Ajker Patrika

নীলফামারীতে ১৩১ চিকিৎসক ও ২৫২ নার্সের পদ শূন্য

জসিম উদ্দিন, নীলফামারী
আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১: ৪০
নীলফামারীতে ১৩১ চিকিৎসক ও ২৫২ নার্সের পদ শূন্য

নীলফামারী জেলা ও উপজেলা হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাহিদার বিপরীতে ১৩১ জন চিকিৎসক ও ২৫২ জন নার্সের পদ শূন্য রয়েছে। এতে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছে এলাকাবাসীরা। এতে তাঁদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। 

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলায় ২২৬ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন ৯৫ জন। তেমনি ৩৬২ জন নার্সের পদে বর্তমানে রয়েছে ১১০ জন। তাঁদের মধ্যে নীলফামারী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ৫৭ জন চিকিৎসকের জায়গায় ১৮ ও নার্স ১৫০ জনের মধ্যে রয়েছে ৯২ জন। সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে ৪১ জন চিকিৎসকের স্থলে ১০ জন ও নার্স ৯৪ জনের মধ্যে ৫৬ জন রয়েছে। জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩৩ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও সেখানে চিকিৎসক রয়েছে ১৫ জন ও নার্স ৩০ জনের মধ্যে রয়েছে ২৭ জন। 

একই সঙ্গে কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩৩ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও সেখানে রয়েছে ১৪ জন ও নার্স ২৫ জনের মধ্যে রয়েছে ২৩ জন। ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩১ জন চিকিৎসকের পদে রয়েছে মাত্র ২০ জন ও নার্স ৩৩ জনের মধ্যে রয়েছে ২৮ জন এবং ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩১ জন চিকিৎসকের পদে রয়েছে ১৮ জন ও নার্স ৩০ জনের মধ্যে রয়েছে ২৬ জন। 

সূত্রে আরও জানা যায়, রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোয় প্যাথলজি, এক্স-রে, আল্ট্রাসনোগ্রাম সব জায়গায় চালু থাকার কথা থাকলেও কিশোরগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টেকনিশিয়ান ও জনবল সংকটের কারণে আজ পর্যন্ত এক্স-রে মেশিনটি চালু হয়নি। 

কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু শফি মাহমুদ বলেন, এখানে ১৪ জন চিকিৎসক দিয়ে প্রতিদিন আউটডোরসহ গড়ে ৩৫০ রোগীর সেবা দিতে হয়। চিকিৎসক সংকট থাকায় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এই এলাকার সাধারণ মানুষজন। শুধু তাই নয়, কিশোরগঞ্জ ও ডিমলা উপজেলায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদায়ন না থাকায় সিজারসহ অন্যান্য অপারেশন এক নাগারে ছয় মাস থেকে বন্ধ আছে।  

নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (সুপারিনটেনডেন্ট) ডা. মেজবাহুল হাসান চৌধুরী বলেন, ২০১৬ সাল থেকে চিকিৎসক (কনসালট্যান্ট) সংকটে কার্ডিওলজি বিভাগটি বন্ধ আছে। অথচ সেখানে ২২টি মনিটর, ৪টি ডিফ্রিলেটর ও ২টি বেডসহ মহামূল্যবান যন্ত্রপাতি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। যার আনুমানিক মূল্য ৫০ লাখ টাকা। 

ডা. মেজবাহুল হাসান চৌধুরী আরও বলেন, এই বিভাগটি চালাতে সিনিয়র কনসালট্যান্ট একজন, জুনিয়র কনসালট্যান্ট একজন ও প্রশিক্ষিত নার্সের প্রয়োজন আছে। যার একটিও এই হাসপাতালে নেই। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়ে আজ পর্যন্ত কোন ফল হয়নি। এ অবস্থায় আউটডোর, ইনডোর ও অটি (অপারেশন থিয়েটার) মিলে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজারের বেশি রোগীর সেবা দিতে হয়।

এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, চাহিদার তুলনায় এ জেলার হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চিকিৎসক ও নার্স সংকট রয়েছে। চিকিৎসক সংকটের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আর নার্স নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আমরা সংকটের মধ্যে দিয়ে যত দূর পারি রোগীদের সেবা দিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত