Ajker Patrika

‘উচ্ছেদের আগে পুনর্বাসন চাই, পরীক্ষার আগে উচ্ছেদ নয়’

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২৩, ১৬: ১৮
‘উচ্ছেদের আগে পুনর্বাসন চাই, পরীক্ষার আগে উচ্ছেদ নয়’

‘উচ্ছেদের আগে পুনর্বাসন চাই, পরীক্ষার আগে উচ্ছেদ নয়’ এ দাবিতে পাবনার ঈশ্বরদীর বিভাগীয় রেল শহর পাকশীতে পাঁচ শতাধিক ভূমিহীন ও দরিদ্র পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে পাকশীর এম এস কলোনি চত্বরে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। 

এতে কলোনির বসবাসরত পরিবার, তাদের সন্তান ও এলাকাবাসী উচ্ছেদের আগে পুনর্বাসন ও তাদের সন্তানদের পরীক্ষার পরে উচ্ছেদের দাবি জানান। 

এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পাকশী রক্ষা কমিটির সদস্যসচিব জাহাঙ্গীর আলম। উপস্থিত ছিলেন—কলোনির মনিরুজ্জামান টুটুল সরদার, পাকশী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ফাতেমা আক্তার পলি ও মনোয়ার হোসেন লিটন, কলোনির বাসিন্দা আমজাদ হোসেন বাবু, মাজহারুর ইসলাম, আনোয়ার হোসেন বুলবুল, হাবিবুর রহমান বাবর প্রমুখ। 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পাকশীর এসব পুরোনো কোয়ার্টারে তাঁরা দীর্ঘ পঁচিশ বছর ধরে বসবাস করছেন। বর্তমানে কলোনির ৯টি ভবনে ১০৮টি পরিবারের বসবাস। জনসংখ্যা পাঁচ শতাধিক। এখনকার প্রায় দুইশো ছেলে-মেয়ে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে লেখাপড়া করছে। নভেম্বরে স্কুলপর্যায়ে চূড়ান্ত ও আগস্ট মাসে অনুষ্ঠিত হবে উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা। এসব শিক্ষার্থীরা যখন পরীক্ষার জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে, সেই মুহূর্তে পাকশী রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ব্যানারে গত ১৭ জুলাই মাইকিং করা উচ্ছেদের জন্য। 

পরবর্তীতে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার তাদের দাবির প্রেক্ষিতে ৩১ জুলাই পর্যন্ত সময় বর্ধিত করেন। ইতিমধ্যে ৩১ তারিখ অতিবাহিত হয়েছে। তারা এখন পরিবার পরিজন নিয়ে উচ্ছেদ আতঙ্কে আছেন। 

কলোনির বাসিন্দা আমজাদ হোসেন বাবু জানান, তাঁদের বাসস্থানের কোনো জায়গা নেই। তার দুই ছেলে মেয়ে লেখাপড়া করছে। হঠাৎ উচ্ছেদের চূড়ান্ত নোটিশ পেয়ে তিনি এখন দিশেহারা। কী হবে তার ছেলেমেয়ের লেখাপড়া! 

ওই কলোনির আরেক বাসিন্দা সাহাব উদ্দিন লাবলু উচ্ছেদের আগে পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে রেলের পুরোনো এসব কোয়ার্টারে বসবাস করছি। আমাদের কোনো বাড়িঘর নেই। উচ্ছেদ করলে আমরা কোথায় যাব?’ 

এ বিষয়ে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার শাহ্ সূফি নূর মোহাম্মদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এমএস কলোনির কোয়ার্টারে দখলদারের কোনো বৈধতা নেই। তাদেরকে কোয়ার্টারের বাসাবাড়ি ছেড়ে দেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা শুনছেন না।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘রেলওয়েতে নিয়োগ পাওয়া নতুন কর্মচারীদের ওই কোয়ার্টারে রাখা হবে। আমরা মানবিকতা দেখিয়ে এই মুহূর্তে মাত্র দুটি ভবন ছেড়ে দিতে বলেছি। কিন্তু তারা তাও মানতে নারাজ।’ 

ওই আদেশের প্রেক্ষিতে পাকশী রক্ষা কমিটির সদস্যসচিব জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা তো বলছি না কোয়ার্টার ছেড়ে দেব না। আমরা শুধু উচ্ছেদের আগে পুনর্বাসন ও শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার জন্য সময় চাচ্ছি। এতে আমাদের অপরাধ কোথায় বলুন?’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত