Ajker Patrika

সৈয়দপুর হাসপাতাল

ঘুষে চাকরি দিয়ে বেতন নিয়ে উধাও ঠিকাদার

  • ৮ কর্মচারীর সাড়ে ১১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা নিয়োগদানকারী ঠিকাদার।
  • ঠিকাদার, হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ও তত্ত্বাবধায়কের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ।
  • ভুক্তভোগী এক পরিচ্ছন্নতাকর্মীর আত্মহত্যার চেষ্টা।
রেজা মাহমুদ, সৈয়দপুর (নীলফামারী) 
সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত
সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত

সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিযুক্ত ৮ কর্মচারী দীর্ঘ ১০ মাস বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বেতনের ১১ লাখ ৪৮ হাজার ৪৮০ টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা হয়েছেন নিয়োগদানকারী ঠিকাদার। হতাশায় ওই ভুক্তভোগীদের মধ্যে জুয়েল ইসলাম নামের একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ইতিমধ্যে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছেন বলে জানা।

এ নিয়ে ওই ভুক্তভোগী বাদী হয়ে ঠিকাদার ওবাইদুল ইসলামসহ তিনজনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযুক্ত অন্য দুজন হলেন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা নাজমুল হুদা ও তত্ত্বাবধায়ক মো. এরশাদ হোসেন।

অন্য ভুক্তভোগীরা হলেন শুভ রায়, আবু বক্কর সিদ্দিক, মশিউর রহমান, মোছা. শাকিলা, মো. রায়হান, দীপু ইসলাম ও লিটন ইসলাম। তাঁরা বিভিন্ন পদের কর্মচারী। এসব কর্মচারী নিয়োগে ১ থেকে ২ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগপত্র ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চতুর্থ শ্রেণির জনবল সংকটের কারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগ দিতে দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী কাজ পায় পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের ওবাইদুল ইসলামের মালিকানাধীন আল-আরাফাত সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রত্যেক কর্মচারীকে মাসে ১৬ হাজার ১৩০ টাকা পরিশোধ করার শর্ত ছিল। সে হিসাবে প্রত্যেককে ১ লাখ ৯৩ হাজার ৫৬০ টাকা পরিশোধ করার কথা থাকলেও মাত্র ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। ফলে প্রত্যেকের ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫৬০ টাকা করে পাওনা রয়েছে।

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী জুয়েল ইসলাম বলেন, ‘নির্ধারিত সময় কাজ করলেও আমাদের ১০ মাসের মাসের বেতন দেওয়া হচ্ছে না। ঠিকাদার উল্লিখিত পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা রয়েছেন। বেতন না পেয়ে আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি।’

জুয়েল আরও বলেন, ‘এর আগে নতুন করে নিয়োগ পেতে ৮০ হাজার টাকা দাবি করেন ঠিকাদার। কিন্তু সেই টাকা না দেওয়ায় আমাদের ৮ জন দক্ষ কর্মীকে বাদ দিয়ে টাকা নিয়ে নতুনদের নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন।’

ভুক্তভোগী শুভ রায় ও আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘ঠিকাদার আমাদের কাছে ১ লাখ টাকা করে ঘুষ নিয়েছেন। এখন ১০ মাসের বেতন দিচ্ছেন না।’ এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদার ওবাইদুল ইসলামের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ না হওয়ায় তাঁর মন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা নাজমুল হুদা বলেন, ‘হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ের কর্মচারীদের চাকরির মেয়াদ গত ৩০ জুন শেষ হয়ে গেছে। বর্তমানে কোনো আউটসোর্সিংয়ের কর্মচারী নেই। আর বেতনের টাকা তাঁরা পেয়েছেন কি না, তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেখার দায়িত্ব নয়। এটি সম্পূর্ণ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়দায়িত্ব।’

জানতে চাইলে সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফইম উদ্দিন জানান, অভিযোগের বিষয়টি তিনি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত