Ajker Patrika

ভাড়া ব্যাপার না সমাবেশে যেতেই হবে

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
ভাড়া ব্যাপার না সমাবেশে যেতেই হবে

ভাড়া কোনো ব্যাপারই না, যেকোনো মূল্যে বিএনপির সমাবেশে যেতেই হবে-কথাগুলো বলছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মো. আশরাফুল ইসলাম। বয়স প্রায় ষাটের কাছাকাছি। আজ শুক্রবার সকালে শিবগঞ্জ থেকে রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের যোগ দিতে বাড়ি থেকে বের হয়েছেন তিনি। ছোট ছোট যানবাহনে চেপে দুপুরে পৌঁছেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিশ্বরোড মোড়ে। সেখানেই কথা হয় তাঁর সঙ্গে।

এ সময় তিনি বলেন, ‘পারিবারিকভাবেই আমরা বিএনপির সমর্থক। তবে পদ পদবিতে কেউ নাই। মনে প্রাণে ধারণ করি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে। তাঁকে ভালোবেসেই বিএনপি করা। বিএনপির সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতেই পরিকল্পিতভাবে সরকারের পক্ষ থেকে ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। বাসে শিবগঞ্জ থেকে রাজশাহী পৌঁছতে ২২০ টাকা ভাড়া লাগে। কিন্তু বাস বন্ধ থাকায় অটো রিকশা, সিএনজি ও মাহিন্দ্রাতে ভেঙে ভেঙে রাজশাহী যেতে হচ্ছে। তাতে খরচ হচ্ছে কয়েক গুন বেশি। ভাড়া কোনো ব্যাপারই না, যেকোনো মূল্যে বিএনপির সমাবেশে যেতেই হবে’।

আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে একই মাহিন্দ্রাতে রাজশাহীতে সমাবেশে যাচ্ছিলেন সাইফুল ইসলাম নামে বিএনপির আরেক সমর্থক।
সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কৃষি কাজ করে সংসার চালাই। মিটিং মিছিলে কোনো দিন যাইনি। কিন্তু ১৪ বছরে সব জিনিস পত্রের দাম বাড়ছে। সবগুলোই সাধারণ মানুষের সাধ্যের বাইরে চলে গেছে। তাই বাধ্য হচ্ছি সরকার হটাও আন্দোলনে যেতে। আগে থেকেই জানতাম সমাবেশে সরকার যেতে দেবে না। বাস ধর্মঘট হতে পারে। সে চিন্তা থেকেই রাজশাহী যাওয়ার জন্য দুই হাজার টাকা জমিয়ে রেখেছিলাম। সে টাকা খরচ করেই রাজশাহী যাচ্ছি। টাকা খরচ হোক। কিন্তু খালেদা জিয়াকে মুক্ত করলে সব জিনসপত্রের দাম স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’

ধর্মঘট থাকায় আজ ভোর থেকেই জেলার বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের কেউ কেউ ছোট যানবাহনে, কেউ কেউ ট্রেনে সমাবেশে যেতে বের হন।

বাস না পেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ছোট যানবাহনেই রাজশাহীর সমাবেশে যাচ্ছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। ছবিটি আজ দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিশ্বরোড মোড় থেকে তোলানাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি সাইরুল মোড়ল বলেন, ‘নাচোল থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশনে আসতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে অটোরিকশায় এসেছি। বাস বন্ধ থাকায় এখন ট্রেনে করে রাজশাহী যাচ্ছি। আগামীকাল সমাবেশ, তবুও আজকেই (শুক্রবার) চলে যাচ্ছি। কারণ আমাদের আশঙ্কা কালকে সবকিছুই বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার ওবাইদুল ইসলাম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সকালের ট্রেনে তেমন কোনো ভিড় দেখা যায়নি। অন্যান্য দিনের মতোই স্বাভাবিক রয়েছে, যাত্রীর তেমন কোনো বাড়তি চাপ নেই। সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের কমিউটার মেইল ট্রেনে ৪২০ জন যাত্রী যেতে পারে। প্রতিদিনের মতোই শুক্রবার পূর্ণ যাত্রী নিয়ে নির্ধারিত সময়েই ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে গেছে।’ 

এ নিয়ে জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, ‘সমাবেশে নেতা-কর্মীরা যেন না যেতে পারেন, সে জন্য তিন দিন আগে থেকে ধর্মঘট দেওয়া হয়েছে। রাজশাহীতে দেশের সর্বশেষ গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। আগের গণসমাবেশগুলো থেকে আমাদের অভিজ্ঞতার আলোকে রাজশাহীর সমাবেশ সফল করতে নেতা-কর্মীদের নানারকম নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী, নেতা-কর্মীরা বৃহস্পতিবার থেকেই সমাবেশে পৌঁছাতে শুরু করেছেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় সেখানে নেতা-কর্মীদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।’ 

চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে পরিবহন ধর্মঘট। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকেই এই ধর্মঘট পালন করছে সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক পরিষদ। তাই গতকাল থেকেই আন্তজেলা বা দূরপাল্লার কোনো যানবাহন এই জেলা থেকে ছেড়ে যায়নি বা প্রবেশ করেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষার্থীদের ‘কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে’ সপরিবারে পালিয়েছেন বিএসবির বাশার

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ: পাকিস্তানে নিহত বেড়ে ২৬, ভারতে ১০

সীমান্তে সাদা পতাকা উড়িয়ে আত্মসমর্পণের ইঙ্গিত দিয়েছে ভারত: পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী

পাকিস্তানে হামলায় ‘লোইটারিং মিউনিশনস’ ব্যবহারের দাবি ভারতের, এটি কীভাবে কাজ করে

এনসিপি নেতা সারওয়ার তুষারের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগের নিষ্পত্তি হয়নি: শহিদুল আলম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত