Ajker Patrika

রাজশাহী বিভাগে দৈনিক ৮-১০ ঘণ্টা লোডশেডিং 

রাজশাহী প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ জুলাই ২০২২, ২৩: ১১
রাজশাহী বিভাগে দৈনিক ৮-১০ ঘণ্টা লোডশেডিং 

রাজশাহী বিভাগজুড়ে বিদ্যুতের লোডশেডিং অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদামত বিদ্যুৎ না পাওয়ায় গত তিন দিন ধরে প্রত্যেক এলাকায় গড়ে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

রাজশাহী বিভাগে আগে পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি এবং বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিদ্যুৎ বিতরণের কাজটি করত। ২০১৬ সালে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়। এরপর থেকে উত্তরের ১৬ জেলার গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে সরকারি মালিকানাধীন বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো)। পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলে পল্লি বিদ্যুৎ সমিতিও বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। 

এই দুই সংস্থার গ্রাহকদেরই ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কবলে পড়তে হচ্ছে। দিনে রাতে সব সময় একটু পর পর বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। কখনো ৩০ মিনিট পর কখনো এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ আসছে। আবার ঘণ্টাখানেক পরই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। এতে এই গরমে মানুষ দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছেন। কাজে স্থবিরতা নেমে এসেছে। শিল্প-কারাখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ‘রাজশাহীতে বিদ্যুৎ যায় না, মাঝে মাঝে আসে’-এ ধরনের কথা লিখে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন তিন দিন ধরে। 

রাজশাহী শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু বলেন, ‘সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার পরে এ ধরনের লোডশেডিংয়ের মুখে পড়তে হবে তা কল্পনা করিনি। ব্যবসা-বাণিজ্য ভীষণ রকমের ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিল্প-কারাখানায় উৎপাদন বিপর্যয় ঘটছে। বিদ্যুৎ ছাড়া আসলে কিছুই করা যাচ্ছে না। দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে এমনটাই আশা করি।’ 

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, ‘বিদ্যুৎ চলে গেলে রোগীদের খুব অসুবিধা হচ্ছে। ঘন ঘন বিদ্যুৎ যাচ্ছে। তবে ১০,১৫ কিংবা ৩০ মিনিট পর আবার আসছে। আমরা অনুরোধ করেছি, হাসপাতালটাকে যেন বিশেষ বিবেচনা করা হয়। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন এই মুহূর্তে আসলে কিছু করার নেই। এটা জাতীয় সমস্যা।’ 
 
রাজশাহীর পাঁচটি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি। এই দপ্তরের রাজশাহী কার্যালয়ের জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মো. একরামুল হক বলেন, ‘বিদ্যুতের চরম সংকট। আমরা পাঁচ উপজেলায় চাহিদা ১০৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। ২০ মেগাওয়াট ঘাটতি থাকছে। এতেই ৪-৫ ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হচ্ছে। পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।’ 

নেসকোর রাজশাহী বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ জানান, রাজশাহী মহানগর এলাকায় বিদ্যুতের চাহিদা ৯৬ মেগাওয়াট। পাওয়া যাচ্ছে ৬১ মেগাওয়াট। আর রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় চাহিদা ৪৪১ মেগাওয়াট। জাতীয় গ্রিড থেকে পাওয়া যাচ্ছে ৩৫০ মেগাওয়াট। এই ঘাটতির কারণে ঘন ঘন লোডশেডিং করতে হচ্ছে। 

আব্দুর রশিদ বলেন, ‘একটা এলাকায় আধা ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ করে অন্য দিকে দিচ্ছি। আবার আধা ঘণ্টা পর এদিকটা বন্ধ করে ওদিকে দিচ্ছি। এভাবে হিসাব করলে ২৪ ঘণ্টার ভেতরে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েই যাচ্ছে। কোথাও কোথাও ১০-১২ ঘণ্টাও হচ্ছে। গ্যাস সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় জাতীয় গ্রিড থেকে আমরা বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কবে নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তা বলতে পারছি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০-১২তম গ্রেডে নিয়োগ: প্রতি পদের বিপরীতে দুজন থাকবেন অপেক্ষমাণ

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

ইতিহাস গড়ে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে আইএসআইপ্রধান

সাবেক ‘র’-এর প্রধানের নেতৃত্বে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত