ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
দেশব্যাপী আলোচনায় আসা পাবনার ঈশ্বরদীর রেলওয়ের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) শফিকুল ইসলামের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের পর তিনি সেদিন কী ঘটেছিল সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।
আজ রোববার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে পাকশীতে তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হন শফিকুল। এর আগে তিনি পাকশীর বিভাগীয় সদর দপ্তরে সহকারী পরিবহন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সেখানে সাংবাদিকদের কাছে সেদিন যা ঘটেছিল তার বর্ণনা দেন।
ওই দিন ও পরবর্তী ঘটনার বর্ণনা দিয়ে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার রাতে দায়িত্ব পালনের জন্য আমি স্টেশনে আসি। ঈশ্বরদীর ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে গাড়ি (ট্রেন) আসার পর আমাকে জানানো হয় সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (এসিও) মো. নুরুল আলম স্যারের অনুরোধে তিনজন যাত্রী ট্রেনে উঠেছেন। তাঁরা এসি কেবিন যেটা ফাঁকা আছে সেখানে উঠেছেন। তখন আমি বললাম যে, তাহলে কী এসিও স্যারকে ফোন করে জেনে নেব যে তাঁরা কীভাবে যাবে? যেহেতু তাঁরা বলেছেন বিনা টিকিটের যাত্রী। আমি তখন এসিও স্যারকে ফোন দিই, তখন স্যার বলেন ‘হ্যাঁ রেলমন্ত্রীর আত্মীয় আছে তিনজন, ওরা এসি রুমের কেবিনে যাবে।’
শফিকুল ইসলাম বলেন ‘আমি তখন বলেছি, স্যার আসলে তাদের তো কোনো টিকিট-মিকিট নাই, তাহলে কী করি? তখন স্যার বলেন, ‘‘তাহলে তাঁদের সাধারণ মানের যে টিকিট আছে, ওটা করে দিয়েন।’’ তারপর যাত্রীদের সঙ্গে আমার কোনো সাক্ষাৎ বা কোনো কিছুই হয়নি। ট্রেনের গার্ডরাও আমাকে কোনো ইনফরমেশন দেননি যে, তারা ফ্রি যাবেন কিনা বা এ রকম কিছু। হয়তো স্যারের সঙ্গে তাদের (গার্ড) কথা হতে পারে। কিন্তু আমার সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। তারপর যথারীতি গাড়ি (ট্রেন) চালু হলে আমি চেকিং শুরু করি।’
টিটিই শফিকুল বলেন, ‘ট্রেনে চেকিং শুরুর সময় ট্রেনের অপারেটরকে জিজ্ঞেস করলাম কোন কেবিনে তাঁরা (মন্ত্রীর আত্মীয়) আছেন? আমাকে দেখানোর পর আমি সেখানে যাই। আমি তাঁদের (যাত্রীদের) সম্মানের সঙ্গে বললাম, আপনাদের তো মনে হয় কোনো টিকিট-মিকিট নাই। আমাকে এসিও স্যার যেহেতু বলেছেন, তাই আপনাদের নরমাল রুমের যে ভাড়া সেটা দিন, আমি টিকিটের ব্যবস্থা করে দিই। তখন তাঁরা বলেন, ‘‘কত টাকা ভাড়া?’’ আমি বললাম, ‘‘তিনজনের জনপ্রতি ৩৫০ টাকা হারে ১ হাজার ৫০ টাকা। এ সময় তারা ১ হাজার টাকার একটা নোট এবং ৫০ টাকার একটা নোট বের করে দেন। আমি তাদের ভাড়া আদায়ের রশিদ দিয়ে চলে গেছি। এ ছাড়া তাদের সঙ্গে আমার আর কোনো কথা-বার্তা হয়নি।’
মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় পাওয়ার পরও তাদের জরিমানা করেছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে টিটিই শফিকুল বলেন, ‘হ্যাঁ, বাড়তি ভাড়ার টিকিট ছাড়া আমি যেহেতু টিকিট ইস্যু করতে পারি না, তাই তাঁদের জরিমানাসহ টিকিট দিয়েছি। ঈশ্বরদী থেকে ঢাকার কাউন্টার ভাড়া ২৯৫ টাকা, জরিমানাসহ জনপ্রতি ৩৫০ টাকা করে ১ হাজার ৫০ টাকা নিয়েছি।’
বাগ্বিতণ্ডার ব্যাপারে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার সঙ্গে তাঁদের এ রকম কোনো ঘটনাই ঘটেনি। তাঁরা কী কারণে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেন, আমি সেটা জানি না, বলতেও পারব না।’
মাদকাসক্তের অভিযোগের ব্যাপারে টিটিই শফিকুল বলেন, ‘আমি মাদক সেবন তো দূরের কথা, আমি বিড়ি-সিগারেটও খাই না। এমনকি চা স্টলে চা-ও খাই না। চাকরিজীবনে এটি আমার প্রথম সাময়িক বরখাস্তের ঘটনা। আমি যদি মাদকাসক্ত হতাম, তাহলে এত দিন এভাবে সুনামের সঙ্গে চাকরি করতে পারতাম না।’
শফিকুল দাবি করে বলেন, ‘চাকরির প্রথম দিনই ৭৮ হাজার ৪৩৬ টাকা রাজস্ব জমা দিয়েছি। আমি মানসিক বিকারগ্রস্ত নই, অথচ আমাকে এমন অপবাদ দেওয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ঢাকাগামী আন্তনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে বিনা টিকিটে এসি রুমে ওঠেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের আত্মীয় পরিচয়ের তিন যাত্রী। মাঝপথে তাঁদের বিনা টিকিটে রেলভ্রমণের দায়ে জরিমানা করে সাময়িক বরখাস্ত হন টিটিই শফিকুল ইসলাম। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে দেশব্যাপী সমালোচনার শুরু হয়।
এই সম্পর্কিত পড়ুন:
দেশব্যাপী আলোচনায় আসা পাবনার ঈশ্বরদীর রেলওয়ের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) শফিকুল ইসলামের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের পর তিনি সেদিন কী ঘটেছিল সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।
আজ রোববার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে পাকশীতে তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হন শফিকুল। এর আগে তিনি পাকশীর বিভাগীয় সদর দপ্তরে সহকারী পরিবহন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সেখানে সাংবাদিকদের কাছে সেদিন যা ঘটেছিল তার বর্ণনা দেন।
ওই দিন ও পরবর্তী ঘটনার বর্ণনা দিয়ে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার রাতে দায়িত্ব পালনের জন্য আমি স্টেশনে আসি। ঈশ্বরদীর ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে গাড়ি (ট্রেন) আসার পর আমাকে জানানো হয় সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (এসিও) মো. নুরুল আলম স্যারের অনুরোধে তিনজন যাত্রী ট্রেনে উঠেছেন। তাঁরা এসি কেবিন যেটা ফাঁকা আছে সেখানে উঠেছেন। তখন আমি বললাম যে, তাহলে কী এসিও স্যারকে ফোন করে জেনে নেব যে তাঁরা কীভাবে যাবে? যেহেতু তাঁরা বলেছেন বিনা টিকিটের যাত্রী। আমি তখন এসিও স্যারকে ফোন দিই, তখন স্যার বলেন ‘হ্যাঁ রেলমন্ত্রীর আত্মীয় আছে তিনজন, ওরা এসি রুমের কেবিনে যাবে।’
শফিকুল ইসলাম বলেন ‘আমি তখন বলেছি, স্যার আসলে তাদের তো কোনো টিকিট-মিকিট নাই, তাহলে কী করি? তখন স্যার বলেন, ‘‘তাহলে তাঁদের সাধারণ মানের যে টিকিট আছে, ওটা করে দিয়েন।’’ তারপর যাত্রীদের সঙ্গে আমার কোনো সাক্ষাৎ বা কোনো কিছুই হয়নি। ট্রেনের গার্ডরাও আমাকে কোনো ইনফরমেশন দেননি যে, তারা ফ্রি যাবেন কিনা বা এ রকম কিছু। হয়তো স্যারের সঙ্গে তাদের (গার্ড) কথা হতে পারে। কিন্তু আমার সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। তারপর যথারীতি গাড়ি (ট্রেন) চালু হলে আমি চেকিং শুরু করি।’
টিটিই শফিকুল বলেন, ‘ট্রেনে চেকিং শুরুর সময় ট্রেনের অপারেটরকে জিজ্ঞেস করলাম কোন কেবিনে তাঁরা (মন্ত্রীর আত্মীয়) আছেন? আমাকে দেখানোর পর আমি সেখানে যাই। আমি তাঁদের (যাত্রীদের) সম্মানের সঙ্গে বললাম, আপনাদের তো মনে হয় কোনো টিকিট-মিকিট নাই। আমাকে এসিও স্যার যেহেতু বলেছেন, তাই আপনাদের নরমাল রুমের যে ভাড়া সেটা দিন, আমি টিকিটের ব্যবস্থা করে দিই। তখন তাঁরা বলেন, ‘‘কত টাকা ভাড়া?’’ আমি বললাম, ‘‘তিনজনের জনপ্রতি ৩৫০ টাকা হারে ১ হাজার ৫০ টাকা। এ সময় তারা ১ হাজার টাকার একটা নোট এবং ৫০ টাকার একটা নোট বের করে দেন। আমি তাদের ভাড়া আদায়ের রশিদ দিয়ে চলে গেছি। এ ছাড়া তাদের সঙ্গে আমার আর কোনো কথা-বার্তা হয়নি।’
মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় পাওয়ার পরও তাদের জরিমানা করেছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে টিটিই শফিকুল বলেন, ‘হ্যাঁ, বাড়তি ভাড়ার টিকিট ছাড়া আমি যেহেতু টিকিট ইস্যু করতে পারি না, তাই তাঁদের জরিমানাসহ টিকিট দিয়েছি। ঈশ্বরদী থেকে ঢাকার কাউন্টার ভাড়া ২৯৫ টাকা, জরিমানাসহ জনপ্রতি ৩৫০ টাকা করে ১ হাজার ৫০ টাকা নিয়েছি।’
বাগ্বিতণ্ডার ব্যাপারে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার সঙ্গে তাঁদের এ রকম কোনো ঘটনাই ঘটেনি। তাঁরা কী কারণে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেন, আমি সেটা জানি না, বলতেও পারব না।’
মাদকাসক্তের অভিযোগের ব্যাপারে টিটিই শফিকুল বলেন, ‘আমি মাদক সেবন তো দূরের কথা, আমি বিড়ি-সিগারেটও খাই না। এমনকি চা স্টলে চা-ও খাই না। চাকরিজীবনে এটি আমার প্রথম সাময়িক বরখাস্তের ঘটনা। আমি যদি মাদকাসক্ত হতাম, তাহলে এত দিন এভাবে সুনামের সঙ্গে চাকরি করতে পারতাম না।’
শফিকুল দাবি করে বলেন, ‘চাকরির প্রথম দিনই ৭৮ হাজার ৪৩৬ টাকা রাজস্ব জমা দিয়েছি। আমি মানসিক বিকারগ্রস্ত নই, অথচ আমাকে এমন অপবাদ দেওয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ঢাকাগামী আন্তনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে বিনা টিকিটে এসি রুমে ওঠেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের আত্মীয় পরিচয়ের তিন যাত্রী। মাঝপথে তাঁদের বিনা টিকিটে রেলভ্রমণের দায়ে জরিমানা করে সাময়িক বরখাস্ত হন টিটিই শফিকুল ইসলাম। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে দেশব্যাপী সমালোচনার শুরু হয়।
এই সম্পর্কিত পড়ুন:
সূর্যমুখীর এই মাছঘাট তিন দশকের পুরোনো। দীর্ঘদিন ধরে এখানকার ব্যবসায়ী ও জেলেরা শান্তিপূর্ণভাবে কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। হঠাৎ একটি মহল ঘাটের ঠিক পাশে খালের দক্ষিণ পাড়ে নতুন মাছঘাট তৈরি করছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত বিরোধ ও সংঘাতের সূত্রপাত করতে পারে।
১ মিনিট আগেবগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় বিএনপির দলীয় কার্যালয়সহ বগুড়া-নাটোর মহাসড়ক এবং বগুড়া–ঢাকা মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো আওয়ামী লীগের পোস্টারে ছেয়ে গেছে।
২১ মিনিট আগেঈদের আগের রাতে সিলেটের রিকাবীবাজারে একটি কনসার্টে যাওয়ার আগে তাঁকে অচেতন করে ধর্ষণ করা হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা সেই ঘটনা ভিডিও করে নিয়মিত ব্ল্যাকমেল করছিলেন বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন তিনি
২৬ মিনিট আগেহাবিবা কলাপাড়া উপজেলার মঙ্গলসুখ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বর্তমানে বাংলাদেশ নৌবাহিনী স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পটুয়াখালীতে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে। উম্মে হাবিবা সুন্নাহর বাবা আহসান হাবিব চুন্নু বরিশালে ব্র্যাকের এলাকা ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত এবং মা রাবেয়া সুলতানা রিপা একজন...
৩৭ মিনিট আগে