Ajker Patrika

‘মানুষের কাছে টাকা নাই, আগের মতো ভিক্ষা দেয় না’

রানীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৭: ১৫
‘মানুষের কাছে টাকা নাই, আগের মতো ভিক্ষা দেয় না’

‘মানুষের কাছে টাকা নাই, আগের মতো ভিক্ষা দেয় না। আগে সারা দিনে আড়াই শ-তিন শ টাকা পাইতাম। এখন এক -দেড় শ টাকাই পাওয়া যায় না।’ কথাগুলো বলেন মজিদা বেওয়া (৬৫)। তিনি নওগাঁর রানীনগর উপজেলার চকাদিন গ্রামের মৃত ময়েজ শেখের মেয়ে।

উপজেলার আবারপুকুর বাজারের রাস্তার পাশে বসে ভিক্ষা করছিলেন মজিদা বেওয়া। এগিয়ে গিয়ে কুশলাদি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চাল কিনলে ডাল হয় না, ডাল কিনলে বাজার হয় না বাপো। সারা দিনে যে রোজগার হয় তা দিয়ে বাজারসদা করার পর ওষুধ কিনা এত আর কুলানা যাচ্ছে না।’ এসব কথা বলতে বলতে তাঁর দুচোখ দিয়ে পানি ঝরছিল।

মজিদা বেওয়া বলেন, রাজশাহীর পুঠিয়ায় সতিনের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল। কিছুদিন সংসার করার পর স্বামী-সতিনের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় সাত মাসের সন্তান কোলে ৩৫ বছর আগে ছাড়াছাড়ি হয়। এরপর থেকে বাবার বাড়িতে থাকেন। সন্তানের কথা ভেবে আর বিয়ে করেননি। ইচ্ছে ছিল সন্তানকে পড়ালেখা করিয়ে মানুষের মতো মানুষ করবেন। কিন্তু অর্থের অভাবে সন্তানকে পড়ালেখা বেশি করাতে পারেননি।

ছেলে বড় হয়েছে। বিয়ে করেছে। জীবিকার তাগিদে নওগাঁয় একটি খাবারের হোটেলে শ্রমিকের কাজ করেন। কিন্তু হোটেল থেকে যে মজুরি পান, তা দিয়ে স্ত্রী-সন্তানসহ চারজনের সংসার চলে না। ফলে বাধ্য হয়ে মজিদা বেওয়া দুই বছর ধরে ভিক্ষায় নামেন।

তিনি বলেন, ‘বাবার যা সম্পত্তি ছিল ভাইয়েরা লিখে নিয়েছে। তাই বাবার বাড়িতেও আরর জায়গা হয়নি। বাবা-মা মারা যাওয়ার পর থেকে প্রতিবেশী আলী হোসেনের বাড়িতে থাকি। দেড় বছর আগে ভিক্ষা করতে বেরিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় হাত-পা ভেঙে যায়। এখন কোনো রকমে চলাফেরা করি। সকাল হলেই পেটের দায়ে হাত-পায়ের ব্যথা নিয়েই ভিক্ষা করতে বের হই।’

মজিদা বেওয়া বলেন, ‘যেই টাকা পাই, তা দিয়া চাল কিনলে ডাল হয় না, ডাল কিনলে তেল, পেঁয়াজ, রসুন, আলুসহ অন্যান্য বাজার হয় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারিভাবে নাকি ভিক্ষুকদের সাহায্য করে। কিন্তু আমাকে কেউ কিছু দেয়নি। কয়েক মাস আগে বয়স্ক ভাতার একটা কার্ড করে দিয়েছে। ওই টাকা দিয়ে ওষুধপত্র কিনতেই শেষ হয়ে যায়। এই বয়সে বাত-ব্যথা নিয়ে আর পারি না বাজান। তাই পেটের দায়ে বাধ্য হয়েই ঘর থেকে বের হতে হয়।’

রানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদত হুসেইন বলেন, উপজেলায় অনেক ভিক্ষুককে পুনর্বাসনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। ইতিমধ্যে আবারও একটি তালিকা করা হচ্ছে। তাঁকেও পুনর্বাসনের আওতায় আনা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

কোটি টাকা ‘ভর্তুকি’র জিম্বাবুয়ে সিরিজে বাংলাদেশ যা পেল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত