Ajker Patrika

বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষায় তৃতীয় পাবনার সুদীপ্ত

শাহীন রহমান, পাবনা 
আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৪, ১৫: ৩১
বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষায় তৃতীয় পাবনার সুদীপ্ত

‘বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হব। কিন্তু আমার দুই বোনের ইচ্ছা, আমি যেন বুয়েটে পড়ি। সেই থেকে মনের মধ্যে প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন লালন করতাম। বুয়েটে পড়ার স্বপ্ন দেখতাম। সেই লক্ষ্য নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে গেছি। আজ সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় খুব খুশি।’

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে পাবনা শহরের গোপালপুর মহল্লার বাসায় বসে এভাবেই নিজের অনুভূতির কথা জানাচ্ছিলেন সুদীপ্ত পোদ্দার। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন তিনি।

প্রবীর কুমার পোদ্দার স্বপন ও মিতু পোদ্দার দম্পতির একমাত্র ছেলে সুদীপ্ত পোদ্দার। দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে সুদীপ্ত সবার ছোট। বাবা ব্যবসায়ী ও মা গৃহিণী। তাঁর এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত সুদীপ্ত ও তাঁর পরিবার। সেই সঙ্গে খুশি তাঁর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি অ্যাডওয়ার্ড কলেজের শিক্ষকেরাও।

নিজের এই সাফল্যের পেছনে বাবা-মা, বোন ও শিক্ষকদের অবদান রয়েছে বলে জানান সুদীপ্ত। ভবিষ্যতে একজন প্রকৌশলী হয়ে দেশ ও মানুষের সেবা করতে চান তিনি।

সুদীপ্ত বলেন, তাঁদের পৈতৃক নিবাস পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানার ভবানীপুর মাসুমদিয়া গ্রামে। ২০১৩ সাল থেকে তাঁদের বসবাস পাবনা শহরে। লেখাপড়ায় তাঁরা তিন ভাইবোনই মেধাবী। বড় বোন শর্মিতা পোদ্দার ঢাকার ইডেন কলেজ থেকে কেমিস্ট্রিতে মাস্টার্স করে সংসারী হয়েছেন। আর ছোট বোন স্বর্ণা পোদ্দার পাবনা সরকারি অ্যাডওয়ার্ড কলেজে অ্যাকাউন্টিংয়ে মাস্টার্স শেষ করে বিসিএসের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

সুদীপ্ত আরও বলেন, ‘দুই বোনের উৎসাহে ছোটবেলা থেকেই বুয়েটে পড়ার স্বপ্ন দেখতাম। সেই লক্ষ্যে পড়াশোনা চালিয়ে গেছি। অবশেষে স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় খুব খুশি। ভবিষ্যতে ভালো প্রকৌশলী হিসেবে দেশ ও মানুষের সেবা করতে চাই। আমার সাফল্যের পেছনে বাবা-মা, বিশেষ করে দুই বোনের অবদান সবচেয়ে বেশি। শিক্ষকেরাও সব সময় অনুপ্রাণিত করেছেন।’

বাবা-মায়ের সঙ্গে সুদীপ্ত। ছবি: আজকের পত্রিকাসুদীপ্ত পোদ্দার বলেন, ‘পড়াশোনায় আমার কোনো নির্ধারিত সময় ছিল না। নির্ধারণ করে প্রতিদিন যে ১২ ঘণ্টা, ১০ ঘণ্টা পড়তে হবে, তা কখনো ভাবিনি। যখন মনে হয়েছে, আজ আমার এই পড়াটুকু শেষ করতে হবে। সেটা নির্ধারণ করে পড়াশোনা করেছি। আর নিজের ওপর আস্থা ছিল।’

সুদীপ্তর বাবা প্রবীর কুমার পোদ্দার স্বপন বলেন ‘ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার বাইরে সে কোথাও কিছু করত না। ওকে কখনো পড়ার জন্য বলতে হয়নি। কেজি স্কুল থেকে এইচএসসি পর্যন্ত বরাবর সে প্রথম হয়ে আসছে।’

সুদীপ্তর মা মিতু পোদ্দার বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তার কাছে চাইতাম, ছেলেটার পরিশ্রমের ফল যেন দেন। আজ সেই চাওয়া পূরণ হয়েছে। আশা করি, ভবিষ্যতে সে মানুষের মতো মানুষ হয়ে দেশ আর মানুষের সেবা করবে।’

বাবা-মা ও বোনের সঙ্গে সুদীপ্ত। ছবি: আজকের পত্রিকাসুদীপ্তর ছোট বোন স্বর্ণা পোদ্দার বলেন, ‘আমি জানতাম আমার ভাই প্রথম তিনজনের মধ্যে থাকবে। ওর ওপর আস্থা ছিল, ও পারবে। তৃতীয় হওয়ায় অন্যরকম আনন্দ লাগছে। মনে হচ্ছে, আমরা সবাই এই সাফল্য অর্জন করেছি। সুদীপ্ত যেহেতু বরাবর ক্লাসে এক নম্বর ছিল। ভবিষ্যতেও সব কাজে যেন এক নম্বরই থাকে।’

এ বিষয়ে সরকারি অ্যাডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহবুব সরফরাজ বলেন, ‘আমাদের জন্য অনেক আনন্দের খবর এটা। যারা বুয়েটের মতো প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার সুযোগ পায়, তারা স্কুল লেভেল থেকেই ভালো ছাত্র। সেই ভালোটাকেই আমরা যত্ন নিতে পেরেছি, এটা আমাদের জন্য তৃপ্তির জায়গা। এটা কারও একার কৃতিত্ব নয়। মূল কৃতিত্ব শিক্ষার্থীর অবশ্যই। তার বাবা-মা, শিক্ষক আমরা সহায়ক ভূমিকা পালন করেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

মধুপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত