দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বের কাছে ছিল ‘অর্থনৈতিক বিস্ময়’ বাংলাদেশ। এর পুরো কৃতিত্ব দাবি করেন দেড় দশকের বেশি সময় ধরে প্রায় একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী শেখ হাসিনা। তাঁর দাবিকে সমর্থন করে সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, করোনা মহামারির আগের এক দশকে বছরে গড়ে ৭ শতাংশ হারে বেড়েছে দেশের অর্থনীতি। অবাক করা প্রবৃদ্ধির এই হার কেবল চীনের সঙ্গে তুলনীয়।
তবে উন্নয়নের এই আখ্যান বরাবরই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনার শাসনের অবসানের পর সেই প্রশ্ন জোরালো হয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে প্রকাশিত অর্থনীতির শ্বেতপত্র তাঁর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ভিত্তি নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছে। তাতে বাংলাদেশের উন্নয়নের এই আখ্যান ‘অতিরঞ্জিত’ ও ‘বিকৃত’ জিডিপি পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে তৈরি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়ে দেশের অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র তুলে ধরার জন্য অর্থনীতির বিশেষজ্ঞ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠন করে। ৩৮৫ পৃষ্ঠার শ্বেতপত্রটি সম্প্রতি ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এই শ্বেতপত্র প্রণয়ন করা হয়েছে বিশ্বব্যাংক প্রবর্তিত বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করে অর্থনীতি পর্যালোচনার ভিত্তিতে, যেখানে স্যাটেলাইট ডেটার মাধ্যমে রাতের বেলায় আলোর উজ্জ্বলতা পরিমাপ করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এই পদ্ধতি প্রয়োগ করেই শ্বেতপত্রে প্রবৃদ্ধির নতুন হিসাব উপস্থাপন করা হয়েছে। শ্বেতপত্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রকৃত হার ছিল প্রায় ৩ শতাংশ, যেখানে সরকারি পরিসংখ্যানে ৭ শতাংশ বলে দাবি করা হয়েছিল। দেশে-বিদেশে সরকারে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল দেখাতে জিডিপির পরিসংখ্যান ইচ্ছাকৃতভাবে বিকৃত করা হয় বলে শ্বেতপত্রে অভিযোগ করা হয়েছে।
তবে দুর্নীতি নিয়ে সবচেয়ে উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে। শ্বেতপত্রে দাবি করা হয়, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন বা ২৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। পাচারের এই অঙ্ক বর্তমান বার্ষিক গড় জিডিপির প্রায় ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। এই পাচারের মধ্যে শেয়ারবাজারে কেলেঙ্কারি ও মাদক পাচারসহ বিভিন্ন অবৈধ কর্মকাণ্ডের বড় অবদান রয়েছে। শ্বেতপত্রে বলা হয়, দুর্নীতির সিংহভাগই বড় অবকাঠামো প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে সংঘটিত হয়েছে। রাজনীতিবিদ, আমলা, ব্যবসায়ী এবং সুবিধাভোগীরা এসব প্রকল্পে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন।
বাংলাদেশে দুর্নীতি নতুন কিছু নয়। তবে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলছেন, দুর্নীতির এত ব্যাপক এবং গভীর বিস্তার আগে দেখা যায়নি। তাঁর মতে, বছরের পর বছর ধরে চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও জবাবদিহিতার অভাবে দুর্নীতি শিকড় গেড়ে বসেছে।
এই পরিস্থিতি যেসব অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কার করা দাবি করে, তা সম্পন্ন করা এই সরকারের জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। কারণ, পরিকল্পিত সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য পতিত সরকারের কর্মকর্তা ও আমলাদের ওপরই অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্ভর করতে হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে দীর্ঘমেয়াদে সঠিক তথ্য ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে স্বাধীন পরিসংখ্যান ও অর্থনৈতিক কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি।
কিন্তু তার আগে অন্তবর্তী সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে দেশে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে এবং বিনিয়োগ কমে গেছে ব্যাপকভাবে। এরই মধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে।
এদিকে বিশ্বব্যাংক বলছে, দেশের স্বচ্ছল গ্রামীণ পরিবারের অর্ধেক দারিদ্র্যসীমার নিচে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ওঠার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠন ও সংস্কার করতে সক্ষম হলেই কেবল বাংলাদেশ প্রকৃত ‘অর্থনৈতিক বিস্ময়’ হতে পারে।
দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বের কাছে ছিল ‘অর্থনৈতিক বিস্ময়’ বাংলাদেশ। এর পুরো কৃতিত্ব দাবি করেন দেড় দশকের বেশি সময় ধরে প্রায় একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী শেখ হাসিনা। তাঁর দাবিকে সমর্থন করে সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, করোনা মহামারির আগের এক দশকে বছরে গড়ে ৭ শতাংশ হারে বেড়েছে দেশের অর্থনীতি। অবাক করা প্রবৃদ্ধির এই হার কেবল চীনের সঙ্গে তুলনীয়।
তবে উন্নয়নের এই আখ্যান বরাবরই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনার শাসনের অবসানের পর সেই প্রশ্ন জোরালো হয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে প্রকাশিত অর্থনীতির শ্বেতপত্র তাঁর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ভিত্তি নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছে। তাতে বাংলাদেশের উন্নয়নের এই আখ্যান ‘অতিরঞ্জিত’ ও ‘বিকৃত’ জিডিপি পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে তৈরি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়ে দেশের অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র তুলে ধরার জন্য অর্থনীতির বিশেষজ্ঞ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠন করে। ৩৮৫ পৃষ্ঠার শ্বেতপত্রটি সম্প্রতি ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এই শ্বেতপত্র প্রণয়ন করা হয়েছে বিশ্বব্যাংক প্রবর্তিত বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করে অর্থনীতি পর্যালোচনার ভিত্তিতে, যেখানে স্যাটেলাইট ডেটার মাধ্যমে রাতের বেলায় আলোর উজ্জ্বলতা পরিমাপ করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এই পদ্ধতি প্রয়োগ করেই শ্বেতপত্রে প্রবৃদ্ধির নতুন হিসাব উপস্থাপন করা হয়েছে। শ্বেতপত্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রকৃত হার ছিল প্রায় ৩ শতাংশ, যেখানে সরকারি পরিসংখ্যানে ৭ শতাংশ বলে দাবি করা হয়েছিল। দেশে-বিদেশে সরকারে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল দেখাতে জিডিপির পরিসংখ্যান ইচ্ছাকৃতভাবে বিকৃত করা হয় বলে শ্বেতপত্রে অভিযোগ করা হয়েছে।
তবে দুর্নীতি নিয়ে সবচেয়ে উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে। শ্বেতপত্রে দাবি করা হয়, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন বা ২৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। পাচারের এই অঙ্ক বর্তমান বার্ষিক গড় জিডিপির প্রায় ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। এই পাচারের মধ্যে শেয়ারবাজারে কেলেঙ্কারি ও মাদক পাচারসহ বিভিন্ন অবৈধ কর্মকাণ্ডের বড় অবদান রয়েছে। শ্বেতপত্রে বলা হয়, দুর্নীতির সিংহভাগই বড় অবকাঠামো প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে সংঘটিত হয়েছে। রাজনীতিবিদ, আমলা, ব্যবসায়ী এবং সুবিধাভোগীরা এসব প্রকল্পে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন।
বাংলাদেশে দুর্নীতি নতুন কিছু নয়। তবে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলছেন, দুর্নীতির এত ব্যাপক এবং গভীর বিস্তার আগে দেখা যায়নি। তাঁর মতে, বছরের পর বছর ধরে চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও জবাবদিহিতার অভাবে দুর্নীতি শিকড় গেড়ে বসেছে।
এই পরিস্থিতি যেসব অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কার করা দাবি করে, তা সম্পন্ন করা এই সরকারের জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। কারণ, পরিকল্পিত সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য পতিত সরকারের কর্মকর্তা ও আমলাদের ওপরই অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্ভর করতে হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে দীর্ঘমেয়াদে সঠিক তথ্য ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে স্বাধীন পরিসংখ্যান ও অর্থনৈতিক কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি।
কিন্তু তার আগে অন্তবর্তী সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে দেশে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে এবং বিনিয়োগ কমে গেছে ব্যাপকভাবে। এরই মধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে।
এদিকে বিশ্বব্যাংক বলছে, দেশের স্বচ্ছল গ্রামীণ পরিবারের অর্ধেক দারিদ্র্যসীমার নিচে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ওঠার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠন ও সংস্কার করতে সক্ষম হলেই কেবল বাংলাদেশ প্রকৃত ‘অর্থনৈতিক বিস্ময়’ হতে পারে।
ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের সম্ভাবনা বিশাল, কিন্তু দেশ এখনো তা কাজে লাগাতে পারছে না। বর্তমানে আর্থিক খাতের মোট লেনদেনের ২৭-২৮ শতাংশ হচ্ছে ডিজিটাল মাধ্যমে, বাকিটা প্রথাগত ব্যাংকিংয়ের ওপর নির্ভরশীল। এর পেছনে রয়েছে সহায়ক নীতিমালার ঘাটতি, গ্রাহকের আস্থার সংকট, দুর্বল অবকাঠামো, সমন্বয়ের অভাব আর সাইবার...
৩৭ মিনিট আগেবন্ড সুবিধার অপব্যবহারের ঘটনায় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের আট কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অভিযোগ, তাঁরা কনটেইনারপ্রতি ঘুষ নিয়ে প্রাপ্যতার বাইরে বিপুল কাপড় খালাস দিয়েছেন, যার ফলে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে।
৪১ মিনিট আগেবাসমতী ছাড়া অন্যান্য চাল রপ্তানিতে এবার নতুন শর্ত জুড়ে দিয়েছে ভারত। দেশটির বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বৈদেশিক বাণিজ্য মহাপরিচালকের দপ্তর (ডিজিএফটি) গতকাল বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রজ্ঞাপনে নন-বাসমতী চালের রপ্তানি নীতিতে এ পরিবর্তন আনে। এর ফলে এখন থেকে নন-বাসমতী চাল রপ্তানির প্রতিটি চুক্তি..
২ ঘণ্টা আগেসর্বাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে নিজস্ব ব্র্যান্ডের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ‘রূপালীক্যাশ’ আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করেছে রাষ্ট্রমালিকানাধীন রূপালী ব্যাংক পিএলসি। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার দিলকুশাস্থ রূপালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এক জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেবাটির উদ্বোধন করেন ব্যাংকের
৪ ঘণ্টা আগে