Ajker Patrika

চাঁদাবাজি-দখলদারি বন্ধ না হলে যুদ্ধ চলবে: ডা. শফিকুর রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬: ৩৯
জামায়াতের আমির ডা. শফিকুল ইসলাম। ফাইল ছবি
জামায়াতের আমির ডা. শফিকুল ইসলাম। ফাইল ছবি

সারা দেশে চাঁদাবাজি ও দখলদারির ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘যারা এসব করছেন, বিনয়ের সঙ্গে বলি, এগুলো বন্ধ করেন। তবে যদি আমাদের এই বিনয়ী অনুরোধ কেউ না মানে, তাহলে আমাদের যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। সন্তানেরা স্লোগান দিচ্ছে, আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ। যুদ্ধ চলবে।’

আজ শনিবার দুপুরে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে জেলা ও মহানগর জামায়াত আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন। জামায়াতের আমির বলেন, ‘এই দেশ অনেকে শাসন করেছেন। আমাদের সন্তানেরা এত এত রক্ত কেন দিল? কারণ তারা চেয়েছে, এই সমাজ থেকে সব ধরনের দুঃশাসন এবং দুর্নীতির কবর রচিত হোক।’

ডা. শফিক বলেন, ‘রাজশাহী, যেটাকে শিক্ষার ভিলেজ বলা হয়, শিক্ষার গ্রাম। আমি আশা করি, ৫ তারিখের (৫ আগস্ট) পর রাজশাহীতে কোনো চাঁদাবাজি হয় না। এখানকার মানুষ ভদ্র, বিনয়ী ও সৎ। কেউ চাঁদাবাজি এখানে করে না, ঠিক না?’ এ সময় নেতা-কর্মীরা ‘চাঁদাবাজি হয়’ বলে আওয়াজ তোলেন। আমির প্রশ্ন করেন, ‘এখানেও চাঁদাবাজি হয়? এখানেও ফুটপাত দখল হয়? হাটবাজার, বালুমহাল, জলমহাল, যানবাহন স্ট্যান্ড, সবগুলোতে দখলদারি হয়?’ তখনো মাঠভরা নেতা-কর্মী ‘হয়’ বলে আওয়াজ তোলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘তাহলে আমাদের শহীদদের রক্তের প্রতি এটা কি ভালোবাসা? এই কাজ যাঁরা করেন, বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করি, এই কাজটা ছেড়ে দেন। আমাদের শহীদেরা কষ্ট পাবেন। অফিস-আদালতে ঘুষ–বাণিজ্য আছে, আবার মামলা-বাণিজ্যও অনেকে করেন। তাঁদের প্রতি আমাদের আন্তরিক অনুরোধ, ভাই, এই কাজগুলো করিয়েন না। আমাদের শহীদদের আত্মা বড় কষ্ট পাবে। আমাদের জীবন্ত সন্তানেরা যারা শহীদ হওয়ার নিয়ত করে রাস্তায় নেমেছিল, তারা কষ্ট পাবে। তাদের কষ্ট দেবেন না।’

একমাত্র কোরআনের শাসন বাংলাদেশে ইনসাফ কায়েম করতে পারে উল্লেখ করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘চাঁদাবাজি-দখলদারির বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ চলবে। যুদ্ধ কতক্ষণ? যতক্ষণ না ইনসাফ কায়েম হয়। এই ইনসাফ দিতে পারে একমাত্র আল কোরআন। এই কোরআনের শাসন দিয়ে আমরা বাংলাদেশ গড়তে চাই। আমরা বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত, ন্যায়-ইনসাফের মাধ্যমেই বাংলাদেশ গড়তে চাই। এ জন্য আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। আমরা ত্যাগ অনেক করেছি। আরও ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। জীবন খুব ছোট, কাজ অনেক বড়। বিশ্রামের কোনো সময় নেই।’

রাজশাহীতে জামায়াতের সমাবেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহীতে জামায়াতের সমাবেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

আমিরে জামায়াত বলেন, ‘আমরা আল্লাহর শক্তিতে বলীয়ান একটি জাতি গঠন করতে চাই। সে জাতি হবে সাহসী জাতি, বীরের জাতি। সে জাতি আল্লাহ ছাড়া কারও কাছে মাথা নত করবে না। এটা করেনি বলেই ১৫টি বছর আলেম-ওলামাদের ওপর বিগত সরকার তাণ্ডব চালিয়েছে। জামায়াতের দুজন আমিরসহ ১১ জন দায়িত্বশীল নেতাকে আমাদের বুক থেকে কেড়ে নিয়েছে। অন্যায়ের প্রতিবাদ যারা করেছে, তাদের গুম করেছে। অসংখ্য ভাইকে খুন করেছে। চাকরি কেড়ে নিয়েছে। ব্যবসা ছিনিয়ে নিয়েছে। কাউকে কাউকে দেশেও থাকতে দেয়নি। মানুষের কল্যাণে কাজ করার কারণে অনেকে জিন্দা শহীদ হয়ে আছে। হাত-পা টুকরা-টুকরা। এই কষ্টের জীবন নিয়ে তাঁরা বেঁচে আছেন।’

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘যারা রক্ত দিয়ে আজকের এই পরিবেশ দিয়ে গিয়েছে, আমরা তাদের প্রতি ঋণী এবং কৃতজ্ঞ। এই ঋণের দায় আমাদের আজীবন শোধ করতে হবে। কতজন আদম সন্তানকে দুনিয়া থেকে বিদায় করা হয়েছে, সঠিক হিসাব কেউ দিতে পারবে না। আন্দোলনের শেষ দিনগুলোতে ইন্টারনেট বন্ধ রেখে সবকিছু অন্ধকারে রেখে অনেক লাশ গুম করা হয়েছে। স্তূপে স্তূপে লাশ। ট্রাকের ওপর ছুড়ে মারা হয়েছে। তারপর পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে লাশগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা তাদের ঋণ কোনো দিন শোধ করতে পারব না।’

রাজশাহীতে জামায়াতের সমাবেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহীতে জামায়াতের সমাবেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এমন সাহসী সন্তান থাকলে বাংলাদেশকে নিয়ে আর ষড়যন্ত্র করে লাভ নেই মন্তব্য করে জামায়াত আমির বলেন, ‘সাংবাদিক বন্ধুরা প্রশ্ন করেছেন, “আপনাদের দলের কতজন শহীদ হয়েছে।” আমরা বলেছি, যারা শহীদ হয়েছে আমরা তাদের দলের মানুষ। তাদের কোনো দলীয় পরিচয়ে আমরা তাদের সংকীর্ণ স্থানে নামাতে চাই না। তারা জাতীয় সম্পদ। তাদের আমরা মাথার ওপরে তুলে রাখতে চাই। এক হাত চলে গেছে, আরেক হাত নিয়ে যুদ্ধ করতে চায়। এমন সাহসী মানুষ থাকলে এই জাতির ওপর কোনো ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হবে না।’

কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমির ড. মো. কেরামত আলী। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মণ্ডল।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য নুরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, মোবারক হোসাইন, রাজশাহী অঞ্চল পরিচালক অধ্যক্ষ মো. সাহাবুদ্দিন প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সিলেটে ছাত্র ইউনিয়নের ৩ নেতা আটক

সিলেট প্রতিনিধি
আটক একজন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আটক একজন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিলেটে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাশ্রমিক আন্দোলনে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ছাত্র ইউনিয়নের তিন নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সিলেট নগরীর চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে তাঁদের আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন সিলেট জেলা সংসদের সভাপতি মাশরুখ জলিল এবং শাবিপ্রবির সংগঠক মো. জুবায়ের আহমেদ জুয়েল ও শান্ত তালুকদার।

জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে সিলেট নগরীর চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সিলেটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সুমনসহ শ্রমিক সংগঠক ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার এবং মামলা দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানস্থল থেকে তিনজনকে আটক করে পুলিশ।

সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তাঁদের থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

এর আগে শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সিলেট কার্যালয় থেকে ২২ জন নেতা-কর্মীকে আটক করে পুলিশ। সম্প্রতি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন করেছেন শ্রমিকেরা।

এতে দীর্ঘ সময় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করা হয়। ওই আন্দোলনে সংগঠক হিসেবে বাসদ ও সিপিবির নেতারা সম্পৃক্ত আছেন বলে পুলিশ জানায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুন্সিগঞ্জে পিস্তল ঠেকিয়ে ডাকাতি, ৪৮ লাখ টাকার মালামাল লুট

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি, এআই দিয়ে তৈরি
প্রতীকী ছবি, এআই দিয়ে তৈরি

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় এক দিনের ব্যবধানে আবারও সংঘবদ্ধ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের সাতকাহনিয়া গ্রামে বৃদ্ধ দম্পতির বাসায় প্রবেশ করে ডাকাতেরা নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৪৮ লাখ টাকার মালামাল লুট করে।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আলম মিয়া বলেন, ‘আমরা দুই ভাই পরিবার নিয়ে ঢাকায় অবস্থান করি। বিকেলে ঢাকায় চলে আসার পর রাতে আমার বাবা-মা বাসায় ছিলেন। ডাকাতেরা জানালার গ্রিল কেটে প্রবেশ করে এবং অস্ত্রের মুখে বাবা-মাকে জিম্মি করে নগদ তিন লাখ টাকা ও ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে।’

গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি। পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ব্যবসায়ী আলম মিয়ার বাবা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথমে সাতজন ডাকাত প্রবেশ করে। পরে আরও ১৪-১৫ জন যোগ হয়। তারা কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে বিভিন্ন রুমে অবস্থান নেয় এবং আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে আলমারি ও শোকেসের তালা ভেঙে সব লুট করে নেয়।’

উল্লেখ্য, এর আগে গত রোববার রাতে উপজেলার বালুয়াকান্দি দক্ষিণপাড়া এলাকায় অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য ফজলুল হকের বাড়িতে একই কায়দায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ ৫৪ লাখ টাকার মালামাল লুট হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অবসরের এক যুগ পর কাস্টমস কর্মকর্তা ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের দুই মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
অবসরের এক যুগ পর কাস্টমস কর্মকর্তা ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের দুই মামলা

চট্টগ্রামে অবসরে যাওয়ার প্রায় এক যুগ পর কাস্টমসের সাবেক এক সহকারী কমিশনার ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে তিন কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) চট্টগ্রামের দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ মামলা দুটি দায়ের করা হয়। দুটি মামলারই বাদী হলেন কার্যালয়টির সহকারী পরিচালক সায়েদ আলম।

দুর্নীতিতে অভিযুক্তরা হলেন কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কার্যালয়ের সাবেক সহকারী কমিশনার আহসান হাবিব ও তাঁর স্ত্রী আসমা সুলতানা।

আহসান হাবিবের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৪০ লাখ ৯ হাজার ৭৮৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫৯ লাখ ১০ হাজার ৪১১ টাকার সম্পদ অর্জন এবং তা ভোগদখলের অভিযোগ আনে দুদক। অন্যদিকে আসমা সুলতানার বিরুদ্ধে ৩২ লাখ ৭৫ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৬৬ লাখ ২৪ হাজার ২৫০ টাকার সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলের অভিযোগ আনা হয়েছে।

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার বাসিন্দা আহসান হাবিব ১৯৮০ সালে কাস্টমসের একজন পরিদর্শক হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। ২০১২ সালে তিনি সহকারী কমিশনার হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০১৪ সালে তিনি ঢাকা দক্ষিণের কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার হিসেবে অবসরে যান। তিনি চট্টগ্রামেও কর্মরত ছিলেন। ২০১৮ সালে চট্টগ্রামের দুদক কার্যালয়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তা ও তাঁর স্ত্রীর সম্পদ বিবরণী দাখিল করা হয়।

দুদক চট্টগ্রামের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এর উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, একটি মামলায় কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কার্যালয়ের সাবেক সহকারী কমিশনারকে আসামি করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদক আইনের একই ধারায় আরেকটি মামলা হয়েছে সাবেক ওই কর্মকর্তার স্ত্রী আসমা সুলতানার বিরুদ্ধে। ওই মামলায় সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। অর্থাৎ অভিযুক্ত কাস্টমস কর্মকর্তা চাকরিরত অবস্থায় অসাধু উপায়ে অর্জিত টাকায় তাঁর স্ত্রীর নামে সম্পদ অর্জন ও তা ভোগদখলে রাখতে সহযোগিতা করেছেন।

সম্পদ বিবরণীতে আহসান হাবিব নিজ নামে মাত্র ৯ লাখ ২৯ হাজার ৬১২ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৫০ হাজার টাকা অস্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন। আর আসমা সুলতানা তাঁর নিজের নামে ২০ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকার স্থাবর সম্পদ থাকার কথা উল্লেখ করলেও কোনো অস্থাবর সম্পদ নেই বলে সম্পদ বিবরণীতে ঘোষণা দেন। তিনি নিজেকে ব্যবসায়ী উল্লেখ করলেও দুদকের অনুসন্ধানে তাঁর ব্যবসার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মা-বাবার বিরোধ, ১০ বছরের শিশুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

ফরিদপুর প্রতিনিধি
নিবির মণ্ডল। ছবি: সংগৃহীত
নিবির মণ্ডল। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুর সদর উপজেলার নিবির মণ্ডলের বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। এ বয়সে খেলাধুলা, মা-বাবার আদরে বড় হওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু গত রোববার তার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। শিশুটির স্বজনদের দাবি, মা-বাবার বিরোধের জেরে অভিমানে আত্মহত্যা করেছে নিবির।

মৃত নিবির উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী মোস্তফাডাঙ্গি গ্রামের মুরাদ মণ্ডলের (৪০) ছেলে। সে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। গত রোববার বসতঘরের আড়া থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ।

শিশুটির চাচা আজম মণ্ডল আজকের পত্রিকাকে জানান, আট বছর আগে প্রবাসে পাড়ি জমান তার বাবা মুরাদ মণ্ডল। গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে মালদ্বীপ থেকে ছুটি নিয়ে দেশে ফিরে দেখেন, তার টাকাপয়সা কিছুই নেই। এ নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে কলহ বাধে মুরাদের। পরে নিবিরসহ তিন সন্তানকে নিয়ে পাশের আদমপুর এলাকায় বাপের বাড়ি চলে যান তাঁর স্ত্রী।

আজম মণ্ডল জানান, দুই মাস আগে নিবির আবার তার বাবার কাছে চলে আসে। এরপর থেকে সে বাড়িতে বাবার সঙ্গেই থাকত। গত রোববার দুপুরে স্কুল থেকে ফিরে এসে নিবির দেখে, ঘরে খাবার নেই, ওর বাবাও মাঠে ছিল। পরে আরেক চাচাতো ভাইকে সঙ্গে নিয়ে নানাবাড়িতে যায়। সেই ভাতিজার বরাতে আজম মণ্ডল জানান, শিশুটি তার নানাবাড়িতে গিয়ে মায়ের কাছে খাবার চেয়েছিল। সেখানে তার মা তাকে বকাবকি করে। পরে বিকেলে ঘরে ফিরে নিবিরের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান তার বাবা। ছেলের মৃত্যুতে অচেতন হয়ে পড়া বাবা মুরাদ মণ্ডলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান আজম মণ্ডল।

শিশুটির পরিবার ও প্রতিবেশীরা জানান, কোতোয়ালি থানা-পুলিশ ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল সোমবার দুপুরে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে। বিকেলে দাফনের জন্য বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ছনেরটেক গোরস্তানে কবর খুঁড়তে যান প্রতিবেশীরা। এ কবরস্থানেই মোস্তফাডাঙ্গির মৃত বাসিন্দাদের দাফন করা হয়ে থাকে। তবে সেখানে গেলে কবর খুঁড়তে বাধা দেন ওই ইউনিয়নের বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম।

প্রতিবেশী বাবুল মণ্ডল বলেন, ‘আমরা যখন খুঁড়তে যাই, তখন রফিক এসে বলে, এই কবরস্থানে গলায় দড়ি দেওয়া কোনো লাশ দাফন করা যাবে না, যার যার বাড়িতে গিয়ে কবর দাও। এসব বলে আমাদের অপমান করে পাঠায় দেয়।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির নেতা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওই কবরস্থানে আজ পর্যন্ত কোনো গলায় দড়ি দেওয়া লাশ কবর দেওয়া হয়নি। এজন্য তাঁদের আমি বলছিলাম, কবরস্থানের সভাপতির সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাচ্ছি, কবর দিতে নিষেধ করি নাই। কিন্তু উনারা রাগ করে চলে গিয়ে অন্য জায়গা কবর দিছে।’

কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আব্দুল্লাহ বিশ্বাস বলেন, ‘শিশুটির মা-বাবার বিভাজনের কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। মা-বাবা একসঙ্গে থাকলে এমনটি নাও হতে পারত। তবে লাশ দাফনে বাধা দেওয়ার বিষয়টি আমাদের কাছে কেউ জানায়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত