Ajker Patrika

পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ২ বাংলাদেশি নিহত

প্রতিনিধি, পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) 
পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ২ বাংলাদেশি নিহত

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়ন সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে দুই বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছে। আজ রোববার ভোরে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে বুড়িমারী স্থলবন্দর সীমান্তের জিরো পয়েন্টে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

নিহতেরা হলেন বুড়িমারী ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের বুলবুল হোসেনের ছেলে ইউনুছ আলী (২৭) ও নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার সাগর চন্দ্র (৩৮)। পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক ও বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাত দুই বাংলাদেশি নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। 

এ বিষয়ে ভোরেই এমন খবর পেয়েছেন জানিয়ে বিজিবি ৬১ ব্যাটালিয়নের বুড়িমারী কোম্পানি কমান্ডার বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘আমি মাসিক উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা সভায় আছি। দুজন নিহতের কথা শুনেছি। ঘটনা জানতে দুপুরে বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। একটু পর সভা হবে।’ 

বিজিবি জানায়, বিএসএফের আহ্বানে বুড়িমারী স্থলবন্দর সীমান্তের জিরো পয়েন্টে বেলা দেড়টার দিকে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ১৫ মিনিট স্থায়ী এ বৈঠকে উভয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ছয়জন করে সদস্য অংশ নেয়। বাংলাদেশের পক্ষে ৬১ ব্যাটালিয়নের বুড়িমারী বিজিবি কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার শরিফুল ইসলাম ও ভারতের ১৪৮ রানীনগর ব্যাটালিয়নের চ্যাংড়াবান্দা ক্যাম্প কমান্ডার রাজকুমার শেঠী নেতৃত্ব দেন। বৈঠকে ভারতের ভেতরে ঢুকে গরু পারাপারে বাধা দেওয়ার ঘটনা ও গুলিতে দুজন বাংলাদেশি নিহতের কথা জানায় বিএসএফ। বিজিবি এ সময় বলে, কেউ এ ধরনের অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পাওয়া গেলে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

সীমান্ত সূত্র জানায়, রোববার ভোরে ওই ইউনিয়নের বুড়িমারী সীমান্তের ৮৪২ নম্বর মেইন পিলার ও ৩-৪ নম্বর সাব পিলারের কাছ দিয়ে বাংলাদেশি পারাপারকারী ৭-৮ জনের একটি দল গরু আনতে যায়। ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীদের সহায়তায় কাঁটাতারের বেড়া অতিক্রম করে গরু পারাপারের সময় ভারতীয় ১৪০ রানীনগর বিএসএফ ব্যাটালিয়ন ও জলপাইগুড়ি সেক্টরের চ্যাংড়াবান্দা ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এতে ওই দুই বাংলাদেশি যুবক নিহত হন। নিহত দুজনের মরদেহ ভারতের চ্যাংড়াবান্দা এলাকার শ্মশানঘাট এলাকায় ভোর থেকে সকাল প্রায় ১২টা পর্যন্ত পড়ে থাকে। এর পর এরপর ভারতের মেখলিগঞ্জ থানা-পুলিশের কাছে মরদেহ দুটি হস্তান্তর করে বিএসএফ। 

এরই মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ভারতের জলপাইগুড়ি সেক্টরের বিএসএফের ডিআইজি সঞ্জয় পাল, ১৪৮ ব্যাটালিয়নের সেকেন্ড ইন কমান্ডার মুহিত কোঠিয়াল, কোম্পানি কমান্ডার রাজ কুমার শেঠী, মেখলিগঞ্জ পুলিশের সার্কেল ইন্সপেক্টর পূরণ রায়, মেখলিগঞ্জ থানার ওসি রাহুল তালুকদার। মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য ভারতের মাথাভাঙ্গা মর্গে নিয়ে যায় পুলিশ। 

এ ব্যাপারে বিজিবি ৬১ রংপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মীর হাসান শাহরিয়ার মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের টহল দল সীমান্তে ছিল। ভোর ৪টায় দুটি গুলির শব্দ শুনতে পায়। আমাদের কাছে এখনো কেউ নিহত বা কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না—এ ধরনের তথ্য নেই।’ 

সীমান্ত সূত্র জানায়, রোববার (২৯ আগস্ট) ভোরে ওই ইউনিয়নের বুড়িমারী সীমান্তের ৮৪২ নম্বর মেইন পিলার ও ৩-৪ নম্বর সাব পিলারের নিকট দিয়ে বাংলাদেশি ৭-৮ জনের গরু পারাপারকারীদের একটি দল গরু আনতে যায়। ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীদের সহায়তায় কাঁটাতারের বেড়া অতিক্রম করে গরু পারাপারের সময় ভারতীয় ১৪৮ রানীনগর বিএসএফ ব্যাটালিয়ন ও জলপাইগুড়ি সেক্টরের চ্যাংড়াবান্দা ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। এতে বুড়িমারী ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের বুলবুল হোসেনের ছেলে ইউনুছ আলী (২৭) ও নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার সাগর চন্দ্র (৩৮), পিতা-অজ্ঞাত গুলিতে নিহত হয়। নিহত দুজনের লাশ ভারতের চ্যাংড়াবান্দা এলাকার শ্মশানঘাট এলাকায় ভোর থেকে সকাল প্রায় ১২টা পর্যন্ত পড়ে থাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত