Ajker Patrika

রাজশাহীতে গণহারে মামলা, আসামি করা নিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ২৮ আগস্ট ২০২৪, ০৯: ৫২
রাজশাহীতে গণহারে মামলা, আসামি করা নিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ

ছাত্র–জনতার অভুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাজশাহীর বিভিন্ন থানায় মামলা করছেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোনো ঘটনা না ঘটলেও মামলা হচ্ছে বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন।

আবার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম না দিতে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে বলেও বিভিন্ন সূত্র থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগের মামলায় গণ আসামি করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট ডাকাতির ঘটনা নিয়েও মামলা হচ্ছে এখন।

পুলিশ বলছে, মামলায় কাকে আসামি করা হবে না হবে তা বাদীর ওপরেই নির্ভর করছে। মামলা রেকর্ডের আগে যাচাই–বাছাই করার সুযোগ হচ্ছে না। আর আইনজ্ঞরা বলছেন, অতি উৎসাহী হয়ে কেউ কেউ মামলায় গণআসামি করছেন। কিন্তু ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হন তা নজর রাখা উচিত। কারণ, মামলার লক্ষ্য হলো– সুবিচার পাওয়া। হয়রানি করার উদ্দেশ্যে মামলা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ১৯ আগস্ট থেকে রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে মামলা হতে শুরু করেছে। ১৯ আগস্ট প্রথম মামলা হয় নগরের বোয়ালিয়া থানায়। গত ৫ আগস্ট আলী রায়হান নামের এক শিবির নেতার নিহতের ঘটনায় করা এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সদ্য সাবেক সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে। মামলায় আসামি হিসেবে ৫০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাত আসামি আরও ১০০০ থেকে ১২০০ জন।

রাজশাহীতে ৫ আগস্টের সংঘর্ষে আলী রায়হানসহ মোট দুজনের মৃত্যু হয়। অপর শিক্ষার্থী সাকিব আনজুমকে হত্যার অভিযোগে ২৩ আগস্ট রাতে বোয়ালিয়া থানায় আরও একটি মামলা হয়। এতেও আসামি করা হয় লিটনসহ ৪২ নেতা–কর্মীকে। অজ্ঞাত আসামির সংখ্যা আরও প্রায় ৩০০ জন।

১৯ আগস্টের পর থেকে রাজশাহীর বিভিন্ন থানায় প্রতিদিনই দুয়েকটি করে মামলা হচ্ছে। সব মামলাতেই গণহারে আসামি করা হয়েছে। প্রতিটি মামলায় অজ্ঞাত আসামিও করা হয়েছে ১০০ থেকে ২০০ জনকে। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ভোট ডাকাতির অভিযোগেও এখন মামলা হতে শুরু করেছে। নগরের বোয়ালিয়া, কর্ণহার ও গোদাগাড়ী থানায় এমন মামলা হয়েছে।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, রাজশাহী মহানগরের বিত্তশালী আওয়ামী লীগ নেতাদের মামলার আসামি না করতে মোটা অংকের টাকারও লেনদেন হচ্ছে। ফলে রাজশাহীর প্রভাবশালী সাবেক একাধিক এমপি ও কোন কোন প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে এখনও মামলা হয়নি। আওয়ামী লীগের মনোনয়নে রাজশাহী সদর আসন থেকে টানা তিনবার এমপি হওয়া বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার নামেও এখনও পর্যন্ত মামলা হয়নি। এনিয়েও সামাজিক মাধ্যমে নানা আলোচনা–সমালোচনা চলছে।

বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মামলার বাদী কে হবেন তা নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন সময় বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করে দলীয় নেতাদের কাছে সমালোচিত হওয়া ব্যক্তিরাও আগবাড়িয়ে মামলা করতে যাচ্ছেন। দলের সুনজরে আসতে রাজশাহী মহানগর মহিলা দলের বহিষ্কৃত যুগ্ম সম্পাদক সামসুন নাহারও ২০১৮ সালের ঘটনায় সম্প্রতি মামলা করেছেন। সামসুন নাহার রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর ছিলেন। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ২০২৩ সালে তাকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সামসুন নাহার এখনও দলীয় পরিচয় উল্লেখ করেছেন।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে রাজশাহী সদর আসনের বিএনপির প্রার্থী ও দলের চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনুকে ভোট দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে বোয়ালিয়া থানায় তিনি মামলাটি করেছেন। এ মামলাতেও গণআসামি করা হয়েছে। এছাড়া ওই সময় মিনুর বাড়ি ও নির্বাচনি ক্যাম্পে হামলার অভিযোগে আরও দুটি মামলা করেছেন তার বাড়ির কেয়ারটেকার।

ইতোমধ্যে বিভিন্ন মামলায় আসামি হয়েছেন রাজশাহী–১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী–৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী–৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ ও রাজশাহী–৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

রাজশাহী সদর আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুর রহমান, রাজশাহী–৩ আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ এবং রাজশাহী–৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সদ্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবদুল ওয়াদুদ দারার বিরুদ্ধে কোন মামলা হয়নি।

ওমর ফারুক চৌধুরী ও আয়েন উদ্দিনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখল করে প্রকাশ্যে ভোটডাকাতির অভিযোগ আনা হয়েছে। সাড়ে ৫ বছর আগের ঘটনার এসব মামলায় গণআসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া কারও ওপর অতীতে ছোটখাট কোন রাগ থাকলে তাকেও আসামি করা হচ্ছে।

রাজশাহীর বাঘা থানায় মামলা করতে একটি এজাহার দিয়েছেন কিশোরপুর গ্রামের জাহিদ হাসান নামের এক ব্যক্তি। এই এজাহারে ১৪ নম্বর আসামি হিসেবে বাঘা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান ও ১৫ নম্বর আসামি হিসেবে তাঁর ছেলে মো. স্বদেশের নাম লেখা হয়েছে। মামলায় ১৩০ ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনার তারিখ বলা হয়েছে ২৫ আগস্ট। নুরুজ্জামান দৈনিক ইত্তেফাকের বাঘা উপজেলা প্রতিনিধি। আর তার ছেলে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।

নুরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রকাশিত সংবাদকে কেন্দ্র করে তার ওপর কেউ বিরাগভাজন থাকতে পারে। এ জন্য ছেলেসহ তাকেও আসামি করতে এজাহারে নাম লেখা হয়েছে।

সাংবাদিক নুরুজ্জামান অভিযোগ করেন, ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর এলাকায় ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দেওয়ার মতো কেউ নেই। তারপরও গায়েবি মামলা করতে এরকম এজাহার দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় কিছু অতিউৎসাহী লোকজন এসব মামলা করছে। আবার যাদের বাদী করা হচ্ছে, তারা নিজেরাও মামলার বিবরণ ও আসামি সম্পর্কে কিছুই জানে না। 

গায়েবি অভিযোগ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চেয়ে সোমবার বিকালে অভিযোগকারী জাহিদ হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কথা বলতে রাজি হননি। সন্ধ্যার পর তিনি যোগাযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন।

বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সিদ্দিক বলেন, ‘মামলাটা অভিযোগ আকারে আছে। এখনও মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়নি। তবে মামলা হয়ে যাবে।’

ওসি বলেন, ‘আসামি কে হবেন না হবেন তা বাদীর ওপরেই নির্ভর কছে। মামলা হওয়ার পরে তদন্তের সময় আমরা বাকিটা দেখব।’

আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগের রাজশাহীর এক নেতা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পুলিশ কোনো যাচাই–বাছাই করছে না। যাদের নামে ইচ্ছে হচ্ছে মামলা করা হচ্ছে। কয়েক বছর আগের ঘটনা সামনে এনে গায়েবি মামলাও করা হচ্ছে। আবার আওয়ামী লীগের বিত্তশালী নেতাদের সঙ্গে তৃতীয়পক্ষ যোগাযোগ করছে মামলা থেকে বাঁচানোর কথা বলে। তারা বিএনপি নেতাদের কথা বলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। আসলেই এ টাকা বিএনপির নেতারা নিচ্ছেন কি না তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। তবে দুয়েকজন বিত্তশালী আওয়ামী লীগ নেতার নামে এখনও কোন মামলা হয়নি।’

একাধিক মামলার আসামি হয়ে যাওয়ার ভয়ে ওই নেতা নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি।

জেলা জজ আদালতের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী পারভেজ তৌফিক জাহেদী বলেন, ‘কোনো অপরাধের বিচার পাওয়াটাই মামলার মূল্য উদ্দেশ্য। এখানে কাউকে হয়রানি করার জন্য গণআসামি করা ঠিক হবে না। তবে মামলা করাই তো শেষ কথা নয়। তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত করবেন। তখন যেন মামলাগুলোর সতর্কতার সাথে তদন্ত করা হয়। প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধেই যেন অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।’

গণআসামি করার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, ‘আমার নামে এখন ৬৭টা মামলা, সবগুলো মামলাই গায়েবি। আমাদের অন্য নেতাকর্মীদের নামেও অসংখ্য গায়েবি মামলা আছে। তারপরেও আমরা গায়েবি মামলা সমর্থন করি না। কেউ হয়তো অতিউৎসাহী হয়ে এ ধরনের মামলা করছেন। এর দায় মামলার বাদীকেই নিতে হবে। আমরা বলছি, কাউকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে যেন মামলার আসামি করা না হয়।’

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এখন যে মামলা হচ্ছে সেগুলো বাদীর ইচ্ছার ওপরেই নির্ভর করছে। বাদী আসামিদের নাম দিচ্ছেন, সে অনুযায়ী মামলা হচ্ছে। তবে তদন্তের সময় পুলিশ দেখবে আসলেই কারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। যাদের ব্যাপারে প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদেরই অভিযোগপত্রে অভিযুক্ত করা হবে। অন্যদের অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সীতাকুণ্ডে বাসচাপায় পথচারী নারী নিহত

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম), প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বেপরোয়া গতির বাসের চাপায় আফরোজা বেগম (৫৫) নামের এক নারী নিহত হয়েছেন।

আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পৌরসদরস্থ পন্থিছিলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত পথচারী নারী চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী হাজী ক্যাম্প এলাকার নজরুল ইসলামের স্ত্রী।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে হাইওয়ে পুলিশ জানায়, ঢাকামুখী সৌদিয়া পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস মহাসড়কের পন্থিছিলা এলাকা অতিক্রমকালে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ওই নারীকে চাপা দেয়। এতে বাসচাপায় পিষ্ট হয়ে ওই নারী গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কুমিরা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) জাকির রাব্বানী। তিনি জানান, আইনগত প্রক্রিয়া শেষে নিহত ওই নারীর মরদেহ তাঁর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে বিএনপির প্রার্থী এরশাদ শঙ্কামুক্ত, গুলিবিদ্ধ একজনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী ও চান্দগাঁও) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ গণসংযোগের সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। একই সময়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে সরওয়ার বাবলা নামে আরেকজন নিহত হয়েছেন। শান্ত নামে এক বিএনপি কর্মীও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে।

হতাহত তিনজনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম নগরের অক্সিজেন এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতালের এজিএম রাম প্রসাদ। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, তিনজনের মধ্যে সরওয়ার বাবলা মারা গেছেন। বাকি দুইজনের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত।

এদিকে ঘটনাস্থলে গুলিতে লুটিয়ে পড়া সরওয়ার বাবলার একটি ছবি আজকের পত্রিকার সংগ্রহে এসেছে। বুধবার (০৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পাঁচলাইশের হামজার বাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় বিএনপি নেতারা জানান, মনোনয়ন পেয়ে হামজারবাগ এলাকায় গণসংযোগ করছিলেন এরশাদ উল্লাহ। সময়টা ছিল মাগরিবের নামাজের পরপরই। ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরশাদ উল্লাহর গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে নেতাকর্মীরা হাসপাতালে ভিড় করে।

ঘটনাস্থলে এরশাদ উল্লাহর কাছাকাছি থাকা বিএনপি নেতা মো. ইসমাইল বলেন, ‘আমি এরশাদ ভাইয়ের খুব কাছেই ছিলাম। কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই সন্ত্রাসীরা গুলি ছোড়া শুরু করে। হুড়োহুড়িতে আমি নিজেও পায়ে আঘাত পেয়েছি।’ বর্তমানে তিনিও এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানান ইসমাইল।

বিষয়টি জানতে বায়েজিদ থানারি ওসিকে বারবার ফোন করা হলেও পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাছ ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পরিবারের দাবি হত্যাকাণ্ড

ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি 
ঘটনাস্থলে লোকজনের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে লোকজনের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় মুজিবুর রহমান শেখ (৪৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে মোড়লডাঙ্গা এলাকার একটি বাগান থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। পরিবারের দাবি, মুজিবুর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।

মুজিবুর উপজেলার নলধা-মৌভোগ ইউনিয়নের মোড়লডাঙ্গা গ্রামের গোলাপ শেখের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, আজ সকালে মোড়লডাঙ্গায় নিজাম শেখের বাগানের একটি মেহগনিগাছে মুজিবুরের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি অবহিত করেন। খবর পেয়ে ফকিরহাট মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে লাশ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের কপালে একটি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে পুলিশ জানায়।

মৃতের ভাই জিল্লাল শেখ ও হাবি শেখের দাবি, তাঁদের ভাইকে কেউ পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রেখেছে। তাঁরা জানান, গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে কে বা কারা মুজিবুরকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। সকালে তাঁর লাশ পাওয়া গেছে।

ফকিরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজজাক মীর বলেন, ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এলে সঠিকভাবে জানা যাবে আসলে কীভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে ইয়াছিনের সমর্থকদের বিক্ষোভ, অগ্রভাগে নারীরা

কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লায় নারীদের নেতৃত্বে মিছিল করেন মনোনয়ন না পাওয়া বিএনপি নেতা আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সমর্থকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লায় নারীদের নেতৃত্বে মিছিল করেন মনোনয়ন না পাওয়া বিএনপি নেতা আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সমর্থকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা-৬ (সদর, সদর দক্ষিণ ও সিটি করপোরেশন) আসনে মনোনয়ন না পাওয়া বিএনপি নেতা হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সমর্থকেরা নারীদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ-মিছিল করেছেন। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর ধর্মসাগরপাড়ে অস্থায়ী দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিলটি শুরু হয়।

নগরীর বিভিন্ন প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পূবালী চত্বরে মিছিল শেষ হয়। পরে সেখানে অবস্থান কর্মসূচি করা হয়।

বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইয়াছিনকে কুমিল্লা-৬ আসনে দলের প্রার্থী করার দাবি তুলেছেন তাঁর অনুসারীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজকের মিছিলে প্রায় ৮ হাজার নারী অংশ নিয়েছেন। আন্দোলনকারীরা ‘ইয়াছিন ভাইয়ের মনোনয়ন ফেরত চাই’, ‘৮-এর প্রার্থী ৬-এ কেন—মানিনা, মানব না’, ‘আমি কে, তুমি কে, ইয়াছিন ভাই, ইয়াছিন ভাই’, ‘জেল-জুলুম, কারাগারে ইয়াছিন ভাই’ স্লোগান দেন।

ইয়াছিনের সমর্থকেরা বলছেন, ইয়াছিন দীর্ঘদিন ধরে দলের তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। সাবেক ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে তিনি নেতা-কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর সহায়তায় নেতা-কর্মীরা আইনি সহায়তা, চিকিৎসা খরচ, পারিবারিক সহায়তা, ঈদ ও অন্যান্য বিশেষ অনুষ্ঠানে সহযোগিতা পেয়েছেন। তিনি দলের মনোনয়ন না পাওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ-হতাশা তৈরি হয়েছে।

অবস্থান কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীরা দাবি করেন, রাজনৈতিক অবদান ও তৃণমূলের সঙ্গে সংযুক্তি বিবেচনা করে এই আসনে বিএনপির প্রার্থী বদলে হাজি ইয়াছিনকে মনোনয়ন দেওয়া হোক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত