Ajker Patrika

রাজশাহীতে ড্রেনের ৬০০ স্ল্যাব-ঢাকনা চুরি

  • রাতের আঁধারে গায়েব হচ্ছে ড্রেনের ঢাকনা।
  • ঢাকনা না থাকায় ড্রেনে পড়ে আহত হচ্ছে অনেকে।
  • ৫ আগস্টের পর ড্রেনের ঢাকনা চুরি বেড়েছে।
  • দিনেও ঢাকনা খুলে নেওয়া হচ্ছে।
 রিমন রহমান, রাজশাহী
নতুন সড়ক, নতুন ড্রেন। কিন্তু নেই ঢাকনা। ফলে ফুটপাত পরিণত হয়েছে মরণফাঁদে। সম্প্রতি রাজশাহী নগরের সিটিহাট এলাকা থেকে তোলা।  ছবি: আজকের পত্রিকা
নতুন সড়ক, নতুন ড্রেন। কিন্তু নেই ঢাকনা। ফলে ফুটপাত পরিণত হয়েছে মরণফাঁদে। সম্প্রতি রাজশাহী নগরের সিটিহাট এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী শহরজুড়ে নতুন নতুন প্রশস্ত সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য সড়কের দুই পাশে মাইলের পর মাইল করা হয়েছে বড় বড় ড্রেনও। কিন্তু চুরির কারণে এসব ড্রেনের ওপর স্ল্যাব ও ঢাকনা থাকছে না। বসানোর পর রাত হলেই এগুলো গায়েব হয়ে যাচ্ছে। ফলে ফুটপাত পরিণত হচ্ছে মরণফাঁদে।

রাসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহমদ আল মঈন জানান, সড়কটির ঢাকনা ও স্ল্যাব চুরির ঘটনার বিষয়টি তাঁরা জানেন। ছয় শতাধিক ঢাকনা

চুরি হয়েছে। এ বিষয়ে রাসিকের পক্ষ থেকে থানায় চুরির অভিযোগ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

ভুক্তভোগী এলাকাবাসী বলছেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) কাউন্সিলররাই আগে এসব দেখভাল করতেন। এখন রাসিকের পরিষদ নেই। পুলিশি টহলও নেই তেমন। ফলে চোরেরা এসব ঢাকনা তুলে নিয়ে যাচ্ছে। ঢাকনা না থাকায় ড্রেনে পড়ে আহত হচ্ছে অনেকে।

ঢাকনা না থাকায় এর আগে নগরের বিনোদপুর এলাকায় ড্রেনে পড়ে আহত হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী।

বিনোদপুর বাজারের ব্যবসায়ী হোসেন আলী বলেন, সড়ক প্রশস্ত করার সঙ্গে ড্রেনও নির্মাণ করে সিটি করপোরেশন। তারপর ড্রেন পরিষ্কারের মুখে লোহার স্ল্যাবও বসানো হয়েছিল। কিন্তু এগুলো রাতারাতি চুরি হয়ে গেছে। ড্রেনে পড়ে আহতের ঘটনা ঘটছে।

নগরের বিলশিমলা বন্ধ গেট থেকে সিটিহাট পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়কের ড্রেন ও ফুটপাতের ওপরের ঢাকনাগুলোও চুরি হয়ে গেছে। নতুন করে এই সড়ক প্রশস্ত করে সড়ক বিভাজক, দৃষ্টিনন্দন আলোকায়নসহ ড্রেনের ওপর প্রশস্ত ফুটপাত নির্মাণ করা হয়। কিন্তু স্ল্যাব ও ঢাকনা চুরি হওয়ায় সড়কটির দুপাশের ফুটপাত এখন হয়ে উঠেছে মৃত্যুফাঁদ।

গত ২৮ অক্টোবর রাতে সড়কটির ফুটপাত ধরে ঢাকনাবিহীন ড্রেনে পড়ে পা ভেঙে যায় তেরখাদিয়া বিভাগীয় স্টেডিয়াম এলাকার বাসিন্দা তরিকুল ইসলামের। তিনি বলেন, এখন প্রতিদিনই কেউ না কেউ ড্রেনে পড়ে আহত হচ্ছেন। সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানোর পরও তারা ঢাকনা চুরি বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

স্থানীয়রা জানান, আগেও দু-একটি করে ঢাকনা চুরি হয়েছে। তবে ৫ আগস্টের পর সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়কটির আড়াই কিলোমিটারের ফুটপাতের অধিকাংশ ঢাকনা চুরি হয়ে গেছে। নিরিবিলি এ সড়কের ফুটপাতে ভোরে ও রাতে হাঁটাচলা করতেন অনেক মানুষ। ফুটপাতের ঢাকনা চুরি হওয়ায় অনেকে ড্রেনে পড়ে হাত-পা ভাঙছেন। তাই মানুষ আর ফুটপাতে হাঁটতে বের হন না।

নগরের তেরখাদিয়া এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা আবুল হাসনাত বলেন, স্ত্রীকে নিয়ে নিয়মিত তিনি এ পথে হাঁটতেন। কয়েক মাস আগেও সড়কের ফুটপাত দিয়ে অনায়াসে হাঁটাচলা করা গেছে। কিন্তু এখন ড্রেনের ওপর ফুটপাতের স্ল্যাব না থাকায় হাঁটা যায় না।

সরেজমিনে দেখা গেছে, তিন ফুট পরপর বড় বড় ঢাকনার স্থান। এগুলো এখন পুরোপুরি ফাঁকা। সড়কটির সিটিহাট এলাকায় ফুটপাতে ফুচকা ও চটপটি বিক্রি করেন আব্দুল করিম। তিনি বলেন, শুধু রাতেই নয়, দিনের বেলায়ও চোরের দল ফুটপাতের ড্রেনের ঢাকনাগুলো রিকশা-ভ্যানে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। দেখার কেউ নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত