Ajker Patrika

ইঁদুর-সাপ খেয়েই চলে তাদের জীবন

সাদ্দাম হোসেন, ঠাকুরগাঁও 
খাওয়ার জন্য ইঁদুর শিকার করছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কয়েক সদস্য। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাওয়ার জন্য ইঁদুর শিকার করছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কয়েক সদস্য। ছবি: আজকের পত্রিকা

আধুনিকতার স্রোত থেকে অনেক দূরে, এখনো ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর একদল মানুষ প্রকৃতির আদিম জীবনযাত্রার ওপর নির্ভরশীল। ঠাকুরগাঁও সদরসহ জেলার পাঁচটি উপজেলায় সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মানুষ পূর্বপুরুষদের পেশা আঁকড়ে ধরে শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

গত শনিবার শেষ বিকেলে সদর উপজেলার গৌরীপুর এলাকায় দেখা যায়, কাঁধে বাঁশের ঝুড়ি, হাতে ফাঁদ ও বাঁশি, ব্যাগে সদ্য ধরা কয়েক ডজন ইঁদুর নিয়ে কয়েকজন সাঁওতাল শিকারি মাঠের দিকে যাচ্ছেন।

শিকারি লক্ষীরাম সরেন বলেন, ‘বাপ-দাদার সময় থেকে এই পেশা চলে আসছে। ধানখেতের ইঁদুর আর পাখি শিকার করেই সংসার চলে। অন্য কোনো কাজে দক্ষতাও নেই, সুযোগও পাই না।’

অন্য শিকারি বিশু সরেনের চোখে ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছুটা আশা, ‘আমরা চাই আমাদের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করুক, ভালো চাকরি পাক। কিন্তু আপাতত শিকারের ওপরই ভরসা।’

শিকারি গরেন টিপ্পো জানান, ‘ধানখেতে ইঁদুর অনেক ক্ষতি করে। আমরা যখন তাদের ধরি আর খাই, তখন আমাদের পেটও ভরে, আবার জমিরও উপকার হয়।’

প্রবীণ শিকারি সুদাম মার্ডি বলেন, ‘বাজারের জিনিসপত্রের দাম এখন অনেক বেশি। তাই বাধ্য হয়েই আমরা এই পুরোনো পেশা ধরে রেখেছি।’

জেলা সাঁওতাল কল্যাণ পরিষদের সভাপতি পলাশ হেমব্রম বলেন, ‘শিকার আমাদের শত বছরের ঐতিহ্য। কিন্তু এখন সময় বদলেছে। নতুন প্রজন্মের জন্য শিক্ষায় বিনিয়োগ করা জরুরি। সরকার ও এনজিও একসঙ্গে কাজ করলে আমরা বিকল্প জীবিকা বেছে নিতে পারব।’

তবে পরিবেশবিদেরা সতর্ক করেছেন, নির্বিচারে বন্য প্রাণী শিকার পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে। পরিবেশকর্মী আলমগীর হোসেন বলেন, ‘শুধু ইঁদুর নয়, অনেক সময় পাখি, গুইসাপ, এমনকি খরগোশও শিকার করা হয়। এতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষদের আধুনিক পেশায় যুক্ত করতে দক্ষতা উন্নয়ন, ক্ষুদ্র ঋণ ও বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। একই সঙ্গে বন্য প্রাণী রক্ষায় তাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিলেটে পাথর লুটে জড়িত দুই দলের ৩৫ নেতা

৬৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ: ডেলটা গ্রুপের চেয়ারম্যান ফারুকসহ ১৫ জনের নামে মামলা

১ লাখ ৮২২ শিক্ষক নিয়োগ: যোগ্য প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা চলতি সপ্তাহে

‘মুসলিম ফ্রন্টগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করুন, ইন্টেরিম ভেঙে দিন’

‘বউ আমাকে মিথ্যা ভালোবাসত, টাকা না থাকলে ছেড়ে যাবে, তাই মরে গেলাম’

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত