Ajker Patrika

রামেকে বিনা মূল্যে সেবা পাচ্ছেন অসহায় রোগীরা

রাজশাহী প্রতিনিধি
রামেকে বিনা মূল্যে সেবা পাচ্ছেন অসহায় রোগীরা

শিশু সাইফের বাবা নেই। মা আনোয়ারা খাতুন অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান। গত মাসে সাইফ খুব অসুস্থ হলে তাকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে। কিন্তু ওষুধ কেনার টাকা নেই। ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক আনোয়ারা খাতুনকে পাঠালেন রামেকের সমাজসেবা অধিদপ্তরের রোগী কল্যাণ সমিতিতে। একটা আবেদন করে সেখান থেকেই পাওয়া গেল প্রয়োজনীয় ওষুধ। কিছুদিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে সাইফ বাড়ি ফিরে যায়। 

রামেকে রোগী কল্যাণ সমিতির মাধ্যমে রোগীদের এ রকম ওষুধ সেবা দেয় সমাজসেবা অধিদপ্তর। তাঁদের কার্যক্রমের আওতায় রয়েছে হাসপাতালে রোগীদের ওয়ার্ড চিনিয়ে দেওয়া, টিকিট কাটতে সহায়তা কিংবা অন্যান্য দিকনির্দেশনা দেওয়া। 

রোগীদের এমন সহযোগিতার জন্য হাসপাতালের বহির্বিভাগের পাশে দুই কক্ষ বিশিষ্ট তাঁদের একটি অফিসও রয়েছে। একটি কক্ষে বসেন সমাজসেবা কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান ও রোকসানা খাতুন। পাশের কক্ষটিতে চলে দাপ্তরিক কার্যক্রম। ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা যেসব অসহায় রোগী চিকিৎসার খরচ জোগাতে অক্ষম কিংবা যাদের কোন স্বজন নেই তাঁদের ওষুধ কিনে দেওয়ার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক একটি চিরকুট দিয়ে রোগী কল্যাণ সমিতির কাছে পাঠান। সেটি সমিতির কার্যালয়ে জমা দিয়ে একটি ফরম পূরণ করতে হয়। এরপর সমাজসেবা কার্যালয়ের নিবন্ধিত একটি ওষুধের দোকান থেকে তা রোগীকে কিনে দেওয়া হয়। 
 
রামেক হাসপাতালের এই কার্যালয়ে অফিস সহকারী হিসেবে চাকরি করেন মনজুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমি এখানে তিন বছর ধরে আছি। একদিনে সর্বোচ্চ ১৬ জনের আবেদন এসেছিল। সবাইকেই ওষুধ কিনে দেওয়া হয়েছে। আবেদন করে কেউ ফিরে গেছে এমন কখনো হয়নি। একজন রোগীকে আমরা সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকার ওষুধ কিনে দিতে পারি।’ 

কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে রোগীদের ২৬ লাখ ২১ হাজার ৯০৭ টাকার ওষুধ কিনে দেওয়া হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ১ হাজার ৯২০ জন রোগীকে কিনে দেওয়া হয়েছে ২৫ লাখ ৬৫ হাজার ৯৪৯ টাকার ওষুধ। চলতি অর্থবছরের তিন মাসে ৩৫৮ জন রোগীকে দেওয়া হয়েছে ৪ লাখ ৭১ হাজার ৯৭০ টাকার ওষুধ। বিগত ৩ মাসে ৫৮০ জন রোগীকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করা হয়েছে। 

রোগী কল্যাণ সমিতি কার্যালয়ের সমাজসেবা কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান জানান, জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের বরাদ্দ, আজীবন সদস্যদের অনুদান এবং যাকাত কিংবা অন্য কোনভাবে পাওয়া সহযোগিতা থেকে রোগীদের এই ওষুধ সহায়তা দেওয়া হয়। এ ছাড়া তাঁরা রোগীদের সামাজিকভাবে বিভিন্ন সহায়তা করে থাকেন। তিনি জানান, কে সহায়তা পাওয়ার যোগ্য সেটা ওয়ার্ডের চিকিৎসকই নির্ধারণ করে সুপারিশ করে থাকেন। এ পর্যন্ত কোন রোগীদের আবেদন বাতিল করা হয়নি।   

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

রাখাইনে মানবিক করিডর কি প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদ হবে, ভারত-চীন কীভাবে দেখবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত