Ajker Patrika

গোসল করাতে গিয়ে দেখা গেল লাশ সাবুর নয়, তিনি শুয়ে আছেন যাত্রী ছাউনিতে

সিলেট প্রতিনিধি
সাবু আহমদ। ছবি: সংগৃহীত
সাবু আহমদ। ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের জকিগঞ্জে গত শুক্রবার নিখোঁজ হন মানসিক ভারসাম্য হারানো সাবু আহমদ (৫২)। পরদিন শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির লাশ পড়ে আছে। ছবি দেখে সাবুর লাশ ভেবে তাঁর স্বজনেরা হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। শেষ বিদায় জানাতে খোঁড়া হয় কবর। কিন্তু লাশের গোসল করাতে গিয়ে দেখা গেল, তিনি সাবু আহমদ নন।

শুরু হয় সাবুকে খোঁজাখুঁজি। একপর্যায়ে স্থানীয় গঙ্গাজল এলাকার যাত্রী ছাউনিতে গিয়ে তাঁকে শোওয়া অবস্থায় পাওয়া যায়। একদিকে সাবুকে জীবিত অবস্থায় পাওয়া, অন্যদিকে বাড়িতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির লাশ। কবরও প্রস্তুত। সব মিলিয়ে দ্বিধায় পড়ে যান তাঁর স্বজনেরা। পরে তাঁরা থানায় খবর দিলে গতকাল রোববার পুলিশ অজ্ঞাতনামা ওই ব্যক্তির লাশ দাফনের অনুমতি দেয়। ঘটনাটি নিয়ে আজ সোমবার সিলেটজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্ট হয়েছে।

জানা গেছে, সাবু আহমদ জকিগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগ্রামের বাসিন্দা। তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ। গত ২০ বছর ধরে পথেঘাটে ঘুরে বেড়াতেন।

জানা গেছে, গত শুক্রবার অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির লাশ পেয়ে লোকজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অজ্ঞাতনামা ওই লাশের সন্ধান চেয়ে বিভিন্নজন ছবিসহ ফেসবুকে পোস্ট করেন। পরে সাবু আহমদের পরিবার সেই ছবি দেখে তাঁর লাশ ভেবে শনিবার হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে লাশের গোসল করানো হয়। তখনই তাঁদের চোখে ধরা পড়ে, লাশ সাবু আহমদের না। পরে তাঁর স্বজন ও এলাকাবাসী বিভিন্ন স্থানে সাবুকে খোঁজাখুঁজি করেন। একপর্যায়ে স্থানীয় গঙ্গাজল এলাকার যাত্রী ছাউনিতে তাঁকে শোওয়া অবস্থায় দেখতে পেয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন।

এদিকে বাড়িতে গোসল করানো লাশ দাফন নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান সাবুর স্বজনেরা। পরে অজ্ঞাতনামা লাশ হওয়ায় পুলিশ তাঁদের দাফনের অনুমতি দেয়। গতকাল লাশের দাফন করা হয়।

সুলতানপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শামীম আহমদ বলেন, ‘সাবু আহমদ আর অজ্ঞাতনামা ওই লাশ দেখতে একই রকম। সাবু শুক্রবার থেকে বাড়িতে ছিলেন না। এ জন্য তাঁর পরিবারের সদস্যরা এই লাশ তাঁর ভেবেছিলেন।’

জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একজন ভবঘুরে ব্যক্তি মারা যাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা লাশ এনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে রাখেন। এদিকে সাবু আহমদ নামের এক ভবঘুরে ব্যক্তির সন্ধান পাচ্ছিলেন না তাঁর স্বজনেরা। পরে তাঁর পরিবার লাশটি সাবুর দাবি করে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে দাফনের প্রস্তুতি নেন। কিন্তু গোসল করানোর পর জানান, এটা তাঁদের সাবুর লাশ নয়। ওইদিকে সাবুকেও খুঁজে পাওয়া যায়। যেহেতু বাড়িতে কবর খোঁড়া হয়েছে, তাই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে সেখানে দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত