নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ভারতের কাছ থেকে পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি গুরুত্বপূর্ণ নয় বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক নদী আইন বিশেষজ্ঞ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, পানির হিস্যা আদায়ে চুক্তি করতে হবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে। সেখানে মমতা ব্যানার্জি গুরুত্বপূর্ণ নন।
ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চ দিবস উপলক্ষে রাজশাহীতে ‘গঙ্গা চুক্তির অবসানে বাংলাদেশের করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে এ আয়োজন করে বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের রাজশাহী শাখা এবং ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান হেরিটেজ রাজশাহী।
এ সময় আসিফ নজরুল বলেন, ‘‘আমরা একটা ভুল করি সব সময়। বলি, তিস্তা চুক্তি হচ্ছে না সে জন্য মমতার দোষ। কি আশ্চর্য কথা! ভারত যে কথা আমার-আপনার মুখ দিয়ে বলাতে চায়, সেটা আমরা অবলীলায় বলে দিই। আচ্ছা, মমতা যদি সমস্যা হয় তাহলে ১৯৭৭ সালেও তো ভারতের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছিল। তখনো তো পশ্চিমবঙ্গ আমাদের পানি দিতে চায়নি। ভারতের সংবিধান অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক সব চুক্তি কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়।
‘কেন্দ্রীয় সরকার চাইলে আমাদের সঙ্গে চুক্তি করবে, এখানে প্রদেশের কিচ্ছু বলার নাই। বলতে পারেন, বাস্তবায়নে সমস্যা হবে। বাস্তবায়নে সমস্যা হলে সেটা ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। আমরা ভারতের সঙ্গে চুক্তি না করে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে সমঝোতা করতে এগোই। পশ্চিমবঙ্গের সমান স্ট্যাটাস আমাদের? আমরা স্বতন্ত্র দেশ, পশ্চিমবঙ্গ ভারতের একটা প্রদেশ। কেন আমাকে মমতার কাছে দৌড়াতে হবে যে চুক্তি করো? কেন? আমেরিকার সঙ্গে যদি ফ্রান্স চুক্তি করে, তাহলে কি নিউ জার্সির গভর্নরের অনুমতি নিতে হয়? ফ্লোরিডায় দৌড়াবে?’
আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘আমরা তো ভারতকে বলব, পশ্চিমবঙ্গ কে? তুমিও স্বতন্ত্র দেশ, আমিও স্বতন্ত্র দেশ। পানি দাও। পানি না দিলে তোমার সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তি হবে না। ইন্ডিয়ার মানুষ এখানে চাকরি করতে পারবে না। এটা আমরা বলতে পারি না। এ রকম করলে ভারত পশ্চিমবঙ্গকে বিকল্প আধার থেকে পানি দেওয়ার ব্যবস্থা করত। এই অবস্থানটা আমাদের নিতে হবে।’
ভারতের ফারাক্কা বাঁধের কারণে পদ্মার করুণ দশার কথা বলতে গিয়ে ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘ভারতের উত্তর প্রদেশে অসংখ্য প্রকল্প আছে পানি প্রত্যাহারের। সেখান থেকে ভারত ইচ্ছেমতো পানি প্রত্যাহার করে। কী পরিমাণ পানি প্রত্যাহার করে সেটা বাংলাদেশকে জানায় না। তারপর বিহার এবং পশ্চিমবঙ্গ থেকে পানি প্রত্যাহার করে। তারপর অবশিষ্ট যে পানিটা ফারাক্কায় আসে, সেটা ভাগ করে নেয় বাংলাদেশের সঙ্গে। ভারত এটাকে বলে ন্যায়সংগত। আর আমরাও গাধার মতো বলি, খুবই ন্যায়সংগত একটা চুক্তি হয়েছে।’
বাংলাদেশে পানি আইন নিয়ে মানুষের ভ্রান্ত ধারণা এবং জ্ঞানের পরিধি নিয়ে প্রশ্ন তুলে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমাদের সমস্যা হচ্ছে জ্ঞানের। আমার খুব দুঃখ লাগে বলতে, আমাদের ১৭ কোটি মানুষের দেশ। কিন্তু আন্তর্জাতিক নদী আইনে আমি ছাড়া আর কারও পিএইচডি নেই। এটা কি সম্ভব একটা দেশে? নেপালের জনসংখ্যা কত কম, সেখানেও প্রায় ছয়-সাতজন আছেন। আমাদের দেশে আর কেউ নেই। আমি ১৯৯৮ সালে দেশে এসেছি। তারপর আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ওয়ান-ইলেভেন অনেক সরকার এসেছে, অথচ আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলনে যাওয়ার আগে তাঁদের একটা লোকও পরামর্শ চায়নি পানির ন্যায্য হিস্যাটা আদায়ের ব্যাপারে। এই দেশে কী মূল্য আছে পড়াশোনার? কী মূল্য গবেষণার?’
আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘দিনের পর দিন পানির অধিকার হারিয়ে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে, এটাই স্বাভাবিক। জ্ঞানী মানুষ হিসেবে পরিচিত বহু লোকের থেকে শুনেছি, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিচারালয়ে কেন যায় না? বাংলাদেশের তো যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আন্তর্জাতিক আদালতের যে নিয়ম সেখানে বাংলাদেশ নিজেই সাইন করেনি। ভারত সাইন করেছে, কিন্তু বলেছে ভারতের বিরুদ্ধে পানিসংক্রান্ত বিষয়ে কোনো অভিযোগ তোলা যাবে না।’
সেমিনারে প্রধান আলোচকের বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. আবদুর রহমান সিদ্দিকী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হেরিটেজ রাজশাহীর সভাপতি ও নদী গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক মো. আনোয়ার সাদাত। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের রাজশাহী শাখার সভাপতি ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ। সেমিনারে তিনি স্বাগত বক্তব্য দেন।
ভারতের কাছ থেকে পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি গুরুত্বপূর্ণ নয় বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক নদী আইন বিশেষজ্ঞ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, পানির হিস্যা আদায়ে চুক্তি করতে হবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে। সেখানে মমতা ব্যানার্জি গুরুত্বপূর্ণ নন।
ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চ দিবস উপলক্ষে রাজশাহীতে ‘গঙ্গা চুক্তির অবসানে বাংলাদেশের করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে এ আয়োজন করে বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের রাজশাহী শাখা এবং ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান হেরিটেজ রাজশাহী।
এ সময় আসিফ নজরুল বলেন, ‘‘আমরা একটা ভুল করি সব সময়। বলি, তিস্তা চুক্তি হচ্ছে না সে জন্য মমতার দোষ। কি আশ্চর্য কথা! ভারত যে কথা আমার-আপনার মুখ দিয়ে বলাতে চায়, সেটা আমরা অবলীলায় বলে দিই। আচ্ছা, মমতা যদি সমস্যা হয় তাহলে ১৯৭৭ সালেও তো ভারতের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছিল। তখনো তো পশ্চিমবঙ্গ আমাদের পানি দিতে চায়নি। ভারতের সংবিধান অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক সব চুক্তি কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়।
‘কেন্দ্রীয় সরকার চাইলে আমাদের সঙ্গে চুক্তি করবে, এখানে প্রদেশের কিচ্ছু বলার নাই। বলতে পারেন, বাস্তবায়নে সমস্যা হবে। বাস্তবায়নে সমস্যা হলে সেটা ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। আমরা ভারতের সঙ্গে চুক্তি না করে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে সমঝোতা করতে এগোই। পশ্চিমবঙ্গের সমান স্ট্যাটাস আমাদের? আমরা স্বতন্ত্র দেশ, পশ্চিমবঙ্গ ভারতের একটা প্রদেশ। কেন আমাকে মমতার কাছে দৌড়াতে হবে যে চুক্তি করো? কেন? আমেরিকার সঙ্গে যদি ফ্রান্স চুক্তি করে, তাহলে কি নিউ জার্সির গভর্নরের অনুমতি নিতে হয়? ফ্লোরিডায় দৌড়াবে?’
আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘আমরা তো ভারতকে বলব, পশ্চিমবঙ্গ কে? তুমিও স্বতন্ত্র দেশ, আমিও স্বতন্ত্র দেশ। পানি দাও। পানি না দিলে তোমার সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তি হবে না। ইন্ডিয়ার মানুষ এখানে চাকরি করতে পারবে না। এটা আমরা বলতে পারি না। এ রকম করলে ভারত পশ্চিমবঙ্গকে বিকল্প আধার থেকে পানি দেওয়ার ব্যবস্থা করত। এই অবস্থানটা আমাদের নিতে হবে।’
ভারতের ফারাক্কা বাঁধের কারণে পদ্মার করুণ দশার কথা বলতে গিয়ে ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘ভারতের উত্তর প্রদেশে অসংখ্য প্রকল্প আছে পানি প্রত্যাহারের। সেখান থেকে ভারত ইচ্ছেমতো পানি প্রত্যাহার করে। কী পরিমাণ পানি প্রত্যাহার করে সেটা বাংলাদেশকে জানায় না। তারপর বিহার এবং পশ্চিমবঙ্গ থেকে পানি প্রত্যাহার করে। তারপর অবশিষ্ট যে পানিটা ফারাক্কায় আসে, সেটা ভাগ করে নেয় বাংলাদেশের সঙ্গে। ভারত এটাকে বলে ন্যায়সংগত। আর আমরাও গাধার মতো বলি, খুবই ন্যায়সংগত একটা চুক্তি হয়েছে।’
বাংলাদেশে পানি আইন নিয়ে মানুষের ভ্রান্ত ধারণা এবং জ্ঞানের পরিধি নিয়ে প্রশ্ন তুলে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমাদের সমস্যা হচ্ছে জ্ঞানের। আমার খুব দুঃখ লাগে বলতে, আমাদের ১৭ কোটি মানুষের দেশ। কিন্তু আন্তর্জাতিক নদী আইনে আমি ছাড়া আর কারও পিএইচডি নেই। এটা কি সম্ভব একটা দেশে? নেপালের জনসংখ্যা কত কম, সেখানেও প্রায় ছয়-সাতজন আছেন। আমাদের দেশে আর কেউ নেই। আমি ১৯৯৮ সালে দেশে এসেছি। তারপর আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ওয়ান-ইলেভেন অনেক সরকার এসেছে, অথচ আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলনে যাওয়ার আগে তাঁদের একটা লোকও পরামর্শ চায়নি পানির ন্যায্য হিস্যাটা আদায়ের ব্যাপারে। এই দেশে কী মূল্য আছে পড়াশোনার? কী মূল্য গবেষণার?’
আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘দিনের পর দিন পানির অধিকার হারিয়ে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে, এটাই স্বাভাবিক। জ্ঞানী মানুষ হিসেবে পরিচিত বহু লোকের থেকে শুনেছি, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিচারালয়ে কেন যায় না? বাংলাদেশের তো যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আন্তর্জাতিক আদালতের যে নিয়ম সেখানে বাংলাদেশ নিজেই সাইন করেনি। ভারত সাইন করেছে, কিন্তু বলেছে ভারতের বিরুদ্ধে পানিসংক্রান্ত বিষয়ে কোনো অভিযোগ তোলা যাবে না।’
সেমিনারে প্রধান আলোচকের বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. আবদুর রহমান সিদ্দিকী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হেরিটেজ রাজশাহীর সভাপতি ও নদী গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক মো. আনোয়ার সাদাত। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের রাজশাহী শাখার সভাপতি ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ। সেমিনারে তিনি স্বাগত বক্তব্য দেন।
নাটোরের লালপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উপজেলা সমন্বয় কমিটিতে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতাদের পদ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে সাবেক কৃষক লীগ নেতা মো. হুমায়ুন কবির ও যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে গোপালপুর পৌর জাতীয় পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রান্টু দায়িত্ব
২ মিনিট আগেবান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ডে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বসানো স্থলমাইন বিস্ফোরণে আরেক বাংলাদেশি তরুণের পা উড়ে গেছে। আজ রোববার (২২ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে সীমান্তের ৪৪ পিলারের ৩০ গজ পূর্বে সাপমারাঝিরি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
৮ মিনিট আগেরাজধানীর ধানমন্ডি থানার প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলায় জব্দ থাকা মোবাইল ফোন, আইপ্যাড ও পাসপোর্ট নিজের জিম্মায় নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন মডেল মেঘনা আলম। আজ রোববার (২২ জুন) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই আবেদন করেন তিনি।
২০ মিনিট আগেজানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. পারভেজ সাজ্জাদ চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, কিছু শিক্ষার্থী পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে বোর্ডের সামনে অবস্থান করেছিল।
২৩ মিনিট আগে