Ajker Patrika

দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন /সংস্কারের আগে মূল্যস্ফীতি ও বিনিয়োগের সমাধান জরুরি

আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২: ৫৫
যথাযথ তত্ত্বের ভিত্তিতেও দেশের মূল্যস্ফীতিকে বাগ মানানো যাচ্ছে না। ছবি: আজকের পত্রিকা
যথাযথ তত্ত্বের ভিত্তিতেও দেশের মূল্যস্ফীতিকে বাগ মানানো যাচ্ছে না। ছবি: আজকের পত্রিকা

দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বের কাছে ছিল ‘অর্থনৈতিক বিস্ময়’ বাংলাদেশ। এর পুরো কৃতিত্ব দাবি করেন দেড় দশকের বেশি সময় ধরে প্রায় একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী শেখ হাসিনা। তাঁর দাবিকে সমর্থন করে সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, করোনা মহামারির আগের এক দশকে বছরে গড়ে ৭ শতাংশ হারে বেড়েছে দেশের অর্থনীতি। অবাক করা প্রবৃদ্ধির এই হার কেবল চীনের সঙ্গে তুলনীয়।

তবে উন্নয়নের এই আখ্যান বরাবরই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনার শাসনের অবসানের পর সেই প্রশ্ন জোরালো হয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে প্রকাশিত অর্থনীতির শ্বেতপত্র তাঁর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ভিত্তি নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছে। তাতে বাংলাদেশের উন্নয়নের এই আখ্যান ‘অতিরঞ্জিত’ ও ‘বিকৃত’ জিডিপি পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে তৈরি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়ে দেশের অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র তুলে ধরার জন্য অর্থনীতির বিশেষজ্ঞ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠন করে। ৩৮৫ পৃষ্ঠার শ্বেতপত্রটি সম্প্রতি ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এই শ্বেতপত্র প্রণয়ন করা হয়েছে বিশ্বব্যাংক প্রবর্তিত বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করে অর্থনীতি পর্যালোচনার ভিত্তিতে, যেখানে স্যাটেলাইট ডেটার মাধ্যমে রাতের বেলায় আলোর উজ্জ্বলতা পরিমাপ করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এই পদ্ধতি প্রয়োগ করেই শ্বেতপত্রে প্রবৃদ্ধির নতুন হিসাব উপস্থাপন করা হয়েছে। শ্বেতপত্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রকৃত হার ছিল প্রায় ৩ শতাংশ, যেখানে সরকারি পরিসংখ্যানে ৭ শতাংশ বলে দাবি করা হয়েছিল। দেশে-বিদেশে সরকারে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল দেখাতে জিডিপির পরিসংখ্যান ইচ্ছাকৃতভাবে বিকৃত করা হয় বলে শ্বেতপত্রে অভিযোগ করা হয়েছে।

তবে দুর্নীতি নিয়ে সবচেয়ে উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে। শ্বেতপত্রে দাবি করা হয়, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন বা ২৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। পাচারের এই অঙ্ক বর্তমান বার্ষিক গড় জিডিপির প্রায় ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। এই পাচারের মধ্যে শেয়ারবাজারে কেলেঙ্কারি ও মাদক পাচারসহ বিভিন্ন অবৈধ কর্মকাণ্ডের বড় অবদান রয়েছে। শ্বেতপত্রে বলা হয়, দুর্নীতির সিংহভাগই বড় অবকাঠামো প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে সংঘটিত হয়েছে। রাজনীতিবিদ, আমলা, ব্যবসায়ী এবং সুবিধাভোগীরা এসব প্রকল্পে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন।

বাংলাদেশে দুর্নীতি নতুন কিছু নয়। তবে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলছেন, দুর্নীতির এত ব্যাপক এবং গভীর বিস্তার আগে দেখা যায়নি। তাঁর মতে, বছরের পর বছর ধরে চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও জবাবদিহিতার অভাবে দুর্নীতি শিকড় গেড়ে বসেছে।

এই পরিস্থিতি যেসব অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কার করা দাবি করে, তা সম্পন্ন করা এই সরকারের জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। কারণ, পরিকল্পিত সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য পতিত সরকারের কর্মকর্তা ও আমলাদের ওপরই অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্ভর করতে হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে দীর্ঘমেয়াদে সঠিক তথ্য ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে স্বাধীন পরিসংখ্যান ও অর্থনৈতিক কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি।

কিন্তু তার আগে অন্তবর্তী সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে দেশে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে এবং বিনিয়োগ কমে গেছে ব্যাপকভাবে। এরই মধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে।

এদিকে বিশ্বব্যাংক বলছে, দেশের স্বচ্ছল গ্রামীণ পরিবারের অর্ধেক দারিদ্র্যসীমার নিচে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ওঠার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠন ও সংস্কার করতে সক্ষম হলেই কেবল বাংলাদেশ প্রকৃত ‘অর্থনৈতিক বিস্ময়’ হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭ হাজার ১৫০ কোটি টাকার ১২ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১৯: ৪২
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস আজ ঢাকায় পরিকল্পনা কমিশনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের পঞ্চম একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন। ছবি: পিআইডি
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস আজ ঢাকায় পরিকল্পনা কমিশনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের পঞ্চম একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন। ছবি: পিআইডি

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৭ হাজার ১৫০ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর সম্পূর্ণ ব্যয় সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে সংস্থান করা হবে।

আজ সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে নতুন প্রকল্প আটটি, সংশোধিত প্রকল্প দুটি এবং ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া মেয়াদ বৃদ্ধির দুটি প্রকল্প রয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

অনুমোদিত ১২টি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প, যার মধ্যে রয়েছে ‘মানিকগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প এবং ‘সাতক্ষীরা জেলা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প—‘কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার হাওর এলাকার ক্ষুদ্র সেচ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন’ (তৃতীয় সংশোধন)। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প—‘গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ এবং ‘চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে একটি করে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন’ (দ্বিতীয় সংশোধিত)।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প—‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ’ (তৃতীয় পর্যায়) (প্রথম সংশোধিত)। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রকল্প—‘সমাপ্ত চতুর্থ সেক্টর কর্মসূচির অত্যাবশ্যকীয় পরিবার পরিকল্পনা, মা, শিশু ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার অসমাপ্ত কার্যাবলি বাস্তবায়ন’ প্রকল্প, ‘স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তর, নিপোর্ট এবং নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের কার্যক্রম ব্যবস্থাপনায় সমন্বিত উন্নয়ন’ এবং ‘পিএফডি, এইচইএফ, আইএফএম, এইচআরডি এবং এসডব্লিউপিএমএমের অত্যাবশ্যকীয় অসমাপ্ত কার্যক্রম বাস্তবায়ন’ প্রকল্প।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প—‘ঢাকা সেনানিবাসে নির্ঝর আবাসিক এলাকায় ‘বি’ টাইপ অফিসার্স বাসস্থান নির্মাণ’। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প—‘নড়াইল-কালিয়া জেলা মহাসড়কের ২১তম কিলোমিটারে কালিয়া নামের স্থানে নবগঙ্গা নদীর ওপর কালিয়া সেতু নির্মাণের (দ্বিতীয় সংশোধিত) চতুর্থবার মেয়াদ বৃদ্ধি’। শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প—‘বিসিক শিল্পপার্ক, টাঙ্গাইল’ (তৃতীয় সংশোধিত)।

সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ; অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ; আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল; স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী; শিল্প এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান; স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমসহ সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা ও কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভ্যাট রিফান্ড এখন থেকে অনলাইনে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রধান কার্যালয়, আগারগাঁও, ঢাকা। ফাইল ছবি
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রধান কার্যালয়, আগারগাঁও, ঢাকা। ফাইল ছবি

ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির পর অনলাইনে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ফেরত বা ভ্যাট রিফান্ড প্রক্রিয়া চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। গতকাল রোববার (৯ নভেম্বর) এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।

এনবিআর জানায়, করদাতারা এখন থেকে অনলাইনে ভ্যাট রিফান্ডের আবেদন দাখিল, যাচাই-বাছাই ও অনুমোদন সম্পন্ন করে সরাসরি ব্যাংক হিসাবে রিফান্ডের অর্থ পেতে পারবেন। এ জন্য অনলাইন ভ্যাট রিফান্ড মডিউল চালু করা হয়েছে।

এনবিআরের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিদ্যমান ইন্টিগ্রেটেড ভ্যাট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেমের (আইভাস) সঙ্গে অর্থ বিভাগের আইবাস প্লাস প্লাস (iBAS‍+‍+) সিস্টেমের আন্তসংযোগ স্থাপন করা হবে। এতে বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার নেটওয়ার্কের (বিইএফটিএন) মাধ্যমে রিফান্ডের অর্থ সরাসরি করদাতার নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে জমা হবে।

এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আল আমিন শেখ বলেন, অনলাইন ভ্যাট রিফান্ড মডিউলের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের লক্ষ্যে সব কার্যক্রম ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ অটোমেশনের আওতায় আনা হচ্ছে।

অনলাইন রিফান্ড প্রক্রিয়া

নতুন মডিউলের মাধ্যমে করদাতারা অনলাইনে মূসক রিটার্ন দাখিলের সময় রিফান্ডের আবেদন করতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট মূসক কমিশনারেট আবেদন যাচাই-বাছাই করে অনুমোদনের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে অর্থ স্থানান্তর করবে।

এতে রিফান্ডের আবেদন বা চেক গ্রহণের জন্য করদাতাকে আর ভ্যাট অফিসে যেতে হবে না। ফলে সময় ও ব্যয় সাশ্রয় হবে এবং প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

এরই মধ্যে অনিষ্পন্ন রিফান্ড আবেদনকারীদের নতুন মডিউলে মূসক-৯.১ ফরমের মাধ্যমে পুনরায় অনলাইনে আবেদন দাখিল করতে হবে বলে জানিয়েছে এনবিআর।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য ভ্যাট কমিশনারেট পর্যায়ে প্রশিক্ষণ আয়োজন করা হয়েছে। করদাতারা প্রয়োজনে স্থানীয় কমিশনারেটে যোগাযোগ করে অনলাইন রিফান্ড প্রক্রিয়া সম্পর্কে সহায়তা নিতে পারবেন।

গত আগস্টে এক অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, ভ্যাট রিটার্ন প্রক্রিয়া পুরোপুরি অটোমেশনে চলে যাবে। কাগজে রিটার্ন নেওয়া হবে না।

যখন কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান কাঁচামাল বা সেবা কেনে, তখন ইনপুট ভ্যাট দেয়। আবার সেই পণ্য বা সেবা বিক্রি করলে গ্রাহকের কাছ থেকে আউটপুট ভ্যাট নেয়। যদি ইনপুট ভ্যাটের পরিমাণ আউটপুট ভ্যাটের চেয়ে বেশি হয়, তখন অতিরিক্ত ভ্যাট রিফান্ড হিসেবে দাবি করতে পারে। তবে এত দিন এই ভ্যাট রিফান্ড না পাওয়ার অভিযোগ করতেন ব্যবসায়ীরা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে বিভিন্ন বৈঠকে ভ্যাট রিফান্ডের দাবিও তুলতেন তাঁরা।

ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির পর অনলাইনে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ফেরত বা ভ্যাট রিফান্ড প্রক্রিয়া চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ()। গতকাল রোববার (৯ নভেম্বর) এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এক বছরের ব্যবধানে কলমানি বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ২৭
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা

এক বছরের ব্যবধানে (অক্টোবর থেকে অক্টোবর) দেশের ব্যাংকগুলোর স্বল্পকালীন (কলমানি) ঋণ বিপুল হারে বেড়েছে। চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত কলমানি ঋণ প্রায় দ্বিগুণ বা ৬৩ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা বেড়েছে। এর মধ্যে এক দিনের জন্য ওভারনাইট ধার বেড়েছে ৪৯ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা আর আন্তব্যাংক রেপোতে ধার বেড়েছে ৫৮ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা। গতকাল রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অক্টোবর মাসে কলমানিতে এক দিন থেকে এক বছরের কম সময়ের জন্য ব্যাংকগুলো ধার করেছে ১ লাখ ৪৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা; যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৮০ হাজার ২৩ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কলমানিতে ধার বেড়েছে ৬৩ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে এক দিনের জন্য ওভারনাইটে ধার ছিল ১ লাখ ২১ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা, যা তার আগের বছরের অক্টোবরে ছিল ৭২ হাজার ৫৬ কোটি টাকা। সে হিসাবে ওভারনাইট ধার বেড়েছে ৪৯ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, পলিসি রেট (নীতি সুদহার) বাড়ার প্রভাব কলমানি মার্কেটে পড়েছে। এখন ঋণের খরচ বেড়েছে। অনেক ব্যাংক নগদ টাকার চাপ সামলাতে চড়া সুদে ঋণ করে ব্যাংকিং কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেছে। ফলে বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অক্টোবরে ২ থেকে ১৪ দিনের জন্য শর্ট নোটিশে ধারের পরিমাণ ছিল ১৯ হাজার ৪৬৩ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ১২ হাজার ৯২২ কোটি টাকা। একইভাবে ১৫ দিন থেকে এক বছরের কম সময়ের জন্য টার্ম কল ঋণ গত অক্টোবরে ছিল ১ হাজার ৮২০ কোটি টাকা, যা ২০২৪ সালের অক্টোবরে ছিল ১ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ঋণ বেড়েছে ৩৯৪ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরি বলেন, বর্তমানে ব্যাংক খাতে নগদ টাকার ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের সংকট রয়েছে। ডলারের দাম বাড়ায় ব্যাংকে তারল্যসংকট দেখা দিয়েছে। তারল্যসংকটের মোকাবিলা করতে এক ব্যাংক অন্য ব্যাংক থেকে চড়া সুদেও টাকা ধার নিচ্ছে। কারণ বাজারে খুব বেশি তারল্য নেই। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকও রেপোর নিলাম কমিয়ে দিয়েছে। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো খুব বেশি টাকা ধার করতে পারছে। সব মিলিয়ে কলমানি বাজারে চড়া সুদে যেসব ব্যাংক টাকা ধার নিয়েছে তারা ধার পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে। কিন্তু কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে কলমানিতে সুদহার বেশি হলেও নিরুপায় হয়ে কলমানিতে লেনদেন করে অস্বস্তিতে পড়েছে ব্যাংকগুলো।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত অক্টোবরে কলমানির মধ্যে ওভারনাইটের গড় সুদহার (ডব্লিইএআর) ছিল ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ, শর্ট নোটিশের গড় সুদহার ছিল ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং টার্ম কলে সুদহার ছিল ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ। আর আন্তব্যাংক রেপোতে সুদের গড় হার ছিল ৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ। আর চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অক্টোবর মাসে আন্তব্যাংক লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৭১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৩ হাজার ৩২ কোটি টাকা। সে হিসাবে আন্তব্যাংক লেনদেন বেড়েছে ৫৮ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি দুর্বল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, এখন কিছু ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে। তবে অন্য ব্যাংকগুলো দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে, তারাই ধার নিচ্ছে। এখন যেসব ব্যাংকের ধার প্রয়োজন, তাদের বেশির ভাগেরই পর্যাপ্ত জামানত নেই। তারা কলমানির ধারের টাকায় ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, ডলারের দর বেড়েছে, এতে টাকার মূল্য হ্রাস পেয়েছে। যে কারণে কিছু ব্যাংক তারল্যসংকটে পড়েছে। দুর্বল ব্যাংকগুলো তারল্যসুবিধা নিচ্ছে, স্বাভাবিক চাহিদা পূরণ করতে কলমানিতে ধার করছে। চাহিদা বাড়লে ধার বাড়ে, আবার চাহিদা কমলে ধার কমে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আইএমএফ-বিএনপি বৈঠক

সংস্কার, স্থিতিশীলতা ও নীতির ধারাবাহিকতায় গুরুত্ব

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, সংস্কার ও নীতিগত অগ্রাধিকার নিয়ে আলোচনা করতে গতকাল গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলটির সঙ্গে বৈঠক করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রতিনিধিদল। ছবি: বিএনপির মিডিয়া সেল
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, সংস্কার ও নীতিগত অগ্রাধিকার নিয়ে আলোচনা করতে গতকাল গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলটির সঙ্গে বৈঠক করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রতিনিধিদল। ছবি: বিএনপির মিডিয়া সেল

বাংলাদেশে চলমান অর্থনৈতিক সংস্কারের লক্ষ্য পূরণে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও নীতির ধারাবাহিকতা অপরিহার্য বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঢাকা সফররত মিশন প্রতিনিধিদল। তারা আরও বলেছে, রাজস্ব আয় ও ব্যয়ের ভারসাম্য আনতে করনীতিকে উৎপাদনমুখী করা এবং সামাজিক খাতে বরাদ্দের কার্যকারিতা বাড়ানো এখন সময়ের প্রধান চ্যালেঞ্জ।

গতকাল রোববার মিশনপ্রধান ক্রিস পাপাজর্জিউর নেতৃত্বাধীন আইএমএফ প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেয়। বিএনপির পক্ষে নেতৃত্ব দেন দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সচিব মো. ইসমাইল জবিউল্লাহ, বিশ্বব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার এবং সংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।

গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকটি ছিল ভবিষ্যৎ প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত সংলাপের সুযোগ। এতে আলোচনা হয় আইএমএফের চলমান ঋণ কর্মসূচির মূল্যায়ন মিশনের প্রাথমিক প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের আর্থিক কাঠামো, রাজস্ব সংগ্রহ, করনীতি এবং সামাজিক ব্যয় বৃদ্ধিসহ নানা দিক নিয়ে। বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) হরমোনাইজেশন, ভ্যাট ও করছাড় হ্রাসে নতুন টেকনিক্যাল সহায়তা, করপোরেট করকাঠামোর সংস্কার, ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা এবং সামাজিক খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর উদ্যোগ।

তাই বিএনপিও বৈঠকে আইএমএফ মিশনের প্রস্তাব ও মনোভাবের সঙ্গে সায় জানিয়েছে। বিএনপি প্রতিনিধিদল জোর দিয়ে উল্লেখ করেছে, দেশের টেকসই অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হলে আর্থিক খাত, করনীতি এবং সামাজিক খাতে সমন্বিত সংস্কার অপরিহার্য। তারা বলছেন, জবাবদিহিমূলক ও স্বচ্ছ আর্থিক প্রশাসন ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধি স্থায়ী করা সম্ভব নয়। এ সময় দলের পক্ষ থেকে করকাঠামো সহজীকরণ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের করসুবিধা পুনর্বিবেচনা এবং ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতা দূর করার প্রস্তাবও উঠে আসে। দল জানিয়েছে, নির্বাচিত হলে তারা দেশ ও জনগণের স্বার্থসংশ্লিষ্ট চলমান সংস্কার কর্মসূচিকে আরও বেগবান করবে।

আইএমএফ প্রতিনিধিদল বিএনপির উপস্থাপিত নীতি-দৃষ্টিভঙ্গি ও সংস্কার প্রস্তাবের প্রশংসা করেছে। তারা জানিয়েছে, স্বচ্ছ ও টেকসই অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তুলতে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণমূলক সংলাপ ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

উভয় পক্ষই আশা প্রকাশ করেছে, এ সংলাপ বাংলাদেশের রাজস্ব কাঠামো, সামাজিক খাত এবং অর্থনৈতিক নীতিতে নতুন দিকনির্দেশনা তৈরি করবে—যেখানে থাকবে সংস্কার, স্বচ্ছতা এবং ন্যায্যতা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত