Ajker Patrika

শেরপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসের অনিয়ম নিয়ে ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
শেরপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসের অনিয়ম নিয়ে ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ

বগুড়ার শেরপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসের কর্মচারী ও দলিল লেখক সমিতির কাছে এলাকার সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। জমির ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছ থেকে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও তোলা হয়েছে। এমন অভিযোগ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দিয়েছেন এক নারী। 

নাজনীন পারভিন ওরফে পলি নামে এই নারী বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এই অভিযোগ দেন। নাজনীন পারভীন শেরপুর পৌর শহরের কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দা। 

লিখিত অভিযোগে জানানো হয়, তিনি সম্প্রতি শেরপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে তার নিজস্ব দুই শতক জমি বিক্রি করতে যান। সঙ্গে ক্রেতাও ছিলেন। দলিল নিবন্ধন করা অফিসের একজন পিয়ন ও দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাঁর কাছে উৎকোচ দাবি করে। তিনি অপারগতা প্রকাশ করায় তাকে হয়রানী হতে হয়। 

লিখিত ওই অভিযোগে নাজনীন পারভীন আরও বলেন, শেরপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী দলিল ও দলিল লেখক সমিতির কাছে এলাকার সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। তারা জমির ক্রেতা বিক্রেতাদের কাছে থেকে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। দলিল লিখে প্রথমে তার টাকার বিনিময়ে সমিতির অনুমোদন নিতে হয়। এরপর কয়েক ধাপে টাকা দিয়ে সাবরেজিস্ট্রারের টেবিলের দলিল পৌঁছে। এমন ঘটনা শেরপুরে সাবরেজিস্ট্রি অফিসে এখন ওপেন সিক্রেট হয়ে পড়েছে। এছাড়া সরকারি এই অফিস চত্বরে দলিল লেখক সমিতির নামে অফিস ঘর থাকাটাও বেআইনি বলে তিনি উল্লেখ করেন। এছাড়াও সমিতির কার্যালয়ে রাতে মাদকের কারবার ও জুয়ার আসর চলে বলে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে উল্লেখ করেছেন। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে তাঁর এই অভিযোগ জমা দেওয়ার পর তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, শেরপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসের জমির নিবন্ধন করা নিয়ে যে দুর্নীতি চলছে তা দ্রুত বন্ধ হওয়া দরকার। দুর্নীতি বন্ধে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঠিক পদক্ষেপ প্রয়োজন। 

তবে শেরপুর দলিল লেখক সমিতির সভাপতি এস এম ফেরদৌস জমি নিবন্ধন করা নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের হয়রানির অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, দলিল লেখক সমিতির শেরপুরে তাদের দীর্ঘদিনের একটি সংগঠন। অফিস চত্বরের ভেতর তারা একটি টিনশেড কক্ষে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। দলিল লেখা নিয়ে তারা যে পারিশ্রমিক পান সেই টাকায় সমিতির কার্যালয়ে জমা করা হয়ে থাকে। 

এ নিয়ে শেরপুর সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ে কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, তাঁর অফিসের এমন ধরনের কোনো অভিযোগ ক্রেতা ও বিক্রেতা কেউ তাঁর কাছে করেনি। 

নাজনীন পারভীনের অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন জিহাদী জানান, অভিযোগের আলোকে তিনি বগুড়া জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলবেন। এছাড়া আগামী রোববার জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত