Ajker Patrika

৭০০ কোটি ডলারের মুদ্রা বিনিময়ে চীন-সৌদি আরব চুক্তি 

আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২৩, ১৬: ১৮
৭০০ কোটি ডলারের মুদ্রা বিনিময়ে চীন-সৌদি আরব চুক্তি 

নিজ নিজ মুদ্রায় লেনদেন করতে এক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে চীন ও সৌদি আরব। আগামী ৩ বছরের মধ্যে দেশ দুটি মার্কিন মুদ্রায় ৭০০ কোটি ডলার লেনদেন করবে চীনা ইউয়ান ও সৌদি রিয়ালে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই চুক্তি মূলত ডলারের প্রভাব কমানো বা ডি-ডলারাইজেশনের ক্ষেত্রে দুই দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে গেল। নিউইয়র্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিজনেস ইনসাইডারের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

চুক্তি অনুসারে, আগামী তিন বছরের মধ্যে সৌদি আরব ও চীন উভয় দেশেই ডলারের পরিবর্তে নিজ নিজ মুদ্রায় লেনদেন করবে প্রায় ৭০০ কোটি ডলার। এই চুক্তির আওতায় চীন সৌদি আরবের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ইউয়ানে মূল্য পরিশোধ করবে। এর পরিমাণ হলো সর্বোচ্চ ৫০০০ কোটি ইউয়ান। বিপরীতে সৌদি আরব ২ হাজার ৬০০ কোটি রিয়াল লেনদেন করবে চীনের সঙ্গে।

অর্থের পরিমাণ যদিও বেশ কম তবে এই চুক্তির প্রতীকী মূল্য অনেক বেশি। কারণ সৌদি আরব বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল রপ্তানিকারক দেশ এবং বিশ্বের জ্বালানি বাজারের অধিকাংশ লেনদেনই সম্পন্ন হয় ডলারে। এই চুক্তিকে অনেকে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ডলার হটানোর প্রয়াসে চীনের তরফ থেকে ইউয়ানের আন্তর্জাতিকীকরণ প্রচেষ্টা হিসেবেই ভাবছেন।

যদিও চীনের সবচেয়ে বড় জ্বালানি সরবরাহকারী দেশ হলো রাশিয়া কিন্তু দেশটি সৌদি আরবের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল কিনে থাকে। উদাহরণ হিসেবে ২০২২ সালের কথাই ধরা যাক। চীনের সরকারি তথ্য বলছে, সে বছর চীন সৌদি আরবের কাছ থেকে সাড়ে ৬ হাজার কোটি ডলারের তেল কিনেছে। সৌদি আরব চীনে যে পরিমাণ রপ্তানি করে তার ৮৩ শতাংশই জ্বালানি তেল।

রয়্যাল ব্যাংক অব কানাডার প্রতিবেদন অনুসারে, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে চীন ২৫ শতাংশ পণ্যের মূল্য পরিশোধ করে রেনমিনবি বা ইউয়ানে। গত সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আর্থিক সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান জেপি মরগান জানিয়েছিল, বিশ্ব জ্বালানি বাজারে ডলারের বদলে অন্যান্য মুদ্রায় জ্বালানির লেনদেনের হার ক্রমেই বাড়ছে।

এদিকে, ব্লুমবার্গের বিশ্লেষণ করা তথ্য বলছে—গত সেপ্টেম্বরে চীনের বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ইউয়ানের ব্যবহার ব্যাপকভাবে বেড়েছে। সে মাসে দেশটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ১১৭ দশমিক ১ বিলিয়ন ইউয়ান লেনদেন করেছে।

কেবল সৌদি আরব নয়, এর আগেও চীন বিশ্বের আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গে রেনমিনবিতে লেনদেনের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এসব দেশের মধ্যে আর্জেন্টিনা উল্লেখযোগ্য। বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চীন ইউয়ানে লেনদেনের জন্য প্রায় ২৯টি চুক্তি করেছে। এসব চুক্তির আওতায় প্রায় ৪ লাখ কোটি ইউয়ান লেনদেন হবে।

এসবের পাশাপাশি চীন দেশটির শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করতে পান্ডা বন্ড ছেড়েছে। সাধারণত চীনা মুদ্রার এই পান্ডা বন্ডগুলো চীনের বাজারে ছাড়া হয়। তবে এ ক্ষেত্রে বন্ডগুলো ছাড়ে অচীনা কোনো পক্ষ। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চীনের শেয়ারবাজার থেকে বিভিন্ন বিদেশি প্রতিষ্ঠান, সরকার, আন্তর্জাতিক সংগঠন মূলধন সংগ্রহ করে থাকে। এ ছাড়া বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আওতায় চীন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যেমন পেরু ও মালয়েশিয়ার সঙ্গে ইউয়ানে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: তিন দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

গুলিবিদ্ধ হাদি ও নির্বাচন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতের ওপর কেন ৫০ শতাংশ শুল্ক দিল মেক্সিকো, নয়াদিল্লির ক্ষতি কতটা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ০৩
ভারতের ওপর মেক্সিকোর শুল্ক আরোপের কারণে দেশটির বেশ বড় রকমের ক্ষতিই হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের ওপর মেক্সিকোর শুল্ক আরোপের কারণে দেশটির বেশ বড় রকমের ক্ষতিই হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের পদাঙ্ক অনুসরণ করে ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকো। এই শুল্ক বহাল থাকলে মেক্সিকোর বাজারে ভারতীয় পণ্যের প্রবেশ অনেক বেশি কঠিন হয়ে যাবে। মূলত, ভারতের সঙ্গে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি থাকায়, তা পুষিয়ে নিতেই ট্রাম্পের মতো করেই ভারতীয় রপ্তানি পণ্যের ওপর মেক্সিকোর এই শুল্ক।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম মানি কন্ট্রোলের খবরে বলা হয়েছে, মেক্সিকোর ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর জবাবে নয়াদিল্লিও জানিয়েছে, তারা নিজেদের রপ্তানিকারকদের স্বার্থ রক্ষায় ‘উপযুক্ত ব্যবস্থা’ নিতে পারে। এক সরকারি কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা পিটিআইকে এই কথা জানিয়েছেন।

এর আগে, এ সপ্তাহের শুরুতে মেক্সিকোর সিনেট এক নতুন শুল্ক ব্যবস্থা অনুমোদন করে, যা ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড এবং ইন্দোনেশিয়াসহ যেসব দেশের সঙ্গে মেক্সিকোর কোনো মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নেই, সেসব দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর এই শুল্ক বসানো হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ভারত মেক্সিকোর সঙ্গে তাদের অংশীদারত্বকে বিশেষ গুরুত্ব দেয় এবং স্থিতিশীল ও ভারসাম্যপূর্ণ এক বাণিজ্যিক পরিবেশ তৈরি করতে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে প্রস্তুত, যাতে দুই দেশের ব্যবসা ও সাধারণ মানুষ লাভবান হয়।’

এই শুল্কের প্রভাব কমাতে ভারত ইতিমধ্যেই মেক্সিকোর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে। সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখে মেক্সিকোতে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস মেক্সিকোর অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করে, যাতে ভারতীয় রপ্তানি সুরক্ষিত করার জন্য বিশেষ ছাড় পাওয়া যায়। ভারতীয় ওই কর্মকর্তা জানান, ‘বাণিজ্য দপ্তর মেক্সিকোর অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিশ্ব বাণিজ্য নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ পারস্পরিক সুবিধাজনক সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।’

দুই দেশই একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির জন্য আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করতে তৈরি হচ্ছে। আলোচনা শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলি দ্রুত চূড়ান্ত করা হবে বলে আশা করা যায়, যা ভারতীয় রপ্তানিকারকদের এই শুল্ক থেকে সুরক্ষা দিতে সাহায্য করতে পারে।

ইতিমধ্যেই বাণিজ্যসচিব রাজেশ আগরওয়াল ও মেক্সিকোর উপ-অর্থমন্ত্রী লুইস রোসেন্ডোর মধ্যে একটি উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে এবং আগামী সপ্তাহগুলোতে আরও প্রযুক্তিগত আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। ওই কর্মকর্তা আরও যোগ করেন, ‘গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজে চললেও, ভারত তার রপ্তানিকারকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার নিজের হাতে রেখেছে।’

তিনি উল্লেখ করেন, এই শুল্কের প্রভাব নির্ভর করবে ‘মেক্সিকোর অভ্যন্তরীণ সরবরাহ শৃঙ্খলে ভারতীয় রপ্তানির গুরুত্ব কতখানি এবং ভারতীয় কোম্পানিগুলি শুল্কের ছাড় পেতে বা এই বাড়তি খরচ মেক্সিকোর উপভোক্তাদের ওপর চাপিয়ে দিতে কতটা সক্ষম, তার ওপর।’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের সতর্কবার্তার পরই এই শুল্ক বাড়ানো হলো, যেখানে বলা হয়েছিল যে, সস্তায় চীনা পণ্য মেক্সিকো হয়ে আমেরিকাতে ঢুকছে। মেক্সিকো এটিকে তাদের অভ্যন্তরীণ শিল্পকে রক্ষা, চাকরি সংরক্ষণ এবং সস্তা আমদানির কারণে তৈরি হওয়া বাজারের ভারসাম্যহীনতা দূর করার পদক্ষেপ হিসেবে দেখিয়েছে। ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনসের ডিরেক্টর জেনারেল অজয় সাহাই বলেন, এই পদক্ষেপের ফলে অটোমোবাইল, অটো যন্ত্রাংশ, যন্ত্রপাতি, বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিকস, অরগানিক কেমিক্যাল, ওষুধ, টেক্সটাইল এবং প্লাস্টিকের মতো ক্ষেত্রগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

সাহাই পিটিআইকে বলেন, ‘এত বেশি শুল্ক আমাদের প্রতিযোগিতার ক্ষমতা কমিয়ে দেবে এবং বছরের পর বছর ধরে গড়ে ওঠা সরবরাহ শৃঙ্খলে সমস্যা তৈরির ঝুঁকি বাড়াবে।’

এদিকে, ২০২৪ সালে ভারত মেক্সিকোতে ৮ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল, যেখানে মেক্সিকো থেকে আমদানি হয়েছিল ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। ভারত ও মেক্সিকোর মধ্যে চলমান আলোচনা, যার সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আলোচনার সম্ভাবনাও যুক্ত, তা এই ক্রমবর্ধমান শুল্কের মুখে বাণিজ্যিক সম্পর্ককে স্থিতিশীল করতে এবং ভারতীয় রপ্তানিকারকদের স্বার্থ রক্ষা করতে সাহায্য করবে বলে আশা করা যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: তিন দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

গুলিবিদ্ধ হাদি ও নির্বাচন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৫৫
হাদিকে গুলি করা সন্দেহভাজন। ছবি: সংগৃহীত
হাদিকে গুলি করা সন্দেহভাজন। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ এবং তাঁর আইটি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল সফট আইটি লিমিটেডের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)।

আজ রোববার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ঊর্ধ্বতন এক সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘ওসমান হাদির ওপর হামলার পর যেহেতু ফয়সাল করিম মাসুদ প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত, সেহেতু গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাঁর বিভিন্ন বিষয় অনুসন্ধান করবে। আমরাও তাঁর আর্থিক কোনো অপরাধ আছে কি না, সেগুলোর অনুসন্ধান করব।’

এনবিআরের ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘শোনা যাচ্ছে এবং অনেক আলোচনা রয়েছে যে এই ধরনের অপরাধ সংঘটিত করার জন্য এবং দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির জন্য ভারত থেকে অনেক ফান্ডিং হচ্ছে। ফলে সে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার জন্য মূলত হিসাবগুলো ফ্রিজ করা হয়েছে।’

জানা গেছে, ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সদস্য।

এর আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে সন্দেহভাজনের ছবি প্রকাশ করে তথ্য চাওয়া হয়েছে। পুলিশের বিবৃতিতে সন্দেহভাজন তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদির সঙ্গে দেখা গেছে। তবে কয়েক দিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণই যে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: তিন দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

গুলিবিদ্ধ হাদি ও নির্বাচন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা চেম্বারের সেমিনার: বিদেশে চিকিৎসার ব্যয় বছরে ৫ বিলিয়ন ডলার

  • স্বাস্থ্য খাতে ব্যয়ে দ. এশিয়ায় পিছিয়ে বাংলাদেশ
  • মাথাপিছু সরকারি স্বাস্থ্যব্যয় মাত্র ১,০৭০ টাকা
  • মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পায় না ৪৯ শতাংশ মানুষ
  • দেশের স্বাস্থ্যসেবার বাজার ১৪ বিলিয়ন ডলারের
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৫৯
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে আস্থা বৃদ্ধি; মান নিয়ন্ত্রণে কৌশলগত কাঠামো নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক গতকালের সেমিনারে অতিথিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে আস্থা বৃদ্ধি; মান নিয়ন্ত্রণে কৌশলগত কাঠামো নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক গতকালের সেমিনারে অতিথিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ এবং মাথাপিছু সরকারি ব্যয় মাত্র ১,০৭০ টাকা। দেশের প্রায় ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। এ কারণে প্রতিবছর প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার চিকিৎসার জন্য বিদেশে গিয়ে ব্যয় করছে বাংলাদেশি রোগীরা। অথচ দেশের স্বাস্থ্যসেবার বাজার বর্তমানে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার এবং আগামী আট বছরে আরও ৯ বিলিয়ন ডলার বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা ২০৩৩ সালে ২৩ বিলিয়নে উন্নীত হতে পারে।

গতকাল শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে আস্থা বৃদ্ধি; মান নিয়ন্ত্রণে কৌশলগত কাঠামো নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক সেমিনারে উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত সভায় জাতীয় অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি এ কে আজাদ খান প্রধান অতিথি ছিলেন।

আলোচকেরা বলেন, অবকাঠামোর ঘাটতি, নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে পশ্চাৎপদতা, দক্ষ মানবসম্পদের সংকট, সেবার উচ্চ ব্যয়, কার্যকর তদারকির অভাব—এসব মিলিয়েই কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্য উন্নয়ন অর্জিত হয়নি। অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, কিছু ক্ষেত্রে অর্জন থাকলেও সামগ্রিকভাবে দেশের স্বাস্থ্যসেবা কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছায়নি। উন্নত দেশ তো দূরের কথা, পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায়ও বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে। তাঁর মতে, ইউনিভার্সেল হেলথকেয়ার বাস্তবায়ন বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব নয়, তবে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় জোর দেওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। তিনি ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন ও বিকেন্দ্রীকরণের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ডিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী। তিনি জানান, সীমিত বাজেট, অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, মানের ঘাটতি, শহর-গ্রামের বৈষম্য, বাড়তি ব্যয়, দুর্বল নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা—এসব কারণেই স্বাস্থ্য খাতের চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। যার ফলে তুলনামূলক উন্নত চিকিৎসার জন্য বিপুলসংখ্যক রোগী বিদেশমুখী হওয়ায় বছরে ৫ বিলিয়ন ডলার বাইরে চলে যাচ্ছে।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, মানসম্মত ও রোগীবান্ধব সেবা নিশ্চিতে কাঠামোগত ঘাটতি, দক্ষ জনবলস্বল্পতা, অনুমোদনহীন ক্লিনিক-ফার্মেসির বিস্তার, ভুল রোগনির্ণয়, ভুয়া ওষুধ এবং আইন প্রয়োগের দুর্বলতা জনস্বাস্থ্য আস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। স্বাস্থ্যবিমা কার্যকর না হওয়ায় ৭৪ শতাংশ ব্যয় রোগীকেই বহন করতে হয়, যা নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের জন্য বড় ঝুঁকি।

নির্ধারিত আলোচনায় অধ্যাপক সৈয়দ আতিকুল হক সরকারি হাসপাতালের মানোন্নয়নকে সর্বোচ্চ জরুরি বলে মনে করেন। ইউনিভার্সেল মেডিকেলের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী স্বাস্থ্য খাতে আস্থা পুনরুদ্ধারে সরকারি-বেসরকারি সমন্বয় ও পিপিপি ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: তিন দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

গুলিবিদ্ধ হাদি ও নির্বাচন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বছরের বড় হাটে দুই কোটি বেচাকেনা, ঊর্ধ্বমুখী দাম

­যশোর প্রতিনিধি
গাঁদা ফুলের উৎপাদন চাহিদার চেয়ে বেশি হওয়ায় এর দাম কম। মানভেদে প্রতি হাজার গাঁদা ফুল বিক্রি হয়েছে ২০০-৪০০ টাকায়। বিপরীতে চড়া দামে বিক্রি হয়েছে অন্যান্য ফুল। গতকাল যশোরের গদখালী বাজার থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাঁদা ফুলের উৎপাদন চাহিদার চেয়ে বেশি হওয়ায় এর দাম কম। মানভেদে প্রতি হাজার গাঁদা ফুল বিক্রি হয়েছে ২০০-৪০০ টাকায়। বিপরীতে চড়া দামে বিক্রি হয়েছে অন্যান্য ফুল। গতকাল যশোরের গদখালী বাজার থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

অগ্রহায়ণের শীতের সকাল। সাইকেল ও ভ্যানের ওপরে থরে থরে সাজানো রঙিন ফুলে ভরে উঠেছে যশোরের গদখালীর বাজার। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা—ফুলের ঘ্রাণ আর দরদামের হাঁকডাকে মুখর পুরো এলাকা। বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে ফুলের রাজধানী খ্যাত গদখালীতে গতকাল শনিবার জমে ওঠে বছরের বড় হাট।

যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে বসা এই বাজারে এদিন প্রায় ২ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। চাহিদা বাড়ায় অন্যান্য দিনের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি ফুলের সরবরাহ ও কেনাবেচা হয়েছে। অতিবৃষ্টিতে চলতি মৌসুমে যে ক্ষতি হয়েছিল, তা কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেওয়ার আশা করছেন ফুলচাষিরা।

গতকাল বাজারে সবচেয়ে বেশি এসেছে গাঁদা ফুল। মানভেদে প্রতি হাজার গাঁদা ফুল বিক্রি হয়েছে ২০০-৪০০ টাকায়। তবে সরবরাহ বেশি থাকায় দাম তুলনামূলক কম। বিপরীতে চড়া দামে বিক্রি হয়েছে অন্যান্য ফুল।

চন্দ্রমল্লিকা বিক্রি হয় ২, জারবেরা ১৬-১৮, গ্লাডিওলাস ১৬-২০, রজনীগন্ধা ১০-১৪, গোলাপ ৮-১০ এবং ভুট্টা ফুল প্রতিটি সর্বোচ্চ ১৫ টাকা দরে।

ফুলচাষি খালেদুর রহমান টিটু বলেন, ‘বিজয় দিবস ও বুদ্ধিজীবী দিবসের বাজার ধরার জন্য কয়েক মাস ধরে গাঁদা ফুলের পরিচর্যা করেছি। গাঁদার কাঙ্ক্ষিত দাম পাইনি, তবে অন্য ফুলের দাম ভালো থাকায় ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া যাবে।’

রজনীগন্ধার চাষি রফিকুল ইসলাম জানান, দুই বিঘা জমিতে চাষ করা ফুল এবার ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আজ ৯০০টি রজনীগন্ধা ১৪ টাকা পিস দরে বিক্রি করেছি। গতকাল ছিল ৯ টাকা। সামনে দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে।’

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, যশোর জেলায় প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে ১১ ধরনের ফুলের বাণিজ্যিক চাষ হয়। ডিসেম্বর থেকে মার্চ—এই চার মাসই ফুলের প্রধান মৌসুম। এ সময় অন্তত ৭-৮টি গুরুত্বপূর্ণ দিবসকে ঘিরে ১৫০-২০০ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনার লক্ষ্য থাকে স্থানীয় চাষি ও ব্যবসায়ীদের।

গদখালী ফুলচাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি মঞ্জুর আলম বলেন, বিভিন্ন জাতীয় দিবসকে সামনে রেখে চাষিরা ফুল উৎপাদন করেন। এবার গাঁদা ফুলের উৎপাদন চাহিদার চেয়ে বেশি হওয়ায় এর দাম কম। তবে গাঁদা ছাড়া প্রায় সব ফুলের দাম ঊর্ধ্বমুখী। গতকালের হাটে প্রায় ২ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: তিন দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

গুলিবিদ্ধ হাদি ও নির্বাচন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত