Ajker Patrika

রাবির পরিস্থিতি শান্ত, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের প্রস্তুতি

রাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ মার্চ ২০২৩, ১৭: ১৮
রাবির পরিস্থিতি শান্ত, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের প্রস্তুতি

স্থানীয়দের সঙ্গে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় তৈরি হওয়া উত্তপ্ত পরিস্থিতি বর্তমানে কিছুটা স্বাভাবিক রয়েছে। তবে ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত করায় এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দাবিতে বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা জানান, প্রশাসনের ওপর তাঁদের আস্থা নেই। প্রশাসন দুই দিনের কথা বলে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের সময় দীর্ঘ করবে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। গতকাল আমাদের কাজ ছিল শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা। আমরা গভীর রাত পর্যন্ত সেই চেষ্টা করেছি। কিছুক্ষণ পর আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আলোচনায় বসবো। এরপর আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও আলোচনায় বসব।’

আজ রোববার সকাল ৯টার দিকে নগরীর বিনোদপুর বাজারে গেলে দেখা যায় পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল। অর্ধশতাধিক পুলিশ, ডিবি ও সোয়াট টিম টহল দিচ্ছে। ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে যান চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। দূরপাল্লার বাসগুলো এখন নগরীর চৌদ্দপাই বাইপাস হয়ে চলাচল করছে। এদিকে বিক্ষোভের জন্য সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরে আসতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত করায় এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দাবিতে তাঁদের বিক্ষোভ করার কথা রয়েছে। 

বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৪ জন শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর। তিনি বলেছেন, ‘তিনজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। একজনকে আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাঁদের চিকিৎসা ব্যয় বহন করছে।’ 

বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় টহলরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিনোদপুরের মেস এলাকায় সাদা পোশাকে পুলিশ টহল দিচ্ছে। মেসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা নিরাপদে আছেন। তবে দায়িত্ব নিয়ে কোনো পুলিশ কর্মকর্তা এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

স্থানীয়দের সঙ্গে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের পর আজ বিনোদপুর বাজারে পুলিশের অবস্থানউল্লেখ্য, গতকাল শনিবার এই সংর্ঘষের ঘটনার সূত্রপাত এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাস কন্ডাক্টরের বাগ্‌বিতণ্ডা থেকে। বগুড়া থেকে মোহাম্মদ পরিবহনের একটি বাসে রাজশাহী আসছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আল আমিন আকাশ। বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে গাড়িচালক শরিফুল ও তাঁর সহযোগী রিপনের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় আকাশের। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিনোদপুর বাজারে বাস থেকে নামার সময় তাঁদের মধ্যে আবারও কথা-কাটাকাটি হয়। এ সময় বিনোদপুর বাজারের একজন ব্যবসায়ী বাসচালকের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন। তখন আকাশসহ বিনোদপুর বাজারে আগে থেকেই অবস্থান নেওয়া রাবির কয়েক শিক্ষার্থীর সঙ্গে গাড়ির চালক, তাঁর সহযোগী ও বাজারের ব্যবসায়ীর কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়।

খবর পেয়ে সেখানে যান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া। এ সময় ব্যবসায়ীরা তাঁর মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করেন এবং ধাওয়া দিয়ে তাঁকেসহ শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকিয়ে দেন। এতেই ঘটনা বড় হয়ে যায়। সাধারণ শিক্ষার্থীরা হল থেকে বের হয়ে বিনোদপুর গেটের পাশে অবস্থান নেন।

আর ব্যবসায়ীরা অবস্থান নেন রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে বিনোদপুর বাজারে। তখন এক পক্ষ আরেক পক্ষের ওপর রাতের অন্ধকারে বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। তখন ইটের আঘাতে অনেক শিক্ষার্থী আহত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত