Ajker Patrika

গাবতলী ছাত্রদলের সম্মেলন জালিয়াতির অভিযোগ, ৮ প্রার্থীর ভোট বর্জন

বগুড়া প্রতিনিধি
গাবতলী ছাত্রদলের সম্মেলন জালিয়াতির অভিযোগ, ৮ প্রার্থীর ভোট বর্জন

বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় দীর্ঘ ১০ বছর পর ছাত্রদলের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সম্মেলনকে ঘিরে উঠেছে দুর্নীতি-অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ। এসব অভিযোগ তুলে সভাপতি-সম্পাদকসহ আট প্রার্থী সম্মেলন বর্জন করেন।

গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে গাবতলী উপজেলার শহীদ জিয়া মডেল কলেজ মাঠে ছাত্রদলের সম্মেলন করা হয়। এর আগে বুধবার দুপুরে সভাপতি-সম্পাদকসহ ১০ প্রার্থীর মধ্যে ৮ জন সম্মেলন বর্জন করেন। তারা বগুড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সম্মেলন বর্জনের এই ঘোষণা দেন। 

গাবতলী উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান মোহন। তিনি উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আবু হাসান ও সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী রিগ্যানের দুর্নীতি-অনিয়মের কারণে সম্মেলন বর্জন করেন তিনি। 

কথা হয় তার সঙ্গে। মাহমুদুল হাসান মোহন বলেন, ‘আমরা সভাপতি-সম্পাদকসহ আট প্রার্থী সম্মেলন বর্জন করেছি। কিন্তু আমাদেরকে জেলা কমিটির নেতারা (যারা দুর্নীতি ও জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত) বলেছেন, আমরা গণমাধ্যমের মাধ্যমে সম্মেলন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছি। এ জন্য সাংগঠনিকভাবে সম্মেলন বর্জনের ঘোষণা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে ১০ জন প্রার্থীকেই সম্মেলনে প্রতিদ্বন্দ্বী দেখানো হয়েছে। কিন্তু আমাদের সমর্থকেরা ভোট দিতে যাননি। জেলা কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক দুর্নীতি-জালিয়াতির মাধ্যমে সম্মেলন করেছেন।’ 

সম্মেলন বর্জন করা অন্যরা হলেন, সভাপতি পদপ্রার্থী মো. মোহতাছিম বিল্লাহ মুন, সাখাওয়াত হোসেন, বিপ্লব হাসান, আল-আমিন। আর সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীরা হলেন, বিপ্লব মিয়া, শামীমুর রহমান ও জাহিদ হাসান। 

সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ১০ জনের মধ্যে ৮ জন সম্মেলন বর্জন করায় বাকি থাকল দুজন। তারা হলেন, সভাপতি পদপ্রার্থী এম আর হাসান পলাশ ফকির ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী এস এম রাঙ্গা। 

গত বৃহস্পতিবার রাতে সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে এম আর হাসান পলাশ ফকির ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এস এম রাঙ্গার নাম ঘোষণা করা হয়। পলাশ ৮৬ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। আর রাঙ্গা ৭৯ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। ১২৫ জন ভোটার সম্মেলনে অংশ নিয়ে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিয়েছেন। সম্মেলনে এসব বলা হয়েছে। 

সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য ইশরাক হোসেন। সভাপতিত্ব করেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আবু হাসান। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোর্শেদ মিল্টন। 

সম্মেলন বর্জন করা সভাপতি প্রার্থী মো. মোহতাছিম বিল্লাহ মুন বলেন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আবু হাসান ও সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী রিগ্যান উপজেলা ছাত্রদলের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে অবৈধ প্রার্থী ঘোষণাসহ জালিয়াতি করে ভোটার তালিকা প্রকাশ করেন। ভোটার তালিকায় নাম ঠিক রেখে ছবি ও মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করা হয়। 

মোহতাছিম বিল্লাহ মুন আরও বলেন, গত ৩০ সেপ্টেম্বর ভোটারদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। যা প্রকাশ করা হয়েছে গত ১০ অক্টোবর। জালিয়াতি করার জন্যই দেরিতে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়। জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে যে ভোটার তালিকা প্রকাশ করে, সেখানে হত্যা মামলার আসামি ও প্রবাসী রয়েছে। জেলা কমিটির এ ধরনের কর্মকাণ্ড ছাত্রদলকে কলঙ্কিত করেছে। 

ছাত্রদল নেতা মুন বলেন, কেন্দ্র ছাত্রদলের সহসভাপতি ও রাজশাহী বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত টিমের প্রধান সজিব হাসান বাবুর সঙ্গে জেলা ছাত্রদলের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে কথা বলা হয়েছে। তিনি (সজিব হাসান বাবু) এসব অভিযোগের সত্যতা স্বীকার এবং দুঃখ প্রকাশ করেন। 

অভিযোগের বিষয়ে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আবু হাসানের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। 

পরে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী রিগ্যানের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন ‘সম্মেলনের কারণে অনেক ব্যস্ত রয়েছি। পরে কথা বলছি।’

এর বেশি কিছু বলেননি জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রিগ্যান। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তোরা যারা রাজাকার, সময় থাকতে বাংলা ছাড়: ফেসবুকে বাকের মজুমদার

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

যুক্তরাষ্ট্র-চীন সমঝোতায় এক দিনে ১০০ ডলার কমল সোনার দাম

যুদ্ধ বলিউডের সিনেমা নয়: ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান

কঠোর হচ্ছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতি, স্থায়ী বসবাসের আবেদনে অপেক্ষা ১০ বছর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত