Ajker Patrika

আজমিরীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, নারীসহ আহত অর্ধশতাধিক

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে পূর্ববিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে পূর্ববিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে পূর্ববিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ অন্তত অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। এ সময় বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আজ মঙ্গলবার (১৩ মে) সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত  উপজেলার জলসুখা ইউনিয়নের দক্ষিণ আটপাড়া, জলসুখা হাটি, দক্ষিণপাড়া, ইছবপুর ও শঙ্খমহল এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্যে রয়েছেন সাইকুল বেগম (৫০), জিয়া রহমান (৩৫), তকদির মিয়া (৪২), ইমন (২২), নাইম (২৪), সামিম (১৯), মছদ উল্লা (৬০), জয় (২০) ও মুসকুদ উল্লা (৫০)। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।  

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্ববিরোধ ও গ্রামীণ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ডা. রেজাউল করিম, বর্তমান ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন মিয়া, জহুর হোসেন গং এবং ইউপি চেয়ারম্যান ফয়েজ আহমেদ খেলু, সাবেক ইউপি সদস্য লিবাছ মিয়া, রন্টি মিয়া গংদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। তাঁদের মধ্যে কয়েক মাসে বেশ কয়েক দফা সংঘর্ষ ও একে অপরকে মারধরের ঘটনাও ঘটেছে। দিন দশেক আগে ডা. রেজাউল করিমের ভাই সাবেক পুলিশ সদস্য জনি মিয়া লিবাছ মিয়ার সমর্থক আজাদ মিয়ার পরিবারের একজনকে মারধর করেন। এরপর  ৯ মে সকালে আজাদ মিয়ার লোকজন ডা. রেজাউল করিমকে রাস্তায় পেয়ে মারধর করেন।  

এরই জেরে গতকাল সোমবার (১২) বিকেলে ডা. রেজাউল করিমের পক্ষের তিন গোষ্ঠীর প্রধান জহুর হোসেন মিয়ার লোকজন লিবাছ মিয়ার পক্ষের আজাদ মিয়ার স্ত্রীকে মারধর করেন। এ নিয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে উভয়পক্ষের লোকজন একে অন্যের বিরুদ্ধে সংঘর্ষের ডাক দেন। একপর্যায়ে উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হন।

ডা. রেজাউল করিম বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমার ওপর হামলার ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করি। গতকাল সোমবার ওই মামলার পুলিশ আসামি ধরতে গ্রামে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের লোকজনকে মারধর করে। আজ সকালে আবারও  কয়েকজনকে তারা ধাওয়া দেয়। এর প্রতিবাদে গ্রামবাসীর একাংশ একত্রিত হয়ে তাদের প্রতিহত করে। আমি মামলা দায়ের করার পর থেকেই তাদের হুমকিতে আত্মগোপনে থাকছি।’

ফয়েজ আহমেদ খেলুর পক্ষের সাবেক ইউপি সদস্য লিবাছ মিয়া বলেন, ‘গতকাল জহুর হোসেন এবং ডা. রেজাউলের ভাই জনিসহ তিন গোষ্ঠীর লোকজন আমাদের পক্ষের আজাদ মিয়ার স্ত্রীকে রাস্তায় পেয়ে মারপিট করে। আজ সকালবেলাও তারা আমাদের লোকজনদের মারার জন্য ধাওয়া করে। আমরা আমাদের লোকজনকে কোনো সংঘর্ষে জড়াতে নিষেধ করেছি। তারপরও প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা করলে আমরা আত্মরক্ষার্থে তাদের প্রতিহত করি। তারা আমাদের বেশ কটি বাড়িঘরে হামলা করে ভাঙচুর করে।’

আজমিরীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। সেখানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত