Ajker Patrika

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

বগুড়া প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ২১: ৩৬
বগুড়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের উপস্থিতিতে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
বগুড়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের উপস্থিতিতে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বগুড়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের উপস্থিতিতে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শহরের শহীদ টিটু মিলনায়তনের বাইরে এ ঘটনা ঘটে। এতে দুজন ছুরিকাহতসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে তাৎক্ষণিক তাঁদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার ও তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি’তে আজ বুধবার বেলা সাড়ে ৩টায় বগুড়া শহরের শহীদ টিটু মিলনায়তনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে এনসিপি। এই কর্মসূচির বিরোধিতা করে একই স্থানে পাল্টা প্রতিবাদ কর্মসূচি দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি অংশ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল ৫টার দিকে এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, যুগ্ম সদস্যসচিব তাহসিন রিয়াজসহ কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে ওঠেন। সমাবেশ শুরু হলে কিছুক্ষণ পরেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতা-কর্মীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে দিতে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করে। এনসিপির নেতা-কর্মীরা তাঁদের বাধা দিলে প্রথমে কথা-কাটাকাটি এবং একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। এরপর কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। এমনকি সারজিস আলম বক্তব্য দেওয়ার সময়ও সমাবেশস্থলের বাইরে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলতে থাকে।

এ নিয়ে কোনো পক্ষের সরাসরি বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সারজিস আলম বলেন, আওয়ামী লীগ এই দেশে আর রাজনীতি করতে পারবে না। তাদের যেখানে পাওয়া যাবে, সেখানেই প্রতিহত করা হবে। বগুড়া থেকেই প্রতিরোধের সূচনা হবে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে গত ১৬ বছরে বগুড়া সবদিক থেকে বঞ্চিত হয়েছে। চাকরি, প্রমোশন, অবকাঠামো—সবখানেই বৈষম্য করা হয়েছে। বগুড়ার বিমানবন্দর সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয়নি, আধুনিক হাসপাতালকে তৃতীয় শ্রেণির প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা হয়েছে, আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম থাকলেও কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করা হয় না।

ঢাকা থেকে বগুড়ায় সরাসরি রেললাইন চালুর দাবিও জানান সারজিস আলম। বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান মিলনের নাম উল্লেখ করে এই নেতা বলেন, তিনি জেলার ঐতিহ্যবাহী প্যালেস মিউজিয়াম ও জেলা ক্রীড়া সংস্থা দখল করেছেন। বগুড়ায় এ রকম অসংখ্য আওয়ামী দালাল রয়েছে, তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে।

সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠক যুথী অরণ্য প্রীতি। বক্তব্য দেন এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব তাহসিন রিয়াজ, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সাকিব মাহদী, কেন্দ্রীয় সদস্য রফিকুল ইসলাম পলক, আবদুল্লাহ আল মুহিন, নাজমুল হক, জেলা সংগঠক আহমেদ সাব্বির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বগুড়া জেলা সদস্যসচিব সাকিব খান, ওয়ারিয়র্স জুলাইয়ের আহ্বায়ক মো. মুশফিক, শহীদ সেলিম মাস্টারের ভাই উজ্জ্বল হোসেন, শহীদ রাতুলের ভাই হামজা প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে সারজিস আলমের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সাতমাথার মুক্তমঞ্চের সামনে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল থেকে নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধসহ তাদের বিচার দাবিতে নানা স্লোগান দেন।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দিন বলেন, সমাবেশ চলাকালে ১৫-২০ জনের একটি দল ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিয়ে সমাবেশস্থলে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় তাদের অপর পক্ষের নেতা-কর্মীরা ধাওয়া দিয়ে বের করে দেন। পরে টিটু মিলনায়তনের বাইরে বেশ কিছু সময় ধরে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। সেখানে দুজনকে ছুরিকাঘাত করা হয় বলে জানা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত