Ajker Patrika

৭ বছরেও বন্যায় হেলে পড়া সেতু সংস্কারের উদ্যোগ নেই 

কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ মে ২০২৪, ২১: ৫৭
৭ বছরেও বন্যায় হেলে পড়া সেতু সংস্কারের উদ্যোগ নেই 

সাত বছরেও রংপুরের কাউনিয়া তিস্তা শাখা মানাস নদের হেলে পড়া সেতু সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই। এতে উপজেলার ১০ গ্রামের মানুষকে নদ পারাপারে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

গ্রামবাসীর উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত সেতুতে অস্থায়ীভাবে কাঠের সাঁকো নির্মাণ করায় দুর্ভোগ কিছুটা লাঘব হয়েছে। তবে দ্রুত সেতুটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

জানা গেছে, উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের মাঝ দিয়ে প্রায় ৬০ মিটার প্রস্থ তিস্তার শাখা নদ বয়ে গেছে। পাকা সেতুর অভাবে নদের দুই পাড়ে আরাজি হরিশ্বর, বুদ্ধিরবাজার, গোপিডাঙ্গাচর এবং লালমনিরহাট সদরের চররাজপুর চরপাগলারহাট, চরচাংড়া, চরখলাইঘাটসহ ১০ গ্রামের মানুষ নদ পারাপারে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। 

২০১৪ সালে উপজেলা এলজিইডি ও ইউএসএআইডি সংস্থার অর্থায়নে তিস্তার শাখা মানস নদের ৩৭ লাখ ২৪ হাজার ১৮৩ টাকা ব্যয়ে ১৭ মিটার দৈর্ঘ্য একটি বক্স সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতু নির্মাণ হলে স্থানীয়রা অনেক আনন্দিত হয়। কিন্তু ২০১৭ সালে বন্যায় সেতুটি হেলে পড়ে এবং দুই পাড়ের অ্যাপ্রোচ সড়ক ভেঙে যাওয়ায় হাজারো মানুষ দুর্ভোগে পড়ে। 

গত শুক্রবার মৌলভীবাজার এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, হেলে যাওয়া সেতুতে কাঠের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। দুই পাড়ের মানুষেরা নড়বড়ে সাঁকো দিয়েই পার হচ্ছে। 

গোপীডাঙ্গা গ্রামের কৃষক সামছুল ইসলাম (৬৫) বলেন, তিস্তার মানস নদ পার হওয়ার জন্য ১০ গ্রামের মানুষের চাওয়া ছিল একটি পাকা সেতু। নির্মাণও হয় সেতু। কিন্তু সাত বছর আগে বন্যায় সংযোগ সড়কটি ভেঙে মানস নদে তলিয়ে যায়। সংস্কারের উদ্যোগ না নেওয়ায় সেতুটি তাঁদের কাজে আসে না। 

গোপীডাঙ্গা গ্রামের আমিন আলী, দেলওয়ারসহ কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, ‘১০ গ্রামের বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠীকে যোগাযোগের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগাতে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় নদের প্রস্থের চেয়ে ছোট্ট সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।’ 

আরাজি হরিশ্বর গ্রামের কৃষক আব্দুল গফুর বলেন, ‘নদীর দুই পাড়ের গ্রামগুলোতে ধান, আলু, ভুট্টাসহ সারা বছর সবজি উৎপাদিত হয়। কৃষকদের উৎপাদিত ফসল উপজেলার তকিপল হাট হয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। সেতুর অভাবে এলাকার উৎপাদিত কৃষক পণ্য আমরা বাজারে নিয়ে যেতে পারি না। অনেক দূর ঘুরে আমাদের হাট-বাজারে যেতে হয়। সেতুটি চলাচলের উপযোগী হলে কৃষকেরা লাভবান হতেন।’ 

মানাস নদের সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেছে গ্রামবাসীবালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনছার আলী বলেন, ‘এ নদীতে গার্ডার যুক্ত সেতু নির্মাণ করা দরকার ছিল। কিন্তু তৎকালীন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় আরসিসি ছোট বক্স কালভার্ট নির্মাণ করায় বন্যার সময় দুই পাশের অ্যাপ্রোচ সড়ক ভেঙে যায়। সেতুটিও একদিকে দেবে গেছে। লোকজন সেতু দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।’ 

উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান জেমি বলেন, ‘তিস্তার শাখা মানস নদের প্রস্থ অনুযায়ী সেতুটি অন্তত ৪০ মিটার দৈর্ঘ্য করা দরকার ছিল। তাহলে বন্যার সময় সেতু ও অ্যাপ্রোচ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হতো না।’ 

তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা ঢাকা অফিসে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন এবং বরাদ্দ পেলে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে সেতু ও অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত