Ajker Patrika

ইউপি চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারের দাবি বিএনপি নেতাদের

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি 
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির নেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির নেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমানকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। ওই ইউপি চেয়ারম্যানকে ‘কুখ্যাত সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজ’ উল্লেখ করে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

আজ মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুরে উলিপুর প্রেসক্লাবের হলরুমে ওই ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি ওই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতাদের নামে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য সরবরাহ করে সংবাদ প্রকাশের অভিযোগ তোলেন। ‘মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য সরবরাহ করে সংবাদ প্রকাশের’ প্রতিবাদও জানান তাঁরা।

সংবাদ সম্মেলনে প্যানেল চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘২০২১ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হন উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোখলেছুর রহমান। এর পর থেকে ক্ষমতা ও দলীয় প্রভাব দেখিয়ে পরিষদের বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দ টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন। এ ছাড়া অন্যের বাড়ি-জমি দখলসহ সরকারি প্রকল্পের চাল বিতরণে অনিয়ম করে আসছেন। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ইউনিয়ন উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের বরাদ্দ করা ১৮ লাখ ৬২ হাজার ৩০০ টাকা চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করেন। এ ছাড়া খুদে শিক্ষার্থীদের ব্যাগ দেওয়ার জন্য বরাদ্দ করা ২ লাখ টাকাও আত্মসাৎ করেন।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ‘৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকে চেয়ারম্যান ইউপি কার্যালয়ে আসেন না। এমতাবস্থায় ইউনিয়নবাসী নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন। পরে ইউপি সদস্য ও স্থানীয় জনগণের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইউনিয়ন পরিষদের বিধিমোতাবেক জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত ২৬ মে থেকে প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে গত ১৭ জুন ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান নিজের বাড়িতে উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপি-যুবদল নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে বিএনপি নেতাদের সমাজে হেয় করা হয়েছে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব হায়দার আলী মিঞা, যুগ্ম আহ্বায়ক এরশাদুল হাবীব নয়ন, তবকপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক রেজাউল করিম মণ্ডল রাজা, সদস্যসচিব এনামুল হক মানিক, যুবদল সভাপতি ফজলুর রহমান সাজু প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোখলেছুর রহমানকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

এ বিষয়ে তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বিভিন্ন অভিযোগের কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাকে দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া হচ্ছে না। বিষয়গুলো আমি প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভোলা সদর উপজেলা বিএনপির কমিটির কার্যক্রম স্থগিত

ভোলা প্রতিনিধি 
কার্যক্রম স্থগিত করা বিজ্ঞপ্তি। ছবি: সংগৃহীত
কার্যক্রম স্থগিত করা বিজ্ঞপ্তি। ছবি: সংগৃহীত

ভোলায় বিএনপি ও বিজেপি (বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি) নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর সদর উপজেলা কমিটির সব কার্যক্রম স্থগিত করেছে বিএনপি।

শনিবার (১ নভেম্বর) বিকেলে ভোলা শহরে দুই দলের কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন আহত হন। ওই ঘটনার পর সাংগঠনিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিএনপি কেন্দ্রীয়ভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শনিবার (১ নভেম্বর) রাতে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভোলা জেলাধীন সদর উপজেলা বিএনপির কমিটির সব কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।

উল্লেখ্য, শনিবার দুপুরে ভোলা সদর উপজেলায় বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ এবং বিজেপি অফিসে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

বিজ্ঞপ্তির বিষয়টি রোববার সকালে আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন ভোলা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর ও কার্যক্রম স্থগিত হওয়া ভোলা সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসিফ আলতাফ। সদর উপজেলা বিএনপির কমিটির কার্যক্রম স্থগিতাদেশের সঙ্গে বিজেপি-বিএনপির সংঘর্ষের যোগসূত্র থাকতে পারে বলেও মনে করছেন বিএনপির এই দুই নেতা।

অন্যদিকে দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে কার্যক্রম স্থগিত হওয়া ভোলা সদর উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. হেলালউদ্দিন বলেন, ‘বিজ্ঞপ্তিতে কমিটির কার্যক্রম স্থগিত হওয়ার কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি। কারণ উল্লেখ থাকলে জবাব দেওয়া যেত।’ হেলাল উদ্দিন আরও বলেন, ‘বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়াকে নিয়ে যারা কটূক্তি করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আমার প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মদনে ছেলের লাঠির আঘাতে প্রাণ গেল বাবার

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নেত্রকোনার মদনে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের লাঠির আঘাতে মোস্তফা মিয়া (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। ঘটনার পর অভিযুক্ত ছেলে সাজ্জাদ মিয়াকে (২৫) আটক করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের ঘাটুয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত বৃদ্ধ ওই গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সাজ্জাদ মানসিক ভারসাম্যহীন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করতেন। শনিবার রাতে প্রতিদিনের মতো খাবার গ্রহণ শেষে নিজের ঘরে শুয়েছিলেন মোস্তফা। হঠাৎ ছেলে সাজ্জাদ ঘরে ঢুকে বাবার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলে মোস্তফা মারা যান।

মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামসুল আলম শাহ আজ রোববার সকালে এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত সাজ্জাদকে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় থানায় মামলা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সৌদি সরকারের দেওয়া দুম্বার মাংস: মনিরামপুরে বিতরণে ১২০ প্যাকেট হাওয়া

মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
সৌদি সরকারের দেওয়া দুম্বার মাংস: মনিরামপুরে বিতরণে ১২০ প্যাকেট হাওয়া

সৌদি সরকারের দেওয়া দুম্বার মাংস বিতরণে যশোরের মনিরামপুরে অনিয়ম ও গরমিলের অভিযোগ উঠেছে। মনিরামপুরের জন্য বরাদ্দের ৪৭০ প্যাকেটের মধ্যে ১২০ প্যাকেট মাংসের হিসাব মিলছে না। এদিকে উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নে দুস্থদের মধ্যে এই মাংস বিতরণের কথা থাকলেও রোহিতা, নেহালপুর, কুলটিয়া ও মনোহরপুর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের বঞ্চিত করা হয়েছে দুম্বার মাংস থেকে। যা বিতরণ করা হয়েছে, তার তালিকায়ও রয়েছে গরমিল।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন দপ্তর থেকে দেওয়া বিতরণের তালিকায় এসব অনিয়মের তথ্য মিলেছে।

এদিকে উপজেলায় এনে দুম্বার মাংস বিতরণের নির্দেশনা থাকলেও তা না করে যশোর জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে রাতে এই মাংস বিতরণ করা হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় সৌদি আরব সরকারের দেওয়া দুম্বার মাংস এবার মনিরামপুরের ১৭টি ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দ এসেছে ৪৭ কার্টন। প্রতি কার্টনে মাংস এসেছে ১০ প্যাকেট। সেই হিসাবে মনিরামপুরের জন্য বরাদ্দ ৪৭০ প্যাকেট।

সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ অক্টোবর সন্ধ্যার পর মনিরামপুরের ৫০টি মাদ্রাসা ও এতিমখানার দায়িত্বশীলদের মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে যশোর জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে দুম্বার মাংস বিতরণ করা হয়েছে। মনিরামপুরে মাংস না এনে রাতের আঁধারে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে ডেকে নিয়ে গোপনে মাংস বিতরণ করার তথ্য প্রচার করা হয়েছে দুই দিন পরে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন দপ্তর থেকে পাওয়া বিতরণ তালিকায় দেখা গেছে, উপজেলার ৫০টি মাদ্রাসা ও এতিমখানার দায়িত্বশীলদের ডেকে নিয়ে ৩৫০ প্যাকেট মাংস বিতরণ করা হয়েছে। বাকি ১২০ প্যাকেট তথা ১২ কার্টন মাংসের হিসাব নেই বিতরণের এই তালিকায়। বিতরণের তালিকায় নাম নেই রোহিতা, কুলটিয়া, নেহালপুর ও মনোহরপুর ইউনিয়নের কোনো মাদ্রাসা ও এতিমখানার।

মাংস বিভাজনের তালিকার তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মশ্মিমনগর ইউনিয়নে ৮টি মাদ্রাসায় ৪৩ প্যাকেট দেওয়া হয়েছে। এ ইউনিয়নের প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না। আর চালুয়াহাটি ইউনিয়নে ৬টি মাদ্রাসায় ৪৪ প্যাকেট দেওয়া হয়েছে। এই ইউনিয়নের প্রশাসক উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম।

এদিকে পিআইও দপ্তরের দেওয়া তালিকায় দেখা গেছে, উপজেলার রামপুর শাহপুর হাফিজিয়া মাদ্রাসায় চার প্যাকেট মাংস বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু মাদ্রাসার হিসাবরক্ষক আলী হাসান জানিয়েছেন, তাঁরা তিন প্যাকেট দুম্বার মাংস পেয়েছেন।

এসব বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, অধিকাংশ কার্টনে ১০ প্যাকেট মাংস পাওয়া যায়নি; পাওয়া গেছে ৭ থেকে ৮ প্যাকেট মাংস। যতগুলো প্যাকেট পাওয়া গেছে, সব মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে।

চারটি ইউনিয়নে দুম্বার মাংস না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে পিআইও বলেন, ‘আমাদের কাছে যতগুলো মাদ্রাসার তালিকা আছে। তাঁদের সবাইকে মোবাইল ফোনে জানানো হয়েছে। অনেকে ফোন ধরেননি। আবার অনেকে খবর পেয়েও মাংস নিতে আসেননি।’

মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্না বলেন, ‘আমি ঢাকায় প্রশিক্ষণে ছিলাম। মনিরামপুরে ফিরে দুম্বার মাংস বিতরণের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত জানাতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘পিছিয়ে পড়া’ সাতক্ষীরার ৮০ শতাংশ সড়কই কাঁচা

আবুল কাসেম, সাতক্ষীরা 
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাছখোলা এলাকা থেকে সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাছখোলা এলাকা থেকে সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশের অন্যান্য জেলা থেকে উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে পিছিয়ে রয়েছে সাতক্ষীরা। প্রতিষ্ঠার ৪১ বছরেও এই জেলায় এককভাবে কোনো বড় উন্নয়ন প্রকল্প গৃহীত হয়নি। ভোমরা স্থলবন্দর, মধু, আম, চিংড়িসহ বিভিন্ন খাত থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা হলেও জেলার অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারি উদ্যোগ হতাশাজনক বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বিশেষ করে ব্যাপক কাঁচা সড়ক ও যোগাযোগব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাতক্ষীরাবাসী।

আয়তনে সাতক্ষীরা দেশের ২৫তম বৃহত্তম জেলা হলেও এর যোগাযোগব্যবস্থা অত্যন্ত দুর্বল।

এলজিইডি সাতক্ষীরা সূত্রে জানা যায়, জেলায় ৫ হাজার ৭৮৮টি সড়ক রয়েছে, যার দৈর্ঘ্য ১১ হাজার ২ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৮ হাজার ৭৭২ কিলোমিটার সড়ক কাঁচা। অথচ এই জেলায় রয়েছে ভোমরা স্থলবন্দর, স্থলপথে সুন্দরবন, আম, মধু, চিংড়িসহ রাজস্ব আহরণের বিভিন্ন খাত। তবে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব সরকারি খাতে দিলেও প্রতিষ্ঠার ৪১ বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়াবঞ্চিত এই জেলা। নেই বিশ্ববিদ্যালয় ও রেললাইন। অধিকাংশ সড়ক কাঁচা হওয়ায় ব্যাপক দুর্ভোগে রয়েছে জেলাবাসী।

এ প্রসঙ্গে জেলা নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব আলী নূর খান বাবুল বলেন, ‘পাশের দুটি জেলা যশোর ও খুলনা। সেখানে কী নেই? অথচ আমরা বিপুল পরিমাণ রাজস্ব সরকারকে দিলেও আমাদের এখানে কোনো উন্নয়ন নেই। একটি বিশ্ববিদ্যালয় ও রেললাইন নির্মাণের কথা শুধু শুনেই থাকি। বাস্তবে আমরা দেখে যেতে পারব বলে মনে হয় না।’

কৃষি অর্থনীতির ভিত্তি হলো গ্রামীণ জনপদ। রাস্তা কাঁচা হওয়ায় ব্যাপক দুর্ভোগে জনসাধারণ। এ ছাড়া পাকা রাস্তাগুলো সংস্কার না হওয়ায় বিপাকে তারা।

এ বিষয়ে আশাশুনির প্রতাপনগর গ্রামের বাসিন্দা মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘যেকোনো দুর্যোগ উপকূলীয় এলাকায় আঘাত করে আগে। তাতে রাস্তা বিধ্বস্ত হয়। কিন্তু খারাপ রাস্তাঘাট সংস্কার হয় না। আমি মনে করি, দেশের অন্যান্য এলাকা থেকে এখানে বৈষম্য তৈরি হয়েছে। কোনো বড় বাজেট নেই। উপকূলীয় এলাকার লোকজন বাঁচাতে এই অঞ্চলে রাস্তাঘাট নির্মাণ ও সংস্কার জরুরি।’

গর্তে জমে থাকে পানি, ঘটে দুর্ঘটনা। আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গর্তে জমে থাকে পানি, ঘটে দুর্ঘটনা। আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

তালা উপজেলার নগরঘাটা গ্রামের কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, ‘নগরঘাটা গ্রামের রাস্তাঘাট খুবই খারাপ। হাঁটুর ওপর জল ওঠে বর্ষাকালে। আমরা চলতে-ফিরতে পারি না। মা-বোনেরা চলতে-ফিরতে পারে না। আমাদের দাবি, এই রাস্তা সংস্কার করা হোক।’

একই এলাকার শিমুল সরদার বলেন, ‘রাস্তা এত খারাপ যে ধান-চাল আনা যায় না। গরু-ছাগল পর্যন্ত আনা যায় না। এই রাস্তার পাশে আমাদের ঘের রয়েছে। ঘেরে খাদ্য-খাবার দিতে গেলে মাথায় বহন করে নিতে হয়। এ ছাড়া ধান-চাল বহন করতেও খুব কষ্ট হয়।’

‘সাতক্ষীরা গ্রামীণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প’ নামের একটি প্রকল্প পাস হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে একনেক বৈঠকে। উন্নয়ন প্রকল্পটি পাস হলে জেলাবাসীর দুর্ভোগ লাঘব হবে বলে মনে করেন এলজিইডির কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে এলজিইডি সাতক্ষীরার নির্বাহী প্রকৌশলী তারিকুল হাসান খান বলেন, ‘সাতক্ষীরা এলজিইডির অধীনে ১১ হাজার কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ২৩০ কিলোমিটার রাস্তা পাকা। সুতরাং আমাদের শতকরা ৮০ ভাগ রাস্তা এখনো কাঁচা। মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য গ্রামীণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প নামের একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি পাস হলে সাতক্ষীরার মানুষ উপকৃত হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত