Ajker Patrika

যে বাজারে ৪৭ কেজিতে মণ

রিমন রহমান
যে বাজারে ৪৭ কেজিতে মণ

রাজশাহী সদর (রাজশাহী): সাধারণ ক্রেতারা যখন এক মণ আম কেনেন, তখন ৪০ কেজিই পান। কিন্তু চাষিরা যখন আড়তে বিক্রি করেন, তখন দিতে হয় ৪৭ কেজি। রাজশাহীতে এই চর্চা বছরের পর বছর ধরেই চলছে। বাড়তি এই সাত কেজি আম ‘ঢলন’ হিসেবে নেন ব্যবসায়ীরা। তবে এ বছর কথা ছিল ৪০ কেজিতেই মণ হবে। ব্যবসায়ীরা চাষিদের কাছ থেকে বাড়তি আম নিতে পারবেন না। কিন্তু বাস্তবে সে রকম দেখা যাচ্ছে না। চাষিদের এখনো ঢলন দিতে হচ্ছে। ঢলনের কারণে চাষিরা ঠকছেন। কিন্তু তাঁরা অসহায়। যাঁরা ঢলনসহ আম দিতে রাজি হচ্ছেন না, ব্যবসায়ীরা তাঁদের আম কিনছেন ‘ঠিকা’ হিসেবে। অর্থাৎ ক্যারেটে সাজানো আম কত কেজি হতে পারে, এভাবে চোখের আন্দাজ করে দাম ঠিক করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আমের ওজনই করা হচ্ছে না।

রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের হাট পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরে। আম ছাড়াও এখানে সারা বছর ডাল, পেঁয়াজ, ভুট্টাসহ অন্যান্য কৃষিপণ্যের আড়ত রয়েছে। এসব পণ্যের ক্ষেত্রেও ঢলন প্রথা চলে আসছে। এই ঢলন প্রথা বিলুপ্ত করতে গত বছরের ২৩ অক্টোবর বানেশ্বর বাজার বণিক সমিতির কার্যালয়ে একটি সভা হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য ডা. মুনসুর রহমান। ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম হিরা বাচ্চু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুমানা আফরোজ ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামসুন নাহার ভূঁইয়া। এতে সভাপতিত্ব করেন বানেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও বণিক সমিতির সহসভাপতি গাজী সুলতান। সভায় স্থানীয় চাষি ও ব্যবসায়ীরাও উপস্থিত ছিলেন।

ওই সভায় চাষিরা বলেন, প্রায় ৩০ বছর ধরে তাঁদের এক মণে অতিরিক্ত কৃষিপণ্য দিতে হয়। দিতে না চাইলে কৃষিপণ্য কেনা হয় না। চাষিরা এই ঢলন প্রথা বাতিলের দাবি জানান। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, এখন থেকে সব পণ্যের এক মণ হবে ৪০ কেজিতে। এর বেশি নেওয়া যাবে না। আমের কারবার শুরু হওয়ার পর গত ২১ মে ইউএনও নূরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ ৪০ কেজিতে মণ ধরেই চাষির কাছ থেকে আম কেনার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি নির্দেশনা জারি করেন। ওজনের সময় এক মণে ৪০ কেজির বেশি নিলে শাস্তিরও ঘোষণা দেন ইউএনও। ওই দিন বাজারের ব্যবসায়ীদের জন্য ওজন ও পরিমাপ মানদণ্ড আইন-২০১৮ অনুসারে বেশ কিছু নির্দেশনাও দিয়েছিলেন।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কোনো লেনদেন বা মালামাল সরবরাহের কাজে মেট্রিক পদ্ধতির অনুসরণ ব্যতীত অন্য কোনো পদ্ধতির ওজন বা পরিমাপ ব্যবহার করা যাবে না। কোনো ব্যক্তি যদি ওজন বা পরিমাপ অথবা সংখ্যা মানের মানদণ্ড ছাড়া অন্য কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করলে অনূর্ধ্ব ছয় মাসের কারাদণ্ড অথবা অনূর্ধ্ব ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। এতে আরও বলা হয়, আইন অনুযায়ী মেট্রিক পদ্ধতিতে ৪০ কেজিতে এক মণ। মণে কেনাবেচা হলে ৪০ কেজির বেশি দাবি করা আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ। যদি মণে ৪০ কেজির বেশি ধরে কেনাবেচা করতে হয়, সে ক্ষেত্রে কেজিতে ক্রয়-বিক্রয় করার জন্য বলা হয়। কেজিতে ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রতি কেজির দাম প্রথমে নির্ধারণ করতে হবে। কিন্তু বাস্তবে এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।

গত রোববার (২৩ মে) বিকেলে বানেশ্বর হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটে আমের কেনাবেচা জমে উঠেছে। আড়তদারেরা এক মণের জন্য নিচ্ছেন ৪৭ কেজি আম। তাঁরা যখন স্থানীয় খুচরা বিক্রেতা কিংবা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ব্যবসায়ীদের কাছে আম বিক্রি করছেন, তখন দেওয়া হচ্ছে ৪৬ কেজি। আর বানেশ্বরেই যখন খুচরা বিক্রেতারা সাধারণ ভোক্তাদের কাছে আম বিক্রি করছেন, তখন এক মণে ৪০ কেজিই দেওয়া হচ্ছে। এভাবে ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছেন। আর চাষিরা ঠকছেন।

বানেশ্বর হাটে পুঠিয়া ছাড়াও আশপাশের উপজেলার চাষিরা আম নিয়ে যান। ওই দিন বিকেলে চারঘাটের শলুয়া গ্রামের চাষি শাহীন আলম জানান, তিনি চার ভ্যান আম নিয়ে যান। এর মধ্যে তিন ভ্যান বিক্রি করেছেন। প্রতি মণে তাঁকে সাত কেজি করে ঢলন দিতে হয়েছে। বিকেল পর্যন্ত তাঁর এক ভ্যান আমও বিক্রি হয়নি। এসব আম ঠিকায় কিনতে চেয়েছেন কয়েকজন আড়তদার। কিন্তু দামে না পোষানোয় তিনি বেচেননি।

বানেশ্বরে খুচরা আম বিক্রি করছিলেন বানেশ্বর কাচারিপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা আড়ত থেকেও আম কিনি, আবার চাষিদের কাছ থেকেও কিনি। আড়তে কিনলে মণে ছয় কেজি করে ঢলন পাই। আর চাষিদের কাছ থেকে কিনলে ওজন করি না। চোখের আন্দাজ করে নিই যে, আমগুলো এত কেজি হতে পারে। সেই হিসাব করে ঠিকায় একটা দাম বলে দিই। চাষির পছন্দ হলে দিয়ে দেন, না হলে অন্যজনকে দেখান। এই হাটে যুগের পর যুগ ধরে এভাবেই আম বেচাকেনা চলছে।

পুঠিয়ার তারাপুর গ্রাম থেকে আম আনেন চাষি আবদুল খালেক। তিনি জানান, এ দিন তিনি গুটি এবং গোপালভোগ জাতের আম এনেছিলেন। আড়তে গুটি আম নেয়নি। সেগুলো ঠিকায় খুচরা বিক্রেতার কাছে বিক্রি করেছেন। আর গোপালভোগগুলো বিক্রি করেছেন আড়তে। প্রতি মণ আমে তাঁকে সাত কেজি করে ঢলন দিতে হয়েছে। খালেক বলেন, ‘ঢলন ছাড়া কেউ আম নেবে না। আবার ঠিকায় আম বিক্রি করে লস। এতে সঠিক দাম পাওয়া যায় না। আমরা চাষিরা সবদিকেই ক্ষতির শিকার। আম কেনার সময়ই ব্যবসায়ীরা লাভ করে নিচ্ছে।

প্রশাসনের নির্দেশনা উপেক্ষা করে ঢলন নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বানেশ্বরের আড়তদার ফিরোজ আহমেদ বলেন, আম কাঁচামাল। পচে নষ্ট হয়। তাই আমরা যখন কিনি, তখন ঢলন নিয়ে থাকি সাত কেজি। আবার ব্যবসায়ীদের কাছে পাইকারি বিক্রির সময় আমরাও ছয় কেজি ঢলন দিই। প্রশাসনের নির্দেশনার বিষয়ে জানেন কিনা—এমন প্রশ্নে ফিরোজ বলেন, ‘সেটা তো জানি। কিন্তু প্রশাসন তো ব্যবসা বোঝে না। ঢাকায় যাওয়ার পথে যেসব আম নষ্ট হবে, সেটা কি প্রশাসন দেবে? তখন তো ব্যবসায়ীরাই ক্ষতির শিকার হবে। এই ক্ষতি এড়ানোর জন্যই ঢলন।’

বানেশ্বর বাজার বণিক সমিতির সহসভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গাজী সুলতান বলেন, এক মণে ৪০ কেজির বেশি নেওয়া যাবে না। এটা আড়তদারদের বলা হয়েছে। কেউ যদি বেশি নেয়, সে ক্ষেত্রে চাষিরা ইউএনওকে ফোন করতে পারেন। তিনি এসে মোবাইল কোর্ট বসাবেন।

এ ব্যাপারে পুঠিয়ার ইউএনও নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঢলন না নেওয়া এবং ঠিকায় আম না কেনার জন্য ব্যবসায়ীদের নির্দেশনা দেওয়া আছে। এ ব্যাপারে আমরা প্রতিদিনই হাটে নজরদারি করি। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দেখলে আড়তদারেরা ঢলন নেওয়া বন্ধ করে দেন। তাই হাতেনাতে ধরা যায় না। কোনো চাষিও অভিযোগ করেন না। তবে ঢলন নেওয়া কিংবা ঠিকায় আম কেনার প্রমাণ পাওয়া গেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
জেসমিন আরা রুমা। ছবি: সংগৃহীত
জেসমিন আরা রুমা। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহসভাপতি জেসমিন আরা রুমাকে (২৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা দিকে নগরীর মালগুদাম এলাকার নিজ বাস থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার রুমা নগরীর মালগুদাম এলাকার অবসরপ্রাপ্ত রেল কর্মচারী আবু তাহেলের মেয়ে। তাঁর স্বামী সুলতান মাহমুদ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার বলে জানা গেছে।

আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, জেসমিন আরা রুমা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি। তাঁর বিরুদ্ধে গত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সশস্ত্র হামলার অভিযোগ রয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী মামলায় আদালতের নির্দেশে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নালিতাবাড়ীতে মসজিদে ঢুকে হামলা-ভাঙচুর, গ্রেপ্তার ২

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি 
উমর ফারুক ওরফে ফারুক পাগলা ও ফরহাদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
উমর ফারুক ওরফে ফারুক পাগলা ও ফরহাদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় একটি মসজিদে ঢুকে ইমাম ও মুসল্লিদের ওপর হামলা এবং মসজিদের আসবাব ভাঙচুরের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকালে শেরপুর শহরের নয়ানী বাজার এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি গ্রামের জহিরুল ইসলামের দুই ছেলে উমর ফারুক ওরফে ফারুক পাগলা (৩৫) ও ফরহাদ হোসেন (২৭)।

পুলিশ জানায়, ২ নভেম্বর সন্ধ্যায় উপজেলার বারোমারী বাজার এলাকার চেল্লাখালী নদীর পশ্চিমপাড়ে উত্তর বাতকুচি ফরেস্ট অফিসসংলগ্ন বাইতুল নূর জামে মসজিদে ওই হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

সেদিন ফরহাদ, উমর ফারুক ও রুবেল নামে তিনজন মদ্যপ অবস্থায় মসজিদে ঢুকে ইমাম শফিকুল ইসলামের উদ্দেশে বলেন, ‘আজ থেকে এই মসজিদে আজান দেওয়া যাবে না, আমাদের অনুমতি ছাড়া আর আজান হবে না।’

ইমাম প্রতিবাদ করলে তাঁরা তাঁকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। একপর্যায়ে ইমাম পালিয়ে গেলে হামলাকারীরা মসজিদে ঢুকে মাইক সেট, বৈদ্যুতিক বোর্ড, টিনের বেড়া ও অন্য সামগ্রী ভাঙচুর করেন।

এ সময় মুসল্লি হাবিবুর রহমান ও কাজল মিয়া বাধা দিতে গেলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। পরে গ্রামবাসী আহতদের উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

ঘটনার পর মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আশরাফ আলী বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা করেন।

নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহেল রানা বলেন, ‘মসজিদে ঢুকে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অস্ত্র নিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের ঘোরাফেরা, প্রতিবাদ করায় ছুরিকাঘাতে যুবক খুন

গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুরে যুবক খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে সিগমা রবিকে আজ মঙ্গলবার সকালে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুরে যুবক খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে সিগমা রবিকে আজ মঙ্গলবার সকালে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুর মহানগরীতে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় একজন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে গাছা থানার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কুনিয়া তারগাছ এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

নিহত যুবকের নাম মারুফ (২২)। তিনি মহানগরীর গাছা থানার কুনিয়া তারগাছ এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। আহত যুবকের নাম জামিল (২৪)। তাঁরা পরস্পর বন্ধু।

পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল অভিযুক্ত ব্যক্তিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা হলেন মামলার প্রধান আসামি মো. রবিউল ইসলাম ওরফে সিগমা রবি (২৪) ও ২ নম্বর আসামি মো. সাব্বির হোসেন (১৮)। তাঁরা এলাকায় কিশোর গ্যাং হিসেবে পরিচিত হলেও সবাই তরুণ বয়সী।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে গাছা থানার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কুনিয়া তারগাছ এলাকার আক্তারের বাড়ির সামনে এলাকার চিহ্নিত কিশোর গ্যাং সদস্য রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ আরও চার থেকে পাঁচজন দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করছিল। এ সময় এক দোকানের ক্রেতা জামিল কিশোর গ্যাং সদস্যদের বেপরোয়া আচরণের প্রতিবাদ করলে তাঁর সঙ্গে রবির বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। উভয় পক্ষের বাগ্‌বিতণ্ডা থামাতে জামিলের বন্ধু মারুফ ঘটনাস্থলে যান। এ সময় কিশোর গ্যাং সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওই দুই বন্ধুকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।

স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে তারুন্নেসা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, মারুফ মারা গেছেন। প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দিয়ে জামিলকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

আহত জামিলের বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ ৮-১০ জনের একটি সংঘবদ্ধ কিশোর গ্যাং দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক সেবন, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহত যুবকের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ওসি আরও বলেন, আহত জামিলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে একাধিক টিম মাঠে নেমেছে।

জিএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনার জাহিদুল হাসান আজকের পত্রিকাকে জানান, মারুফ হত্যাকাণ্ডে গাছা থানায় মামলা হয়েছে। এজাহারে মো. রবিউল ইসলাম ওরফে সিগমা রবিকে প্রধান আসামি করা হয়।

জাহিদুল হাসান বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান শনাক্ত করে জিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের একটি টিম পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা থেকে আজ সকালে রবিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর একটি টিম ২ নম্বর আসামি মো. সাব্বির হোসেনকে গাছা থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উল্টোপথে অটোরিকশা, বাসচাপায় চালক ও যাত্রী নিহত

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
ঘটনাস্থল পরিদর্শন পুলিশের। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থল পরিদর্শন পুলিশের। ছবি: আজকের পত্রিকা

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে যাত্রীবাহী বাসের চাপায় অটোরিকশার চালক ও যাত্রী দুজনই নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার দেওহাটা আন্ডারপাসের সামনে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার রশিদ দেওহাটা গ্রামের আব্দুল হামিদ (৬০) ও রানাশাল গ্রামের অটোরিকশাচালক রহিজ সিকদার (৪৬)।

মির্জাপুরের গোড়াই হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহেল সারোয়ার জানান, অটোরিকশাচালক মহাসড়কে উল্টোপথে দেওহাটা আন্ডারপাসের ওপরে ওঠার চেষ্টা করেন। এ সময় ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলগামী যাত্রীবাহী বাস চাপা দিলে এই প্রাণহানি ঘটে। লাশ আইনিপ্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। যাত্রীবাহী বাসটি আটকের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত