Ajker Patrika

কাঁচামালের জন্য রপ্তানি প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের ওপরই নির্ভরশীল বাংলাদেশ

রেজাউর রহিম
কাঁচামালের জন্য রপ্তানি প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের ওপরই নির্ভরশীল বাংলাদেশ

রপ্তানি শুরুর পর চার দশক কেটে গেলেও এখনো বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প কাঠামোগত দিক থেকে দৃঢ় ভিত তৈরি করতে পারেনি। দেশের প্রধান রপ্তানি খাত হলেও কাঁচামালের জন্য এ শিল্পকে বহুলাংশেই অন্য দেশের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। আর এই নির্ভরতা মুখ্যত চীনকেন্দ্রিক। পোশাক রপ্তানির বাজারে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এ দেশই কাঁচামাল আমদানির প্রধান উৎস হওয়ায় এ খাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। এ ক্ষেত্রে কাঁচামালের নিজস্ব উৎস তৈরি করা না গেলে সামনে বিপদে পড়তে হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

গত শতকের আশির দশকে তৈরি পোশাক রপ্তানি শুরু হয়। বর্তমানে এই তৈরি পোশাক শিল্পই দেশের প্রধান রপ্তানি আয়ের উৎস। মোট বার্ষিক রপ্তানির প্রায় ৮৪ শতাংশই আসছে পোশাক রপ্তানি থেকে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানির মাধ্যমে আয় করেছে ৩ হাজার ৮৬ কোটি মার্কিন ডলার, যা আগে বছরের তুলনায় প্রায় ৩০০ কোটি ডলার বা সাড়ে ১০ শতাংশ বেশি। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে সারা বিশ্বে শীর্ষে রয়েছে চীন। এরপরই বাংলাদেশের অবস্থান। 

রপ্তানি বাজারের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী চীনই আবার বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের প্রয়োজনীয় কাঁচামালের সবচেয়ে বড় উৎসরপ্তানি বাজারের এই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী চীনই আবার বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের প্রয়োজনীয় কাঁচামালের সবচেয়ে বড় উৎস। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) সূত্রে জানা গেছে, দেশের পোশাক শিল্পের কাঁচামাল ও মধ্যবর্তী পণ্য থেকে শুরু করে যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ, এমনকি নিত্যব্যবহার্য নানা পণ্যের বড় আমদানি উৎস চীন। দেশের পোশাক শিল্পের ওভেন খাতের প্রায় ৮০ শতাংশ বস্ত্র চীন থেকে আমদানি করা হয়। আর নিট পোশাকের ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কাঁচামাল এবং প্রায় ৮০ শতাংশ রাসায়নিক ও এক্সেসরিজ চীন থেকে আমদানি হয়। 

ইপিবি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট আমদানির পরিমাণ ছিল ৫০ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে এককভাবে চীন থেকেই এসেছে ১১ বিলিয়ন ডলারের পণ্য, যার বেশির ভাগই পোশাক শিল্পের কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি। 

এই নির্ভরতা এত বেশি যে, এটিই এখন বাংলাদেশের সামনে এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার কাঁচামাল আমদানির জন্য বাংলাদেশ যে চীনের বিকল্প খুঁজবে, স্বল্প মেয়াদে সে সুযোগও কম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, স্বল্প সময়ে এবং অপেক্ষাকৃত কম দামে চীনের মতো বিপুল পরিমাণ কাঁচামাল পণ্য সরবরাহের সক্ষমতা বেশির ভাগ দেশের নেই। কিন্তু এই অতিনির্ভরতার কারণে যেকোনো কারণে তুলা, সুতাসহ বিভিন্ন মধ্যবর্তী পণ্য আমদানি ব্যাহত হলে দেশের তৈরি পোশাক খাতের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার বড় আশঙ্কা রয়েছে। অর্থাৎ, এ ক্ষেত্রে উভয়সংকটে রয়েছে বাংলাদেশ। 

এলডিসি থেকে উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে রপ্তানি বাজারে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে হলে কাঁচামালে অন্তত একটা মাত্রা পর্যন্ত স্বয়ংসম্পূর্ণতা জরুরি।এ ছাড়া এলডিসি থেকে উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে রপ্তানি বাজারে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে হলে কাঁচামালে অন্তত একটা মাত্রা পর্যন্ত স্বয়ংসম্পূর্ণতা জরুরি। কিন্তু চার দশকেও সেই অবস্থানে পৌঁছাতে পারেনি বাংলাদেশ। ফলে চীন, ভারত, ভিয়েতনাম ইত্যাদি প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ থেকে এখনো পোশাক শিল্পের কাঁচামাল আমদানি করতে হচ্ছে। এই নির্ভরশীলতা ভবিষ্যতে এ খাতকে সংকটের মুখে ফেলতে পারে।

পোশাক রপ্তানিকারকেরা বলছেন, বিশ্ব বাজারে রপ্তানি প্রতিযোগিতায় টিকতে এবং উৎপাদন খরচ কমাতে চীনের ওপর নির্ভরশীলতার বড় কারণ সাশ্রয়ী মূল্য। চীন ছাড়া অন্য যেকোনো দেশ থেকে এসব কাঁচামাল আমদানি করতে গেলে খরচ অনেক বেশি হয়। আর রপ্তানি বাজার ধরতে হলে উৎপাদন ব্যয় কমানোর কোনো বিকল্প নেই। ফলে পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকেরা চীন থেকে কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আনতে অনেকটা বাধ্য হন। 

এ ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আমদানি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তার দিকে লক্ষ্য রেখে জমি স্বল্পতার কারণে শিল্প খাতের জন্য তুলা উৎপাদন সম্ভব নয়। এটিই সুতা ও বস্ত্রের জন্য আমদানি নির্ভরতার কারণ। পোশাক রপ্তানিতে প্রতিদ্বন্দ্বী চীন ও ভারতের ওপর নির্ভরশীলতার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘বেসরকারি খাতের রপ্তানিকারকেরা তাদের পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে যে দেশ থেকে কম দামে কাঁচামাল আনতে পারবে, সে দেশের দিকেই ঝুঁকবে—এটাই স্বাভাবিক। তবে শিল্পের কাঁচামাল স্থানীয়ভাবে উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে সরকার কাজ করছে।’ 

এলডিসি থেকে উত্তরণ-পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ
রয়েছে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের বেরিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গটি। স্বল্পোন্নত বা এলডিসি দেশের তালিকা থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ বেরিয়ে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় প্রবেশ করেছে। যদিও এই তালিকা থেকে পুরোপুরি বের হতে বাংলাদেশের ২০২৬ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এই উত্তরণ বেশ কিছু সুবিধাও হারানোর শঙ্কা তৈরি করেছে। বিশেষত এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য যে শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা, তা আর পাওয়া যাবে না। যদিও ইইউ ২০২৯ সাল পর্যন্ত এই সুবিধা দেওয়ার কথা বলছে। তবে তা তারা দেবে বিদ্যমান জিএসপি সুবিধার আওতায়। ২০২৩ সাল থেকে শুরু হতে যাওয়া জিএসপি প্লাস সুবিধার আওতায় ঢুকতে না পারলে আর মাত্র ৭ বছর এই সুবিধা পাবে বাংলাদেশ। 

জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে বাংলাদেশকে বেশ কয়েকটি শর্ত পরিপালন করতে হবে। শর্তের শুরুতেই রয়েছে অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক পূরণের বিষয়টি। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি বাংলাদেশকে ভাবাচ্ছে, তা হলো ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ। যুক্তরাজ্য ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোর বাজারে ২০২৯ সালের পর রপ্তানি ধরে রাখতে স্থানীয় উৎস থেকে সংগৃহীত সুতা ও কাঁচামাল থেকে বস্ত্র তৈরি এবং তা দিয়ে পোশাক তৈরি করতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে সরকারের নীতি সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

এ ব্যাপারে বিজিএমইএর সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে এবং সামনের দিনগুলোতে বিশ্ব বাণিজ্য প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পণ্য উৎপাদনে আমাদের অতি দ্রুত স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে হবে। এ জন্য কাঁচামাল ও যন্ত্রাংশের জন্য চীনসহ প্রতিযোগী দেশগুলোর ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নিতে হবে। না হলে বিশ্ববাজারে আমাদের পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি রপ্তানি পণ্য উৎপাদনে নিজেরা স্বয়ংসম্পূর্ণই হতে না পারি, তাহলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে কীভাবে আমরা উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর হব? আর শিল্পের কাঁচামালের জন্য নির্ভরশীলতা কাটিয়ে উঠতে আমাদের প্রযুক্তিগত উন্নয়নও করতে হবে। পাশাপাশি এ বিষয়ে সরকারি নীতি সহায়তাও গুরুত্বপূর্ণ। 

গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) গবেষণা পরিচালক অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকও একই মত দিলেন। তিনি বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে রপ্তানি বাণিজ্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পণ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের বিকল্প নেই। ইইউ ও যুক্তরাজ্যের বাজারে ২০২৯ সালের পর রপ্তানির ক্ষেত্রে জিএসপি প্লাসের অন্য শর্তের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কাঁচামাল দিয়ে পণ্য তৈরির মতো শর্ত থাকছে। এ জন্য রপ্তানি পণ্যের কাঁচামালের জন্য অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীল হলে চলবে না। আর উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীলতা দেশের অর্থনীতির জন্যও ইতিবাচক নয়। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববাজারে পোশাক রপ্তানিতে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ হলেও বর্তমান সক্ষমতা সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে চীনেও বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব। 

দ্বিপক্ষীয় চুক্তির ওপর জোর
অর্থনৈতিক গতিশীলতা, কর্মসংস্থান এবং রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরালো করার বিকল্প নেই বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁরা বলছেন, নতুন রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে এ উদ্যোগ গ্রহণ এই মুহূর্তে জরুরি। এ জন্য ব্রাজিল, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, চিলির মতো লাতিন আমেরিকার দেশ এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে রপ্তানির দিকে মনোযোগ দিতে হবে। পাশাপাশি ইউরোপের আরেক বড় দেশ রাশিয়ার বাজারে পণ্য রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি করতে পদক্ষেপ নিতে হবে। 

এ ক্ষেত্রে চীনের বাজারের দিকেও তাকানো যেতে পারে। চীন থেকে প্রতি বছর যে পরিমাণ আমদানি হয়, সে পরিমাণে রপ্তানি হয় না। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার তালিকায় চীন রয়েছে ১৫ তম অবস্থানে। এ ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়া গেলে চীনের বাজারেও ব্যাপক সম্ভাবনা আছে। চীন ২০২০ সালের জুলাই থেকে ট্যারিফ লাইনের আওতায় ৯৭ শতাংশ বাংলাদেশি পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা দিয়েছে। 

দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮৪ শতাংশই আস তৈরি পোশাক শিল্প থেকেরপ্তানিকারকরা বলছেন, চীনে ‍বিনা শুল্কে রপ্তানির এই সুযোগ দেশটির সঙ্গে থাকা বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সহায়ক হবে। পাশাপাশি দেশটিতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিরও সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। কারণ, চীন ক্রমেই কম দামের পোশাক তৈরির চেয়ে বেশি দামের পোশাক তৈরি ও রপ্তানির দিকে ঝুঁকছে, যা বাংলাদেশের জন্য একটি আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিতে পারে। 

বিজিএমইএর সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, রপ্তানির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ইইউভুক্ত দেশগুলোতে জিএসপি প্লাস সুবিধা প্রাপ্তির প্রচেষ্টার পাশাপাশি এসব দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির ওপরও আমাদের জোর দিতে হবে। 

এই সুযোগকে কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশও। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্বল্প আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ-পরবর্তীকালে বৈদেশিক বাণিজ্যে অন্যতম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করার বিষয়টিও বিবেচনা করছে সরকার। এ ছাড়া চীন এরই মধ্যে এফটিএ করার বিষয়ে বাংলাদেশকে প্রস্তাব দিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউট (বিএফটিআই) এ বিষয়ে পর্যালোচনা করছে। 

এরই মধ্যে এফটিএর জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কিছু দেশ ও বাণিজ্য জোটের একটি তালিকা তৈরি করেছে। এসব দেশের মধ্যে চীন ছাড়াও রয়েছে নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, ভারত, সিঙ্গাপুরসহ আসিয়ান জোটভুক্ত দেশ, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, ও দক্ষিণ আমেরিকার বাণিজ্য জোট মার্কাসুর। এফটিএর পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সঙ্গে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির (পিটিএ) বিষয়টি নিয়েও কাজ করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। 

এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আমদানি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ-পরবর্তী বিশ্ব বাজারে রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এফটিএ এবং পিটিএ করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২৪ ঘণ্টা অ্যাপনির্ভর ব্যাংকিং আসছে

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা 
২৪ ঘণ্টা অ্যাপনির্ভর ব্যাংকিং আসছে

দেশের ব্যাংকিং সেবাকে সম্পূর্ণভাবে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ডিজিটাল পরিসরে। এ লক্ষ্যেই শুরু হয়েছে অ্যাপনির্ভর ব্যাংক গঠনের প্রস্তুতি। ইতিমধ্যে দেশি ও বিদেশি ১২টি প্রতিষ্ঠান নতুন প্রজন্মের এই ব্যাংক স্থাপনে আগ্রহ জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অনুমোদনের আবেদন করেছে। প্রস্তাবিত এসব ব্যাংকের থাকবে না কোনো শাখা, অবকাঠামো বা এটিএম বুথ; গ্রাহকেরা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমেই ২৪ ঘণ্টায় যেকোনো সময় পাবেন সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা।

নতুন যুগের আবেদনকারীরা

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে ব্রিটিশ বাংলা ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, ডিজিটাল ব্যাংকিং অব ভুটান-ডিকে, আমার ডিজিটাল ব্যাংক-২২ এমএফআই, ৩৬ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, বুস্ট-রবি, আমার ব্যাংক (প্রস্তাবিত), অ্যাপ ব্যাংক-ফার্মারস, নোভা ডিজিটাল ব্যাংক (বাংলালিংক ও স্কয়ার), মৈত্রী ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, উপকারী ডিজিটাল ব্যাংক, মুনাফা ইসলামী ডিজিটাল ব্যাংক-আকিজ এবং বিকাশ ডিজিটাল ব্যাংক। আবেদনের শেষ সময় ২ নভেম্বর পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে এই ১২ প্রতিষ্ঠানের আবেদন জমা পড়েছে।

মূলধনে বড় শর্ত

২০২৩ সালের ১৪ জুন প্রণীত বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, একটি ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার জন্য ন্যূনতম ৩০০ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধন থাকতে হবে। প্রতিষ্ঠানগুলোকে কোম্পানি আইন অনুসারে পরিচালিত হতে হবে এবং প্রচলিত ব্যাংকের মতোই সিআরআর (নগদ জমা অনুপাত) ও এসএলআর (বিধিবদ্ধ জমা অনুপাত) বজায় রাখতে হবে।

এই ব্যাংকগুলো বড় বা মাঝারি শিল্পে ঋণ দিতে পারবে না এবং কোনো ধরনের ঋণপত্র (এলসি) খুলতেও পারবে না। কেবল ক্ষুদ্রঋণ, খুচরা পর্যায়ের লেনদেন এবং ডিজিটাল সেবা প্রদানের সুযোগ থাকবে। অনুমোদনের পাঁচ বছরের মধ্যে আইপিও আনতে হবে, যার পরিমাণ উদ্যোক্তাদের প্রাথমিক বিনিয়োগের সমান হতে হবে।

অ্যাপেই পুরো ব্যাংকিং

প্রস্তাবিত ডিজিটাল ব্যাংকগুলো হবে সম্পূর্ণ অ্যাপনির্ভর। কোনো শাখা বা এটিএম থাকবে না; বরং গ্রাহকেরা ভার্চুয়াল কার্ড, কিউআর কোড এবং মোবাইল লেনদেনের মাধ্যমে সব সেবা নিতে পারবেন। প্লাস্টিক কার্ডের পরিবর্তে সব লেনদেন হবে ডিজিটাল উপায়ে। গ্রাহকেরা অন্য ব্যাংকের এটিএম বা এজেন্ট সেবা ব্যবহার করতে পারবেন। সব সেবা পরিচালিত হবে বাংলাদেশ পেমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট সিস্টেম রেগুলেশন, ২০১৪-এর আওতায়; যা ডিজিটাল লেনদেনে নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে।

যোগ্যতার কঠোর মানদণ্ড

কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণখেলাপি ব্যক্তি বা তাঁর পরিবারের সদস্য এই ডিজিটাল ব্যাংকের উদ্যোক্তা হতে পারবেন না। ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হতে ব্যাংকিং পেশায় অন্তত ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এ ছাড়া পর্ষদের অন্তত ৫০ শতাংশ সদস্যকে প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিং, সাইবার নিরাপত্তা ও উদীয়মান প্রযুক্তি বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞানসম্পন্ন হতে হবে।

ক্যাশলেস সমাজের পথে

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘ডিজিটাল ব্যাংকের লক্ষ্য হলো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেওয়া।’ তিনি জানান, এসব ব্যাংক আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এবং ক্যাশলেস সমাজ গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

যাচাইয়ের পর অনুমোদন

প্রাথমিকভাবে আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর টেকনিক্যাল ও বিজনেস কমিটি নম্বরের ভিত্তিতে যোগ্য প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করবে। নির্ধারিত মানদণ্ডে উত্তীর্ণরা ‘লেটার অব ইনটেন্ট’ পেয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারবে। চূড়ান্ত সনদ পাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে নতুন বছরের প্রথমে শুরু হতে পারে তাদের অপারেশনাল কার্যক্রম।

চ্যালেঞ্জ এখন দক্ষতার

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘প্রথাগত ব্যাংকে ডিজিটাল সেবা হালনাগাদ রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই স্বতন্ত্র ও পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ব্যাংক সময়ের দাবি। তবে এই ব্যাংক পরিচালনায় সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে দক্ষ জনবল পাওয়া, পাশাপাশি তথ্য-উপাত্ত ব্যবস্থাপনা, জনসচেতনতা ও বিপণন কৌশল তথা নিয়ন্ত্রণ কাঠামো শক্ত রাখা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো শুরু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশের ডেনিম শিল্পের সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী ‘বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো’-এর ১৯ তম আসর আজ। দুই দিনের এই এক্সপো অনুষ্ঠিত হবে ৫ ও ৬ নভেম্বর রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি)।

এ বছর প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, পাকিস্তান, তুরস্ক, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া, ভিয়েতনাম, জার্মানি ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ ১০টি দেশ থেকে ৪৫ টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।

এরা মূলত ফ্যাব্রিক মিল (ডেনিম ও নন-ডেনিম), গার্মেন্টস প্রস্তুতকারক, সুতা উৎপাদক, ওয়াশিং ও লন্ড্রি, অ্যাকসেসরিজ ও ট্রিমস, কেমিক্যালস, মেশিনারি বা প্রযুক্তি এবং লজিস্টিকস ক্যাটাগরিতে পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক এমডিকে ৫ কোটি টাকা জরিমানা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ আলম সারওয়ার। ফাইল ছবি
আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ আলম সারওয়ার। ফাইল ছবি

সিকিউরিটিজ আইন ও বিধিবিধান ভঙ্গের দায়ে আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ আলম সারওয়ারকে পাঁচ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

আজ মঙ্গলবার সংস্থার চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৯৮০ তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভা শেষে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

বিএসইসি জানায়, ‘আইএফআইসি গ্যারান্টিড শ্রীপুর টাউনশীপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ড’ শীর্ষক ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা অভিহিত মূল্যের ও ১ হাজার কোটি টাকা ইস্যু মূল্যের বন্ডটির জামিনদার (গ্যারান্টার) হিসেবে আইএফআইসি ব্যাংক এবং অ্যাডভাইজার ও অ্যারেঞ্জার হিসেবে আইএফআইসি ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড দায়িত্ব পালন করেছে। আইএফআইসি ব্যাংক ওই বন্ড ইস্যু করেনি। মূলত রিয়েল এস্টেট কোম্পানি শ্রীপুর টাউনশীপ লিমিটেড (এসটিএল) ওই বন্ডের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করেছে। কিন্তু বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে বন্ডের নাম হিসেবে ‘আইএফআইসি আমার বন্ড’ নামটি ব্যবহার করা হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীকে ধারণা দেয় যে, এ বন্ড আইএফআইসি ব্যাংক ইস্যু করেছে; কিন্তু ব্যাংকটি ছিল মূলত বন্ডটির জামিনদার। এভাবে বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করা হয়।

বিএসইসি এও জানায়, এর আগে ৯৬৫ তম কমিশন সভায় ওই বন্ডের অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। একই অপরাধে এবার ব্যাংকের তৎকালীন এমডি শাহ আলম সারওয়ারকে পাঁচ কোটি টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কমিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মার্কিন তুলায় শুল্কছাড়ে স্পষ্টতা চায় বিজিএমইএ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরায় মার্কিন তুলা রপ্তানিকারক সংগঠন কটন ইউএসএর এক উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করে বিজিএমইএ। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরায় মার্কিন তুলা রপ্তানিকারক সংগঠন কটন ইউএসএর এক উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করে বিজিএমইএ। ছবি: আজকের পত্রিকা

পোশাক উৎপাদনে ন্যূনতম ২০ শতাংশ মার্কিন কাঁচামাল ব্যবহার করা হলে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক থেকে বাংলাদেশের আনুপাতিক ছাড় পাওয়ার সুযোগ দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা বা বাস্তবায়ন নির্দেশনা না থাকায় দ্রুত স্পষ্টীকরণ চেয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরায় মার্কিন তুলা রপ্তানিকারক সংগঠন কটন ইউএসএর এক উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি তুলে ধরে বিজিএমইএ। বৈঠকে দুই দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকে মার্কিন তুলার ব্যবহার বৃদ্ধি এবং ঘোষিত শুল্ক সুবিধা বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। সংগঠনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহসভাপতি ইনামুল হক খান ও পরিচালক নাফিস-উদ-দৌলা। মার্কিন প্রতিনিধিদলে ছিলেন ইকমের লি ইন, কারগিলের ক্রিস্টা রিকম্যান, এলডিসির ডিয়েগো লোজাদা, ওলাম এগ্রির ওয়েসলি রেন্টজ, ক্যারোলিনা কটন গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েন বোসম্যানসহ আরও অনেকে।

বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, নতুন শুল্কছাড় বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের জন্য এক বড় সুযোগ। কিন্তু এই সুবিধা কার্যকরভাবে পেতে কারখানাগুলোকে কী প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে, সে বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই। মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যাখ্যা পাওয়া গেলে উদ্যোক্তারা প্রস্তুতি নিতে পারবেন।

মাহমুদ হাসান খান বলেন, বর্তমানে আমদানি করা তুলার প্রায় ১০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে, যা দ্বিগুণ বা ৩ গুণ পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব। তবে এ জন্য প্রয়োজন দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ও সুচিন্তিত কৌশলগত পদক্ষেপ। মার্কিন তুলার উচ্চ গুণগত মান ও তুলনামূলক সুবিধার বিষয়ে গবেষণা করে সুতা উৎপাদনকারীদের তথ্য সরবরাহ করা হলে তাঁরা আমদানি বাড়াতে উৎসাহিত হবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত