Ajker Patrika

শেরপুরে আদিবাসী পল্লিতে হামলা

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
শেরপুরে আদিবাসী পল্লিতে হামলা

বগুড়ার শেরপুরে আদিবাসী পল্লিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নারী, শিশুসহ অনেকেই আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার বিকেলে উপজেলার মির্জাপুর পুরাতন হাটখোলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। 

এ ঘটনায় আহতরা হলেন, এই এলাকার মৃত নগেন্দ্রনাথের ছেলে ফুলচান (৩৫), হানু চৌকিদারের ছেলে রবিন চন্দ্র (৫০), তাঁর ভাই সুর্যা (৪৫), রবিনের স্ত্রী রেহানা রানী (৩২) ও তাঁর ছেলে সুমন চন্দ্র (২৫)। তাঁদের শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। 

আহত ফুলচান জানান, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পার্শ্ববর্তী এলাকার মনির তাঁর বাড়ির সামনে ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন। মনিরের চিৎকারে তিনি বাইরে আসেন। এ সময় তিনি দেখতে পান তাঁর প্রতিবেশী শাহিন, শাহাদত ও কেবরাসহ আরও কয়েকজন মনিরকে মারধর করছে। তিনি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে পরবর্তীতে তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যান তাঁরা। 

ওই ঘটনার জের ধরেই বুধবারের হামলা করা হয়েছে বলে আক্রান্তদের প্রতিবেশীরা জানান। এ বিষয়ে ফুলচানের প্রতিবেশী আকালী বলেন, বুধবার আনুমানিক বিকেল ৩টায় আদিবাসী ভ্যানচালক ফুলচান ও ইলেকট্রিক মিস্ত্রি সুমন চন্দ্র ও তাঁর সহকারীকে নিয়ে মির্জাপুর বাজারে যাচ্ছিল। তাঁরা বাড়ি থেকে বের হলে অতর্কিতভাবে শাহিন (৩২), ইব্রাহিম (১৮), মো. শাহাদত (২২), মো. সোলেমান (৬৫), মো. সাইফুল (৩৫), মো. আসান (৫৫), মো. আবু সাইদ (৩২), মোছা. ডলি খাতুন (৫০) দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে ফুলচানের ওপর হামলা করে। এ সময় তাঁর সঙ্গীরা বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাদেরকেও রাস্তায় ফেলে মারধর করতে থাকে। তাঁদের চিৎকারে পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা এগিয়ে গেলে তাঁদের সবাইকে এলোপাতাড়ি পেটানো হয় বলে তিনি জানান। 

এই হামলায় লাঠি, দা, ছুড়িসহ দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করা হয় বলে জানান স্থানীয়রা। এ সময় কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে বলে ওই এলাকার শ্রীমতি পঞ্চরানী অভিযোগে করেন। 

অপরদিকে সেলায়মান আলীও থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, আদিবাসীরা দেশীয় চোলাই মদ তৈরি ও সেবন করে। ফলে এলাকার উঠতি বয়সী ছেলেদের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ে। এ ব্যাপারে নিষেধ করায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আক্রমণ করে। এতে তিনি ও তাঁর ছেলে শাহিন ও শাহাদত আহত হন। তাদেরকেও শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। 

সেলায়মান আলীর ছেলে রায়হান দেওয়ান দাবি করে বলেন, ‘ঘটনার সময় আমার ভাইয়ের কাছে নগদ পাঁচ লাখ টাকা ও গলায় পাঁচ ভরি স্বর্ণের চেইন ছিল। আদিবাসীরা আমাদের মারপিট করে ছিনিয়ে নিয়েছে।’ 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, আদিবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারি খাস জমিতে বসবাস করছে। তাঁদের উচ্ছেদ করার জন্য প্রভাবশালী এক মহল বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে। আজকের এই ঘটনা তারই পুনরাবৃত্তি বলে তিনি দাবি করেন। 

এ ব্যাপারে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঘটনা জানা মাত্রই সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পৃথক দুইটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত