Ajker Patrika

আসামি ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ, ‘ডাকাত এসেছে’ বলে মাইকিং

নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
নবীগঞ্জ উপজেলায় আজ শনিবার আসামি ধরার অভিযানের সময় পুলিশের গাড়িটি ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। ছবি; আজকের পত্রিকা
নবীগঞ্জ উপজেলায় আজ শনিবার আসামি ধরার অভিযানের সময় পুলিশের গাড়িটি ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। ছবি; আজকের পত্রিকা

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর হামলার মামলার আসামি ধরতে যাওয়া পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীরা পুলিশ সদস্যদের মারধর, ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং পুলিশের একটি ভ্যান ও দুটি সিএনজি ভাঙচুর করেছে। আজ শনিবার (২৮ জুন) ভোররাতে উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গজনাইপুর গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এতে নবীগঞ্জ থানার কনস্টেবল শাহ ইমরান (২৭), মোজাম্মেল হক (২৫) ও পল্টন চন্দ্র দাশ (২৫) আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যরা নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৩১ মে নবীগঞ্জ উপজেলার জনতার বাজার পশুর হাট অপসারণে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিনের নেতৃত্বে পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও প্রায় ৭০ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হাট এলাকায় অভিযান চালান। একপর্যায়ে হাট কমিটির সদস্য ও অন্যরা সংঘবদ্ধ হয়ে তাঁদের কাজে বাধা দেন। তাঁরা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সন্দ্বীপ তালুকদারকে মারধর করা হয়। পরে পুলিশের সহায়তায় ম্যাজিস্ট্রেটরা নিরাপদে স্থান ত্যাগ করেন। এরপরও দিনজুড়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পশুর হাট চালু রাখে হাট কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় পরদিন ১ জুন পানিউমদা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বাদী হয়ে ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করে নবীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

আজ শনিবার ভোররাতে এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি দক্ষিণ গজনাইপুর গ্রামের নজর উদ্দিনকে (৪০) গ্রেপ্তার করতে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে নবীগঞ্জ থানা ও গোপলার বাজার তদন্ত কেন্দ্রের একটি পুলিশ দল অভিযান চালায়। নজর উদ্দিনের বসতঘরে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে এ সময় অন্য আসামিরা গ্রামের মসজিদে ‘ডাকাত এসেছে’ বলে মাইকিং করেন। এতে গ্রামের দুই শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালান এবং পুলিশের কাছ থেকে নজর উদ্দিনকে ছিনিয়ে নেন। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া হয় এবং সংঘর্ষে পুলিশের একটি ভ্যান ও দুটি সিএনজি ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতিকুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।

এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি শেখ মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর হামলার মামলার এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তারের সময় স্থানীয় লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের তিনজন সদস্য আহত হয়েছেন, একটি ভ্যান ও দুটি সিএনজি ভাঙচুর করা হয়েছে।’

হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার এ এন এম সাজেদুর রহমান বলেন, ‘এজাহারভুক্ত আসামি গ্রেপ্তারের সময় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনায় নিয়মিত মামলা করা হবে এবং দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।’

উল্লেখ্য, গত ২২ মার্চ জনতার বাজার পশুর হাটের অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ কাভারেজ করতে গেলে বিএনপি নেতা কাউছার তালুকদারের নেতৃত্বে বাজার কমিটির লোকজন জিটিভি ও বাসসের জেলা প্রতিনিধি মোহাম্মদ নুর উদ্দিন, এশিয়ান টিভির এস এম সুরুজ আলী, দীপ্ত টিভির আখলাছ আহমেদ প্রিয় ও মাইটিভির নিরঞ্জন গোস্বামী শুভর ওপর হামলা চালান। এ সময় হামলাকারীরা দুটি ক্যামেরা, একটি ট্রাইপড ভাঙচুর করে এবং একটি মোবাইল, একটি ক্যামেরা ও একটি ট্রাইপড ছিনিয়ে নেন। পরে আহত সাংবাদিকেরা হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালদূষণকারী কারখানা পেল পরিবেশবান্ধব পুরস্কার

ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ভারতের সংসদীয় কমিটির দীর্ঘ বৈঠক

ইস্পাহানে বাংকার বাস্টার মারেনি যুক্তরাষ্ট্র, অক্ষত ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম

বাবুই পাখির কান্না কেউ শুনল না, কেটে ফেলা হলো তালগাছটি

গোষ্ঠীস্বার্থে বহু মানুষের স্বপ্ন নষ্ট করেছে এই প্ল্যাটফর্ম: দায়িত্ব ছেড়ে উমামা ফাতেমার পোস্ট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত