Ajker Patrika

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের পর স্কুল সভাপতিকে মারধর

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২৩, ১৭: ৫৯
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের পর স্কুল সভাপতিকে মারধর

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে বারবান্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ দেওয়ার পর বিদ্যালয়ের সভাপতি মনিরুল ইসলামকে (৩৬) মারধরের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে উপজেলার বারবান্ধা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। ওই রাতেই ভুক্তভোগী মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমসহ দুজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। 

এর আগে গত রোববার (২৯ জানুয়ারি) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ দেন মনিরুল ইসলাম। 

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে উপজেলার উত্তর বারবান্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে বরাদ্দকৃত মোট ২ লাখ ৭৫ হাজার ৫০২ টাকা যৌথ হিসাব নম্বরে জমা হয়। তৎকালীন সভাপতি আইয়ুব আলীর মেয়াদ শেষ হলে গত বছর মনিরুল ইসলাম ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচিত হন। পরে প্রধান শিক্ষকসহ ব্যাংকে যৌথ হিসাব খুলতে যান মনিরুল ইসলাম। এ সময় তিনি দেখেন ব্যাংকে জমানো কোনো টাকা নেই। 

সন্দেহ হলে খোঁজ নিয়ে জানতে পান তৎকালীন সভাপতি আইয়ুব আলীর স্বাক্ষর জাল করে অবৈধভাবে সমস্ত টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম। 

গত রোববার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন মনিরুল ইসলাম। এতে ক্ষিপ্ত হন আবুল কাশেম। পরদিন সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ওই মনিরুল বারবান্ধা বাজার এলাকায় গেলে আবুল কাশেমসহ ভাতিজা রঞ্জু মিয়া তাঁকে মারধর করেন। এ সময় স্থানীয়রা মনিরুল ইসলামকে উদ্ধার করে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ওই দিন রাতেই মারধরের শিকার মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমসহ দুজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। 

তৎকালীন সভাপতি আইয়ুব আলী বলেন, ‘আমি এক বছর ধরে অসুস্থ। সরকারি বরাদ্দের টাকা উত্তোলনের বিষয়ে কিছুই জানি না এবং আমাকে জানানোও হয়নি। আমার স্বাক্ষর জাল করে সমস্ত টাকা আত্মসাৎ করেন প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম।’ 

রৌমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ও বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সহসভাপতি ফিরোজ মিয়া বলেন, তৎকালীন সভাপতি আইয়ুব আলীর স্বাক্ষর জাল করে সরকারি বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করেন ওই প্রধান শিক্ষক। এ নিয়ে সভাপতি মনিরুল বাদী হয়ে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হন তিনি। এর জের ধরে প্রধান শিক্ষক ও তাঁর ভাতিজা রঞ্জু মিয়া মনিরুলকে মারধর করেন।

সরকারি বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি অস্বীকার করে উত্তর বারবান্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম বলেন, তৎকালীন সভাপতি আইয়ুব আলী অসুস্থতার কারণে সবকিছু ভুলে গেছেন। তাঁর স্বাক্ষরেই টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। সভাপতি মনিরুল ইসলামকে পেটানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি আমার ভাতিজা রঞ্জু মিয়ার সঙ্গে ঘটেছে। আমি জড়িত নই।’ 

রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘মারধরের ঘটনায় মনিরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি ভর্তি হয়েছেন। তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফোলা ও জখমের চিহ্ন রয়েছে। তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।’ 

ইউএনও (ভারপ্রাপ্ত) এবিএম সরোয়ার রাব্বী বলেন, ‘অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

রৌমারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে সুপারিশ করা হবে। 

এ বিষয়ে রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুপ কুমার সরকার বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত