Ajker Patrika

৯৮ কোটির মহাসড়ক অকেজো

  • ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের নৌপথের দূরত্ব কমাতে সড়ক নির্মাণ, চালু হয়নি ৭ বছরেও।
  • ঠিকাদার নিম্নমানের কাজ করায় সড়ক চালু না করার অভিযোগ।
  • অবহেলা-অনাদরে সড়কের বিভিন্ন অংশে পিচ উঠে গর্ত, অনেক স্থানে ধস।
­­শাহীন রহমান, পাবনা
পাবনার বাঁধেরহাট-খয়েরচর মহাসড়কে পিচ উঠে তৈরি হয়েছে গর্ত। সম্প্রতি সড়কের পাইকান্দি গ্রাম এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাবনার বাঁধেরহাট-খয়েরচর মহাসড়কে পিচ উঠে তৈরি হয়েছে গর্ত। সম্প্রতি সড়কের পাইকান্দি গ্রাম এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনার বেড়া উপজেলার বাঁধেরহাট থেকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার খয়েরচর পর্যন্ত ২০১৮ সালে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ ১১ কিলোমিটার একটি জাতীয় মহাসড়ক তৈরি করে। লক্ষ্য ছিল ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের নৌপথের দূরত্ব কমানো। সড়কটি তৈরিতে ব্যয় হয় ৯৮ কোটি টাকা। এরপর দফায় দফায় প্রকল্পের নকশা পরিবর্তন ও ব্যয় বৃদ্ধি হয়।

কিন্তু দীর্ঘ ৭ বছরেও চালু হয়নি সড়কটি। অবহেলা-অনাদরে সড়কটির বিভিন্ন অংশে পিচ উঠে গর্ত তৈরি হয়েছে। অনেক অংশ ধসে গেছে। বর্তমানে স্থানীয় লোকজনের চলাচলেরও অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সড়কটি।

পাবনা সওজ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পাবনা থেকে যমুনা সেতু হয়ে ঢাকার দূরত্ব ২৩৩ কিলোমিটার। অন্যদিকে জেলার বেড়া উপজেলার কাজিরহাট ফেরিঘাট থেকে নৌপথে আরিচা হয়ে ঢাকার দূরত্ব ১৪৭ কিলোমিটার। মাঝখানে নদীপথ রয়েছে ১৬ কিলোমিটার। লঞ্চ ও ফেরিতে নদী পার হতে সময় লাগে দেড় থেকে পৌনে দুই ঘণ্টা। ফলে এই পথকে আরও সংক্ষিপ্ত করতে কাজিরহাট ঘাট থেকে ভাটিতে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার খয়েরচর এলাকায় নতুন ফেরিঘাট তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে ৯৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়। তৈরি হয় ১১ কিলোমিটার বাঁধেরহাট-খয়েরচর জাতীয় মহাসড়ক। কিন্তু ঠিকাদার নিম্নমানের কাজ করায় সড়কটি আর চালু করা সম্ভব হয়নি। পরে ২০২২ সালে প্রকল্পটির পরিধি আরও বৃদ্ধি করে ৪৯০ কোটি টাকা করা হয়। এ ছাড়া নতুন করে আরও দুই কিলোমিটার সড়ক, দুটি ব্রিজ ও ২৪টি কালভার্ট তৈরির প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়। সব মিলিয়ে ব্যয় ধরা হয় ৯৭৮ কোটি টাকা। কিন্তু প্রকল্পটি পরে আর আলোর মুখ দেখেনি। ফলে ১১ কিলোমিটারের জাতীয় মহাসড়কটি এখন অকেজো হয়ে পড়ে আছে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, কাজিরহাট ফেরিঘাটের দুই কিলোমিটার আগেই বাঁধেরহাট। এখান থেকেই ফসলের মাঠ ও কয়েকটি গ্রাম ভেদ করে চলে গেছে সড়কটি। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সড়কটির অনেক স্থানেই পিচ উঠে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। অনেক স্থানে সড়কের পাশে ধসে সরু হয়ে গেছে। এর মধ্যেই হঠাৎ দেখা মিলছে দু-একটি ভ্যান, মোটরবাইক ও অটোরিকশা। ভাঙা সড়কে হেলেদুলে চলতে হয় যানবাহনগুলোকে।

কলেজশিক্ষক আলাউল হোসেন বলেন, ‘বর্তমানে নদী পার হয়ে আরিচা যেতে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। কাজিরহাট ঘাটে শত শত পণ্যবাহী ট্রাক ফেরির অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকে। দ্রুত পৌঁছার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বহু মানুষ স্পিডবোটে নদী পার হয়। সড়কটি চালু হলে নদী পার হতে মাত্র ২৫ থেকে ৩০ মিনিট সময় লাগবে। এরপরও বছরের পর বছর সড়কটি ফেলে রাখা হয়েছে। এটা অর্থ অপচয় ছাড়া কিছুই হয়নি।’

এ নিয়ে কথা হয় পাবনা সওজের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সাদেকুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘জাতীয় মহাসড়কটি নিয়ে একটি বড় প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় আরও দুই কিলোমিটার সড়ক, দুটি বড় ব্রিজ ও ২৪টি কালভার্ট করা হবে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৭৮ কোটি টাকা। গত বছর প্রকল্পটির প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হলে পাবনাসহ উত্তর ও দক্ষিণের অন্তত ১০ জেলার যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত হবে। উত্তরের জেলাগুলো থেকে ঢাকার দূরত্ব ৮৫ কিলোমিটার কমে যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তির পরই অস্ত্রের লাইসেন্স পান উপদেষ্টা আসিফ

জুলাই নিয়ে ফেসবুকে পুলিশ সদস্যের আপত্তিকর পোস্ট, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এনপিবি পিস্তল কী ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র

গায়ের জোরে পদ্মা সেতুর দুর্নীতি মামলা বসিয়ে দেওয়া হয়: দুদক চেয়ারম্যান

প্রশাসন, পুলিশ ও পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম হলেন যাঁরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত