Ajker Patrika

মরছে নদী, পড়ে আছে দখলদারদের তালিকা

ছনি আহমেদ চৌধুরী, নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) 
মরছে নদী, পড়ে আছে দখলদারদের তালিকা

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে দখল, দূষণ ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে অস্তিত্বসংকটে পড়েছে কুশিয়ারা ও শাখা বরাক নদী। উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে কুশিয়ারার তীরে খননযন্ত্র (ড্রেজার) বসিয়ে চলছে বালু লুট। এতে হুমকির মুখে রয়েছে আশপাশের বসতবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা। অন্যদিকে দখল ও ময়লা-আবর্জনা ফেলায় ধুঁকছে শাখা বরাক। সাড়ে চার বছর আগে এসব দখলদারের তালিকা তৈরি করা হলেও তাঁদের উচ্ছেদ করা হয়নি।

জানা গেছে, শাখা বরাক নদীটি দখলদারদের কবলে পড়ে নালায় পরিণত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবির মুখে ২০২০ সালের ২ মার্চ নবীগঞ্জের নদীটির প্রাণ বাঁচাতে দখলদারদের উচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। তৎকালীন জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সে সময় নদীর জায়গায় থাকা ১০১টি অবৈধ স্থাপনার তালিকা তৈরি করা হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), ভূমি কার্যালয় ও পৌরসভার সার্ভেয়াররা সরেজমিনে দখলদারদের নাম তালিকাভুক্ত করে বিভিন্ন বাসা-মার্কেটে লাল রং দিয়ে চিহ্নিত করেন। পরে প্রশাসন অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু স্থাপনা উচ্ছেদ করে; কিন্তু সে সময় করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় কিছুদিন পরই বন্ধ হয়ে যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, শাখা বরাক নদীতে শহরের ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। সরু নালায় পরিণত এই নদীর ডাকবাংলোর সামনে, সবজি বাজারের পেছনে, নোয়াপাড়া পয়েন্টে, শিবপাশা ব্রিজের কাছে ও হাসপাতালসংলগ্ন এলাকায় ময়লা-আবর্জনার স্তূপ জমে রয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নবীগঞ্জ-শেরপুর সড়কের ১ নম্বর ব্রিজের নিচ দিয়ে যে খালটি শিবপাশা ঠাকুরপাড়ার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নোয়াপাড়া-শাখা বরাক নদীতে মিলিত হয়েছে, সে স্থান এখন অনেকটাই দখলদারদের কবলে বিলীন হয়ে গেছে। প্রায় শতকোটি টাকার ডিসি খতিয়ানভুক্ত খাসভূমি দখল হয়ে গেছে।

অন্যদিকে উপজেলার আউশকান্দি ও দীঘলবাক ইউনিয়নে কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী কসবা, দুর্গাপুর, পাহাড়পুর, পারকুল, শেরপুর বাজারের কাছের স্থানসহ কয়েকটি জায়গা থেকে দীর্ঘদিন ধরে খননযন্ত্র বসিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। কয়েকটি অসাধু চক্র এসব বালু চড়া দামে ট্রাকপ্রতি বিক্রি করছে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে। প্রতি ট্রাক বালু বিক্রি হচ্ছে ৬৫০০ থেকে ৮৫০০ টাকায়।

নদী রক্ষা নিয়ে কাজ করা সংগঠন রিভার উইনসের প্রতিষ্ঠা সদস্য কীর্তিনারায়ণ কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ফয়জুর রব পনি বলেন, ‘আমাদের শহরের প্রাণ, শহরের অস্তিত্ব শাখা বরাক নদী। এটি বছরের পর বছর ধরে দূষণ আর দখলে বিলীন হওয়ার পথে।’

পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, কুশিয়ারা থেকে অবৈধ বালু তুলে হুমকির মুখে ফেলা হচ্ছে। অন্যদিকে শাখা বরাক নদী ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম দাশ বলেন, ‘কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলনের জন্য নবীগঞ্জের কোথাও অনুমতি নেই।’

হবিগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ বলেন, ‘অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের কার্যক্রম যখন শুরু হয়, তখন আমি এখানে ছিলাম না। দখলদারদের তালিকা আমাদের করা আছে, আমরা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে আলাপ করে উচ্ছেদ অভিযান কীভাবে এবং কবে শুরু করা যায়, সে তারিখ নির্ধারণ করব।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত