Ajker Patrika

ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত শিশু রোগীর চাপ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৭: ০২
ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত শিশু রোগীর চাপ

ঠাকুরগাঁওয়ে ঠান্ডাজনিত কারণে শিশুদের নিউমোনিয়া, সর্দি, কাশি, জ্বরসহ ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। হঠাৎ করে রোগীর চাপ বাড়ায় হাসপাতালে দেখা দিয়েছে ওষুধ, স্যালাইন ও শয্যাসংকট। এতে অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। 

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে শয্যার সংখ্যা ৪৫ টি। বর্তমানে শিশু বিভাগে ভর্তি রয়েছে ১৮৫ জন শিশু। তাদের মধ্যে অন্তত ৭১ শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। 

এ ছাড়া গত মাসে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ১২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া শিশুদের মধ্যে প্রিম্যাচিউরড বা ওজনে কম থাকা নবজাতক ও অপরিপক্ব শিশু রয়েছে আটজন, যাদের বয়স এক থেকে দুই দিন। ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে দুজন, হার্টের সমস্যা নিয়ে একজন, খিঁচুনিসহ জ্বর নিয়ে একজন শিশুর মৃত্যু হয়। 

হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডের শয্যাগুলোর একটিও ফাঁকা নেই। কোনো কোনো শয্যায় একাধিক শিশুকে রেখে চিকিৎসা চলছে। বেশির ভাগ শিশুরাই নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত। শয্যার ব্যবস্থা না থাকায় অনেক শিশুকে মেঝেতে রেখে স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।  

পীরগঞ্জ উপজেলা লোহাগাড়া গ্রামের গৃহবধূ আঁখি মনি জ্বর–কাশিতে আক্রান্ত শিশু আহাদ ইসলামকে নিয়ে চার দিন ধরে হাসপাতালে। তিনি বলেন, ‘ওষুধ কেনার টাকা নেই। গতকাল ডাক্তার কিছু ওষুধ লিখে দিছে, ওই ওষুধ হাসপাতালে নাই। বাহির থেকে কিনে আনবে যে সে টাকাও নাই। তাই বাবুর চিকিৎসা বন্ধ আছে।’ 

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা লায়লী বেগম নামে এক শিশু রোগীর মা বলেন, ‘শয্যার অভাবে মেঝেতে শয্যা পেতে থাকতে হচ্ছে তাকে। এতে শিশুটি আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছে।’ 

বালিয়াডাঙ্গী থেকে ডায়রিয়া আক্রান্ত এক বছর বয়সী শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে গতকাল (মঙ্গলবার) ভর্তি হয়েছেন উত্তম কুমার। তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত এক হাজার টাকার ওষুধ কিনেছি। হাসপাতাল থেকে তেমন কোনো ওষুধ দেয়নি।’ 

ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে শিশু রোগীর ভির। ছবি: আজকের পত্রিকা রফিকুল ইসলাম নামে আরেক শিশুর অভিভাবক বলেন, ‘দিনমজুরি করে সংসার চালাই। হাসপাতালে ভর্তি থেকেও বাহির থেকে ওষুধ কিনতে হয়। টাকা নেই, কষ্ট হয় তবুও সন্তানকে তো বাঁচাতে হবে।’ 

হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ সিনিয়র স্টাফ নার্স শিল্পী আখতার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘১৫ নার্স ও তিনজন চিকিৎসক দিয়ে দৈনিক প্রায় ১৮০ থেকে ২০০ জন ভর্তি থাকা শিশু রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন শিশু ওয়ার্ডে ৪৫ শয্যার বিপরীতে ১০০ জনের ওপর নতুন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।’ বিপুলসংখ্যক রোগী সামাল দিতে তাঁদের নাভিশ্বাস উঠছে। 

২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক সাজ্জাদ হায়দার শাহীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শীতের এ সময়ে ভাইরাসের প্রবণতা বেড়ে যায়। ফলে শিশুরা ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ ছাড়া শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা কম বলে তারা সহজে আক্রান্ত হচ্ছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘এসব রোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে শিশুদের পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি ধুলোবালি এড়িয়ে চলতে হবে। আর প্রয়োজনীয় সব টিকা দিতে হবে।’ সেই সঙ্গে শিশুর শরীর ঘামলে তা মুছিয়ে দেওয়া এবং যাতে ঠান্ডা না লাগে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

আইসিএক্স বাদ দিলে ঝুঁকিতে পড়বে দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব, বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত