Ajker Patrika

রাজশাহীর ১৭ কেন্দ্রে কোনো ভোট বাতিল হয়নি, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দাবি ভোট সুষ্ঠু হয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ২১: ৩৯
রাজশাহীর ১৭ কেন্দ্রে কোনো ভোট বাতিল হয়নি, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দাবি ভোট সুষ্ঠু হয়নি

রাজশাহীতে এবার একটি ভোটও বাতিল হয়নি—এমন কেন্দ্রের সংখ্যা ১৭। জেলার ছয়টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে শুধু রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে একটি ভোটও বাতিল হয়নি এমন ভোটকেন্দ্র নেই। অন্য পাঁচ আসনেই তিন থেকে পাঁচটি করে ভোটকেন্দ্রে একটি ভোটও বাতিল হয়নি। রাজশাহী-১ আসনে সর্বনিম্ন একটি ভোট বাতিল হয়েছে—এ রকম ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা এক। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বলছেন, ভোটকেন্দ্রে প্রিসাইডিং কর্মকর্তারাই রুমের দরজা বন্ধ করে নৌকায় সিল মেরেছেন। আবার কোনো কোনো কেন্দ্রে একটি ভোটও বাতিল না করে নৌকার হিসাবে ধরা হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি তাই এমন হয়েছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রকাশ করা কেন্দ্রভিত্তিক ভোটকেন্দ্রের ফলাফল বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানা গেছে। সবচেয়ে বেশি পাঁচটি ভোটকেন্দ্রে একটিও ভোট বাতিল হয়নি রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে।

সামান্য ব্যবধানে এ আসনে পরাজিত হওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী ওবায়দুর রহমান বলেছেন, প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা ভোটের ফল পাল্টে দিয়েছেন। এ জন্য কোনো কোনো কেন্দ্রে একটি ভোটও বাতিল হয়নি। এক ভোটও বাতিল না হওয়া অবিশ্বাস্য। 

ফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, রাজশাহী-১ আসনে মোট ভোটকেন্দ্র ১৫৮টি। এসব কেন্দ্রে সর্বোচ্চ ১০০টি পর্যন্ত ভোট বাতিল হয়েছে। তবে বিজয়ী নৌকার প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীর নিজ এলাকা তানোরের কিসমত বিল্লি উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ কেন্দ্রে মাত্র একটি ভোট বাতিল হয়েছে। এ কেন্দ্রে মোট ১ হাজার ২১০ জন ভোটার ভোট দেন। গোদাগাড়ীর দিয়াড় মানিকচক নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বাতিল হয়েছে ৭টি ভোট। এ কেন্দ্রে ভোট দেন ২৬১ জন ভোটার। 

রাজশাহী-২ (সদর) আসনের ১১৩টি কেন্দ্রের মধ্যে তিনটি কেন্দ্রের একটি ভোটও বাতিল হয়নি। কেন্দ্রগুলো হচ্ছে হাতেমখাঁ আজিজর রহমান খলিফা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ মিশন একাডেমি ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ৬৩২টি, মসজিদ মিশনে ৭২৯ ও আজিজর রহমান স্কুলে ৪২৭টি ভোট পড়েছে। সদরের অন্য সব কেন্দ্রে কিছু না কিছু ভোট বাতিল হয়েছে। এ আসনে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুর রহমান বাদশা।

রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে মোট কেন্দ্র ছিল ১২৯টি। এর মধ্যে তিনটি কেন্দ্রে একটি ভোটও বাতিল হয়নি। কেন্দ্র তিনটি হলো—জাহানাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরুষ কেন্দ্র, মাটিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বসন্তপুর উচ্চবিদ্যালয়। মাটিকাটায় ভোট পড়েছে ১ হাজার ১৭৫টি। বসন্তপুরে ভোট পড়েছে ১ হাজার ৬৯৯ টি। জাহানাবাদে ভোট পড়েছে ১ হাজার ২৭২টি। এখানে নৌকার প্রার্থী আসাদুজ্জামান আসাদ একাই পেয়েছেন ১ হাজার ১৯২টি ভোট। বসন্তপুর কেন্দ্রের ১ হাজার ৬৯৯ ভোটের মধ্যে নৌকা পেয়েছে ১ হাজার ৫৭৮টি। এ ছাড়া মাটিকাটার ১ হাজার ১৭৫টি ভোটের মধ্যে নৌকা পেয়েছে ১ হাজার ৮০টি। এ আসনে বিপুল ভোটে আসাদ বিজয়ী হয়েছেন। 

রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনেও শূন্য বাতিল ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা তিন। এখানে মোট ভোটকেন্দ্র ছিল ১২৩টি। এর মধ্যে উত্তর একডালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরুষ কেন্দ্র, মীরপুর উচ্চবিদ্যালয় ও গোপালপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার নারী কেন্দ্রে একটি ভোটও বাতিল হয়নি। বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে ৪ থেকে ১০টি করে ভোট বাতিল হয়েছে এখানে। উত্তর একডালায় ১ হাজার ৪১৪ ভোটের মধ্যে ১ হাজার ৫৭টি, মীরপুরে ১ হাজার ৭৬১ ভোটের মধ্যে ১ হাজার ৬৪টি এবং গোপালপুরে ৯৮৩টি ভোটের মধ্যে ৫৬৮টি নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ পেয়েছেন। তিনি এই নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন। 

রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে মোট ভোটকেন্দ্র ছিল ১৩৩টি। এর মধ্যে পাঁচটি ভোটকেন্দ্রের কোনো ভোট বাতিল হয়নি। কেন্দ্রগুলো হলো—গোলাবাড়ী উচ্চবিদ্যালয়, হোজা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আনুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দাওকান্দি উচ্চবিদ্যালয় ও তেঁতুলিয়া উচ্চবিদ্যালয়। 

এর মধ্যে তেঁতুলিয়ার ৮৪১ ভোটের মধ্যে ৪৮৭টি, দাওকান্দির ১ হাজার ৬২৩ ভোটের মধ্যে ৮৬১, আনুলিয়ার ১ হাজার ১০৮টি ভোটের মধ্যে ৬০৭, হোজার ১ হাজার ৩৫০টি ভোটের মধ্যে ৫৩৫টি এবং গোলাবাড়ীর ১ হাজার ৪১১টি ভোটের মধ্যে ৯৫০টি ভোট পেয়েছেন নৌকার প্রার্থী আবদুল ওয়াদুদ দারা। তিনি সামান্য ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন। 

রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে মোট ভোটকেন্দ্র ছিল ১১৯টি। এর মধ্যে তিনটি ভোটকেন্দ্রে কোনো ভোট বাতিল হয়নি। বেশকিছু কেন্দ্রে ১ থেকে ৭টি করে ভোট বাতিল হয়েছে। কোনো ভোট বাতিল হয়নি লক্ষ্মীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাশের চর কালীদাসখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দাদপুর কওমি মাদ্রাসা কেন্দ্রে। এর মধ্যে দাদপুরে ৮৫৯ ভোটের মধ্যে ৬৮০টি, চর কালীদাসখালীর ৫৯৪ ভোটের মধ্যে ৪৫৭টি এবং লক্ষ্মীনগরের ৫৬৫ ভোটের মধ্যে ৪৭৩টি ভোট পেয়েছেন নৌকার বিজয়ী প্রার্থী শাহরিয়ার আলম। 

রাজশাহী-৬ আসনের পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল হক বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রে প্রিসাইডিং কর্মকর্তারাই রুমের দরজা বন্ধ করে নৌকায় সিল মেরেছেন। আবার কোনো কোনো কেন্দ্রে একটি ভোটও বাতিল না করে নৌকার হিসাবে ধরা হয়েছে। এভাবে নৌকাকে জেতানো হয়েছে। কোনো ভোটকেন্দ্রে যে একটি ভোটও বাতিল হবে না—এটা একেবারে অবিশ্বাস্য। আগে তো দেখতাম ভোট কীভাবে দেওয়া হবে, তার ক্যাম্পেইন হতো। ভোটারদের মনে করিয়ে দেওয়া হতো। এবার সেটাও হয়নি। তাই ভোট যে একটাও বাতিল হবে না, তা অবিশ্বাস্য।’

রাজশাহী-৫ আসনের পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ওবায়দুর রহমানেরও একই অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সংস্থা এবং টেলিভিশনের মাধ্যমে দেখেছি যে আমি বিজয়ী। কিন্তু পরে আমাকে তিন হাজার ভোটে পরাজিত দেখানো হয়েছে। এই ফলাফল সঠিক না। আমি ভোট পুনর্গণনার দাবি জানাচ্ছি। আবার ভোট গণনা করা হলে বাতিল ভোট বের হওয়ার পাশাপাশি সঠিক ফলাফল হবে।’ 

রাজশাহী-৪ আসনের পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হকেরও দাবি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত ভোট পড়ার হার ছিল খুব কম। কেন্দ্রে ভোটারই ছিল না। ৩টার পর বলা হয়েছে ভোট পড়েছে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ। এটা আসলে বানোয়াট। নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। এনামুল হক ফল বাতিল করে পুনঃতফসিলের আবেদন জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনে।’ 

তবে রাজশাহীর রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ‘নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হয়নি। একেবারেই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটাররা ভোট দিয়েছেন। সঠিক ফল প্রকাশ হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টেকনাফে আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদের আহ্বায়কের মরদেহ উদ্ধার

 টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
নিহত মো. ইউনুস। ছবি: সংগৃহীত
নিহত মো. ইউনুস। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের টেকনাফে আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদের আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. ইউনুসের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের রঙিখালি সড়কের মাথার ব্রিজের নিচ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত মো. ইউনুস (৫৫) টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের চান্দলীপাড়া এলাকার হাছন আলীর ছেলে। তিনি সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ছিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইসমাইল বলেন, ‘সকালে লেদা বাজার যাওয়ার পথে রঙিখালি ব্রিজের নিচে একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে জানা যায়, মরদেহটি সাবেক ইউপি সদস্য ইউনুস মেম্বারের।’

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে পুড়ল ২০ দোকান

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ২০টি দোকান পুড়ে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, বজ্রপাত থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহালছড়িতে ফায়ার সার্ভিস না থাকায় সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। পরে খাগড়াছড়ি থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। এ সময় আগুনে রফিক স্টোর, ফরিদ স্টোর, প্রতিভা লাইব্রেরিসহ ২০টি দোকান পুড়ে যায়। দোকানগুলোর মধ্যে বেশির ভাগ মুদি ও কাপড়ের দোকান। এর মধ্যে দুটি চায়ের দোকান ও একটি স্বর্ণালংকারের দোকানও রয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা।

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা

অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে আজ বুধবার সকালে মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রায়হান ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পরিদর্শন করেন এবং ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন।

খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক জাকের হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মুষলধারে বৃষ্টি ও বজ্রপাতের কারণে বাজারে বিদ্যুৎ-সরবরাহ বন্ধ ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, বজ্রপাত থেকে আগুন লাগতে পারে। তিনি জানান, আশপাশে পানির উৎস না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। সব কটি দোকান আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা তদন্ত করে জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাদারীপুর-১ আসন: মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবিতে জামান মোল্লার সমর্থকদের সড়ক অবরোধ

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাদারীপুর-১ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কামাল জামান মোল্লার মনোনয়ন স্থগিত রাখার ঘটনায় তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন। মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবিতে আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল থেকে শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে অবস্থান নেন কামাল জামান মোল্লার সমর্থকেরা।

জানা গেছে, গত সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সারা দেশের ২৩৭টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে। এর মধ্যে মাদারীপুর-১ আসনে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয় কামাল জামান মোল্লার নাম। এর প্রতিবাদ জানিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা-ভাঙ্গা মহাসড়ক অবরোধ করেন মনোনয়ন না পাওয়া সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকী লাভলুর সমর্থকেরা। পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলীয় দপ্তর থেকে জানানো হয়, অনিবার্য কারণে মাদারীপুর-১ (শিবচর উপজেলা) আসনের মনোনয়ন স্থগিত রাখা হয়েছে। বিএনপির দপ্তর সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এদিকে মনোনয়ন স্থগিত করার প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার সকাল থেকে শিবচর সদরের ৭১ সড়কে বিক্ষোভ করছেন কামাল জামান মোল্লার সমর্থকেরা। তাঁরা মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। এ সময় বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে মনোনয়ন স্থগিতের প্রতিবাদ জানান তাঁরা। প্রতিবাদে নারী-পুরুষসহ অসংখ্য সমর্থক অংশ নিয়েছে।

জামান মোল্লার সমর্থিত একাধিক নেতা-কর্মী বলেন, ‘জামান মোল্লা একজন জননন্দিত নেতা। শিবচরে তাঁর প্রচুর সমর্থক রয়েছে। তিনি বিএনপিকে টিকিয়ে রেখেছেন। তাঁর মনোনয়ন স্থগিত মেনে নেওয়া হবে না। মনোনয়ন পুনর্বহাল করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনে নামতে চায়: আলতাফ হোসেন চৌধুরী

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
জনসভায় বক্তব্য দেন এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা
জনসভায় বক্তব্য দেন এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেছেন, জাতীয় পার্টি এখন চার ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন একটি অংশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। এমনকি তাদের মধ্যে টাকাপয়সার লেনদেনও হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে পটুয়াখালী সদর উপজেলার কমলাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ধরান্দী আবাসন মাঠে এক নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে এবারের নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। শুনেছি, ইতিমধ্যে টাকাপয়সার লেনদেনও হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। তার ওপর পার্শ্ববর্তী দেশগুলো আওয়ামী লীগকে নিয়ে নির্বাচন করার জন্য চাপ দিচ্ছে।’

বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘এই নির্বাচন যতটা সহজ মনে হচ্ছে, বাস্তবে ততটা সহজ নয়। জনাব তারেক রহমানও একাধিকবার বলেছেন—এই নির্বাচনের পেছনে রয়েছে বিভিন্ন চাপ, পার্শ্ববর্তী দেশের, আওয়ামী লীগের, জাতীয় পার্টির এমনকি গোপনে গোয়েন্দা সংস্থারও।’

দলীয় কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, এখন শুধু মঞ্চে বক্তৃতা দিয়ে হবে না, ঘরে ঘরে যেতে হবে। মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হবে—কেন ভোট হবে, কাকে ভোট দেবে, কেন দেবে, তা জনগণকে বোঝাতে হবে।

ভোটের পরিবেশ নিয়ে আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এমন এক অবস্থায় পৌঁছেছি, যেখানে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট প্রায় ইতিহাস হয়ে গেছে। গত ১৫ বছরে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। রাতে ভোট হয়েছে, দিনের ভোট কেড়ে নেওয়া হয়েছে। প্রকৃত নির্বাচন না হয়ে ‘সিলেকশন’ হয়েছে। এতে অযোগ্য ও অদক্ষ লোক সংসদে গেছে, পবিত্র সংসদকে অপবিত্র করা হয়েছে।

সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আহমেদ বায়জিদ পান্না। সভাপতিত্ব করেন কমলাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মৃধা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত