Ajker Patrika

শ্রমিক নিহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শেরপুরে কেমিক্যাল কারখানায় হামলা   

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
শ্রমিক নিহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শেরপুরে কেমিক্যাল কারখানায় হামলা   

বগুড়ার শেরপুরে এসআর কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডে গত বুধবার গ্যাসের বিষক্রিয়ায় একজন শ্রমিক নিহত ও তিনজন অসুস্থ হওয়াকে কেন্দ্র করে কারখানায় হামলা করেছে এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এতে কারখানার সিকিউরিটি প্রধান কিবরিয়া হোসেনসহ দুজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। 

এলাকাবাসী জানান, গত বুধবার কারখানার পাইপ ছিদ্র হলে ফ্যাক্টরিতে বিষাক্ত ক্লোরিন গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। এতে আয়শা আক্তার নামে এক শ্রমিক নিহত হন। তাকে উদ্ধার করতে আসা অপর তিন শ্রমিক আজিরন বেওয়া (৪৫), মনোয়ারা বেগম ও ঝর্ণা আক্তারও গ্যাসের বিষাক্ততায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় নিহত আয়শা আক্তারকে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলেও বাকি তিনজনকে গোপনে বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। আজ রাতে অসুস্থ আজিরন বেওয়াকে কারখানায় আনা হয়েছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকদের আত্মীয়স্বজনরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চায়। কিন্তু কারখানার সিকিউরিটি গার্ডরা তাদের ভেতরে ঢুকতে বাধা দেয়। খবর পেয়ে আশপাশের মানুষজন জড়ো হতে থাকে। এরপর তারা জোর করে ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। 

অসুস্থ আজিরন বেওয়ার ভাই শাজাহান আলী বলেন, 'গত বুধবার আমার বোন কারখানায় অসুস্থ হলেও তাকে সময় মত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় নাই। আজকে আমরা যখন খবর পেয়ে বোনকে দেখতে এসেছি তখন তারা দেখতে দেয় নাই। ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে।' 
 
ঘটনাস্থলে উপস্থিত শেরপুর পৌর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়জুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, 'আশপাশের মানুষের কৃষি জমি ধ্বংস করে এই কারখানাটি গতে তোলা হয়েছে। কারখানার শ্রমিকদের যথেষ্ট নিরাপত্তা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। আজকে রোগীর স্বজনরা যখন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছে তাদেরকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।' 

তবে গ্যাসের বিষক্রিয়ার কথা অস্বীকার করে কারখানার ব্যবস্থাপক সাজ্জাদ হোসেন সেন্টু বলেন, 'গত বুধবার এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। নিহত আয়শা আক্তার আগে থেকেই শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছিলেন। হঠাৎ করে অসুস্থতা বৃদ্ধি পেলে তাঁর মৃত্যু ঘটে। কিন্তু এই ঘটনায় একদল মানুষ মিথ্যা প্রচার চালিয়ে অসন্তোষ তৈরির চেষ্টা করছে।'  

কারখানায় হামলার বিষয়ে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, রাতে একদল মানুষ জোর করে কারখানায় ঢোকার চেষ্টা করে। তাদেরকে বাধা দিলে আমাদের সিকিউরিটি প্রধান কিবরিয়া হোসেনসহ অপর একজনকে ইটের আঘাতে আহত করা হয়। এ সময় স্থানীয় থানায় খবর দিলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হামলাকারীরা এলাকার কেউ নন। তাদেরকে বিশেষ কোন উদ্দেশ্যে শেরপুর শহর থেকে আনা হয়েছে বলে দিনি দাবী করেন। 

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, কারখানায় হামলার খবর পেয়ে পর্যাপ্ত ফোর্স নিয়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এই ঘটনায় কোন পক্ষ থেকে লিখিত কোন অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। 

উল্লেখ্য, গত বুধবার এসআর কেমিক্যাল কারখানায় উপজেলার সীমাবাড়ী ইউনিয়নের ররোয়া গ্রামের মো. সোলায়মান আলীর স্ত্রী আয়েশা আক্তার অসুস্থ হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই মৃত্যু অস্বাভাবিক মনে হলে হাসপাতালের পক্ষ থেকে থানায় জানানো হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে লাশটি থানায় নিয়ে এসে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়। তাঁর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে বৃহস্পতিবার সকাল ১০ দশটায় লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফোন-ইন্টারনেট ভাতা পাচ্ছেন মাঠ প্রশাসনের সব কর্মচারী

ভাড়া বাড়িতে চলা ১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ

পিপির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ৪৯ জন সহকারী পিপির

জোবাইদার নিরাপত্তার নামে প্রতিবেশীদের বিরক্ত না করার নির্দেশ তারেক রহমানের

শান্ত যে কারণে টি-টোয়েন্টি দলে, মিরাজ কেন নেই

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত