Ajker Patrika

আইএমএফের চাপ কমাতে এনবিআরের সর্বোচ্চ চেষ্টা

  • আলোচনা ব্যর্থ হলে ঋণের কিস্তি ছাড়ে জটিলতার আশঙ্কা।
  • শর্তে অটল আইএমএফ
আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা 
আপডেট : ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৫: ২৭
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রধান কার্যালয়, আগারগাঁও, ঢাকা। ফাইল ছবি
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রধান কার্যালয়, আগারগাঁও, ঢাকা। ফাইল ছবি

আইএমএফ থেকে চতুর্থ কিস্তির ঋণ পেতে হলে বড় অঙ্কের রাজস্ব আদায়ের কঠিন লক্ষ্য পূরণ করতে হবে বাংলাদেশকে। ইতিমধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ওপর চাপানো হয়েছে তিন মাসে প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা এবং আগামী অর্থবছর থেকে অতিরিক্ত ৫৭ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহের শর্ত। কিন্তু এনবিআর বলছে, দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক বাস্তবতায় এই চাপ সামলানো কার্যত অসম্ভব।

এই প্রেক্ষাপটে আজ বুধবার আইএমএফের সঙ্গে আবার বসছে এনবিআর। আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে—এই শর্ত কিছুটা হলেও লঘু করা যায় কি না। এর আগে সোমবারের বৈঠকে এনবিআর জানিয়েছে, যে হারে আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অর্জনের জন্য সময় যেমন অপ্রতুল, তেমনি নীতিগত কাঠামোতেও রয়েছে সীমাবদ্ধতা।

এনবিআর চেয়ারম্যানের মতে, দেশের কর-জিডিপি অনুপাত বর্তমানে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ, যা আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের মধ্যে ৭ দশমিক ৯ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। এর জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা। তবে মার্চ পর্যন্ত আদায় হয়েছে ২ লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকা; যার ফলে ২ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি রয়েছে এবং তা আদায়ে হাতে আছে মাত্র তিন মাস সময়।

আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী, পরবর্তী অর্থবছরে ৫৭ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের জন্য নীতিগত সংস্কার ও করছাড় প্রত্যাহারের উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। তবে এনবিআর স্পষ্ট পরিকল্পনা উপস্থাপন করতে পারেনি। সোমবারের বৈঠকে এনবিআর ‘অসম্ভব’ উল্লেখ করে শর্ত হালকা করার প্রস্তাব দিলে আইএমএফ তা নাকচ করে দেয়।

এনবিআরের সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম এ বিষয়ে বলেন, ‘আইএমএফ আমাদের রাজনৈতিক বাস্তবতা জানলেও তারা বাংলাদেশের সক্ষমতা নিয়ে বিশ্বাসী। তাই তাদের শর্তে কোনো পরিবর্তন আসেনি। চলতি অর্থবছরে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ কর-জিডিপি বাড়াতে ৪ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতেই হবে।’

২০২৩ সালে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন পায় আইএমএফ থেকে। এর মধ্যে তিনটি কিস্তিতে প্রায় ২২১ কোটি ডলার ছাড় হয়েছে। জুনে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ একসঙ্গে ছাড়ের আশা রয়েছে।

আইএমএফের এই ঋণের বিপরীতে রাজস্ব ও আর্থিক খাতের সংস্কারসহ অভ্যন্তরীণ অর্থ ব্যবস্থাপনা জোরদারের শর্ত রয়েছে। এসব শর্ত পূরণের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে প্রতি কিস্তির আগে সংস্থার প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর করে। এবারও ১১ সদস্যের একটি দল এসেছে, যা ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত দফায় দফায় বৈঠক করবে।

সোমবারের বৈঠকে এক কর্মকর্তা জানান, ‘আইএমএফ আগামী বছরে ৫৭ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের পথ জানতে চেয়েছে। আমরা বলেছি, এটি বাস্তবসম্মত নয় এবং শর্ত কমানোর অনুরোধ করেছি, কিন্তু তারা রাজি হয়নি।’

আজ বুধবার আইএমএফ এনবিআরের তিন অনুবিভাগের সঙ্গে পুনরায় বৈঠক করবে। কর্মকর্তারা মনে করছেন, কার্যকর আলোচনা না হলে ঋণের পরবর্তী কিস্তি ছাড়ে জটিলতা হতে পারে। তাই শর্ত শিথিলের জন্য এনবিআর সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবে।

এনবিআরের ভ্যাট বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তাদের পূর্বশর্ত অনুযায়ী বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছিলাম, যার ফলেও বাড়তি রাজস্ব এসেছে। আমরা সেগুলো তুলে ধরেই আজ শর্ত শিথিলের দাবি জানাব।’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত