৃষি ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। দরিদ্রদের স্বাস্থ্যসেবা, টিকাদান ও সামাজিক সুরক্ষা জোরদারেও বরাদ্দ বেড়েছে।
সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় ভাতার পরিমাণ এবং উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছে। বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ বিভিন্ন ভাতা মাসিক ৫০-১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে মাথাপিছু সহায়তা বাড়ানো হয়েছে। স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডের আওতায় ৫৭ লাখ পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মেয়াদ ছয় মাসে উন্নীত করারও প্রস্তাব রয়েছে।
বিদেশি বিনিয়োগে গতি আনতে বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি থেকে প্রকৃত বিনিয়োগে রূপান্তরের জন্য একটি ট্র্যাকিং সিস্টেম চালুর কথা বলা হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) প্রকল্প বাস্তবায়নে ৫ হাজার ৪০ কোটি টাকার বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া শুল্ককাঠামোয় পরিবর্তন এনে স্থানীয় শিল্প সুরক্ষা ও আমদানিনির্ভর পণ্যের ওপর নির্ভরতা কমানোর উদ্যোগ থাকলেও এতে কিছু গোষ্ঠীর সুবিধা এবং বাজারে মূল্য অস্থিরতার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সিপিডির মতে, বাজেটটি অন্তর্বর্তী এবং সংযত ধারায় প্রণয়ন করা হলেও বাস্তবায়ন নির্ভর করবে অর্থনীতির গতি ও প্রবৃদ্ধির বাস্তবতায়।
যেসব খাতে করের চাপ বাড়ছে
কর আদায়ে চাপ বাড়ানো হয়েছে বিভিন্ন খাতে। ‘এম এস প্রোডাক্ট’ উৎপাদনে সুনির্দিষ্ট কর প্রায় ২০% বাড়ানো হয়েছে। নির্মাণসেবায় ভ্যাট ৭.৫% থেকে বাড়িয়ে ১০%, অনলাইন পণ্য বিক্রয়ের কমিশনে ভ্যাট ৫% থেকে ১৫%, কটন সুতা ও কৃত্রিম আঁশের ইয়ার্ন উৎপাদনে সুনির্দিষ্ট কর ৩ টাকা থেকে ৫ টাকা, প্লাস্টিক টেবিলওয়্যার, কিচেনওয়্যার, টয়লেট্রিজে ভ্যাট ৭.৫% থেকে ১৫%, ব্লেড উৎপাদনে ভ্যাট ৫% থেকে ৭.৫% সেলফ কপি ও ডুপ্লেক্স বোর্ডে ভ্যাট ৭.৫% থেকে ১৫% করা হয়েছে। এ ছাড়া ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ১০% সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
ভ্যাট অব্যাহতি: কিছু স্বস্তি, কিছু ধাক্কা
ভোক্তাদের স্বস্তির জন্য কিছু পণ্যে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যেমন ব্যাংকে ১ লাখ টাকার স্থলে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত স্থিতির ওপর আবগারি শুল্ক থাকবে না। এলএনজি আমদানিতে ভ্যাট অব্যাহতি, স্যানিটারি ন্যাপকিন, তরল দুধ, বলপয়েন্ট, ২২ ইঞ্চির বদলে ৩০ ইঞ্চি পর্যন্ত কম্পিউটার মনিটরের উৎপাদন ও ব্যবসা, আইসক্রিমের সম্পূরক শুল্ক ১০% থেকে কমিয়ে ৫% করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, টাকা ছাপানো, পরিবহন, বণ্টন ও ব্যবস্থাপনায় প্রতিবছর প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়। ডিজিটাল লেনদেনব্যবস্থায় গেলে এই বিশাল খরচ কমবে এবং দেশের ব্যাংকিং খাত হবে আরও কার্যকর, নিরাপদ ও সময়োপযোগী।
১ ঘণ্টা আগে
একীভূতকরণের প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচ ইসলামি ব্যাংকের শেয়ারের মূল্য শূন্য ঘোষণার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন বিনিয়োগকারীরা। ব্যাংক একীভূতকরণ কার্যক্রম বন্ধ রাখার দাবির পাশাপাশি আগামী শনিবারের মধ্যে অর্থ উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগ দাবি করেছেন তাঁরা।
২ ঘণ্টা আগে
নতুন বাণিজ্যিক লক্ষ্য অর্জনের পথে এগোচ্ছে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর বা চট্টগ্রাম বন্দর। যেখানে প্রতিদিনের জাহাজ চলাচল, কনটেইনার হ্যান্ডলিং এবং ক্রেনের কার্যক্রম দেশের অর্থনৈতিক গতিশীলতা ধরে রাখবে। বর্তমানে বছরে ৩৩ লাখ টিইইউ (২০-ফুট সমতুল্য ইউনিট) কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা এই বন্দর ২০৪০ সালে তার...
১৬ ঘণ্টা আগে
দেশে হঠাৎ বাড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৪০ টাকা পর্যন্ত। এর মধ্যে গত তিন-চার দিনেই বেড়েছে ২০ টাকার বেশি।বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে গত মৌসুমের পেঁয়াজের মজুত প্রায় শেষের দিকে। তার ওপর কয়েক দিনের বৃষ্টিতে আগাম পেঁয়াজের...
১৮ ঘণ্টা আগেবাকৃবি সংবাদদাতা

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, টাকা ছাপানো, পরিবহন, বণ্টন ও ব্যবস্থাপনায় প্রতিবছর প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়। ডিজিটাল লেনদেনব্যবস্থায় গেলে এই বিশাল খরচ কমবে এবং দেশের ব্যাংকিং খাত হবে আরও কার্যকর, নিরাপদ ও সময়োপযোগী।
আজ বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) আয়োজিত ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ ইনিশিয়েটিভ’ শীর্ষক সেমিনারে ভিডিওবার্তায় গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এসব কথা বলেন।
গভর্নর বলেন, ‘অনলাইন ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এখনো দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে পুরোপুরি পৌঁছায়নি। আমরা চাই, নগদ টাকা না তুলে সেই অর্থ মোবাইল বা অনলাইন পেমেন্টের মাধ্যম রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে সব পর্যায়ের মানুষ ব্যবহার করবেন। তখনই সত্যিকারের ক্যাশলেস বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।’
গভর্নর আরও বলেন, ‘আমরা নতুন অর্থনৈতিক ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, যেখানে ডিজিটাল ও স্মার্ট লেনদেনের মাধ্যমে অর্থনীতি হবে গতিশীল ও স্বচ্ছ। মানুষকে ছোট ছোট কাজে ব্যাংকে যেতে হবে না, ফলে সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগের পরিচালক রাফেজা আক্তার কান্তা। ‘লেনদেন হচ্ছে ক্যাশলেস, এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’—স্লোগান নিয়ে সেমিনারটির আয়োজন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সহযোগিতায় ছিল ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক জি এম মুজিবর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক ময়মনসিংহ কার্যালয়ের পরিচালক জয়দেব চন্দ্র বণিক এবং ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিফ অপারেটিং অফিসার আবেদুর রহমান সিকদার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক জুয়েল মজুমদার সেমিনারে ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ উদ্যোগ’ বিষয়ে উপস্থাপনা দেন। তিনি ক্যাশ টাকার ব্যবহারজনিত অসুবিধা, ডিজিটাল লেনদেনের প্রয়োজনীয়তা ও নিরাপত্তা জোরদার করতে নেওয়া উদ্যোগ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি অধ্যাপক মুজিবর রহমান বলেন, কাগজের মুদ্রা শুধু নোংরাই নয়, তা রোগজীবাণুরও বাহক। ক্যাশলেস লেনদেন বাড়লে তা স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির জন্যই মঙ্গলজনক হবে। বাকৃবি ক্যাম্পাসকে ধীরে ধীরে ক্যাশলেস ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে তুলতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে রাফেজা আক্তার কান্তা বলেন, ‘আমরা সারা দেশে বাংলা কিউআর কোড চালু করার চেষ্টা করছি, যাতে প্রান্তিক জনগণও সহজে ডিজিটাল লেনদেন করতে পারেন। আমরা বিশ্বাস করি, “কাস্টমার ইজ দ্য কি”। তাই সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করতেই এই উদ্যোগ।’
অনুষ্ঠানের শেষপর্বে শিক্ষার্থী ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে মুক্ত প্রশ্নোত্তরপর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, টাকা ছাপানো, পরিবহন, বণ্টন ও ব্যবস্থাপনায় প্রতিবছর প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়। ডিজিটাল লেনদেনব্যবস্থায় গেলে এই বিশাল খরচ কমবে এবং দেশের ব্যাংকিং খাত হবে আরও কার্যকর, নিরাপদ ও সময়োপযোগী।
আজ বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) আয়োজিত ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ ইনিশিয়েটিভ’ শীর্ষক সেমিনারে ভিডিওবার্তায় গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এসব কথা বলেন।
গভর্নর বলেন, ‘অনলাইন ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এখনো দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে পুরোপুরি পৌঁছায়নি। আমরা চাই, নগদ টাকা না তুলে সেই অর্থ মোবাইল বা অনলাইন পেমেন্টের মাধ্যম রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে সব পর্যায়ের মানুষ ব্যবহার করবেন। তখনই সত্যিকারের ক্যাশলেস বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।’
গভর্নর আরও বলেন, ‘আমরা নতুন অর্থনৈতিক ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, যেখানে ডিজিটাল ও স্মার্ট লেনদেনের মাধ্যমে অর্থনীতি হবে গতিশীল ও স্বচ্ছ। মানুষকে ছোট ছোট কাজে ব্যাংকে যেতে হবে না, ফলে সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগের পরিচালক রাফেজা আক্তার কান্তা। ‘লেনদেন হচ্ছে ক্যাশলেস, এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’—স্লোগান নিয়ে সেমিনারটির আয়োজন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সহযোগিতায় ছিল ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক জি এম মুজিবর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক ময়মনসিংহ কার্যালয়ের পরিচালক জয়দেব চন্দ্র বণিক এবং ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিফ অপারেটিং অফিসার আবেদুর রহমান সিকদার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক জুয়েল মজুমদার সেমিনারে ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ উদ্যোগ’ বিষয়ে উপস্থাপনা দেন। তিনি ক্যাশ টাকার ব্যবহারজনিত অসুবিধা, ডিজিটাল লেনদেনের প্রয়োজনীয়তা ও নিরাপত্তা জোরদার করতে নেওয়া উদ্যোগ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি অধ্যাপক মুজিবর রহমান বলেন, কাগজের মুদ্রা শুধু নোংরাই নয়, তা রোগজীবাণুরও বাহক। ক্যাশলেস লেনদেন বাড়লে তা স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির জন্যই মঙ্গলজনক হবে। বাকৃবি ক্যাম্পাসকে ধীরে ধীরে ক্যাশলেস ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে তুলতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে রাফেজা আক্তার কান্তা বলেন, ‘আমরা সারা দেশে বাংলা কিউআর কোড চালু করার চেষ্টা করছি, যাতে প্রান্তিক জনগণও সহজে ডিজিটাল লেনদেন করতে পারেন। আমরা বিশ্বাস করি, “কাস্টমার ইজ দ্য কি”। তাই সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করতেই এই উদ্যোগ।’
অনুষ্ঠানের শেষপর্বে শিক্ষার্থী ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে মুক্ত প্রশ্নোত্তরপর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

দেশের ভেঙে পড়া অর্থনীতি সামলাতে মাত্র কয়েক মাস সময় পেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। দু-একটি খাতে কিছুটা স্থিতিশীলতা এসেছে। গন্তব্য তাই এখনো অনেক দূর। কঠিন কাজটি করতে সামনে আছে নানা চ্যালেঞ্জ।
০৩ জুন ২০২৫
একীভূতকরণের প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচ ইসলামি ব্যাংকের শেয়ারের মূল্য শূন্য ঘোষণার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন বিনিয়োগকারীরা। ব্যাংক একীভূতকরণ কার্যক্রম বন্ধ রাখার দাবির পাশাপাশি আগামী শনিবারের মধ্যে অর্থ উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগ দাবি করেছেন তাঁরা।
২ ঘণ্টা আগে
নতুন বাণিজ্যিক লক্ষ্য অর্জনের পথে এগোচ্ছে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর বা চট্টগ্রাম বন্দর। যেখানে প্রতিদিনের জাহাজ চলাচল, কনটেইনার হ্যান্ডলিং এবং ক্রেনের কার্যক্রম দেশের অর্থনৈতিক গতিশীলতা ধরে রাখবে। বর্তমানে বছরে ৩৩ লাখ টিইইউ (২০-ফুট সমতুল্য ইউনিট) কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা এই বন্দর ২০৪০ সালে তার...
১৬ ঘণ্টা আগে
দেশে হঠাৎ বাড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৪০ টাকা পর্যন্ত। এর মধ্যে গত তিন-চার দিনেই বেড়েছে ২০ টাকার বেশি।বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে গত মৌসুমের পেঁয়াজের মজুত প্রায় শেষের দিকে। তার ওপর কয়েক দিনের বৃষ্টিতে আগাম পেঁয়াজের...
১৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

একীভূতকরণের প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচ ইসলামি ব্যাংকের শেয়ারের মূল্য শূন্য ঘোষণার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন বিনিয়োগকারীরা। ব্যাংক একীভূতকরণ কার্যক্রম বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

এ ছাড়া আগামী শনিবারের মধ্যে অর্থ উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগ দাবি করেছেন তাঁরা। তা না হলে মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পুরোনো ভবনের সামনে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করেন বিনিয়োগকারীরা।
এর আগে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, পাঁচ ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের ইকুইটির মূল্য এখন শূন্যের নিচে। ফলে শেয়ারগুলোর ভ্যালু জিরো হিসেবে বিবেচিত হবে। কাউকে কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না।
সরকারের ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আয়োজিত কর্মসূচিতে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজানুর রশিদ চৌধুরী বলেন, ‘মার্জারের সার্কুলার হওয়ার পরে তা প্রত্যাহারের দাবি করেছিলাম। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর অথর্ব। আমাদের কথা কানে নেননি। আজকে পাঁচটি ব্যাংকের বিনিয়োগকারীরা যে অবস্থান করছে, তাঁরা কোথায় যাবেন? কাদের স্বার্থে আপনি (গভর্নর) কাজ করছেন তা আমাদের বোধগম্য নয়।’
মিজানুর রশিদ চৌধুরী আরও বলেন, ‘আগামী মঙ্গলবার সারা দেশের বিনিয়োগকারীদের এখানে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে অবস্থান করব। যতক্ষণ পর্যন্ত তাঁদের ঘোষণা প্রত্যাহার না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। তা না হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে পদত্যাগ করতে হবে। আপনারা সবাই মঙ্গলবার দুপুর ২টায় উপস্থিত থাকবেন।’
মিজানুর রশিদ চৌধুরী বলেন, মার্জারের পুরো প্রক্রিয়াটা বিনিয়োগকারীদের ধ্বংস করতে নেওয়া হয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের উদাহরণ বাংলাদেশে চলে না। এই ব্যাংকগুলোকে ভালো ভালো তকমা দিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। গত ৫ আগস্টের পর এগুলোর দুর্বলতা সামনে এসেছে। তত দিনে উদ্যোক্তা-পরিচালকেরা তাঁদের শেয়ার বিক্রি করে বেরিয়ে গেছে। যাঁদের হাতে শেয়ার ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগই সাধারণ ও স্বল্প মূলধনী বিনিয়োগকারী। তাঁরা যদি, তাঁদের বিনিয়োগের কোনো অংশ ফেরত না পান, তাহলে সারা জীবনের জন্য পুঁজিবাজার ত্যাগ করবেন।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের আর্থিক খাতসহ সব খাতে স্থবিরতা নিয়ে এসেছে। বর্তমান সরকার ও গভর্নরের কোনো ধরনের ম্যানডেট নেই। তারা এই ধরনের মনগড়া সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।’
সাজ্জাদুর আরও বলেন, ‘যে অর্থ উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তিনি সব ক্ষেত্রে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন। পুরো আর্থিক খাতের সব গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে যাঁরা আছেন, অর্থ উপদেষ্টা ও গভর্নরের পদত্যাগ দাবি করছি। পদত্যাগের আগে কোনো ব্যাংক মার্জার করার সুযোগ দেওয়া হবে না।’
সংগঠনটির মুখপাত্র মো. মহসিন কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘একীভূত হওয়া ব্যাংকে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার দিতে হবে। সরকারের চুরির দায় কেন সাধারণ মানুষ নেবে। সরকারের কি কোনো দায় নেই? টাকা পাচারের সময় সরকার কোথায় ছিল? এখন জনগণের বিনিয়োগের সুরক্ষা কে দেবে? বেনামে থাকা সম্পত্তির মালিক বিনিয়োগকারীদের করতে হবে। এস আলমের সম্পত্তি ব্যাংকের শেয়ারের সম্পদমূল্যে (এনএভি) যোগ করতে হবে। যখন ব্যাংক লুট হয়েছে, ওই সময় ব্যাংক কর্মকর্তারা কী করেছেন? তাঁদের আইনের আওতায় আনতে হবে।’
এর আগে সকালে ওই পাঁচ ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন স্থগিত করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। ফলে পুঁজিবাজারে এখন থেকে ব্যাংকগুলোর শেয়ার লেনদেন বন্ধ থাকবে।
শেয়ার লেনদেন স্থগিত হওয়া ব্যাংকগুলো হলো—ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল), এক্সিম ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক।
লেনদেন স্থগিত করার কারণ হিসেবে ডিএসই থেকে জানানো হয়েছে, ব্যাংক রেজ্যুলেশন অধ্যাদেশ ২০২৫-এর ধারা ১৫ অনুসারে ৫ নভেম্বর থেকে ব্যাংকগুলোকে অকার্যকর হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

একীভূতকরণের প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচ ইসলামি ব্যাংকের শেয়ারের মূল্য শূন্য ঘোষণার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন বিনিয়োগকারীরা। ব্যাংক একীভূতকরণ কার্যক্রম বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

এ ছাড়া আগামী শনিবারের মধ্যে অর্থ উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগ দাবি করেছেন তাঁরা। তা না হলে মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পুরোনো ভবনের সামনে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করেন বিনিয়োগকারীরা।
এর আগে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, পাঁচ ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের ইকুইটির মূল্য এখন শূন্যের নিচে। ফলে শেয়ারগুলোর ভ্যালু জিরো হিসেবে বিবেচিত হবে। কাউকে কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না।
সরকারের ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আয়োজিত কর্মসূচিতে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজানুর রশিদ চৌধুরী বলেন, ‘মার্জারের সার্কুলার হওয়ার পরে তা প্রত্যাহারের দাবি করেছিলাম। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর অথর্ব। আমাদের কথা কানে নেননি। আজকে পাঁচটি ব্যাংকের বিনিয়োগকারীরা যে অবস্থান করছে, তাঁরা কোথায় যাবেন? কাদের স্বার্থে আপনি (গভর্নর) কাজ করছেন তা আমাদের বোধগম্য নয়।’
মিজানুর রশিদ চৌধুরী আরও বলেন, ‘আগামী মঙ্গলবার সারা দেশের বিনিয়োগকারীদের এখানে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে অবস্থান করব। যতক্ষণ পর্যন্ত তাঁদের ঘোষণা প্রত্যাহার না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। তা না হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে পদত্যাগ করতে হবে। আপনারা সবাই মঙ্গলবার দুপুর ২টায় উপস্থিত থাকবেন।’
মিজানুর রশিদ চৌধুরী বলেন, মার্জারের পুরো প্রক্রিয়াটা বিনিয়োগকারীদের ধ্বংস করতে নেওয়া হয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের উদাহরণ বাংলাদেশে চলে না। এই ব্যাংকগুলোকে ভালো ভালো তকমা দিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। গত ৫ আগস্টের পর এগুলোর দুর্বলতা সামনে এসেছে। তত দিনে উদ্যোক্তা-পরিচালকেরা তাঁদের শেয়ার বিক্রি করে বেরিয়ে গেছে। যাঁদের হাতে শেয়ার ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগই সাধারণ ও স্বল্প মূলধনী বিনিয়োগকারী। তাঁরা যদি, তাঁদের বিনিয়োগের কোনো অংশ ফেরত না পান, তাহলে সারা জীবনের জন্য পুঁজিবাজার ত্যাগ করবেন।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের আর্থিক খাতসহ সব খাতে স্থবিরতা নিয়ে এসেছে। বর্তমান সরকার ও গভর্নরের কোনো ধরনের ম্যানডেট নেই। তারা এই ধরনের মনগড়া সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।’
সাজ্জাদুর আরও বলেন, ‘যে অর্থ উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তিনি সব ক্ষেত্রে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন। পুরো আর্থিক খাতের সব গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে যাঁরা আছেন, অর্থ উপদেষ্টা ও গভর্নরের পদত্যাগ দাবি করছি। পদত্যাগের আগে কোনো ব্যাংক মার্জার করার সুযোগ দেওয়া হবে না।’
সংগঠনটির মুখপাত্র মো. মহসিন কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘একীভূত হওয়া ব্যাংকে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার দিতে হবে। সরকারের চুরির দায় কেন সাধারণ মানুষ নেবে। সরকারের কি কোনো দায় নেই? টাকা পাচারের সময় সরকার কোথায় ছিল? এখন জনগণের বিনিয়োগের সুরক্ষা কে দেবে? বেনামে থাকা সম্পত্তির মালিক বিনিয়োগকারীদের করতে হবে। এস আলমের সম্পত্তি ব্যাংকের শেয়ারের সম্পদমূল্যে (এনএভি) যোগ করতে হবে। যখন ব্যাংক লুট হয়েছে, ওই সময় ব্যাংক কর্মকর্তারা কী করেছেন? তাঁদের আইনের আওতায় আনতে হবে।’
এর আগে সকালে ওই পাঁচ ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন স্থগিত করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। ফলে পুঁজিবাজারে এখন থেকে ব্যাংকগুলোর শেয়ার লেনদেন বন্ধ থাকবে।
শেয়ার লেনদেন স্থগিত হওয়া ব্যাংকগুলো হলো—ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল), এক্সিম ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক।
লেনদেন স্থগিত করার কারণ হিসেবে ডিএসই থেকে জানানো হয়েছে, ব্যাংক রেজ্যুলেশন অধ্যাদেশ ২০২৫-এর ধারা ১৫ অনুসারে ৫ নভেম্বর থেকে ব্যাংকগুলোকে অকার্যকর হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

দেশের ভেঙে পড়া অর্থনীতি সামলাতে মাত্র কয়েক মাস সময় পেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। দু-একটি খাতে কিছুটা স্থিতিশীলতা এসেছে। গন্তব্য তাই এখনো অনেক দূর। কঠিন কাজটি করতে সামনে আছে নানা চ্যালেঞ্জ।
০৩ জুন ২০২৫
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, টাকা ছাপানো, পরিবহন, বণ্টন ও ব্যবস্থাপনায় প্রতিবছর প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়। ডিজিটাল লেনদেনব্যবস্থায় গেলে এই বিশাল খরচ কমবে এবং দেশের ব্যাংকিং খাত হবে আরও কার্যকর, নিরাপদ ও সময়োপযোগী।
১ ঘণ্টা আগে
নতুন বাণিজ্যিক লক্ষ্য অর্জনের পথে এগোচ্ছে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর বা চট্টগ্রাম বন্দর। যেখানে প্রতিদিনের জাহাজ চলাচল, কনটেইনার হ্যান্ডলিং এবং ক্রেনের কার্যক্রম দেশের অর্থনৈতিক গতিশীলতা ধরে রাখবে। বর্তমানে বছরে ৩৩ লাখ টিইইউ (২০-ফুট সমতুল্য ইউনিট) কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা এই বন্দর ২০৪০ সালে তার...
১৬ ঘণ্টা আগে
দেশে হঠাৎ বাড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৪০ টাকা পর্যন্ত। এর মধ্যে গত তিন-চার দিনেই বেড়েছে ২০ টাকার বেশি।বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে গত মৌসুমের পেঁয়াজের মজুত প্রায় শেষের দিকে। তার ওপর কয়েক দিনের বৃষ্টিতে আগাম পেঁয়াজের...
১৮ ঘণ্টা আগেআবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম

নতুন বাণিজ্যিক লক্ষ্য অর্জনের পথে এগোচ্ছে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর বা চট্টগ্রাম বন্দর। যেখানে প্রতিদিনের জাহাজ চলাচল, কনটেইনার হ্যান্ডলিং এবং ক্রেনের কার্যক্রম দেশের অর্থনৈতিক গতিশীলতা ধরে রাখবে। বর্তমানে বছরে ৩৩ লাখ টিইইউ (২০-ফুট সমতুল্য ইউনিট) কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা এই বন্দর ২০৪০ সালে তার সক্ষমতা প্রায় চার গুণ বাড়িয়ে ১ কোটি ৭ লাখ টিইইউতে পৌঁছানোর লক্ষ্য নিয়েছে। এই বিশাল উদ্যোগ শুধু বন্দরের সম্প্রসারণ নয়; এটি বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে নতুন অবস্থানে পৌঁছানোরও প্রস্তুতি।
এই লক্ষ্যপথে পৌঁছাতে এখন থেকে জোর দেওয়া হচ্ছে অবকাঠামোগত সমন্বয়ে। এ জন্য মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকে শুরু করে টেকনাফ পর্যন্ত সড়ক ও রেল সংযোগকে আধুনিক এবং সমন্বিত করার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর সহযোগিতা চেয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের। কারণ, আগামী দুই দশকে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের চাপ বর্তমানের তুলনায় বহুগুণ বাড়বে।
সম্প্রতি বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বন্দরের এই ভবিষ্যৎ রোডম্যাপ উপস্থাপন করা হয়। সভায় ২০২৫ থেকে ২০৪০ সাল পর্যন্ত কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতার ত্রিপঞ্চবার্ষিক সক্ষমতা বৃদ্ধির ধাপভিত্তিক চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সুপারিশ বাস্তবায়নের প্রস্তাব আসে। পরে বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে পাঠানো হয়। যার বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এখন সরকারের নীতিনির্ধারকদের গভীর নজরদারিতে।
ত্রিপঞ্চবার্ষিক সক্ষমতা বৃদ্ধির এই প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালে বছরে ১৩ লাখ এবং জেনারেল কার্গো বার্থে (জিসিবি) ২০ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে এই বন্দরের সক্ষমতা রয়েছে ৩৩ লাখ টিইইউ। ২০৩০ সালের মধ্যে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের মোট সক্ষমতা দাঁড়াবে ৪০ লাখ টিইইউ। এর মধ্যে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর (৮ লাখ), বে টার্মিনাল সিটি-১ (১৮ লাখ), পতেঙ্গা টার্মিনাল (৫ লাখ) ও লালদিয়া টার্মিনাল (৯ লাখ) টিইইউ হারে কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বাড়বে।
একইভাবে চলমান এই প্রকল্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০৩০-২০৩৫ সালের মধ্যে বে টার্মিনাল (সিটি-২) তৈরি সম্পন্ন হবে। এতে করে আরও ১৮ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বাড়বে। পাশাপাশি ২০৩৫-২০৪০ সালের মধ্যে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের টার্মিনালগুলো চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে মাতারবাড়ীতে নতুন করে ১৬ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা তৈরি হবে। সব মিলিয়ে ২০৪০ সালে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের মোট সক্ষমতা দাঁড়াবে ১ কোটি ৭ লাখ টিইইউ, যা বর্তমান সক্ষমতার প্রায় চার গুণ।
বন্দর কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এখন একাধিক অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। এগুলোর মধ্যে লালদিয়া টার্মিনাল নির্মাণ চুক্তির পর্যায়ে, বে টার্মিনাল দ্রুত এগোচ্ছে, আর মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর বাস্তবায়ন প্রায় শেষের পথে। জাইকার সহায়তায় চলমান ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি’ প্রকল্পের বেসলাইন রিপোর্টেও ২০৪০ সালের মধ্যে ১০ দশমিক ৭ মিলিয়ন টিইইউ হ্যান্ডলিং লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তথ্যমতে, চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম ঘিরে তিনটি মন্ত্রণালয়ের (নৌ, সড়ক ও রেল) সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকে উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রপ্তানির জন্য বে টার্মিনাল ও কর্ণফুলী টানেল হয়ে টেকনাফ পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণের প্রকল্প এরই মধ্যে পরিকল্পনায় আছে।
এ ছাড়া বাংলাদেশ রেলওয়ে বর্তমানে ছয় রুটে তিন জোড়া ট্রেনের মাধ্যমে কনটেইনার পরিবহন করছে; বিদ্যমান অবকাঠামো ব্যবহার করে এটি আট রুটে বাড়ানোর লক্ষ্যও নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে মাতারবাড়ী টার্মিনালের দ্বিতীয় পর্যায় চালু হলে ফাসিয়াখালী সংযোগ সড়ক ও রেলট্র্যাকের ওপর বাড়তি চাপ পড়বে; যা আগেভাগে সমন্বয় করা জরুরি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বর্তমানে পতেঙ্গা টার্মিনাল পূর্ণ সক্ষমতায় কাজ করছে। বে টার্মিনালের কাজ এগোচ্ছে, আর মাতারবাড়ী দ্রুত বাস্তবায়িত হচ্ছে। সবকিছু পরিকল্পনামাফিক চললে ২০৪০ সালের মধ্যে আমরা ১ কোটি ৭ লাখ টিইইউ হ্যান্ডলিং সক্ষমতায় পৌঁছাব।’
অন্যদিকে, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর ঘিরে সরকারের এই স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের রোডম্যাপকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক গতিশীলতার জন্য বেশ স্বস্তিজনক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন ব্যবসায়ীরা। চট্টগ্রাম পোর্ট ইউজার্স ফোরামের সভাপতি আমির হুমায়ুন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বন্দরের উন্নয়ন নিঃসন্দেহে ইতিবাচক, তবে প্রকল্পগুলোর এই উন্নয়ন যেন জনগণকে অন্ধকারে রেখে না হয় এবং বিদেশিদের হাতে না চলে যায়। তাই সব কাজ ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে করা উচিত।’
আরও খবর পড়ুন:

নতুন বাণিজ্যিক লক্ষ্য অর্জনের পথে এগোচ্ছে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর বা চট্টগ্রাম বন্দর। যেখানে প্রতিদিনের জাহাজ চলাচল, কনটেইনার হ্যান্ডলিং এবং ক্রেনের কার্যক্রম দেশের অর্থনৈতিক গতিশীলতা ধরে রাখবে। বর্তমানে বছরে ৩৩ লাখ টিইইউ (২০-ফুট সমতুল্য ইউনিট) কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা এই বন্দর ২০৪০ সালে তার সক্ষমতা প্রায় চার গুণ বাড়িয়ে ১ কোটি ৭ লাখ টিইইউতে পৌঁছানোর লক্ষ্য নিয়েছে। এই বিশাল উদ্যোগ শুধু বন্দরের সম্প্রসারণ নয়; এটি বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে নতুন অবস্থানে পৌঁছানোরও প্রস্তুতি।
এই লক্ষ্যপথে পৌঁছাতে এখন থেকে জোর দেওয়া হচ্ছে অবকাঠামোগত সমন্বয়ে। এ জন্য মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকে শুরু করে টেকনাফ পর্যন্ত সড়ক ও রেল সংযোগকে আধুনিক এবং সমন্বিত করার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর সহযোগিতা চেয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের। কারণ, আগামী দুই দশকে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের চাপ বর্তমানের তুলনায় বহুগুণ বাড়বে।
সম্প্রতি বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বন্দরের এই ভবিষ্যৎ রোডম্যাপ উপস্থাপন করা হয়। সভায় ২০২৫ থেকে ২০৪০ সাল পর্যন্ত কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতার ত্রিপঞ্চবার্ষিক সক্ষমতা বৃদ্ধির ধাপভিত্তিক চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সুপারিশ বাস্তবায়নের প্রস্তাব আসে। পরে বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে পাঠানো হয়। যার বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এখন সরকারের নীতিনির্ধারকদের গভীর নজরদারিতে।
ত্রিপঞ্চবার্ষিক সক্ষমতা বৃদ্ধির এই প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালে বছরে ১৩ লাখ এবং জেনারেল কার্গো বার্থে (জিসিবি) ২০ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে এই বন্দরের সক্ষমতা রয়েছে ৩৩ লাখ টিইইউ। ২০৩০ সালের মধ্যে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের মোট সক্ষমতা দাঁড়াবে ৪০ লাখ টিইইউ। এর মধ্যে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর (৮ লাখ), বে টার্মিনাল সিটি-১ (১৮ লাখ), পতেঙ্গা টার্মিনাল (৫ লাখ) ও লালদিয়া টার্মিনাল (৯ লাখ) টিইইউ হারে কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বাড়বে।
একইভাবে চলমান এই প্রকল্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০৩০-২০৩৫ সালের মধ্যে বে টার্মিনাল (সিটি-২) তৈরি সম্পন্ন হবে। এতে করে আরও ১৮ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বাড়বে। পাশাপাশি ২০৩৫-২০৪০ সালের মধ্যে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের টার্মিনালগুলো চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে মাতারবাড়ীতে নতুন করে ১৬ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা তৈরি হবে। সব মিলিয়ে ২০৪০ সালে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের মোট সক্ষমতা দাঁড়াবে ১ কোটি ৭ লাখ টিইইউ, যা বর্তমান সক্ষমতার প্রায় চার গুণ।
বন্দর কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এখন একাধিক অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। এগুলোর মধ্যে লালদিয়া টার্মিনাল নির্মাণ চুক্তির পর্যায়ে, বে টার্মিনাল দ্রুত এগোচ্ছে, আর মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর বাস্তবায়ন প্রায় শেষের পথে। জাইকার সহায়তায় চলমান ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি’ প্রকল্পের বেসলাইন রিপোর্টেও ২০৪০ সালের মধ্যে ১০ দশমিক ৭ মিলিয়ন টিইইউ হ্যান্ডলিং লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তথ্যমতে, চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম ঘিরে তিনটি মন্ত্রণালয়ের (নৌ, সড়ক ও রেল) সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকে উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রপ্তানির জন্য বে টার্মিনাল ও কর্ণফুলী টানেল হয়ে টেকনাফ পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণের প্রকল্প এরই মধ্যে পরিকল্পনায় আছে।
এ ছাড়া বাংলাদেশ রেলওয়ে বর্তমানে ছয় রুটে তিন জোড়া ট্রেনের মাধ্যমে কনটেইনার পরিবহন করছে; বিদ্যমান অবকাঠামো ব্যবহার করে এটি আট রুটে বাড়ানোর লক্ষ্যও নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে মাতারবাড়ী টার্মিনালের দ্বিতীয় পর্যায় চালু হলে ফাসিয়াখালী সংযোগ সড়ক ও রেলট্র্যাকের ওপর বাড়তি চাপ পড়বে; যা আগেভাগে সমন্বয় করা জরুরি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বর্তমানে পতেঙ্গা টার্মিনাল পূর্ণ সক্ষমতায় কাজ করছে। বে টার্মিনালের কাজ এগোচ্ছে, আর মাতারবাড়ী দ্রুত বাস্তবায়িত হচ্ছে। সবকিছু পরিকল্পনামাফিক চললে ২০৪০ সালের মধ্যে আমরা ১ কোটি ৭ লাখ টিইইউ হ্যান্ডলিং সক্ষমতায় পৌঁছাব।’
অন্যদিকে, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর ঘিরে সরকারের এই স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের রোডম্যাপকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক গতিশীলতার জন্য বেশ স্বস্তিজনক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন ব্যবসায়ীরা। চট্টগ্রাম পোর্ট ইউজার্স ফোরামের সভাপতি আমির হুমায়ুন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বন্দরের উন্নয়ন নিঃসন্দেহে ইতিবাচক, তবে প্রকল্পগুলোর এই উন্নয়ন যেন জনগণকে অন্ধকারে রেখে না হয় এবং বিদেশিদের হাতে না চলে যায়। তাই সব কাজ ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে করা উচিত।’
আরও খবর পড়ুন:

দেশের ভেঙে পড়া অর্থনীতি সামলাতে মাত্র কয়েক মাস সময় পেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। দু-একটি খাতে কিছুটা স্থিতিশীলতা এসেছে। গন্তব্য তাই এখনো অনেক দূর। কঠিন কাজটি করতে সামনে আছে নানা চ্যালেঞ্জ।
০৩ জুন ২০২৫
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, টাকা ছাপানো, পরিবহন, বণ্টন ও ব্যবস্থাপনায় প্রতিবছর প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়। ডিজিটাল লেনদেনব্যবস্থায় গেলে এই বিশাল খরচ কমবে এবং দেশের ব্যাংকিং খাত হবে আরও কার্যকর, নিরাপদ ও সময়োপযোগী।
১ ঘণ্টা আগে
একীভূতকরণের প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচ ইসলামি ব্যাংকের শেয়ারের মূল্য শূন্য ঘোষণার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন বিনিয়োগকারীরা। ব্যাংক একীভূতকরণ কার্যক্রম বন্ধ রাখার দাবির পাশাপাশি আগামী শনিবারের মধ্যে অর্থ উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগ দাবি করেছেন তাঁরা।
২ ঘণ্টা আগে
দেশে হঠাৎ বাড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৪০ টাকা পর্যন্ত। এর মধ্যে গত তিন-চার দিনেই বেড়েছে ২০ টাকার বেশি।বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে গত মৌসুমের পেঁয়াজের মজুত প্রায় শেষের দিকে। তার ওপর কয়েক দিনের বৃষ্টিতে আগাম পেঁয়াজের...
১৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে হঠাৎ বাড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৪০ টাকা পর্যন্ত। এর মধ্যে গত তিন-চার দিনেই বেড়েছে ২০ টাকার বেশি।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে গত মৌসুমের পেঁয়াজের মজুত প্রায় শেষের দিকে। তার ওপর কয়েক দিনের বৃষ্টিতে আগাম পেঁয়াজের কিছু জমি আক্রান্ত হয়েছে। অন্যদিকে আমদানিও বন্ধ। এর সুযোগ নিচ্ছেন মজুতকারীরা।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত মৌসুমের পেঁয়াজের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ মজুত রয়েছে। বাকি ৯০ শতাংশই শেষ। নতুন মৌসুমের মুড়িকাটা জাতের পেঁয়াজ আবাদ শুরু হয়েছে। বাজারে আসতে এখনো দেড় থেকে দুই মাস লাগবে। আর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বাজারের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। যদি আমদানি করার প্রয়োজন হয়, তবে শিগগির অনুমোদন দেওয়া হবে।
গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচা, মালিবাগ, মানিকনগরসহ বিভিন্ন খুচরা বাজারে ছোট আকারের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকা কেজি। কিছুটা বড় আকারের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগে এই পেঁয়াজের দাম ছিল ৮০-৮৫ টাকা কেজি। সে হিসাবে এক সপ্তাহে দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০-৩৫ টাকা।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, গত এক সপ্তাহে খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৭০-৮০ টাকা কেজি। অবশ্য টিসিবি এটিও বলেছে, গত বছর এই সময় পেঁয়াজের দাম ছিল ১৩০-১৫০ টাকা কেজি।
রাজধানীর সেগুনবাগিচা বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. সিফাত বলেন, এত দিন দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ ভালো থাকায় দাম স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু বর্তমানে মোকামগুলোয় পেঁয়াজের সরবরাহ কমেছে, যার প্রভাব পড়েছে দামে। শনিবার থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত কেজিপ্রতি ১৫-২৫ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম।
তবে পাইকারিতে দাম কিছুটা কমেছে। গতকাল রাজধানীর পেঁয়াজের আড়ত শ্যামবাজারে পাইকারি পর্যায়ে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯০-৯৫ টাকা কেজি, যা মঙ্গলবার ছিল ৯৫-১০০ টাকা কেজি এবং সোমবার ছিল ৯০-৯৫ টাকা কেজি। আর এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৬৫-৭০ টাকা কেজি। সে হিসাবে গত এক সপ্তাহে শ্যামবাজারে পাইকারি পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ২৫ টাকা বেড়েছে।
রাজধানীর শ্যামবাজারের পেঁয়াজের আড়তদার অপু ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. মিঠু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ১০০ জন কৃষকের মধ্যে ৯০ জনেরই পেঁয়াজ বিক্রি শেষ। সর্বোচ্চ ১০ জন কৃষকের হাতে এখন পেঁয়াজের মজুত আছে। এতে ফরিদপুর, রাজবাড়ী, পাবনাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের হাটগুলোয় পেঁয়াজের দাম বাড়ছে, যার প্রভাব পাইকারি ও খুচরায় পড়ছে। তবে বাজারে সরবরাহ ভালো থাকলে দাম কিছুটা কমে, সরবরাহ কমে গেলে দাম বাড়ে। এটাই কাঁচামালের বৈশিষ্ট্য।
মো. মিঠু বলেন, দেশে নতুন পেঁয়াজ উঠতে এখনো দেড় মাস লাগবে। সেই পর্যন্ত মানুষ যদি বর্তমান দামে পেঁয়াজ খেতে পারে, তবে আমদানি করার প্রয়োজন নেই। আর সরকার যদি চায়, দাম কমাবে, তবে আমদানির দুয়ার খুলতে হবে।
জানা যায়, ফরিদপুর, পাবনাসহ বিভিন্ন হাটে মঙ্গলবার প্রতি মণ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ২০০ টাকা, যা গতকাল কিছুটা কমে ৩ হাজার ৮০০ টাকায় নেমেছে।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, দেশে দুই ধাপে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। রবি মৌসুমের শুরুতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণ করা হয়। এ জাতের পেঁয়াজ দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায় না। মুড়িকাটা পেঁয়াজ উত্তোলন শেষ হলে একই জমিতে কৃষক হালি বা বীজ পেঁয়াজ রোপণ করেন। এ পেঁয়াজ মাচা বা বিভিন্নভাবে সংরক্ষণ ঘরে দীর্ঘদিন মজুত রাখা হয়; যা এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।
চলতি বছর ডিসেম্বরের মাঝামাঝি কিংবা শেষার্ধে দেশে মুড়িকাটা পেঁয়াজের উত্তোলন শুরু হবে। ফলে আগামী অন্তত দেড় মাস দেশে পেঁয়াজের সরবরাহ ধারাবাহিকভাবে কমবে। এতে অনেক ব্যবসায়ী আমদানির পরামর্শ দিয়েছেন।
এর আগে গত সেপ্টেম্বরের শুরুতে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন সুপারিশ করেছিল, পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৯০ টাকা পার হলেই আমদানির অনুমতি দিতে হবে। সেই সঙ্গে শুল্ক-কর ছাড় দেওয়ারও সুপারিশ করেছে কমিশন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান জানান, কৃষিসচিব জানিয়েছেন, ১৫ দিনের মধ্যে নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসবে। সুতরাং ঘাটতি হবে না। তবে কয়েকটি সংস্থাকে বাজারের তথ্য সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। সত্যিই যদি ঘাটতি থাকে, তবে আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) উদ্ভিদ সংগনিরোধ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতিপত্র (আইপি) দেওয়া হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, দেশে ২৬-২৭ লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত মৌসুমে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন হয়েছে ৩৮ লাখ টন। তবে এরপরও প্রতিবছর ৬-৭ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি হয় দেশে।
জানতে চাইলে ডিএইর প্ল্যান্ট কোয়ারেন্টিন উইংয়ের অতিরিক্ত পরিচালক (আমদানি) বনি আমিন খান বলেন, ‘এখন পেঁয়াজ আমদানির কোনো আবেদনই আমাদের কাছে নেই। সরকার আমদানির অনুমোদন দিলে আবেদন নেওয়া হবে। মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।’
আরও খবর পড়ুন:

দেশে হঠাৎ বাড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৪০ টাকা পর্যন্ত। এর মধ্যে গত তিন-চার দিনেই বেড়েছে ২০ টাকার বেশি।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে গত মৌসুমের পেঁয়াজের মজুত প্রায় শেষের দিকে। তার ওপর কয়েক দিনের বৃষ্টিতে আগাম পেঁয়াজের কিছু জমি আক্রান্ত হয়েছে। অন্যদিকে আমদানিও বন্ধ। এর সুযোগ নিচ্ছেন মজুতকারীরা।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত মৌসুমের পেঁয়াজের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ মজুত রয়েছে। বাকি ৯০ শতাংশই শেষ। নতুন মৌসুমের মুড়িকাটা জাতের পেঁয়াজ আবাদ শুরু হয়েছে। বাজারে আসতে এখনো দেড় থেকে দুই মাস লাগবে। আর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বাজারের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। যদি আমদানি করার প্রয়োজন হয়, তবে শিগগির অনুমোদন দেওয়া হবে।
গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচা, মালিবাগ, মানিকনগরসহ বিভিন্ন খুচরা বাজারে ছোট আকারের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকা কেজি। কিছুটা বড় আকারের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগে এই পেঁয়াজের দাম ছিল ৮০-৮৫ টাকা কেজি। সে হিসাবে এক সপ্তাহে দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০-৩৫ টাকা।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, গত এক সপ্তাহে খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৭০-৮০ টাকা কেজি। অবশ্য টিসিবি এটিও বলেছে, গত বছর এই সময় পেঁয়াজের দাম ছিল ১৩০-১৫০ টাকা কেজি।
রাজধানীর সেগুনবাগিচা বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. সিফাত বলেন, এত দিন দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ ভালো থাকায় দাম স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু বর্তমানে মোকামগুলোয় পেঁয়াজের সরবরাহ কমেছে, যার প্রভাব পড়েছে দামে। শনিবার থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত কেজিপ্রতি ১৫-২৫ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম।
তবে পাইকারিতে দাম কিছুটা কমেছে। গতকাল রাজধানীর পেঁয়াজের আড়ত শ্যামবাজারে পাইকারি পর্যায়ে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯০-৯৫ টাকা কেজি, যা মঙ্গলবার ছিল ৯৫-১০০ টাকা কেজি এবং সোমবার ছিল ৯০-৯৫ টাকা কেজি। আর এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৬৫-৭০ টাকা কেজি। সে হিসাবে গত এক সপ্তাহে শ্যামবাজারে পাইকারি পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ২৫ টাকা বেড়েছে।
রাজধানীর শ্যামবাজারের পেঁয়াজের আড়তদার অপু ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. মিঠু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ১০০ জন কৃষকের মধ্যে ৯০ জনেরই পেঁয়াজ বিক্রি শেষ। সর্বোচ্চ ১০ জন কৃষকের হাতে এখন পেঁয়াজের মজুত আছে। এতে ফরিদপুর, রাজবাড়ী, পাবনাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের হাটগুলোয় পেঁয়াজের দাম বাড়ছে, যার প্রভাব পাইকারি ও খুচরায় পড়ছে। তবে বাজারে সরবরাহ ভালো থাকলে দাম কিছুটা কমে, সরবরাহ কমে গেলে দাম বাড়ে। এটাই কাঁচামালের বৈশিষ্ট্য।
মো. মিঠু বলেন, দেশে নতুন পেঁয়াজ উঠতে এখনো দেড় মাস লাগবে। সেই পর্যন্ত মানুষ যদি বর্তমান দামে পেঁয়াজ খেতে পারে, তবে আমদানি করার প্রয়োজন নেই। আর সরকার যদি চায়, দাম কমাবে, তবে আমদানির দুয়ার খুলতে হবে।
জানা যায়, ফরিদপুর, পাবনাসহ বিভিন্ন হাটে মঙ্গলবার প্রতি মণ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ২০০ টাকা, যা গতকাল কিছুটা কমে ৩ হাজার ৮০০ টাকায় নেমেছে।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, দেশে দুই ধাপে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। রবি মৌসুমের শুরুতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণ করা হয়। এ জাতের পেঁয়াজ দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায় না। মুড়িকাটা পেঁয়াজ উত্তোলন শেষ হলে একই জমিতে কৃষক হালি বা বীজ পেঁয়াজ রোপণ করেন। এ পেঁয়াজ মাচা বা বিভিন্নভাবে সংরক্ষণ ঘরে দীর্ঘদিন মজুত রাখা হয়; যা এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।
চলতি বছর ডিসেম্বরের মাঝামাঝি কিংবা শেষার্ধে দেশে মুড়িকাটা পেঁয়াজের উত্তোলন শুরু হবে। ফলে আগামী অন্তত দেড় মাস দেশে পেঁয়াজের সরবরাহ ধারাবাহিকভাবে কমবে। এতে অনেক ব্যবসায়ী আমদানির পরামর্শ দিয়েছেন।
এর আগে গত সেপ্টেম্বরের শুরুতে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন সুপারিশ করেছিল, পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৯০ টাকা পার হলেই আমদানির অনুমতি দিতে হবে। সেই সঙ্গে শুল্ক-কর ছাড় দেওয়ারও সুপারিশ করেছে কমিশন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান জানান, কৃষিসচিব জানিয়েছেন, ১৫ দিনের মধ্যে নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসবে। সুতরাং ঘাটতি হবে না। তবে কয়েকটি সংস্থাকে বাজারের তথ্য সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। সত্যিই যদি ঘাটতি থাকে, তবে আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) উদ্ভিদ সংগনিরোধ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতিপত্র (আইপি) দেওয়া হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, দেশে ২৬-২৭ লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত মৌসুমে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন হয়েছে ৩৮ লাখ টন। তবে এরপরও প্রতিবছর ৬-৭ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি হয় দেশে।
জানতে চাইলে ডিএইর প্ল্যান্ট কোয়ারেন্টিন উইংয়ের অতিরিক্ত পরিচালক (আমদানি) বনি আমিন খান বলেন, ‘এখন পেঁয়াজ আমদানির কোনো আবেদনই আমাদের কাছে নেই। সরকার আমদানির অনুমোদন দিলে আবেদন নেওয়া হবে। মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।’
আরও খবর পড়ুন:

দেশের ভেঙে পড়া অর্থনীতি সামলাতে মাত্র কয়েক মাস সময় পেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। দু-একটি খাতে কিছুটা স্থিতিশীলতা এসেছে। গন্তব্য তাই এখনো অনেক দূর। কঠিন কাজটি করতে সামনে আছে নানা চ্যালেঞ্জ।
০৩ জুন ২০২৫
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, টাকা ছাপানো, পরিবহন, বণ্টন ও ব্যবস্থাপনায় প্রতিবছর প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়। ডিজিটাল লেনদেনব্যবস্থায় গেলে এই বিশাল খরচ কমবে এবং দেশের ব্যাংকিং খাত হবে আরও কার্যকর, নিরাপদ ও সময়োপযোগী।
১ ঘণ্টা আগে
একীভূতকরণের প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচ ইসলামি ব্যাংকের শেয়ারের মূল্য শূন্য ঘোষণার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন বিনিয়োগকারীরা। ব্যাংক একীভূতকরণ কার্যক্রম বন্ধ রাখার দাবির পাশাপাশি আগামী শনিবারের মধ্যে অর্থ উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগ দাবি করেছেন তাঁরা।
২ ঘণ্টা আগে
নতুন বাণিজ্যিক লক্ষ্য অর্জনের পথে এগোচ্ছে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর বা চট্টগ্রাম বন্দর। যেখানে প্রতিদিনের জাহাজ চলাচল, কনটেইনার হ্যান্ডলিং এবং ক্রেনের কার্যক্রম দেশের অর্থনৈতিক গতিশীলতা ধরে রাখবে। বর্তমানে বছরে ৩৩ লাখ টিইইউ (২০-ফুট সমতুল্য ইউনিট) কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা এই বন্দর ২০৪০ সালে তার...
১৬ ঘণ্টা আগে