Ajker Patrika

লোকালয়ে এসে বিপাকে দলছুট হনুমান: উদ্ধার কোনো সমাধান নয়—বলছে বন বিভাগ

দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি  
হনুমানের ছবি তুলতে ব্যস্ত অনেকেই। রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌর এলাকার দেবীপুর গ্রামে। ছবি: আজকের পত্রিকা
হনুমানের ছবি তুলতে ব্যস্ত অনেকেই। রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌর এলাকার দেবীপুর গ্রামে। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় লোকালয়ে প্রায় ১০ দিন ধরে ছুটে বেড়াচ্ছে একটি দলছুট হনুমান। তাকে দেখতে ভিড় জমাচ্ছে উৎসুক মানুষ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, দুই দিন আগেও পৌর এলাকার শালঘরিয়ায় ছিল হনুমানটি। এখন আবার চলে এসেছে দেবীপুর গ্রামে। এর আগেও অনেক গ্রামে দেখা গেছে এ হনুমানটিকে। এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় ছুটে ফিরছে। মানুষ খাবার ছুড়ে দিচ্ছে। কিন্তু প্রাণীটি খাচ্ছে না। শুঁকেই চলে যাচ্ছে। খাবার পছন্দসই হচ্ছে না। অনাহারে দুর্বল হয়ে গেছে প্রাণীটি। তবে উদ্ধার কোনো সমাধান নয় বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।

পৌর এলাকার দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাওন আহম্মেদ বলেন, খাদ্যসংকটের পাশাপাশি হনুমানটির বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে মানুষের অত্যাচার। যেখানেই যাচ্ছে, সেখানেই জড় হচ্ছে শত শত উৎসুক মানুষ। কেউ তার দিকে ছুড়ছে ঢিল। আবার কিশোরদের মধ্যে কেউ করছে লাঠিপেটা। ১০ দিন ধরে উপজেলা ও পৌর এলাকায় বিচরণ করলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে হনুমানটিকে উদ্ধারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

নামোদুরখালী গ্রামের আকতার হোসেন বলেন, ‘এই হনুমানটি আমার গ্রামেও এসেছিল। বন বিভাগে যোগাযোগ করে কোনো লাভ হয়নি। যোগাযোগ করেছিলাম। তারা বলেছিল, আমরা এগুলো উদ্ধার করতে পারব না। তাদের কাছে নাকি পর্যাপ্ত লোকবল নেই। এ ছাড়া তারা স্থানীয় লোকদের হনুমানটিকে খাবার দিতে নিষেধ করেছিল।’

শনিবার দুপুরে হনুমানটিকে দেখা যায় দুর্গাপুর পৌর এলাকার দেবীপুর গ্রামের একটি আমগাছে। গ্রামের বহু নারী-পুরুষ হনুমানটি দেখতে দাঁড়িয়ে আছেন। অনেক শিশু-কিশোর আবার ঢিল ছুড়ে মারছে। আবার কেউ খাবার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকা শামসুজ্জোহা বলেন, ‘এই হনুমানটি দলছুট হয়ে পঞ্চগড় থেকে বাঁশের ট্রাকে আসতে পারে। হনুমানটিকে রক্ষা করতে হবে। ওর বিষয়ে কিছু লেখেন, যাতে প্রশাসনের কারোর নজর পড়ে। হনুমানটিকে দ্রুত উদ্ধার করে নিয়ে না গেলে, মানুষের অত্যাচার ও অনাহারে এটি মারা যাবে নিশ্চিত।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরিনা শারমিন বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকের মাধ্যমে হনুমানটি দেখেছি। এই উপজেলায় বন কর্মকর্তা নেই। বিষয়টি জেলা বন বিভাগে জানাব। আশা করছি, দ্রুত হনুমানটিকে বন বিভাগ নিয়ে যাবে।’

জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা বন্য প্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘এটা উদ্ধারে কোনো সমাধান নয়। আমি কয়েক দিন আগে এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি। তাদের বলেছি, কেউ যেন হনুমানটিকে খাবার না দেয়। খাবার দিলে আর যেতে চাইবে না। প্রাকৃতিকভাবেই তারা এমনিতে আগের স্থানে চলে যাবে। ভয়ের কোনো কারণ নেই—উল্লেখ করে এই কর্মকর্তা আরও বলেন, উদ্ধার করে কী হবে? তাকে চিড়িয়াখানায় রাখা হবে। ফলে তার জীবন বন্দী হয়ে পড়বে। বরং তাকে উত্ত্যক্ত করা যাবে না। তাকে নিরাপদে রাখলে সে কারোর ক্ষতি করবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত