Ajker Patrika

নৌকা পোড়ানো বিএনপি নেতা এখন আ. লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী

পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি 
নৌকা পোড়ানো বিএনপি নেতা এখন আ. লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় বানেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ ওরফে ডিস কালাম। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অভিযোগ, আবুল কালাম বিএনপির ক্যাডার ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে বানেশ্বর বাজারে ২০০১ সালে জাতীয় নির্বাচনে প্রচারণার জন্য তৈরি ৪০ হাত নৌকা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। কয়েক বছর আগে সাবেক সাংসদের হাত ধরে রাতারাতি তিনি আওয়ামী লীগ নেতা বনে যান। 

উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, আবুল কালাম আজাদ আগে বিএনপি করতেন। ২০০৮ সালে তৎকালীন সাংসদ আব্দুল ওয়াদুদ দারার হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০১৩ সালের সম্মেলনে তাঁকে বানেশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সাম্পাদক করা হয়। সে সময় বানেশ্বর এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সাত্তার মেম্বার জোরালো প্রতিবাদ জানান। এ নিয়ে আবুল কালাম ও সাত্তার মেম্বারের মধ্যে কয়েক দফা হামলা-মামলার ঘটনাও ঘটে। এক পর্যায়ে আবুল কালাম আত্মগোপনে চলে যান। আর তাঁর পরিবার সাত্তার মেম্বারসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গুম করার অভিযোগে থানায় মামলা করেন। এরপর র‍্যাবের তৎপরতায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়। 

ওই সময় র‍্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে আবুল কালাম স্বীকার করেন, সাত্তার মেম্বারকে ফাঁসাতে তিনি নাটক সাজিয়েছিলেন। এই অপরাধে দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। এবার বানেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে কালামসহ মোট ১২ জন আওয়ামী লীগ নেতা দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু বিশেষ কৌশলে আবুল কালাম দলীয় মনোনয়ন নিয়ে আসেন। এতে দলের মধ্যে নতুন করে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক দলীয় মনোনয়ন প্রত্যশীরা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বলেন, যে বিএনপির ক্যাডার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাজুল ইসলাম মোহাম্মদ ফারুকের দলীয় মার্কা নৌকা পুড়িয়েছেন, তিনি আজ আওয়ামী লীগের নৌকার মাঝি। দল থেকে এমন একজন ‘হাইব্রিড’ লোককে কীভাবে মনোনয়ন দিলে তা বোধগাম্য নয়। 

বিতর্কিত কালাম ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসাসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নানা অভিযোগ রয়েছে। তাঁর এক ছেলে অস্ত্র ব্যবসা করতে গিয়ে র‍্যাবের হাতে পিস্তলসহ আটকও হয়েছিলেন। এই পরিবারের কাছে পুরো বানেশ্বর বাজার জিম্মি। নেতাকর্মীরা বলেন, সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও নির্বাচন করা এক নয়। যার ফলাফল ভোটের মাধ্যমে জনগণ বুঝিয়ে দেবে। 

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ভোট আসলেই কিছু লোকজন মিথ্যা প্রচারণা শুরু করেন। আমি বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। দল আমাকে যোগ্য মনে করেছে, তাই মনোনয়ন দিয়েছে। আর এলাকায় দলের মধ্যে এখন কোনো বিভেদ নেই।’ 

এ বিষয়ে সাবেক সাংসদ রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা বলেন, ‘আবুল কালাম আমার হাতে ফুল দিয়ে দলে যোগদান করেনি। তিনি অনেক আগেই আব্দুস সাত্তারের মাধ্যমে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে এসেছেন। আর দল তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে। এখানে আমার কোনো হাত নেই।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত