সিমিন হোসেন রিমি
ছোটবেলায় গ্রামের বাড়িতে গেলে প্রায়ই শুনতাম মা–মরা সন্তান, আহা রে! মা সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মরে গেছে। আমিও তখন শিশু, এই মা–মরা সন্তান কথাটি আমাকে খুব কষ্ট দিত।
ঈশপের নীতি গল্পের বই বানান করে করে পড়ে আমার বই পড়া শুরু। প্রকৃতি, মানুষ, প্রাণী আমাকে খুব টানত। রূপকথার চাইতেও ওই ছোট বয়সেই ভালো লাগত জীবনধর্মী মানুষের গল্প। রাজনৈতিক পরিবেশে বেড়ে ওঠার কারণে জন্মভূমি এবং সমস্ত মা আমার কাছে সমার্থক ছিল।
আমার আম্মাকে (সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন) সব সময় দেখেছি কোনো মানুষের অসুস্থতায়, বিপদে-আপদে তার পাশে দাঁড়াতেন। বিষয়টি আমাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করত। এছাড়া বইয়ে পড়া পৃথিবীর কত কীর্তিমান মানুষের মানবসেবার কাহিনি সারাক্ষণই আলোড়ন তুলেছে মনে। আর বাবা তাজউদ্দীন আহমদের তরুণ বয়স থেকে আর্তের সেবায় ক্লান্তিহীন কাজ, যা আমৃত্যু আমার চলার পথের পাথেয়। এর অবশ্য বেশির ভাগ কাহিনি আমি জেনেছি তাঁর মৃত্যুর পর।
নিরাপদ মা, প্রাণোচ্ছল শিশু, সব মানুষ বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য মানবিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা আমার ভেতরে সব সময় তাড়া করে ফেরে। এমন সব ভাবনা থেকেই আম্মার পাশে থেকে যেমন ঢাকার, তেমনি কাপাসিয়ার সুবিধাবঞ্চিত কিছু মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবামূলক কাজে জড়িয়ে পড়ি। পাশাপাশি বাল্যবিবাহ রোধ বিষয়ে সচেতন করা, শিশুদের শিক্ষার প্রতি আগ্রহী করে তোলার মতো বিষয়গুলো নিয়ে প্রায় নিভৃতেই কাজ করতে থাকি। পাঠাগার গড়ে তোলা এবং এর ফলে জীবনের শৃঙ্খলা ও বই পড়ার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি ছিল লক্ষ্য। গ্রামে যে সময় মা সমাবেশের ধারণা ছিল না, তেমন পরিবেশে বিভিন্ন স্কুলের মধ্যে বা কোনো বাড়ির আঙিনায় স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, সন্তানের শিক্ষা, ভবিষ্যৎ—এসব নিয়ে আলোচনা করতাম।
২০০১ সালের সম্ভবত মে মাসের দিকে সারা দেশে জাতীয় পুষ্টি কার্যক্রম শুরু হয়। উপজেলার প্রতি ওয়ার্ডে জনসংখ্যার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট বাড়িতে একাধিক পুষ্টিকেন্দ্র ছিল, যেখানে গর্ভবতী নারী ও দুই বছরের নিচে শিশুদের চালডালের গুঁড়া, সয়াবিন তেল, আখের গুড় দিয়ে তৈরি পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হতো। গর্ভবতীর ওজন লেখা হতো। কিশোর–কিশোরী, নবদম্পতিদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো পুষ্টিকর্মীদের। বিভিন্ন ধরনের ছবিসহ ছোট ছোট বই থাকত। আমি মাঝেমধ্যেই পুষ্টি কার্যক্রম চলে এমন বাড়িতে গিয়ে বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের সঙ্গে কথা বলতাম। খুব মায়া লাগত তাদের শারীরিক ও মনোজগতের বিশাল পরিবর্তনের সঙ্গে বাস্তবের বিন্দুমাত্র সংযোগ নেই দেখে। বয়স কম, দারিদ্র্য, নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে না পারা, নতুন পরিবেশ–পরিস্থিতিতে সহযোগিতা ও সহমর্মিতার অভাব লক্ষ করেছি অধিকাংশ ক্ষেত্রে। গর্ভকালীন সময়টায় তাঁর কী করণীয়, কী ব্যবস্থাপনা—কিছুই জানা নেই। গর্ভকালীন সময়টা যে অসুস্থতা নয়, কোনো সমস্যা হলে তা বলা লজ্জার কিছু নয়, তাদের এমন ধারণাও ছিল না একেবারে।
পরবর্তী সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আগ্রহে আমি যখন কাপাসিয়ার জনপ্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার সুযোগ পাই, তখন যেকোনো সভা-সমাবেশে অন্য প্রসঙ্গের পাশাপাশি নারীর প্রতি যত্ন, শিশু, স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কথা বলতাম। এসব সমাবেশে নারীর উপস্থিতি লক্ষণীয় মাত্রায় বাড়তে থাকে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক, স্যাটেলাইট ক্লিনিক, অর্থাৎ উপজেলা পর্যায়ে সম্পূর্ণ সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রতিনিয়ত খোঁজ রাখা এবং সে অনুযায়ী সাধ্যমতো প্রয়োজনীয় কাজগুলো চলতে থাকে। এর মধ্যে ২০১৬ সালে উপজেলার নতুন পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা উদ্যমী ভূমিকা নিয়ে কাপাসিয়ার ১১টি ইউনিয়নের প্রতিটিতে গর্ভবতী নারীর বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহে জরিপকাজ সম্পন্ন করেন। সেই জরিপের ভিত্তিতে গর্ভবতী মায়েদের ৩৭টি তথ্যসংবলিত ‘ডেটাবেইজ’ তৈরি করা হয়েছে, যার ফলে উপজেলার সব গর্ভবতী ও প্রসূতি মাকে ডিজিটাল সেবার আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে, যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কর্মপ্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ভূমিকা রাখছে।
বর্তমানে তথ্যভান্ডারের ফলে সফটওয়ার স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভবতী নির্ধারণ করে। ১৮ বছরের নিচে, ৩৫ বছরের ওপরে, কম উচ্চতা, নেগেটিভ রক্তের গ্রুপ আধিক্য মানদণ্ডের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ প্রসূতিদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। প্রতিটি গর্ভবতী নারীর জন্য বিনা মূল্যে ৪৪ পৃষ্ঠার সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন মা ও শিশু স্বাস্থ্য সহায়িকা বিতরণ শুরু হয়েছে ২০১৭ সাল থেকে। গর্ভবতীর চেকআপের জন্য প্রত্যেকের জন্য নির্দিষ্ট তারিখে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধসহ মোবাইল ফোনে ভয়েস কল যায়। গত তিন বছরে কাপাসিয়ায় গর্ভকালীন মাতৃমৃত্যু শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। স্থানীয় ছাত্রলীগকে এ কাজে উদ্বুদ্ধ ও সম্পৃক্ত করা হয়েছে। রক্তদাতা গ্রুপ গড়ে উঠেছে। মা সমাবেশে, মায়েদের অবহিতকরণ সভাগুলোতে স্থানীয় ইউনিয়নভিত্তিক ছাত্রসংগঠন দায়িত্ব পালন করছে। ইউনিয়ন পরিষদসহ প্রতিটি সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র বিস্তারিত তথ্য দিয়ে নিরাপদ মাতৃত্ব দেয়ালসহ অন্যান্য প্রচার কার্যক্রম চলমান।
বিশ্বব্যাপী চলমান কোভিড-১৯ মহামারিতে কাপাসিয়ায় নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের ১৮ জন করে ১১টি ইউনিয়নে মোট ১৯৮ জন দাইকে কর্মশালার মাধ্যমে আধুনিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের প্রত্যেককে প্রসব সহায়তাকারী জরুরি টুল বক্স দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে করোনা মহামারিতে কাপাসিয়া উপজেলার মাতৃমৃত্যু শূন্যের কোঠায় রাখতে এসব কার্যক্রম অনবদ্য ভূমিকা রাখছে। মাতৃমৃত্যু রোধে ‘কাপাসিয়া মডেল’-এর গুরুত্ব উপলব্ধি করে জাতিসংঘের স্থায়ী পর্যবেক্ষক প্রজনন স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও উন্নয়নসংক্রান্ত আন্তদেশীয় সংস্থা’ Partners in Population and Development ‘মাতৃমৃত্যুমুক্ত কাপাসিয়া মডেল’কে বাংলাদেশের সর্বোত্তম চর্চার মনোনয়ন প্রদান করে নথিভুক্ত করা হয়েছে। পিপিডি থেকে জানা যায়, এটি পিপিডির ওয়েবসাইটে আলাদা বই আকারে প্রকাশ করা হবে। পিপিডির ২৭টি দেশের মোর্চা যেন এই মডেল গ্রহণ করে, সে বিষয়ে পিপিডি জোরালো সুপারিশ করবে।
‘মানুষের জন্য মানুষ’—এ লক্ষ্যে একাত্ম হয়ে এ কাজের সঙ্গে জড়িত থাকতে পেরে আমি আনন্দিত।
সিমিন হোসেন রিমি
রাজনীতিক ও লেখক
ছোটবেলায় গ্রামের বাড়িতে গেলে প্রায়ই শুনতাম মা–মরা সন্তান, আহা রে! মা সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মরে গেছে। আমিও তখন শিশু, এই মা–মরা সন্তান কথাটি আমাকে খুব কষ্ট দিত।
ঈশপের নীতি গল্পের বই বানান করে করে পড়ে আমার বই পড়া শুরু। প্রকৃতি, মানুষ, প্রাণী আমাকে খুব টানত। রূপকথার চাইতেও ওই ছোট বয়সেই ভালো লাগত জীবনধর্মী মানুষের গল্প। রাজনৈতিক পরিবেশে বেড়ে ওঠার কারণে জন্মভূমি এবং সমস্ত মা আমার কাছে সমার্থক ছিল।
আমার আম্মাকে (সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন) সব সময় দেখেছি কোনো মানুষের অসুস্থতায়, বিপদে-আপদে তার পাশে দাঁড়াতেন। বিষয়টি আমাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করত। এছাড়া বইয়ে পড়া পৃথিবীর কত কীর্তিমান মানুষের মানবসেবার কাহিনি সারাক্ষণই আলোড়ন তুলেছে মনে। আর বাবা তাজউদ্দীন আহমদের তরুণ বয়স থেকে আর্তের সেবায় ক্লান্তিহীন কাজ, যা আমৃত্যু আমার চলার পথের পাথেয়। এর অবশ্য বেশির ভাগ কাহিনি আমি জেনেছি তাঁর মৃত্যুর পর।
নিরাপদ মা, প্রাণোচ্ছল শিশু, সব মানুষ বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য মানবিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা আমার ভেতরে সব সময় তাড়া করে ফেরে। এমন সব ভাবনা থেকেই আম্মার পাশে থেকে যেমন ঢাকার, তেমনি কাপাসিয়ার সুবিধাবঞ্চিত কিছু মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবামূলক কাজে জড়িয়ে পড়ি। পাশাপাশি বাল্যবিবাহ রোধ বিষয়ে সচেতন করা, শিশুদের শিক্ষার প্রতি আগ্রহী করে তোলার মতো বিষয়গুলো নিয়ে প্রায় নিভৃতেই কাজ করতে থাকি। পাঠাগার গড়ে তোলা এবং এর ফলে জীবনের শৃঙ্খলা ও বই পড়ার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি ছিল লক্ষ্য। গ্রামে যে সময় মা সমাবেশের ধারণা ছিল না, তেমন পরিবেশে বিভিন্ন স্কুলের মধ্যে বা কোনো বাড়ির আঙিনায় স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, সন্তানের শিক্ষা, ভবিষ্যৎ—এসব নিয়ে আলোচনা করতাম।
২০০১ সালের সম্ভবত মে মাসের দিকে সারা দেশে জাতীয় পুষ্টি কার্যক্রম শুরু হয়। উপজেলার প্রতি ওয়ার্ডে জনসংখ্যার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট বাড়িতে একাধিক পুষ্টিকেন্দ্র ছিল, যেখানে গর্ভবতী নারী ও দুই বছরের নিচে শিশুদের চালডালের গুঁড়া, সয়াবিন তেল, আখের গুড় দিয়ে তৈরি পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হতো। গর্ভবতীর ওজন লেখা হতো। কিশোর–কিশোরী, নবদম্পতিদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো পুষ্টিকর্মীদের। বিভিন্ন ধরনের ছবিসহ ছোট ছোট বই থাকত। আমি মাঝেমধ্যেই পুষ্টি কার্যক্রম চলে এমন বাড়িতে গিয়ে বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের সঙ্গে কথা বলতাম। খুব মায়া লাগত তাদের শারীরিক ও মনোজগতের বিশাল পরিবর্তনের সঙ্গে বাস্তবের বিন্দুমাত্র সংযোগ নেই দেখে। বয়স কম, দারিদ্র্য, নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে না পারা, নতুন পরিবেশ–পরিস্থিতিতে সহযোগিতা ও সহমর্মিতার অভাব লক্ষ করেছি অধিকাংশ ক্ষেত্রে। গর্ভকালীন সময়টায় তাঁর কী করণীয়, কী ব্যবস্থাপনা—কিছুই জানা নেই। গর্ভকালীন সময়টা যে অসুস্থতা নয়, কোনো সমস্যা হলে তা বলা লজ্জার কিছু নয়, তাদের এমন ধারণাও ছিল না একেবারে।
পরবর্তী সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আগ্রহে আমি যখন কাপাসিয়ার জনপ্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার সুযোগ পাই, তখন যেকোনো সভা-সমাবেশে অন্য প্রসঙ্গের পাশাপাশি নারীর প্রতি যত্ন, শিশু, স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কথা বলতাম। এসব সমাবেশে নারীর উপস্থিতি লক্ষণীয় মাত্রায় বাড়তে থাকে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক, স্যাটেলাইট ক্লিনিক, অর্থাৎ উপজেলা পর্যায়ে সম্পূর্ণ সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রতিনিয়ত খোঁজ রাখা এবং সে অনুযায়ী সাধ্যমতো প্রয়োজনীয় কাজগুলো চলতে থাকে। এর মধ্যে ২০১৬ সালে উপজেলার নতুন পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা উদ্যমী ভূমিকা নিয়ে কাপাসিয়ার ১১টি ইউনিয়নের প্রতিটিতে গর্ভবতী নারীর বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহে জরিপকাজ সম্পন্ন করেন। সেই জরিপের ভিত্তিতে গর্ভবতী মায়েদের ৩৭টি তথ্যসংবলিত ‘ডেটাবেইজ’ তৈরি করা হয়েছে, যার ফলে উপজেলার সব গর্ভবতী ও প্রসূতি মাকে ডিজিটাল সেবার আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে, যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কর্মপ্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ভূমিকা রাখছে।
বর্তমানে তথ্যভান্ডারের ফলে সফটওয়ার স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভবতী নির্ধারণ করে। ১৮ বছরের নিচে, ৩৫ বছরের ওপরে, কম উচ্চতা, নেগেটিভ রক্তের গ্রুপ আধিক্য মানদণ্ডের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ প্রসূতিদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। প্রতিটি গর্ভবতী নারীর জন্য বিনা মূল্যে ৪৪ পৃষ্ঠার সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন মা ও শিশু স্বাস্থ্য সহায়িকা বিতরণ শুরু হয়েছে ২০১৭ সাল থেকে। গর্ভবতীর চেকআপের জন্য প্রত্যেকের জন্য নির্দিষ্ট তারিখে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধসহ মোবাইল ফোনে ভয়েস কল যায়। গত তিন বছরে কাপাসিয়ায় গর্ভকালীন মাতৃমৃত্যু শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। স্থানীয় ছাত্রলীগকে এ কাজে উদ্বুদ্ধ ও সম্পৃক্ত করা হয়েছে। রক্তদাতা গ্রুপ গড়ে উঠেছে। মা সমাবেশে, মায়েদের অবহিতকরণ সভাগুলোতে স্থানীয় ইউনিয়নভিত্তিক ছাত্রসংগঠন দায়িত্ব পালন করছে। ইউনিয়ন পরিষদসহ প্রতিটি সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র বিস্তারিত তথ্য দিয়ে নিরাপদ মাতৃত্ব দেয়ালসহ অন্যান্য প্রচার কার্যক্রম চলমান।
বিশ্বব্যাপী চলমান কোভিড-১৯ মহামারিতে কাপাসিয়ায় নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের ১৮ জন করে ১১টি ইউনিয়নে মোট ১৯৮ জন দাইকে কর্মশালার মাধ্যমে আধুনিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের প্রত্যেককে প্রসব সহায়তাকারী জরুরি টুল বক্স দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে করোনা মহামারিতে কাপাসিয়া উপজেলার মাতৃমৃত্যু শূন্যের কোঠায় রাখতে এসব কার্যক্রম অনবদ্য ভূমিকা রাখছে। মাতৃমৃত্যু রোধে ‘কাপাসিয়া মডেল’-এর গুরুত্ব উপলব্ধি করে জাতিসংঘের স্থায়ী পর্যবেক্ষক প্রজনন স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও উন্নয়নসংক্রান্ত আন্তদেশীয় সংস্থা’ Partners in Population and Development ‘মাতৃমৃত্যুমুক্ত কাপাসিয়া মডেল’কে বাংলাদেশের সর্বোত্তম চর্চার মনোনয়ন প্রদান করে নথিভুক্ত করা হয়েছে। পিপিডি থেকে জানা যায়, এটি পিপিডির ওয়েবসাইটে আলাদা বই আকারে প্রকাশ করা হবে। পিপিডির ২৭টি দেশের মোর্চা যেন এই মডেল গ্রহণ করে, সে বিষয়ে পিপিডি জোরালো সুপারিশ করবে।
‘মানুষের জন্য মানুষ’—এ লক্ষ্যে একাত্ম হয়ে এ কাজের সঙ্গে জড়িত থাকতে পেরে আমি আনন্দিত।
সিমিন হোসেন রিমি
রাজনীতিক ও লেখক
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫