Ajker Patrika

রাবিতে গণ ইফতারে প্রথমে বাধা, পরে ‘পাহারাদার’ হিসেবে অংশ নিল ছাত্রলীগ

রাবি প্রতিনিধি
রাবিতে গণ ইফতারে প্রথমে বাধা, পরে ‘পাহারাদার’ হিসেবে অংশ নিল ছাত্রলীগ

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ইফতার পার্টির ওপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ‘নিষেধাজ্ঞার’ প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বুধবার (১৩ মার্চ) গণ ইফতার কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

এই কর্মসূচি শুরুর আগেই ছাত্রলীগ দাবি করে, এতে ছাত্রশিবিরের সংশ্লিষ্টতা আছে। আয়োজনে আগত শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে দেয় তারা। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে আসেন কর্মসূচির আয়োজক জায়িদ হাসান জোহা। এরপর জোহার সঙ্গে ‘শিবিরের’ সংশ্লিষ্টতা আছে কি না সেটি যাচাই করতে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেন শাখা ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতা। তাঁর সঙ্গে ‘শিবিরের’ সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় ‘ক্যাম্পাসের পাহারাদার’ হিসেবে গণ ইফতার কর্মসূচিতে অংশ নেয় ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা। 

বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এই গণ ইফতার কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান, সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক গোলাম কিবরিয়া ফেরদৌস, শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা–হিল–গালিব ও অন্যান্য নেতা–কর্মীসহ দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা যায়, বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীরা গণ ইফতারে অংশ নিতে আসতে থাকেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা শিক্ষার্থীদের জানান, ‘গণ ইফতার হবে না’। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে আসেন গণ ইফতার কর্মসূচির আহ্বায়ক জায়িদ হাসান জোহা। এরপর শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা তাঁকে শহীদ মিনার মুক্তমঞ্চের পেছনে নিয়ে কথা বলেন। কিছুক্ষণ পর এসে দুই ছাত্রলীগ নেতা গণ ইফতার কর্মসূচির আয়োজন শুরু করতে বলেন। এরপর শামিয়ানা বিছিয়ে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে গণ ইফতার শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। 

ইফতার পার্টি শেষে কর্মসূচির আহ্বায়ক জায়িদ হাসান জোহাকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ছাত্রলীগের নেতারা নিয়ে যেতে চান। তখন শিক্ষক ফরিদ উদ্দিন খান ও গোলাম কিবরিয়া ফেরদৌস তাঁদের বাধা দেন। শিক্ষকদের বাধা উপেক্ষা করে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জোহাকে জোর করে নিয়ে যেতে চাচ্ছিলেন। এ সময় দুই শিক্ষক তাঁদের বলেন, জোহাকে তোমাদের জিম্মায় ছেড়ে দিলাম। ওর যদি কোনো কিছু হয় তাহলে তোমাদের দায়ভার নিতে হবে। 

পরে জোহাকে শেরে বাংলা হল সংলগ্ন দোকানের পেছনে নিয়ে যান শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক। সেখানে জোহার সঙ্গে প্রায় ২০ মিনিট কথা বলেন তাঁরা। এরপর তাঁকে ছেড়ে দেন এবং রাত ১০টায় ক্যাম্পাসের বুদ্ধিজীবী চত্বরে আবার দেখা করতে বলেন। এরপর জোহা রিকশায় করে ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে যান। 

এ বিষয়ে জোহার ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে অপর পাশ থেকে তাঁর বন্ধু পরিচয় দিয়ে একজন বলেন, ‘জোহা সারা দিনের ধকল নিতে পারেনি। এ ছাড়া ইফতারের সময় ঝামেলার কারণে সে ঠিকমতো ইফতারও করতে পারেনি। এই কারণে সে হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়েছে। আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি।’ 

গণ ইফতারে প্রথমে বাধা দিলেও পরে ‘পাহারাদার’ হিসেবে অংশ নিয়েছে ছাত্রলীগ। ছবি: আজকের পত্রিকাএর আগে, বাংলাদেশের দুই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইফতার পার্টি না করার নির্দেশনা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয় কর্তৃপক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতেই রাবির আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী জায়িদ হাসান জোহা নিজেকে আহ্বায়ক ঘোষণা দিয়ে ফেসবুকে গণ ইফতার কর্মসূচির ডাক দেন এবং এ বিষয়ে ‘ব্যানার’ তৈরি করে প্রচার করেন। সেখানে তিনি লিখেছেন—সকলে সাধ্য অনুযায়ী ইফতারি আনার চেষ্টা করবেন। এ ছাড়া কেউ চাইলে সরাসরি অর্থনৈতিক অংশগ্রহণও করতে পারবে। 

বুধবার ইফতারের আগে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা–হিল–গালিব বলেন, ‘ফেসবুকে আমরা গণ ইফতার নামে একটি আয়োজন দেখতে পাই। এই বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং ক্রিয়াশীল কোনো ছাত্র সংগঠন অবগত ছিল না। এখানে এসে দেখলাম অনেক জটলা বেঁধে আছে। শিক্ষার্থীরা ইফতারি করবে। তাদের সঙ্গে কথা বলে আমরা ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা অংশগ্রহণ করেছি, যাতে ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা না ঘটে। সে জন্য ক্যাম্পাসের পাহারাদার হিসেবে আমরা শহীদ মিনারে অবস্থান করছি।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য আছে, আজ ইসলামি ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা নোমানীর মৃত্যুবার্ষিকী। তারা আজ নামে–বেনামে ক্যাম্পাসে কোনো একটা কর্মসূচি পালন করবে। গণ ইফতার কর্মসূচির আহ্বায়ক জোহা এর সঙ্গে জড়িত আছে কি না জানি না। তবে তার সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে সে জড়িত না। আপাতত আমরা সবাই একসঙ্গে ইফতার করব। তারপর জোহার সঙ্গে আবার কথা হবে সে শিবির বা নোমানীর মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত কি না।’ 

ইফতার শুরুর আগে জায়িদ হাসান জোহা বলেন, ‘বাঙালির চিরায়ত মুসলিম সংস্কৃতি রমজান, সাহরি ও ইফতার। এই সংস্কৃতি ও ধর্মীয় রীতির ওপর হস্তক্ষেপ কখনো কাম্য নয়। সম্প্রতি শাবিপ্রবি ও নোবিপ্রবিতে ঘটে যাওয়া ঘটনায় দুই ক্যাম্পাসের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংহতি জানিয়ে আমরাও আয়োজন করছি গণ ইফতার কর্মসূচি। তবে ছাত্রলীগের ভাইয়েরা বিষয়টি না জানায় আমাকে ডেকে নিয়ে কথা বলেছেন। এখন ভাইয়েরা মিলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ইফতারি করতে বসেছি। কোনো বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি।’ 

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘জোহা নামে একজন ছেলে আমাকে কল দিয়ে দাওয়াত দিয়েছে। তারপর আরেকজন কল দিয়ে বলল, একটা সংগঠনের ছেলেরা আমাদের দাঁড়াতে দিচ্ছে না। সেটি শুনেই মূলত এখানে এসেছি। পরে এসে দেখলাম ঝামেলা মিটে গেছে।’ 

ইফতারের শেষে ঝামেলার বিষয়ে জানতে চাইলে ফোনে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতারা জোহাকে তাদের সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার জন্য জোর করছিল। তখন তাকে দেখে মনে হলো সে অনিরাপত্তা বোধ করছে। তাই তাকে এক শিক্ষকের বাইকে করে মেসে পৌঁছে দিতে চেয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত তারা জোহাকে জোর করে নিয়ে গেছে। তখন বাবু–গালিবকে আমি বলেছি, তোমাদের জিম্মায় ওকে দিয়ে দিলাম। কোনো সমস্যা হলে এর দায়ভার তোমাদের নিতে হবে।’ 

প্রসঙ্গত, গত সোমবার (১১ মার্চ) শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ক্যাম্পাসে ইফতার পার্টি আয়োজন না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। একই দিন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মুহাম্মদ আলমগীর সরকার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে একই নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গণ ইফতার কর্মসূচি পালন করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

টাঙ্গাইলে ট্রাক-অটোরিকশা সংঘর্ষে দুজন নিহত

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

যমুনা সেতু-টাঙ্গাইল-ঢাকা মহাসড়কের ঘারিন্দা আন্ডারপাস এলাকায় ট্রাকের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে চালকসহ দুজন নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার আকুয়া গ্রামের কছিম উদ্দিনের ছেলে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক সাহেব আলী (৪৫) এবং একই উপজেলার ভোক্তা গ্রামের নূর মোহাম্মদ শেখের ছেলে অটোরিকশার যাত্রী আব্দুল আলীম শেখ (৬০)।

এলেঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুল হাসান জানান, ঢাকাগামী সার্ভিস লেনে চলন্ত একটি অজ্ঞাত ট্রাক সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই যাত্রী আব্দুল আলীম মারা যান। গুরুতর আহত চালক সাহেব আলীকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পথে তাঁরও মৃত্যু হয়।

আইনগত প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে পুলিশ জানায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কুমিল্লায় বিজিবির বিশেষ অভিযানে অস্ত্র-মাদক উদ্ধার

 কুমিল্লা প্রতিনিধি 
সংবাদ সম্মেলনে ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মীর আলী এজাজ ও উদ্ধারকৃত অস্ত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
সংবাদ সম্মেলনে ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মীর আলী এজাজ ও উদ্ধারকৃত অস্ত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা সীমান্ত এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, দুটি গুলি এবং ১২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে কুমিল্লা ব্যাটালিয়ন (১০ বিজিবি)। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) ভোরের দিকে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার ধনপুর মাঠ এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

বিজিবি জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যশপুর বিওপি কমান্ডার নায়েব সুবেদার মো. মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে বিজিবির একটি বিশেষ টহল দল সীমান্ত পিলার হতে প্রায় ২০০ গজ অভ্যন্তরে অস্ত্র, মাদক ও চোরাচালানবিরোধী এ অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় টহল দলটি পরিত্যক্ত অবস্থায় এ অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করে।

আজ সোমবার বেলা ১১টায় কুমিল্লা ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তরে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মীর আলী এজাজ বলেন, সীমান্ত এলাকায় অস্ত্র, মাদক ও যেকোনো ধরনের চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। আন্তসীমান্ত অপরাধ দমন, সীমান্ত সুরক্ষা এবং অবৈধ পণ্য পাচার রোধে টহল তৎপরতা ও গোয়েন্দা নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুন্সিগঞ্জে নিখোঁজ অটোরিকশাচালকের মরদেহ উদ্ধার

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
মুজিবুর মাঝি। ছবি: সংগৃহীত
মুজিবুর মাঝি। ছবি: সংগৃহীত

মুন্সিগঞ্জে নিখোঁজের তিন দিন পর খাল থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মুজিবুর মাঝি (৪৫) নামে এক অটোরিকশাচালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকালে সদর উপজেলার পূর্ব রতনপুর এলাকার একটি খাল থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মুজিবুর মাঝি মুন্সিগঞ্জ সদরের রামপাল ইউনিয়নের শান্তিনগর এলাকার বাঁধন সরকারের গ্যারেজে কর্মরত ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি বরিশালের হিজলা উপজেলায়।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার মুজিবুর লৌহজংয়ের মাওয়া যাওয়ার উদ্দেশে গ্যারেজ থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে রাসেল মিয়া গতকাল রোববার সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। আজ সোমবার সকালে এলাকাবাসী ওই খালে হাত পা-বাঁধা অবস্থায় মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।

এ বিষয়ে সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সোহাগ জানান, ৯৯৯-এ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দৌড়ে ট্রেনে উঠতে গিয়ে পা পিছলে বেঁচে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি

গাজীপুর (শ্রীপুর) প্রতিনিধি
পা পিছলে পড়ে যাওয়ার মুহূর্তে জালাল উদ্দীন। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
পা পিছলে পড়ে যাওয়ার মুহূর্তে জালাল উদ্দীন। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

গাজীপুরের শ্রীপুরে দৌড়ে ট্রেনে উঠতে গিয়ে পা পিছলে চলন্ত ট্রেনের নিচে পড়ে যান কৃষক জালাল উদ্দীন। পুরো ট্রেন তাঁর ওপর দিয়ে গেলেও অলৌকিকভাবে বেঁচে যান তিনি। গতকাল রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে শ্রীপুর রেলস্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তাঁর। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত পৌনে ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। নিহত জালাল উদ্দীন (৪৫) ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার চরআগলী ইউনিয়নের নিধিরচর গ্রামের মো. তৈয়ব উদ্দিনের ছেলে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গুরুতর আহত অবস্থায় মৃত্যুর আগে জালাল উদ্দীনের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি জানান, শ্রীপুর রেলস্টেশনে দাঁড়ানো মোহনগঞ্জগামী ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেন। এ সময় তিনি ট্রেনে উঠতে দৌড় দেন। একই সময়ে স্টেশনের এক নম্বর লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেনটিও ছেড়ে দেয়। এ সময় পা পিছলে ট্রেনের ইঞ্জিনের নিচে চলে যান তিনি। এর পরের ঘটনা বলতে পারেননি গুরুতর আহত জালাল উদ্দীন।

স্থানীয় দোকানি মনির হোসেন জানান, স্টেশনে দুটি ভিন্ন লাইনে দুটি ট্রেন দাঁড়ানো ছিল এবং একই সঙ্গে ট্রেন দুটি ছাড়া শুরু করে। হঠাৎ জালাল উদ্দীন এক নম্বর লাইনে দৌড়ালে পা পিছলে চোখের পলকে ট্রেনের নিচে পড়ে যান। জামালপুর কমিউটার ট্রেনটি তাঁর ওপর দিয়ে চলে যায়। ট্রেনটি চলে যাওয়ার পরপরই স্টেশনের লোকজনের সহযোগিতায় তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে তিনি স্বাভাবিকভাবে কথা বলছিলেন এবং নিজের নাম-ঠিকানা বলতে পারছিলেন। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে চরআগলী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য শহিদুল ইসলাম দুলু বলেন, রাতেই তিনি মারা গেছে। আজ সোমবার বেলা ১১টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘গতকাল রোববার রাত ৯টার পর গুরুতর আহত অবস্থায় কয়েকজন মানুষ জালাল উদ্দীন নামে একজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।’

শ্রীপুর রেলস্টেশন মাস্টার মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘এ রকম একটি ঘটনা ঘটেছে। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা হাসপাতালে নিয়ে যায়।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ‘এমন ঘটনা ঘটার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। মৃত্যুর বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। তা ছাড়া বিষয়টি রেলওয়ে পুলিশ দেখবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত