আনসার উদ্দিন খান পাঠান
বিলের নাম গহনাবনা। রাজশাহীর পবায়। বিলের ঠিক মধ্যখানে বেশ গভীর। সে গভীর পানিতেই পদ্ম ফুটেছে। পদ্মপাতার ফাঁকে ফাঁকে মাথা তুলেছে সাদা পাপড়িতে গোলাপি রং মেশানো চোখ ধাঁধানো পদ্মফুল। অসংখ্য কলি এখানে-সেখানে, পাপড়ি মেলে ফুটবে বলে অপেক্ষা করছে। কোথাও কোথাও বদ্ধ ফানেল আকৃতির পদ্মফল, এ-ওর গায়ে ঢলে পড়ছে।
ডিঙি নৌকায় করে বিলের মাঝে ঢুকে পড়ি। দাঁড়ের ছলাৎ ছলাৎ শব্দে কান খাড়া করে গহনাবনার বিচিত্র বর্ণের পক্ষীকুল। সে পদ্মপাতার বুকে পা ছড়িয়ে হেঁটে যায় কালিম, জলময়ূর, ডাহুক আর কানি বক। এ যাত্রায় আমার চোখ ধাঁধায় কালিম। পাতার বুকের রঙের সঙ্গে অনেকটা মিলে যায় তার পিঠের পালকের রং। তার গায়ের রং তো আর একটা নয়। গাঢ় নীল থেকে ক্রমান্বয়ে হালকা, লেজের দিকটা খানিক সাদা। লম্বা নীল গলায় লাল টকটকে মুখ, কপাল আর মাথাও লাল। পায়ের নখর অনেক দূর ছড়িয়ে থাকে। পদ্মপাতায়, কচুরিপানায় দেহের ভর ছড়িয়ে দিয়ে ভেসে থাকতে জানে। এক পাতা থেকে আরেক পাতায় লাফিয়ে লাফিয়ে ছোটে। রঙিন ফুলবনে রঙিন পাখি। মুগ্ধ হয়ে সে সৌন্দর্য দেখতে হয়।
জুলাই-আগস্টের এই সময়টা এদের ডিম দেওয়া আর বাচ্চা ফোটানোর সময়। জলে ভাসা পদ্মবনের ঝোপে একটুখানি খড়কুটো জমিয়ে তার মধ্যেই ডিম পাড়ে। তিন-চারটা ডিম দিয়ে পালাক্রমে পুরুষ আর স্ত্রী পাখি তা ফোটায়। দুদিন বাদেই বাচ্চারাও বাবা-মায়ের সঙ্গে পাতায় পাতায় দৌড়ে বেড়ায়। কোথাও বড় শব্দ হলে, আক্রমণের আশঙ্কা দেখলে বড়রা উড়ে যায়, বাচ্চারা চুপটি মেরে পাতার নিচে লুকিয়ে যায়, খুঁজে পাওয়া যায় না।
বাসা বাঁধলে এরা তার আশপাশেই স্বল্প দূরত্বে থেকে যায়, মানুষজন একেবারে কাছে চলে গেলেও সহজে বাসা ফেলে উড়ে যেতে চায় না। বিরক্ত হলে মুখে কর্কশ আওয়াজ তোলে।
ঘোর বর্ষার দিনে গহনাবনা বিলে যাই। এই সময়ে বৃষ্টি এই আসে এই যায়। ভাগ্যিস এক ফাঁকে খানিক রোদ ফুটল পুবের আকাশে, নইলে আর ছবি তোলা হতো না। ডিঙি থেকে কালিমের বাসা আর তার মাঝে চারটা ডিম দেখলাম। বেশ বড় আকারের মুরগির ডিমের মতো। বিরক্ত হবে সেই ভয়ে আর খুব কাছে যাইনি। মা কালিমের ছবি তুললাম। একটুও উড়ে যাওয়ার চেষ্টা করেনি। ডিমের নিরাপত্তার কথা ভেবেই হয়তো যায়নি।
অনেক জলাভূমিতেই কালিম আর দেখা যায় না। নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়া আর চাষাবাদের পরিধি বাড়ায় এ রকম জলজ প্রাণীর আবাস কমে যাচ্ছে দ্রুত। এদের নিরাপদ চারণক্ষেত্রের আরও বিস্তার ঘটুক, ভারসাম্যে আর বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ হোক আমাদের প্রকৃতি।
লেখক: পুলিশ সুপার, বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি, সারদা
বিলের নাম গহনাবনা। রাজশাহীর পবায়। বিলের ঠিক মধ্যখানে বেশ গভীর। সে গভীর পানিতেই পদ্ম ফুটেছে। পদ্মপাতার ফাঁকে ফাঁকে মাথা তুলেছে সাদা পাপড়িতে গোলাপি রং মেশানো চোখ ধাঁধানো পদ্মফুল। অসংখ্য কলি এখানে-সেখানে, পাপড়ি মেলে ফুটবে বলে অপেক্ষা করছে। কোথাও কোথাও বদ্ধ ফানেল আকৃতির পদ্মফল, এ-ওর গায়ে ঢলে পড়ছে।
ডিঙি নৌকায় করে বিলের মাঝে ঢুকে পড়ি। দাঁড়ের ছলাৎ ছলাৎ শব্দে কান খাড়া করে গহনাবনার বিচিত্র বর্ণের পক্ষীকুল। সে পদ্মপাতার বুকে পা ছড়িয়ে হেঁটে যায় কালিম, জলময়ূর, ডাহুক আর কানি বক। এ যাত্রায় আমার চোখ ধাঁধায় কালিম। পাতার বুকের রঙের সঙ্গে অনেকটা মিলে যায় তার পিঠের পালকের রং। তার গায়ের রং তো আর একটা নয়। গাঢ় নীল থেকে ক্রমান্বয়ে হালকা, লেজের দিকটা খানিক সাদা। লম্বা নীল গলায় লাল টকটকে মুখ, কপাল আর মাথাও লাল। পায়ের নখর অনেক দূর ছড়িয়ে থাকে। পদ্মপাতায়, কচুরিপানায় দেহের ভর ছড়িয়ে দিয়ে ভেসে থাকতে জানে। এক পাতা থেকে আরেক পাতায় লাফিয়ে লাফিয়ে ছোটে। রঙিন ফুলবনে রঙিন পাখি। মুগ্ধ হয়ে সে সৌন্দর্য দেখতে হয়।
জুলাই-আগস্টের এই সময়টা এদের ডিম দেওয়া আর বাচ্চা ফোটানোর সময়। জলে ভাসা পদ্মবনের ঝোপে একটুখানি খড়কুটো জমিয়ে তার মধ্যেই ডিম পাড়ে। তিন-চারটা ডিম দিয়ে পালাক্রমে পুরুষ আর স্ত্রী পাখি তা ফোটায়। দুদিন বাদেই বাচ্চারাও বাবা-মায়ের সঙ্গে পাতায় পাতায় দৌড়ে বেড়ায়। কোথাও বড় শব্দ হলে, আক্রমণের আশঙ্কা দেখলে বড়রা উড়ে যায়, বাচ্চারা চুপটি মেরে পাতার নিচে লুকিয়ে যায়, খুঁজে পাওয়া যায় না।
বাসা বাঁধলে এরা তার আশপাশেই স্বল্প দূরত্বে থেকে যায়, মানুষজন একেবারে কাছে চলে গেলেও সহজে বাসা ফেলে উড়ে যেতে চায় না। বিরক্ত হলে মুখে কর্কশ আওয়াজ তোলে।
ঘোর বর্ষার দিনে গহনাবনা বিলে যাই। এই সময়ে বৃষ্টি এই আসে এই যায়। ভাগ্যিস এক ফাঁকে খানিক রোদ ফুটল পুবের আকাশে, নইলে আর ছবি তোলা হতো না। ডিঙি থেকে কালিমের বাসা আর তার মাঝে চারটা ডিম দেখলাম। বেশ বড় আকারের মুরগির ডিমের মতো। বিরক্ত হবে সেই ভয়ে আর খুব কাছে যাইনি। মা কালিমের ছবি তুললাম। একটুও উড়ে যাওয়ার চেষ্টা করেনি। ডিমের নিরাপত্তার কথা ভেবেই হয়তো যায়নি।
অনেক জলাভূমিতেই কালিম আর দেখা যায় না। নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়া আর চাষাবাদের পরিধি বাড়ায় এ রকম জলজ প্রাণীর আবাস কমে যাচ্ছে দ্রুত। এদের নিরাপদ চারণক্ষেত্রের আরও বিস্তার ঘটুক, ভারসাম্যে আর বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ হোক আমাদের প্রকৃতি।
লেখক: পুলিশ সুপার, বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি, সারদা
গত জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ থেকে ভারী বৃষ্টির কারণে নোয়াখালীর আটটি উপজেলার বেশির ভাগ এলাকায় দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। অব্যাহত বৃষ্টি ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় ডুবে যায় জেলার বিভিন্ন সড়ক, মহল্লা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। জেলার ১৭৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সেই জলাবদ্ধতা এখনো রয়ে গেছে। এক মাসের বেশি এই জলাবদ্ধতায়
২৪ মিনিট আগেসরকারি কেনাকাটার ক্ষেত্রে যে ঠিকাদার সর্বনিম্ন দরে মালপত্র সরবরাহ করবেন, তাকেই কাজ দেওয়ার কথা। তবে উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে রাজশাহী আঞ্চলিক দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামারে। এখানে সর্বনিম্ন নয়, যাঁরা সর্বোচ্চ দর দিয়েছেন—তাঁদেরই কাজ দেওয়া হয়েছে। এতে সরকারের প্রায় ৯২ লাখ টাকা বাড়তি খরচ হচ্ছে।
২৯ মিনিট আগেবিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) নিয়োগ-বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় সম্প্রতি কারাগারে যেতে হয়েছে সাবেক উপাচার্য আব্দুস সাত্তারকে। তবে এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি গত পাঁচ মাসেও কাজ
৩৪ মিনিট আগেউড়োজাহাজের অনলাইন টিকিট বুকিংয়ে দেশের অন্যতম প্ল্যাটফর্ম ফ্লাইট এক্সপার্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সালমান বিন রশিদ শাহ সাইমের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের কচুয়ার মুরাদপুর গ্রামে। এই গ্রাম, উপজেলা, এমনকি পাশের ফরিদগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দাদের কাছ থেকেও তাঁরা টাকাপয়সা হাতিয়ে নিয়েছেন ব্যবসার নামে।
১ ঘণ্টা আগে