Ajker Patrika

সিলেটে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বিজিবি-পুলিশ সংঘর্ষ, নিহত ৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০২৪, ২০: ৫৮
সিলেটে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বিজিবি-পুলিশ সংঘর্ষ, নিহত ৫

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সরকার পতনের এক দফা কর্মসূচির সমর্থনে আজ রোববার সিলেটের গোলাপগঞ্জে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করলে বিজিবি, পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে পাঁচজন নিহত হয়েছেন।

দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সুদর্শন সেন ও সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজের উপ–পরিচালক ড. সৌমিত্র চক্রবর্তী। 

আরএমও ডা. সুদর্শন সেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাসপাতালে দুজনের মরদেহ আনা হয়েছিল। পরে তাঁরা নিয়ে গেছে। এদের মধ্যে একজন হলেন—ধারাবাহর গ্রামের মো. মকবুল আলীর ছেলে ব্যবসায়ী তাজ উদ্দিন (৪৩)। অপর নিহতের নাম পরিচয় জানাতে পারেনি।’

এদিকে  সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ–পরিচালক ড. সৌমিত্র চক্রবর্তী মিনহাজ (২২) ও গৌচ (৪০) নামের দুজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তবে স্থানীয় ভাবে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে নিহত অপর দুজন হলেন—উপজেলার শিলঘাটের বাসিন্দা সানি আহমদ (১৮) ও ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের নিশ্চিন্ত গ্রামের নাজমুল ইসলাম। তিনি ঢাকা দক্ষিণ বাজারের তানজিনা সু’র মালিক। নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁর বাবা তৈয়ব আলী। আর সানির মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করেছেন উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. শাহিনুর ইসলাম। 

সিলেটের পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গোলাপগঞ্জে সংঘর্ষ হচ্ছে। কয়েক জনের মৃত্যুর খবর বিভিন্নভাবে শুনেছি। তবে কেউ নিশ্চিত করেনি। ওরা থানায় হামলার চেষ্টা করেছিল, পারেনি।’ 

রোববার সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা দক্ষিণ বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশ, বিজিবিসহ শতাধিক মানুষ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে অন্তত ১০-১৫ জন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা স্থানীয় হাসপাতালসহ বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নিয়েছেন। 

স্থানীয়রা জানান, সারা দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি পালনে আজ বেলা ১১টার দিকে ঢাকা দক্ষিণ বাজারে শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করে। এ সময় পুলিশ বিজিবির সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাধলে উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সংঘর্ষ প্রায় ৩ ঘণ্টা টানা চলে। এ সময় শিক্ষার্থীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও আহত হন। এ ছাড়াও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এ সংঘর্ষে একপর্যায়ে পুলিশকে ধাওয়া দিয়ে শিক্ষার্থীরা ঢাকা দক্ষিণ গোলাপগঞ্জ রোডের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে নিয়ে আসলে সেখানে পুলিশের গুলিতে তাজ উদ্দিন, সানি ও নাজমুল নিহত হন। 

পরে আন্দোলন কারীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করলে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও পুলিশ এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলছে। বিকেল সাড়ে ৫টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গোলাপগঞ্জ চৌমুহনী শিক্ষার্থীরা দখল করে মিছিল চলছে। এ সংঘর্ষে অনেকে আহত এবং গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। 

এদিকে সিলেট নগরে পুলিশের সঙ্গে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষের ঘটনায় আহতের বিষয়ে বিকেল তিনটা ৪০ মিনিটে সিলেট এম এজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, ‘হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ২৪ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে একজন গুরুতর আহত রয়েছেন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রোগীর চাপ বেড়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে গাছ ফেলে ব্যারিকেডের চেষ্টা, শিবচর বিএনপির নেতৃত্বে অপসারণ

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
শিবচর উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা মহাসড়ক থেকে গাছ সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন। ছবি সংগৃহীত
শিবচর উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা মহাসড়ক থেকে গাছ সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন। ছবি সংগৃহীত

মাদারীপুর জেলার শিবচরে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের সূর্যনগর-সংলগ্ন স্থানে গাছ ফেলে মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করেছেন কার্যক্রম নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে এই ঘটনা ঘটে। তবে খবর পেয়ে শিবচর উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে গাছ সরিয়ে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন।

শিবচর হাইওয়ে থানা-পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে শিবচরের সূর্যনগর-সংলগ্ন শিবচর-ভাঙ্গা সীমানা এলাকা ও কুতুবপুরের শিবচর-শরীয়তপুর সীমানায় এই ব্যারিকেড দেওয়া হয়।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের লকডাউনকে কেন্দ্র করে ভোরে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের শিবচর উপজেলার সূর্যনগর-সংলগ্ন ভাঙ্গা উপজেলার অংশে মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করেন কার্যক্রম নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। অন্যদিকে রাতে মাদারীপুর-বরিশাল মহাসড়কের মোস্তফাপুর এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।

শিবচর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন খান বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। আমাদের নেতা-কর্মীরা গাছ সরিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করেছে। এখন মহাসড়কে কোনো সমস্যা নেই। এ ছাড়া আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি।’

শিবচর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি যে ভোরে মহাসড়কের দুটি স্থানে সড়ক অবরোধ করার চেষ্টা হয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট থানাকে অবগত করেছি। আমাদের হাইওয়ে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টাঙ্গাইলে চলন্ত বাসে আগুন, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন যাত্রীরা

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি 
ঢাকা-টাঙ্গাইল যমুনা সেতু মহাসড়কের বাঐখোলা এলাকায় চলন্ত বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-টাঙ্গাইল যমুনা সেতু মহাসড়কের বাঐখোলা এলাকায় চলন্ত বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

টাঙ্গাইলের বাসাইলে মহাসড়কে একটি চলন্ত বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় ঢাকা-টাঙ্গাইল যমুনা সেতু মহাসড়কের উপজেলার বাঐখোলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, ‘বাংলা স্টার’ নামের একটি যাত্রীবাহী বাস ঢাকা থেকে পাবনার উদ্দেশে যাচ্ছিল। পথে দুর্বৃত্তরা চলন্ত অবস্থায় বাসটিতে আগুন দেয়। এ সময় যাত্রীরা দ্রুত বাস থেকে নেমে প্রাণে রক্ষা পান। স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার এস এম হুমায়ূন কার্ণায়েন বলেন, ‘আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। কোনো হতাহত নেই।’

বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, ‘হঠাৎ চলন্ত বাসটিতে দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এ সময় যাত্রীরা দ্রুত বাস থেকে নেমে পড়ে। এই ঘটনায় কোনো হতাহত নেই। বাসটি গোড়াই হাইওয়ে থানায় নেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৪৯তম বিসিএস: মধ্যনগরের গর্ব খাদিজা সর্বকনিষ্ঠ ও অলি উল্লাহ গণিতে ক্যাডার

মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
খাদিজা আক্তার ও মো. অলি উল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত
খাদিজা আক্তার ও মো. অলি উল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

৪৯তম বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার দুই তরুণ-তরুণী নিজেদের মেধা ও অধ্যবসায়ে অর্জন করেছেন অনন্য সাফল্য। এই অর্জনে পুরো এলাকায় নেমেছে আনন্দের জোয়ার, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে অভিনন্দনের বন্যা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার হয়েছেন দেশের সর্বকনিষ্ঠ ক্যাডার। অনার্সের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের আগেই বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে তিনি বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। খাদিজা মধ্যনগর গ্রামের মরহুম আব্দুল আজিজ ও হাজেরা বেগম দম্পতির একমাত্র কন্যা। তিনি মধ্যনগর বিশ্বেশ্বরী পাবলিক উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও সিলেট সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

অন্যদিকে মধ্যনগরের আরেক কৃতী সন্তান মো. অলি উল্লাহ দেশের গণিত ক্যাডারে প্রথম স্থান অর্জন করে এলাকাকে গর্বিত করেছেন। তিনি উপজেলার বংশীকুন্ডা গ্রামের মো. আব্দুল হেকিম ও হাজেরা খাতুন দম্পতির একমাত্র ছেলে। বংশীকুন্ডা মমিন উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও সিলেট এমসি কলেজ থেকে এইচএসসি শেষে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেন তিনি।

খাদিজা আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি খুবই খুশি। বোঝানোর মতো না। আমি আল্লাহর রহমত ও মায়ের দোয়ায় এ পর্যন্ত এসেছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।’

মো. অলি উল্লাহ বলেন, ‘অনুভূতি বলে শেষ করা যাবে না। আমার ফ্যামিলি ও আমি খুব খুশি। আল্লাহর কাছে অশেষ শুকরিয়া। এলাকাবাসীর কাছে দোয়া চাই।’

দুই মেধাবীর এই অনন্য সাফল্যে শিক্ষক, শুভাকাঙ্ক্ষী ও এলাকাবাসী উচ্ছ্বসিত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অমর কথাসাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৮তম জন্মবার্ষিকী আজ

বালিয়াকান্দি (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩৪
কথাসাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি পাঠাগার ও মিলনায়তন। ছবি: আজকের পত্রিকা
কথাসাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি পাঠাগার ও মিলনায়তন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলা সাহিত্যের অমর কথাসাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের আজ ১৭৮তম জন্মবার্ষিকী। ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়ার কুমারখালীর লাহিনীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন মীর মশাররফ হোসেন। তাঁর বাবার নাম সৈয়দ মীর মুয়াজ্জম হোসেন ও মায়ের নাম দৌলতন নেছা।  

মীর মশাররফ হোসেনের জন্মবার্ষিকী ঘিরে বাংলা একাডেমি, প্রশাসন, মীর মশাররফ হোসেন ডিগ্রি কলেজ, মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি সংসদসহ স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো মীরের সমাধিস্থল বালিয়াকান্দির নবাবপুরের পদমদীতে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মীর মশাররফ হোসেনের সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজমের আমন্ত্রণপত্র সূত্রে জানা যায়, জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সকাল ১০টায় মীর মশাররফ হোসেনের সমাধিতে তারা শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এরপর বেলা ১১টায় সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। সেমিনারে সভাপ্রধান হিসেবে থাকবেন রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার। প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলা একাডেমির সচিব (উপসচিব) ড. মো. সেলিম রেজা।  

স্বাগত বক্তব্য দেবেন বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী মুস্তাফিজুর রহমান এবং প্রবন্ধকার হিসেবে থাকবেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ। বিশেষ অতিথি থাকছেন বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. সরকার আমীন ও সমীর কুমার সরকার।  

১৯১১ সালের ১৯ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করলে তাঁকে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির নবাবপুর ইউনিয়নের পদমদী গ্রামে সমাহিত করা হয়।

কবির বাস্তুভিটায় বসছে গ্রামীণ মেলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
কবির বাস্তুভিটায় বসছে গ্রামীণ মেলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

এদিকে জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের লাহিনীপাড়ায় কবির বাস্তুভিটায় দুই দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন। বিকেলে ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন। এতে সভাপতিত্ব করবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের প্রথম দিন বিকেলে লাঠিখেলা ও আলোচনা শেষে মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাট্যানুষ্ঠান। এদিন মঞ্চায়িত হবে কবির লেখা নাটক ‘জমিদার দর্পণ’। পরিবেশনা করবেন উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা। শুক্রবার মধ্যরাতে কবির কালজয়ী উপন্যাস ‘বিষাদ-সিন্ধু’ অবলম্বনে নাটক ‘এজিদের পরিণতি’ মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে শেষ হবে জন্মোৎসব।

এ উপলক্ষে কবির বাস্তুভিটায় বসবে গ্রামীণ মেলা। মীর মশাররফ হোসেন সাহিত্যকর্ম রচনার পাশাপাশি সাংবাদিকতা ও সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন। ভারতী, সংবাদ প্রভাকর, মিহির, হাফেজ, আহমদী, নবরত্ন প্রভৃতি পত্রিকায় তিনি নিয়মিত লিখতেন। ধর্ম, আইন, প্রবন্ধ, ইতিহাস বিষয়ে আলোচনা, নাটক, গান ও উপন্যাস রচনা করেছেন তিনি। এর মধ্যে ‘শাহনামা’, ‘গুলিস্তা’, ‘কাসাসুল আম্বিয়া’, ‘রামায়ণ-মহাভারত’, ‘বিদ্যাসুন্দর দাশরথী রায়ের পাঁচালী’, ‘বানভট্রের কাদম্বরী’ উল্লেখযোগ্য।

১৮৬৯ সালে লেখা মীর মশাররফ হোসেনের “রত্নাবতী” উপন্যাসটি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এরপর তাঁর অমর সৃষ্টি ১৮৮৫ সালে লেখা ‘বিষাদ-সিন্ধু’ ছাড়াও ‘উদাসীন পথিকের মনের কথা’, ‘রাজিয়া খাতুন’, ‘তহমিনা’, ‘বাঁধাখাতা’, ‘বধূমাতা’ও উল্লেখ্য। তাঁর রচিত নাটক ‘বসন্ত কুমারী’ ও ‘জমিদার দর্পণ’ বাংলাসাহিত্যে এক বিশেষ জায়গা দখল করে আছে।

কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, ‘কবির ১৭৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠান ও গ্রামীণ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত