Ajker Patrika

সুনামগঞ্জে রোগবালাইমুক্ত আমন চাষ, লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি ফলনের আশা

বিশ্বজিৎ রায়, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জে প্রায় ৮৫ শতাংশ জমিতে আমন রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি জমিতে আমন ধান রোপণ করছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সুনামগঞ্জে প্রায় ৮৫ শতাংশ জমিতে আমন রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি জমিতে আমন ধান রোপণ করছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সুনামগঞ্জে রোপা আমন ধান লাগানোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর আমনের বীজতলা প্রস্তুত এবং রোপণে কৃষকদের তেমন কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি। নেই কোনো রোগবালাইয়ের আক্রমণ। মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টি বা বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় ভালো ফলনের আশা করছেন স্থানীয় কৃষক ও কৃষি অধিদপ্তর। প্রকৃতি এমন অনুকূল থাকলে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

সুনামগঞ্জের হাওরে উৎপাদনের দিক থেকে বোরোর পরেই আমনের অবস্থান। দেশের খাদ্যচাহিদা পূরণে বোরোর পাশাপাশি আমনেরও গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে।

কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যে জেলায় প্রায় ৮৫ শতাংশ জমিতে আমন রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় আমনচাষিদের চারা উত্তোলন, রোপণ, সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় নির্বিঘ্নে চাষাবাদ শেষ করার স্বস্তিও প্রকাশ করেছেন কৃষকেরা।

সরেজমিনে জানা যায়, এ বছর সরকারি প্রণোদনার সার-বীজ নিয়ে অনেক কৃষক অসন্তুষ্ট। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার উত্তম দাস জানান, তিনি দুই কিয়ার (৬০ শতক) জমিতে ধান চাষ করছেন, কিন্তু কোনো সরকারি প্রণোদনা পাননি। একই কথা বলেছেন বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার প্রদীপ চন্দ্র দাস। তিনি ১৪ কিয়ার জমিতে আবাদ করেছেন, কিন্তু প্রণোদনার সার-বীজ কিছুই পাননি।

কৃষকদের এই অসন্তুষ্টির বিপরীতে সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এ বছর ১৪ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি কৃষককে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। তার পরও কৃষকের সংখ্যা বেশি হওয়ায় অনেকে এই সুবিধার বাইরে থেকে গেছেন।

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর জেলায় ৮৩ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে আমনের চাষ হয়েছে, যার লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ১৬ হাজার ৯৯৭ মেট্রিক টন চাল। উৎপাদিত চালের বাজারমূল্য ধরা হয়েছে ১০ কোটি ৬৩ লাখ ২৮ হাজার ৫৩০ টাকা। দোয়ারাবাজার উপজেলায় সবচেয়ে বেশি আমন চাষ হয়েছে, যার পরিমাণ ১৪ হাজার ৬২৫ হেক্টর।

রোপা আমনখেতে সার ছিটাচ্ছেন কৃষক। ছবি: আজকের পত্রিকা
রোপা আমনখেতে সার ছিটাচ্ছেন কৃষক। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘এ বছর প্রকৃতি ও পরিবেশ অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও প্রণোদনা পেয়েছেন ১৪ হাজার ৭০০ জন কৃষক, তবে কৃষকের সংখ্যা এর তিন-চার গুণ বেশি। তাই সবাইকে প্রণোদনার আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। আমরা কৃষকদের সুষম মাত্রায় সার ব্যবহার এবং পোকা-মাকড় দমনে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছি।’

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, জেলায় এ বছর ৮৩ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২ লাখ ১৬ হাজার ৯৯৭ মেট্রিক টন চাল। উৎপাদিত চালের বাজারমূল্য ১০ কোটি ৬৩ লাখ ২৮ হাজার ৫৩০ টাকা। জেলার সবচেয়ে বেশি রোপা আমন চাষ হয়েছে দোয়ারাবাজার উপজেলায়। সেখানে চাষকৃত জমির পরিমাণ ১৪ হাজার ৬২৫ হেক্টর। মঙ্গলবার পর্যন্ত ৮৫ ভাগেরও বেশি আমন লাগানো শেষ হয়েছে। ১৪ হাজার ৭০০ কৃষককে ৫ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি করে এমওপি সারা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি অধিদপ্তর।

প্রকৃতি-পরিবেশ অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা বলছেন সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ওমর ফারুক। তিনি বলেন, ‘প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে ১৪ হাজার ৭০০ জনকে। এর চেয়ে কৃষক তিন-চার গুণ বেশি। তাই অনেককে প্রণোদনার আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। আমরা আমনচাষিদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছি। কৃষকদের সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগে উদ্বুদ্ধ করছি। পোকামাকড় দমনে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত