Ajker Patrika

অজুহাতে চালের দাম বাড়ছে

আয়নাল হোসেন, ঢাকা
আপডেট : ১১ জুলাই ২০২১, ১১: ৪৭
অজুহাতে চালের দাম বাড়ছে

চলমান কঠোর বিধিনিষেধে ত্রাণ বিতরণের অজুহাতে এবার বাড়ল মোটা চালের দাম। রাজধানীর পাইকারি বাজারে ৫০ কেজির বস্তায় ১০০ টাকা ও খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি সমহারে বেড়েছে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট আরও বাড়ল। এ অবস্থায় ট্রাক সেলের পরিধি ও সরবরাহ বাড়াতে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। 
তবে শুধু মোটা চাল নয়, মিনিকেট, নাজিরশাইলসহ সরু চালের দামও বস্তাপ্রতি ১০০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়েছে।

চলমান কঠোর বিধিনিষেধে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষের আয়–রোজগার আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে; বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন চলছে কষ্টে। রাজধানীতে টিসিবির পণ্য কিনতে এমনিতে ট্রাকের সামনে মানুষের লাইন দীর্ঘ হচ্ছে। বাজারে মোটা চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের ভোগান্তি আরও বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

রাজধানীর পুরান ঢাকার বাবুবাজার ও বাদামতলী এলাকার পাইকারি চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সপ্তাহে ৫০ কেজি ওজনের এক বস্তা চালের দাম ছিল ২ হাজার ৩০০ টাকা। এ হিসাবে প্রতি কেজির দাম ৪৬ টাকা। গত শুক্রবার একই চাল ২ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এই হিসাবে প্রতি কেজির দাম পড়ে ৪৮ টাকা। এতে কেজিতে ২ টাকা বেড়েছে। এক বস্তা মিনিকেট চালের দাম ছিল ২ হাজার ৭৫০ টাকা। শুক্রবার তা ২ হাজার ৮৫০ টাকায় বিক্রি হয়। নাজিরশাইলের দাম ছিল ২ হাজার ৬০০ টাকা। বর্তমানে তা ২ হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাবুবাজারের মেসার্স নিউ মুক্তা রাইস এজেন্সির মালিক দ্বীন মোহাম্মদ স্বপন বলেন, এ বছর মোটা ধানের আবাদ কম হয়েছে। সরকার মিলমালিকদের কাছ থেকে মোটা চাল নেওয়ায় বাজারে এই চালের সরবরাহ কম। আবার চলমান বিধিনিষেধে বিভিন্ন সংস্থা চাল বিতরণ করছে। ফলে বাজারে মোটা চালের পাশাপাশি সরু চালের দামও বেড়েছে।
রাজধানীর পূর্ব রামপুরার বনশ্রী এলাকার মেসার্স শিফা রাইস এজেন্সির বিক্রয় প্রতিনিধি আসাদুল ইসলাম বলেন, কয়েক দিন আগে তাঁরা প্রতি ৫০ কেজি ওজনের বিআর–২৮ চাল বিক্রি করেছেন ২ হাজার ৪০০ টাকায়। শুক্রবার থেকে তা ২ হাজার ৫৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। মোকামে দাম বাড়ায় তাঁদের পর্যায়ে বেড়েছে।

রাজধানীর সেগুনবাগিচা বাজারের মেসার্স সোনালি রাইস এজেন্সির মালিক নুরুল ইসলাম জানান, তিন–চার দিন আগেও প্রতি কেজি বিআর–২৮ চালের (লতা নামে পরিচিত) দাম ছিল ৫০ টাকা। শুক্রবার তা ৫২ টাকায় বিক্রি করেছেন। টিসিবির হিসাবমতে, এক সপ্তাহ আগে মোটা চালের দাম ছিল ৪৪–৪৮ টাকা। বর্তমানে তা ৪৬–৫০ এবং মাঝারি মানের ৫০–৫৪ টাকার চাল ৫২–৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চালের দাম বৃদ্ধি এভাবে চলতে থাকলে মানুষের ভোগান্তি বাড়বে বলে মনে করছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। সংগঠনের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, চলমান লকডাউনে চালের দাম বাড়ার বিষয়টি বেশি দিন স্থায়ী রাখা যাবে না। কেউ কারসাজির মাধ্যমে দাম বাড়াচ্ছে কি না, সরকারকে তা বের করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।

জানতে চাইলে খাদ্যসচিব নাজমানারা খানুম আজকের পত্রিকাকে বলেন, চালের দাম বাড়ায় ব্যবসায়ীদের অজুহাতের শেষ নেই। রাজধানীতে ট্রাক সেলের সংখ্যা আরও ২০টি বাড়ানো হচ্ছে। এখন ১০টি ট্রাক রয়েছে। প্রতি ট্রাকে তাঁরা দৈনিক তিন টন চাল দিচ্ছেন। সারা দেশে ৭৭৬টি ট্রাকে চাল বিক্রি হচ্ছে। ঈদ পর্যন্ত ট্রাক সেল অব্যাহত থাকবে।

খাদ্যসচিব আরও বলেন, বাজারে চালের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সরকার বিদেশ থেকে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) আমদানি শুল্ক কমিয়ে ২৫ শতাংশ করার চিঠি দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি পর্যায়েও চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সরকারি গুদামে চাল মজুত রয়েছে ১২ লাখ ১৫ হাজার টন। একই সময়ে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে চাল সংগ্রহ করেছে ৬ লাখ ১২ হাজার ৩৮২ টন এবং আতপ চাল ৪৯ হাজার ১২৮ টন। আর ধান সংগ্রহ করেছে ২ লাখ ৬৫ হাজার ৩১৩ টন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষার্থীদের ‘কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে’ সপরিবারে পালিয়েছেন বিএসবির বাশার

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ: পাকিস্তানে নিহত বেড়ে ২৬, আহত ৪৬

সীমান্তে সাদা পতাকা উড়িয়ে আত্মসমর্পণের ইঙ্গিত দিয়েছে ভারত: পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী

এনসিপি নেতা সারওয়ার তুষারের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগের নিষ্পত্তি হয়নি: শহিদুল আলম

পাকিস্তানে হামলায় ‘লোইটারিং মিউনিশনস’ ব্যবহারের দাবি ভারতের, এটি কীভাবে কাজ করে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত