Ajker Patrika

সিলেটে অনুমতি না পেয়ে স্থগিত ঘোষণার পরও সাঈদীর গায়েবানা জানাজা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
সিলেটে অনুমতি না পেয়ে স্থগিত ঘোষণার পরও সাঈদীর গায়েবানা জানাজা

পুলিশের অনুমতি না পেয়ে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজার আয়োজন স্থগিত ঘোষণা করেছিল সিলেট মহানগর জামায়াত। তবে ঘোষিত সময়ে আজ বুধবার বেলা ২টার দিকে নগরের সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে এই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যদিও সিলেট মহানগর জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এতে দলের কেউ সংশ্লিষ্ট নন।

এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গায়েবানা জানাজায় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরাই অংশ নিয়েছেন। বেলা ২টার দিকে হঠাৎ আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে কয়েক শ মানুষ একত্রিত হন। এ সময় সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় তাঁদের। পরে সেখানে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। গায়েবানা জানাজা চলার সময় সিলেট মহানগর পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় তাঁরা উপস্থিত মুসল্লিদের কাছে জানতে চান, কার জানাজার আয়োজন করা হয়েছে। উপস্থিত মুসল্লিরা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজার বিষয়টি জানান। এ কথা শুনে পুলিশ কিছু বলেনি। এর কিছু সময় পরই ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন মুসল্লিরা।

সিলেট মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি মোহাম্মদ শাহজাহান আলী বলেন, ‘আমরা লিখিতভাবে স্থগিত করেছি। কিন্তু জনে জনে হয়তো আমাদের স্থগিতের খবর পৌঁছায়নি। এ জন্য কিছু মানুষ চলে এসেছে। তাঁরা নিজেদের মতো করে জানাজাও পড়েছেন। এখানে জামায়াত-শিবিরের কেউ ছিলেন না। আমাদের নেতারা এলেও এর চেয়ে বেশি মানুষ হতো। তবে পুলিশের এমন স্বৈরাচারী আচরণে আমরা মর্মাহত হয়েছি।’

এ বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘বলা কওয়া নেই; ঝটিকা মিছিলের মতো হঠাৎ করে এসেই গায়েবানা জানাজা পড়ে চলে গেছে। খবর পেয়ে গিয়ে পরিচয় শনাক্ত করার আগেই তাঁরা স্থান ত্যাগ করেন। আয়োজনের বিষয়টিও জানা ছিল না।’ 

তবে আজ সকাল থেকেই সরকারি আলীয়া মাদ্রাসা মাঠের আশপাশের এলাকায় পুলিশ সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুড়িগ্রামে জনজীবন স্বাভাবিক, নাশকতা চেষ্টার অভিযোগে আটক ৩৩

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
বিশেষ অভিযানে আটক ব্যক্তিদের কয়েকজন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিশেষ অভিযানে আটক ব্যক্তিদের কয়েকজন। ছবি: আজকের পত্রিকা

কার্যক্রম নি‌ষিদ্ধ আওয়ামী লী‌গের অনলাইনে ডাকা কর্মসূ‌চির কারণে কু‌ড়িগ্রা‌মে জনজীবনে কোনো ধরনের প্রভাব পড়েনি। সবকিছু স্বাভা‌বিকভাবে চলছে। আজ বৃহস্প‌তিবার (১৩ ন‌ভেম্বর) সকাল থে‌কে বি‌ভিন্ন রু‌টে মালবাহী ও গণপ‌রিবহন চলাচল কর‌তে দেখা গে‌ছে। এ ছাড়া সরকা‌রি প্রতিষ্ঠানসহ বি‌ভিন্ন দপ্তরে দি‌নের স্বাভা‌বিক কার্যক্রম চলমান র‌য়ে‌ছে। তবে নাশকতা চেষ্টার অভি‌যো‌গে দুই দি‌নে কু‌ড়িগ্রা‌মে আওয়ামী লীগের ৩৩ নেতা-কর্মী‌কে আটক ক‌রে‌ছে পু‌লিশ।

জেলা শহরসহ উপ‌জেলা শহ‌রে সরকা‌রি, বেসরকা‌রি ও শ্বায়ত্তশা‌সিত প্রতিষ্ঠানগু‌লো‌তে স্বাভা‌বিক কার্যক্রম চলমান র‌য়ে‌ছে। ‌শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগু‌লো‌তে পাঠদান চল‌ছে। এ ছাড়া ব‌্যবসাপ্রতিষ্ঠা, বাজার ও দোকানপা‌টে বেচাকেনা ও লেন‌দেন স্বাভা‌বিক র‌য়ে‌ছে। আজ বেলা সা‌ড়ে ১১টা পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রী‌তিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়‌নি।

জেলা মোটর মা‌লিক স‌মি‌তির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রায়হান ক‌বির ব‌লেন, জেলার সব রু‌টে প‌রিবহন চলাচল স্বাভা‌বিক র‌য়ে‌ছে। প‌রিবহন সেক্টরসহ কোনো পর্যা‌য়ে কার্যক্রম নি‌ষিদ্ধ দল আওয়ামী ল‌ী‌গ ঘো‌ষিত কর্মসূ‌চির কোনো প্রভাব প‌ড়ে‌নি।

জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উলিপুর সার্কেল) মো. আশরাফুল আলম বলেন, তথাকথিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নাশকতা সৃ‌ষ্টির চেষ্টার অভিযো‌গে কুড়িগ্রাম জেলায় ২৪ ঘণ্টায় ২০ জনসহ গত দুই দি‌নে ৩৩ জন‌কে গ্রেপ্তার করে আদাল‌তে সোপর্দ করা হ‌য়ে‌ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এই অভিযান নিয়মিত চলমান থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কিশোরকে বাসা থেকে নিয়ে নির্যাতনের পর ফেলে যায় রাস্তায়, হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু

ঢামেক প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মীরহাজীরবাগে চোর সন্দেহে নির্যাতনের শিকার কিশোর বাপ্পি (১৫) মারা গেছে। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে বাসা থেকে তুলে নিয়ে তার মারধর করা হয়। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় তাকে রাস্তায় ফেলে রেখে গেলে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পুলিশ খবর পেয়ে আজ বৃহস্পতিবার মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠিয়েছে।

বাপ্পি বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলার কদমতলা গ্রামের মো. শাহজাহানের ছেলে। তার বাবা রিকশাচালক এবং মা পারুল বেগম একটি কারখানায় কাজ করেন। বাপ্পিও মায়ের সঙ্গে একই কারখানায় কাজ করত। সে ধোলাইপাড় এলাকার প্রেমগলিতে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকত।

বাপ্পির বড় ভাই মো. পারভেজ জানান, গত মঙ্গলবার আনুমানিক দিবাগত রাত ২টার দিকে একই এলাকার কাপশি রাসেল, মোল্লা শুভ এবং শাকিব তাঁদের বাসায় আসে। তারা অভিযোগ করে, বাপ্পি মীরহাজীরবাগের একটি বাসা থেকে জানালা দিয়ে টাকা ও বিদ্যুতের প্রিপেইড কার্ড চুরি করেছে। এরপর তাকে জোর করে ধরে নিয়ে মীরহাজীরবাগের আবু হাজী মসজিদ গলির একটি বাসার নিচতলার ‘ক্লাব ঘরে’ আটকে রাখা হয়।

পারভেজ আরও বলেন, সেখানে বাপ্পিকে রাতভর পেটানো হয়। বুধবার সকাল ৬টার দিকে চুরির টাকা ও মালামাল বের করে দেওয়ার কথা বলে বাপ্পিকে বাসায় নিয়ে আসা হয়। কিন্তু কিছু না পেয়ে তারা আবার বাপ্পিকে নিয়ে যায়। বাপ্পিকে ছাড়াতে তার মা পিছু পিছু গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়। সারা দিন নির্যাতনের পর বাপ্পি যখন নিস্তেজ হয়ে পড়ে, তখন সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে তাকে মীরহাজীরবাগের বড়বাড়ি প্রথম গেটের সামনের রাস্তায় ফেলে রেখে যায় অভিযুক্তরা। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথেই বাপ্পি মারা যায়।

ঢামেক মর্গে বাপ্পির বাবা মো. শাহজাহান আকুল আবেদন জানিয়ে বলেন, ‘আমার ছেলে যদি কোনো অপরাধ করেও থাকে, তাহলে মারধর করার পর পুলিশের কাছে তুলে দিত। এইভাবে নির্যাতন করে মেরে ফেলল কেন? আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’

যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আসাদুজ্জামান জুয়েল প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে জানান, চোর সন্দেহে বাপ্পি নামে ওই কিশোরকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে অমানবিক নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের ফলেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

এসআই জুয়েল নিশ্চিত করেন, বাপ্পির মা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে যার বাসায় চুরির সন্দেহে বাপ্পিকে ডেকে নেওয়া হয়েছিল, সেই ফৌজিয়া রওশন আক্তার প্রীতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি ৫-৬ জন আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সুন্দরগঞ্জে নাশকতার মামলায় প্রধান শিক্ষকসহ গ্রেপ্তার ২

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি 
সুন্দরগঞ্জ থানা। ছবি : সংগৃহীত
সুন্দরগঞ্জ থানা। ছবি : সংগৃহীত

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে নাশকতার মামলায় স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ (ভারপ্রাপ্ত) দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে থানা-পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হাকিম আজাদ।

গ্রেপ্তার করা প্রধান শিক্ষক হলেন মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন দোলন। তিনি সীচা উচ্চবিদ্যালয়ে কর্মরত। তিনি চন্ডিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং সীচা গ্রামের মৃত আবদুর রহমানের ছেলে। গ্রেপ্তার আরেকজন হলেন হরিপুর ইউনিয়নের চরিতাবাড়ী গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে মো. বাদশা মিয়া (৫৫)। তিনি হরিপুর ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।

ওসি আবদুল হাকিম আজাদ বলেন, গতকাল বুধবার রাতে বিভিন্ন এলাকায় আলাদা আলাদা অভিযান চালিয়ে পুলিশ এই দুজনকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নাশকতা ঠেকাতে এই অভিযান অব্যাহত আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে পেট্রলবোমা হামলা

খুলনা প্রতিনিধি
খুলনা সাবরেজিস্ট্রি অফিসের বাউন্ডারিতে পেট্রলবোমা হামলার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
খুলনা সাবরেজিস্ট্রি অফিসের বাউন্ডারিতে পেট্রলবোমা হামলার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

খুলনা সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সেরেস্তায় পেট্রলবোমা হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে এই নাশকতার ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকটি চেয়ার-টেবিল পুড়ে গেছে। ঘটনার পরপরই টুটপাড়া ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ ঘটনস্থল পরিদর্শন করেছে।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের নিরাপত্তাপ্রহরী ওয়াহিদুর রহমান নান্নু জানান, দলিল লেখকদের সেরেস্তায় আগুন লেগে চেয়ার-টেবিল পুড়ে গেছে। দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন না নেভালে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা ছিল।

এ সময় তিনি হামলায় ব্যবহৃত দুটি বোতল দেখিয়ে বলেন, হামলাকারীরা সাবরেজিস্ট্রি অফিসের পেছনের গ্রিল দিয়ে ভেতরে পেট্রলবোমা দুটি নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়।

খুলনা সদর থানার ওসি তদন্ত আব্দুল হাই জানান, নাশকতার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত